Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.
Travel Image

আলুটিলা

বাংলাদেশের ভ্রমণ প্রিয় জেলাগুলোর মধ্যে উপরের দিকে রয়েছে খাগড়াছড়ি। পাহাড়-পর্বত, ঝর্ণা কি নেই এখানে। এমনকি বিদেশি পর্যটকরাও এই জায়গাটি ভীষণভাবে পছন্দ করে থাকেন। খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার মোট আয়তন ২৭০০ বর্গ কিলোমিটার যা বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের চট্টগ্রাম বিভাগের একটি প্রশাসনিক অঞ্চল।
খাগড়াছড়ি জেলার অন্যতম একটি দর্শনীয় পর্যটনকেন্দ্র হলো আলুটিলা। আসুন জেনে নেই আলুটিলা সম্পর্কে কিছু তথ্যঃ

১। খাগড়াছড়ি শহর থেকে আলুটিলা খুব বেশি দূরে নয়। মাত্র ৭ কিলোমিটার পশ্চিমে মাটিরাঙ্গা উপজেলার আলুটিলা পযর্টন কেন্দ্র অবস্থিত। এখানে রয়েছে একটি রহস্যময় গুহা।

২। আলুটিলার আগের নাম ছিল আরবারী পর্বত। স্থানীয়রা একে বলেন মাতাই হাকড় বা দেবতার গুহা। এর নাম পরে আলুটিলা কেন হল তা নিয়ে ধারণা করা হয়, দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের সময় খাগড়াছড়িতে দুর্ভিক্ষ দেখা দিলে এলাকার জনগণ এই পর্বত থেকে বুনো আলু সংগ্রহ করে তা খেয়ে বেঁচে ছিল। তারপর থেকে এই পর্বতটি আলুটিলা নামেই পরিচিতি পায়। এখনো আলুটিলায় প্রচুর পরিমাণ বুনো আলু পাওয়া যায়।

৩। সমুদ্র সমতল হতে ৩০০০ ফুট উঁচু আলুটিলা পর্বতই খাগড়াছড়ি জেলার সব চেয়ে উঁচু পর্বত।

৪। আলুটিলা রহস্যময় সুড়ঙ্গে প্রবেশ করার জন্যে প্রথমেই পর্যটন কেন্দ্রের টিকেট কেটে ভিতরে প্রবেশ করতে হয়। ফটকের দুই পাশে রয়েছে দুটি শতবর্ষী বটবৃক্ষ যা দেখে মনে হয় ভ্রমণকারীদের স্বাগত জানাচ্ছে। পর্যটন কেন্দ্রের ফটক দিয়ে প্রবেশ করে ডান পাশের রাস্তা দিয়ে মিনিট খানেক হাঁটলেই চোখে পড়বে একটি সরু পাহাড়ী পথ। পাহাড়ের ঢাল বেয়ে নিচে নেমে গেছে এই পথটি। আর সে পথটি বেয়ে নিচে নামলেই সবার জন্য অপেক্ষা করবে প্রথম চমক ছোট একটি ঝর্ণা। তবে এখানে পাহাড়ী লোকজন ঝর্ণার পানি আটকে রাখার জন্য একটি বাঁধ দিয়েছে। তারা এই পানি খাবার ও অন্যান্য কাজে ব্যবহার করেন।



৫। ফটক হতে বাম দিকের রাস্তা বরাবর হাঁটার পর দেখা মিলবে রহস্যময় সেই আলুটিলা গুহার। গুহাতে যাবার আগে রয়েছে একটি বিশ্রামাগার ও ওয়াচ টাওয়ার। তার সামনে দিয়ে রাস্তা চলে গেছে আলুটিলা গুহার মুখে। আগে পাহাড়ের ঢাল বেয়ে নামতে হতো গুহামুখে। কিন্তু এখন পর্যটন কর্পোরেশন করে দিয়েছে একটি পাকা রাস্তা। পাকা রাস্তা শেষে প্রায় ৩৫০টি সিঁড়ি বেয়ে নিচে নামার পর পাওয়া যাবে কাঙ্খিত সেই আলুটিলা গুহা।



৬। গুহাটি খুবই অন্ধকার এবং খুব শীতল। সূর্যের আলো প্রবেশ করে না বলে মশাল নিয়ে ভিতরে প্রবেশ করতে হয়। তবে না বললেই নয়, আলুটিলা গুহা একেবারেই পাথুরে গুহা। গাঁ ছম ছম করার মতো পরিবেশ। সুরঙ্গের তলদেশ পিচ্ছিল এবং পাথুরে। এর তলদেশে রয়েছে একটি ঝর্ণা প্রবাহমান।

৭। আলুটিলার এই মাতাই হাকড় বা দেবতার গুহা সত্যিই প্রকৃতির একটি আশ্চর্য খেয়াল। দেখতে অনেকটা ভূগর্ভস্থ টানেলের মতো। গুহার ভিতরে জায়গায় জায়গায় পানি জমে আছে, রয়েছে বড় বড় পাথর। রীতিমতো রূপকথার সেই গুহার মতোই।

৮। গুহাটির এপাশ দিয়ে ঢুকে ওপাশ দিয়ে বের হতে সময় লাগে ১০ থেকে ১৫ মিনিট। গুহাটির উচ্চতা মাঝে মাঝে এতটাই কম যে, নতজানু হয়ে হাঁটতে হয়। সব কিছু মিলিয়ে মনে হবে যেন সিনেমার সেই গুপ্তধন খোঁজার পালা চলছে। বিশ্বে যতগুলো প্রাকৃতিক রহস্যময় গুহা আছে আলুটিলা সুরঙ্গ তারমধ্যে অন্যতম।

আলুটিলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়ার মতো। এক কথায় অতুলনীয়। প্রচার প্রচারণা পেলে ভ্রমন পিপাসু পর্যটকদের ভীড় এখানে আরো বাড়বে।