Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.
Travel Image

পাহাড়ের গায়ে পাহাড়ি জনপদ




পাহাড়, নদী হৃদ উপত্যকার নৈসগিক রূপের রানী বাংলাদেশের এই পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটি। উজার প্রকৃতির নিপাট আলিঙ্গন যেন আগলে রেখেছে এই জেলাটকে রঙ্গিন হাওয়া আর প্রকৃতির অনুভাব করার জন্য এখানে আছে বৈচিত্র্য। দেশ বিদেশের দর্শনার্থীদের কাছে রাঙ্গমাটি আকর্ষণ অফুরন্ত। বন্দর নগরী চট্টগ্রাম থেকে ৭৭ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত বাসে সময় নেবে প্রায় দুই ঘন্টা। রাঙ্গামাটির উদ্দেশ্যে কয়েক কিলোমিটার অগ্রসর হলেই দৃশ্যপট পাল্টে যাবে। পার্বত্য স্কুল রাস্তা সাপের মতো এগিয়ে গেছে। রাঙ্গামাটি যাওয়ার বাকে বাকে অনুভাব করা যাবে দারুন রোমাঞ্চ। ছবির মতো পাহাড়ের পর পাহাড়। পাহাড়ের পুরোটাই গহিন অরন্যে ঢাকা, কোন পাহাড়ে জংলা পরিস্কার কওে ঢালু জমিতে জুম চাষ করা হয়েছে। পথে পথে দেখা হবে চাকমা, মগ, মুরং প্রভৃতি অদিবাসী সম্প্রদায়ের প্ররিশ্রমী মানুসের সঙ্গে। ঢাকা থেকে রাত দশটায় বাসে উঠলে খুব ভোরেই পৌছায় রাঙ্গামাটি শহরে। শহরে নেমে হোটেলে একটু বিশ্রাম নিয়ে বেড়িয়ে পড়তে পারবেন। প্রথম দিনে শহর ও এর আশ পাশের দর্শনীয় জায়গাগুলোতে বেড়ানো যেতে পারে। রাঙ্গামাটি শহরের শুরুর দিকটায় রয়েছে উপজাতীয় জাদুঘর অটোওয়ালাকে বললে আপনাকে নিয়ে যাবে জাদুঘরের সামনেই। এখানে রয়েছে রাঙ্গামাটিসহ পার্বত্য অঞ্চলের বসবাসরত নানান অদিবাসীদের নানা সরঞ্জামাদী পোশাক, জিবনাচরন এবং বিভিন্ন ধরনের তথ্য। ছোট অথচ অত্যন্ত সমৃদ্ধ এ জাদুঘরটি। খোলা থাকে সোম থেকে শুক্রবার সকাল ৯.৩০ মিনিট থেকে বিকেল ৫.৩০ মিনিট পর্যন্ত। শনি - রবিবার ও অন্ন্যান্য সরকারী ছুটির দিন গুলোতে জাদুঘরটি বন্ধ থাকে। জাদুঘরে প্রবেশে বড়দের জন্য পাঁচ টাকা ও ছোটদের জন্য দুই টাকা লাগবে। উপজাতীয় জাদুঘরটি দেখে চলে আসতে পারেন পাশ্ববর্তী রাজবন বিহারে এ অঞ্চলের বৌদ্ধ ধর্মাম্বীদের একটি তীর্থস্থান এই রাজবন বিহার। এখানে আছে একটি প্রার্থনালয়, একটি প্যাগোডা, বনভান্তের (বৌদ্ধভিক্ষ) আবাস্থল ও বনভান্তের ভোজনালয় প্রতি শুক্রবার ছাড়াও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে উপলক্ষে এখানে চলে প্রার্থনা। রাজবন বিহার দাড়িয়ে উপভোগ করতে পারেন কাপ্তাই লেকের নয়নাভিরামের সৌন্দর্য। রাজবন বিহারের পাশেই কাপ্তাই লেকের ছোট্র একটি দ্বীপজুড়ে রয়েছে চাকমা রাজার বাড়ী। নৌকায় পার হয়ে খুব সহজেই যাওয়া যায় এই রাজারটিতে। আঁকাবাকা সিড়ি ভেঙ্গে উপরে উঠে ছাদের ছায়ায় ইট বাধানো পথের মাথায় এ সুন্দর বাড়ীটি। এবার লেক পার হয়ে বেবিটেক্সিতে করে চলে আসুন রিজার্ভ বাজারে। রিজাভ বাজারের পর্যটন গুরুতের ছেয়ে বানিজ্যিক গুরুত্বের বেশি। রাঙ্গমাটির বিভিন্ন এলাকার উৎপাদিত বিভিন্ন রকম পন্য এনে জমা করা হয় এ বাজারে। ব্যস্থ এ জায়গা দিন দিন রাঙ্গমাটির অন্যতম বানিজ্যিক কেন্দ্র হয়ে উঠেছে। বাজারে দ্রব্য সামগ্রী পাইকারী দরে কিনতে বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ব্যবসায়ীরা এসে ফল, মসলা, করতারী কিনে নিয়ে যায়। রির্জাভ বাজার থেকে এবার চলুন পর্যটন কমপ্লেক্স। রাঙ্গমাটি শহর থেকে এখানকার দৃরত্ব দুই কিলোমিটার। রাস্তার সৌন্দর্য দেখতে দেখতে এই অল্প পথ নিমিষেই ফুরিয়ে যাবে। পর্যটন কমপ্লেক্স ও ভেতরেই রয়েছে সবার চেনা সুন্দর ঝুলন্ত সেতুটি। দশটাকার টিকেট কিনে এখানে  ঢুকে পড়ুন।



ঝুলন্ত সেতু ধরে যতই এগোবেন ততই ছবির মতো দৃশ্য আপনার দু চোখকে হাতচানি দিবে। ঝুলন্ত সেতু পেরিয়ে ওপারে গেলে দেখা যাবে গাছগাছালি সমৃদ্ধ এ পাহাড়ে সবার জন্য তৈরী করে রাখা হয়েছে সিমেন্টের বেঞ্চি এ বেঞ্চেতে ক্লান্ত মানুষ গুলো বিশ্রাম নিতে পারেন। এখান থেকে কাপ্তাই নৌকা ভ্রমন করতে পারেন। নৌকা ভ্রমনের জন্য এখানে পেয়ে যাবেন নানা রকম বাহন। এ জায়গায় প্রথম দিনে ভ্রমন শেষ করে হোটেলে ফিরে যান। পরের পুরো দিনটি রাখুন কাপ্তাই লেক ভ্রমনের জন্য। শহরের রিজার্ভ বাজার ঘাটেই পাবেন কাপ্তাই লেকের ভ্রমনের নানা ইঞ্জিন বোট। ঝুলন্ত সেতুর কাছেও এরকম অনেক বোট পাবেন। সেক্ষেত্রে আপনাকে একটু বাড়তি টাকা গুনতে হবে শুধু শুধু। সারাদিনের জন্য একটি বোট ভাড়া করে সকালে সোজা চলে যান শুভলং বাজার। শুবলংয়ে কিছুটা সময় কাটিয়ে এবার ফিরতে শুরু করুন। ফিরতি পথের শুরুতেই হাতের বায়ে পাবেন শুভলং ঝরনা। ইচ্ছে হলে শরীরটা ভিজিয়ে নিতেন পারেন। কাপ্তাই লেকের দুপাশের আকাশছোঁয়া পাহাড়গুলো দেখতে দেখতে চলতে থাকুন। পথে দুপুরের খাবার সেরে নিতে পাবেন। টুকটুক ইকো ভিলেজ কিংবা বা পেদা টিংটিয়ে। শুরুতেই পড়বে টুকটুক ইকো ভিলেজ। কাপ্তাই লেকের একেবারে মাঝে এই ইকো ভিলেজটির সুন্দর সুন্দুর কটেজ রাত ও কাটাতে পারেন। এই রেস্তোরাটিতে পাবেন বিবিন্ন রকম পাহড়ি ম্যনু। সারাদিন কাপ্তাই লেকের এসব জায়গা ভ্রমনের জন্য একটি ইঞ্জিন বোটের বাড়া পড়বে ১৫০০-৩০০০ টাকা। এছাড়া রাঙ্গামাটি শহর থেকে এখন প্রতিদিন শুভলং ছেড়ে যায় ভ্রমন তরী কেয়ারী, কর্ণফুলী। প্রতিদিন সকালে ছাড়ে আবার বিকেলে ফিরে আসে। ফিরতি পথে টুকটুক ইকো ভিলেজের বিরতি। যাওয়া আসা ভাড়া জনপ্রতি ২২০ টাকা।

কিভাবে যাবেনঃ ঢাকার কলাবাগান, ফকিরাপুল ও কমলাপুর থেকে সরাসরি রাঙ্গামাটির উদ্দেশে ছেড়ে যায় ডলপিন পরিবহন, এস আলম পরিবহন, সৌদিয়া পরিবহন, শ্যামলী পরিবহন, ইউনিক সার্ভিস ইত্যাদি। শ্যামলী পরিবহনের একটি শিতাতপ নিয়ন্ত্রিত বাস ঢাকা থেকে প্রতিদিন রাত দশটায় এবং রাঙ্গামটি থেকে সকাল সাড়ে দশটায় ছাড়ে। এছাড়া যে কোনো বাস, ট্রেন কিংবা বিমানে চট্টগ্রাম এসে সেখান থেকেও রাঙ্গামাটি যাওয়া যাবে। চট্টগ্রাম শহরের সিনেমা প্যালেসা এবং বহদ্দারহাট বাস টার্মিনাল থেকে সকাল সাতটা থেকে সন্ধা পর্যন্ত বিশমিনিট পরপর রাঙ্গামাটি উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায় বিরতিহীন বাস, ভাড়া জনপ্রতি ১০০-১২০ টাকা।

কোথায় যাবেনঃ রাঙ্গামটি শহরে থাকার জন্য বেশ কয়েকটি হোটেল আছে। পর্যটন কমপ্লেক্সের ভেতরে পর্যটন হোটেল (০৩৫১-৬৩১২৬) শহরের কাঁঠাল তলীতে হোটেল সুফিয়া (০৩৫১-৬২১৪৫) রিজার্ভ বাজারে হোটেল গ্রিন ক্যাসেল (০৩৫১৬৩২৮২) কলেজ গেইট এলাকায় হোটেল জজ (০৩৫১-৬৩৩৩৪৮) নতুন বাজার ষ্টেশনে হোটেল আল বোমা (০৩৫১-৬১৯৫৯) পর্যটন রোডে হোটেল মাউন্টেন ভিউ (০৩৫১-৬২৮৪৮)