Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.
Beauty Image

খুশকিমুক্ত সুন্দর চুল



বাইরে বের হলে চুলে সহজেই ধুলাবালি প্রবেশ করে। রোমকূপ বন্ধ হয়ে যায়- যার কারনে প্রায় সবারই খুশকির ঝামেলা পোহাতে হয়। সুন্দর এবং স্বাস্থ্যজ্জ্বল চুলের প্রথম প্রধান শর্ত হলো খুশকি মুক্ত চুল। খুশকির কারণে চুল পরা, চুলের ডগা ফেটে যাওয়া, চুলের উজ্জ্বলতা নষ্ট করে। খুশকি চুলের ক্ষতির পাশাপাশি মুখের ব্রণও সৃষ্টি করে থাকে। তাই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব মাথা থেকে খুশকি দূর করা উচিত। খুশকির সমস্যা দূর করার জন্য আমরা সবাই বিভিন্ন ব্র্যান্ডের এন্টিড্যান্ড্রাফ শ্যাম্পু ব্যবহার করে থাকি। কিন্তু দেখা যায় এরপরও খুশকি পুরোপুরি দূর হয় না এবং বার বার ফিরে আসে। কিন্তু কিছু টিপস নিয়মিত অনুসরণ করলে আমরা খুশকি থেকে মুক্তি পেতে পারি। চলুন জেনে নেই খুশকি থেকে মুক্তির উপায়-

১. হালকা উষ্ণ বাদাম তেল, নারিকেল তেল অথবা অলিভ ওয়েল মাথার তালুতে ম্যাসেজ করলে খুশকি দূর হয়।

২. এক টেবিল চামচ লেবুর রসের সাথে ৫ টেবিল চামচ নারিকেল তেল একসাথে মিশিয়ে নিন। এবার এই মিক্সার মাথার তালুতে লাগিয়ে ২০-৩০ মিনিট রেখে শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। ২/৩ সপ্তাহ পর পর এটা করলে খুশকি থাকবে না।

৩. দুটো ডিম ভেঙে পেস্ট করে মাথার তালুতে লাগান। এক ঘণ্টা পর ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন। এই পদ্ধতিটি মাসে এক বার ফলো করুন খুশকি দূর করতে এবং চুল পড়া কমাতে অনেক কমে যাবে।

৪. গোসলে যাওয়ার আগে লেবুর রস দিয়ে মাথার তালুতে ভালোভাবে ম্যাসেজ করুন। এরপর ১৫-২০ মিনিট পর মাথা ধুয়ে ফেলুন। কয়েকদিন ব্যবহারে দেখবেন খুশকি চলে যাবে।

৫. চার টুকরা লেবু ৪-৫ কাপ পানির মধ্যে দিন। এরপর লেবু মিশ্রিত পানি ১৫-২০ মিনিট ধরে সিদ্ধ করুন ও পরে এটি ঠান্ডা করুন। মাথার চুল ধোঁয়ার সময় এই ঠাণ্ডা মিশ্রণটি ব্যবহার করুন। কমপক্ষে ১ সপ্তাহ এভাবে ব্যবহার করলে খুশকি থাকবে না।

৬. সামান্য পরিমাণ টক দই মাথার তালুতে লাগিয়ে ১ ঘণ্টা রেখে দিন। এরপর শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে অন্তত দুইবার এই পদ্ধতি অবলম্বন করলেও খুশকি চলে যাবে।

৭. দুই টেবিল চামচ মেথি পানিতে ভিজিয়ে রেখে পরে পেস্ট করে নিন। এবার এই পেস্টটি চুলে এবং মাথার তালুতে লাগিয়ে ৩০ মিনিট রাখুন। এরপর শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন। ভাল ফলাফলের জন্য এভাবে অন্তত ৪ সপ্তাহ এটি ব্যবহার করুন। তাহলে খুশকি আর বাসা বাঁধতে পারবে না।

৮. নিমপাতা পিষে পেস্ট বানিয়ে মাথায় লাগান। প্রায় ৩০ মিনিট পর তা ধুয়ে ফেলুন। কয়েক সপ্তাহ এটি ব্যবহার করুন এতেও খুশকি চলে যাবে।

এর থেকে চিরতরে মুক্তির জন্য এন্টিড্যান্ড্রাফ শ্যাম্পুর সাথে একটু হারবাল ট্রিটমেন্ট করলে অনেক ভাল ফলাফল পাওয়া যায়। আর এই প্যাকটি আপনি তৈরি করতে পারেন ঘরে বসেই। আসুন দেখে নেই হারবাল প্যাক তৈরীর নিয়মাবলী-

১. কাঁচা আমলকি- ১০ গ্রাম
২. সরিষার তেল- ২৫০ মিলি
৩. মেহেদির কাঁচা পাতা- ১০০ গ্রাম এর মতো

*মেহেদি পাতা নিন।

*একটা কাটা চামচ দিয়ে আমলকি কুচিয়ে নিন।

*কড়াইয়ে সরিষার তেল গরম করে নিন।

*মেহেদি পাতা এবং আমলকিগুলো তেল এ দিয়ে দিন। পাতা মচমচে না হওয়া পর্যন্ত ভেজে নিন।

*একটা বড় বাটিতে তেল আর মেহেদি আর আমলকির মিশ্রন ঠান্ডা হতে দিন।

*ঠান্ডা হয়ে গেলে আমলকি গুলো উঠিয়ে ফেলুন এবং মেহেদি পাতা গুলো হাত দিয়ে গুড়ো করে তেলের সাথে মিশিয়ে মিশ্রণ তৈরি করুন। এই মিশ্রনটি অনেকদিন ফ্রিজে না রেখেও ব্যবহার করতে পারবেন।

*শ্যাম্পু করার আগের দিন রাতে চুলের গোড়ায় ও চুলে মিশ্রণটি ভালোভাবে ঘষে লাগিয়ে মাথায় একটা শাওয়ার ক্যাপ বা কাপড় পেচিয়ে ঘুমিয়ে পরুন। পরের দিন শ্যাম্পু করুন আর দেখুন খুশকি কতখানি কমে গেছে আর চুল কেমন ঝকঝক করছে। এভাবে সপ্তাহে দু/তিন দিন নিয়মিত ব্যবহার করলে আপনি পেতে পারেন খুশকিমুক্ত ঝকঝকে স্বাস্থ্যজ্জ্বল চুল।

আর বাহ্যিক যত্ন নেয়ার পাশাপাশি দেহকে ভিতর থেকে পুষ্টি দিতে হবে। আর নজর দিতে হবে আপনার খাদ্যাভ্যাসের দিকে।

১.সুষম খাবার খেতে হবে। বাসায় তৈরী খাবার যা কম তেলে রান্না করতে হবে।

২.তাজা সবজি ও ফল রাখুন খাবার তালিকায়।

৩.দুধ নিয়মিত খেতে হবে।

৪.Vitamin B 12 চুলের গোড়ায় শক্তি যোগায়, Vitamin C Scalp এ রক্ত সঞ্চালন বাড়ায় এবং চুলের বৃদ্ধি ঘটায়, Vitamin E অক্সিজেনের গ্রহন বাড়ায়, Vitamin B-3 B -5, B-6 চুলের স্বাস্হ্য ও বর্ধনে সাহায্য করে, Iron চুলের basic health ও strength রক্ষা করে, zinc ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে ও চুলের বৃদ্ধিকে উৎদিপ্ত করে, Folic Acid চুল পরা প্রতিরোধ করে।

৫.বিশেষ কিছু পুষ্টি উপাদান যেমন-zinc, sulfur, biotin, ও selenium এর অভাবে খুশকি দেখা দেয়। সূর্যমুখীর বীচি, মটরশুটি,পালংশাক zinc এর ভাল উৎস। বাধাকপি, ফুলকপি, ব্রোকলি থেকে sulfur ও biotin পাওয়া যায়। বাদাম, মাংস থেকে selenium পাওয়া যাবে।

৬.প্রোটিন জাতীয় খাবার খেতে হবে।

৭.প্রতিদিন flaxseed oil ১ টেবিল চামচ খাওয়ার চেষ্টা করুন। কারন এতে omega-3 fatty acids আছে যা খুশকির হাত থেকে রক্ষা করবে।

আর অবশ্যই খাবার তালিকা থেকে পরিহার করুন-

*সাদা আটা /ময়দা
*অতিরিক্ত চিনি
*তেলে ভাজা খাবার
*চকোলেট ও এলকোহল।

খুশকি রোধে চুল পরিষ্কার রাখার কোনো বিকল্প নেই। কাজেই প্রতিদিনই চুল পরিষ্কার রাখার চেষ্টা করুন। চিরুনি আলাদা করুন এবং কখনোই ভেজা চুল বেঁধে রাখবেন না। এতে আপনার চুল হয়ে উঠবে সুন্দর ও খুশকিমুক্ত।