Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.

ব্লগার বাঙ্গাল

১০ বছর আগে লিখেছেন

আত্মীয়তার সম্পর্ক

সম্পর্কের সীমারেখা বা সংজ্ঞা : আত্মীয়তার সম্পর্কের কোনো নির্দিষ্ট সীমানা বা সংজ্ঞা নেই। প্রচলিত রীতি অনুযায়ী তা নির্ধারিত হয়। প্রচলিত রীতি যেটাকে সম্পর্ক বজায় রাখা মনে করে সেটা ধর্তব্য। আর যেটাকে সম্পর্ক ছিন্ন করা মনে করে সেটা বর্জনীয়।

আল্লাহ তাআলা আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। এরশাদ হচ্ছে, ‘এবং যারা বজায় রাখে ঐ সম্পর্ক, যা বজায় রাখতে আল্লাহ আদেশ দিয়েছেন।’ (সুরা রাদ, আয়াত : ২১)
তিনি নিকট আত্মীয়দের অধিকার আদায়ে উৎসাহিত করেছেন। আল্লাহ বলেন, ‘আত্মীয়-স্বজনকে তার হক দান কর।’ (সুরা ইসরা, আয়াত : ২৬)
আল্লাহ তাআলা হাদিসে কুদসীতে ‘সম্পর্ক’-কে লক্ষ্য করে বলেন, ‘যে ব্যক্তি তোমাকে ঠিক রাখবে, আমি তাকে মিলিয়ে রাখব আর যে তোমাকে ছিন্ন করবে, আমি তাকে ছিন্ন করব।’ (বুখারী, হাদিস নং : ৫৫২৯)
সম্পর্ক ছিন্ন করা থেকে খুব সর্তক করেছেন এবং একে পৃথিবীতে বিঃশৃংখলা সৃষ্টি বলে সাব্যস্ত করেছেন। আল্লাহ বলেন, ‘ক্ষমতা লাভ করলে সম্ভবত : তোমরা পৃথিবীতে বি:শৃংখলা সৃষ্টি করবে এবং আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্ন করবে।’ (সূরা মুহাম্মাদ, আয়াত : ২২)
নবী করিম (সা.)বলেন, ‘আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকারী জান্নাতে প্রবেশ করবে না।’ (বুখারী, হাদিস : ৫৫২৫)
আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখার ফজিলত : আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখার অনেক ফজিলত রয়েছে। তন্মধ্যে কিছু উল্লেখ করা হল।
১. সম্পর্ক বজায় রাখা রিজিক বৃদ্ধি এবং দীর্ঘজীবী হবার কারণ এবং উভয়ের মাঝে বরকতের কারণ।
আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি তার রিজিক প্রশস্ত হওয়া এবং মৃত্যুর সময় পিছিয়ে দেওয়া কামনা করে, তার উচিত আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখা।’ (বোখারি, হাদিস : ৫৫২৭)
২. এ কাজ জান্নাতে প্রবেশের কারণ হবে।
আবু আইয়ুব আনসারী রা. থেকে বর্ণিত, এক ব্যক্তি রাসুলকে (রা.) বলল, হে আল্লাহর রাসুল! আমাকে এমন আমল বলে দিন যা আমাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবে। তখন রাসুল (সা.) বললেন, আল্লাহর এবাদত কর, তার সঙ্গে কোনো কিছু শরিক করো না। নামাজ ভাল করে আদায় কর এবং জাকাত দাও। আর আত্মীয়তার সম্পর্ক অক্ষুণ্ন রাখ।’ (বুখারী, হাদিস : ১৩০৯)
৩. দুনিয়া এবং আখেরাতে সৌভাগ্য এবং তাওফীক পাওয়ার কারণ হল আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখা।
সম্পর্কের স্তর : এ সম্পর্ক বজায় রাখার কিছু স্তর রয়েছে। সর্বোচ্চ স্তর হল : জান-মাল দ্বারা সাহায্য করা এবং কল্যাণ কামনা করা। আর সর্বনিম্নস্তর হল, সালাম দেওয়া। এই দুইটির মাঝখানে আরও অনেক স্তর রয়েছে।
রাসুল (সা.)এরশাদ করেন, ‘সালাম-এর মাধ্যমে হলেও তোমরা তোমাদের আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখ।’
আর অপর দিকে এর উঁচু স্তর হল, যে তোমার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করবে, তুমি তার সঙ্গে সম্পর্ক জুড়বে।
রাসুল (সা.) বলেন, ‘সমান সমান আচরণ দ্বারা সম্পর্ক স্থাপনকারী হওয়া যায় না। কিন্তু, তার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করা হলে, তখনও যদি সে সম্পর্ক ঠিক রাখে, তাহলেই তাকে প্রকৃত সম্পর্ক স্থাপনকারী বলা যাবে ‘ (বুখারী, হাদিস : ৫৫৩২) অর্থাৎ, আত্মীয়তার সম্পর্ক পূর্ণ বজায় রাখা তখনই হবে, যখন কোনো সম্পর্ক ছিন্ন করতে ইচ্ছুক ব্যক্তির সঙ্গে সম্পর্ক জুড়ে রাখা হবে।
আত্মীয়তার পার্থক্য ও মর্যাদা অনুযায়ী সম্পর্কের মাঝে পার্থক্য হয়ে থাকে, বাবার সম্পর্ক আর দূর সম্পর্কের চাচাত ভাইয়ের সম্পর্ক এক হয় না।
অবস্থা অনুযায়ী এ সম্পর্কের পার্থক্য ঘটে। রুগি এবং মুখাপেক্ষীর সম্পর্ক ধনী এবং সুস্থের সমান হয় না। বড়-ছোটর সম্পর্কও এক হয় না। অনুরূপভাবে স্থান অনুযায়ী সম্পর্কের মাঝে পার্থক্য ঘটে। যে দেশের মাঝে আছে আর যে দেশের বাইরে আছে, তাদের সম্পর্ক এক রকম হয় না।
সম্পর্কের নিদর্শন হল পরস্পর সাক্ষাৎ এবং অবস্থা সম্পর্কে খোঁজ খবর নেওয়া, সালাম দেওয়া, ফোনের মাধ্যমে যোগাযোগ করা, পত্র লেখা ইত্যাদি।

Likes Comments
০ Share