“মনসুর, পাঁচ জন লেহ”,ঘাটমাঝি কে যাত্রীর হিসাব বলে সাম্পানের ইঞ্জিনে হ্যান্ডেল লাগিয়ে ঘুরাতে শুরু করে।প্রথম চেষ্টায় ইঞ্জিন ভট ভট শব্দে চালু হয়ে যায়।হাল ধরে বসে পরে হরি।বেশ কয়েকদিন ধরে বৃষ্টি হচ্ছে।ফিনফিনে বৃষ্টি না, ঝুম বৃষ্টি।বর্ষা শুরু হয়নি।তবুও এত বৃষ্টি।কেজানে,বর্ষায় কি হয়।এই কয়দিন বৃষ্টিতে নদীর পানি ঘোলের শরবতের মত ঘোলা হয়ে গেছে। ভাটি অঞ্চল থেকে গাছ বাঁশ এইসব ভেসে আসছে।অনেকে নৌকা নিয়ে ধরছে এইসব। এদের বেশির ভাগ ছোট ছেলে মেয়ে,কিশোর বা কিশোরী। পাহাড়ী নদী। তাই খুভ বেশি বৃষ্টি হলে পাহাড়ী ঢল নামে। সেই ঢলের সাথে উজানের দিকে ভেসে আসে পাহাড়ি গাছ –পালা,বাঁশ,নল-খাগড়া। একবার আস্ত সেগুন গাছ পেয়েছিল হরি। অনেক কষ্টে পাড়ে নিয়ে আসে। সেগুন কাঠের দাম মোটামুটি
অগ্নিমূল্য বলা যায়। কিন্তু পরদিন সেটি হাওয়া। মানুষ আজকাল চুরি করতে বাছ-বিচার করেনা। আর একটা সেগুন গাছ তো সে তুলনায়........., হরি ভাবে,কেন গাছটা ঘরে নিয়ে আসেনি,বাইরে ফেলে রেখেছিল।কয়েক হাজার টাকা টাকি মাছের মত হাত পিছলে বেরিয়ে গেল।
-‘অ শালম বদ্দা ,সাম্মান গান ইক্কিনি সাইড গর,আর গান ঘাডত লাগাই’।(অ শাহলম ভাই, সাম্পান টা একটু সাইড কর।আমারটা ঘাটে লাগাই।)
দেখতে দেখতে হরি অপর পাড়ে চলে এসেছে। সাম্পান টা পাকা ঘাটে ভিড়ায়।
একজন যাত্রী ভাড়া তুলে তার হাতে দেয়।
--‘এই ল, পোনের জনর উনপঞ্চাশ টেয়া। আত্তে একটেয়া ভাংতি নাই’।(পনের জনের উনপঞ্চাশ টাকা।আমার একটাকা ভাংতি নাই)
টাকা হাতে নিতে হরি ভাবে ,একটাকা নেই তো সাম্পানে উঠিস কেন। সাঁতার কেটে নদী পার হ।মনে মনে ওই যাত্রীর চৌদ্দগোষ্ঠী উদ্ধার করে।তার মত মানুষের কাছে একটাকা নেহাত কম না। সবাই নেমে গেলে সাম্পান একপাশে নিয়ে যায়।
-‘হরি,অ হরি,মিনতির পোয়া বলে হালত সেন গইত্তু নামি আর ন উডে?’(মিনতির ছেলে নাকি নদীতে গোছল করতে নেমে আর উঠেনি?)
তার পাশে সাম্পানে বসে থাকা রহমান মাঝি তাকে জিজ্ঞেস...
continue reading