Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.

জাকির পোয়েট্রি রায়হান

৯ বছর আগে লিখেছেন

জীবনানন্দের কবিতা পড়ে সারাটি জীবন পার করতে চাই

চলছি উধাও – জীবনানন্দ দাশ

চলছি উধাও, বল্গাহারা- ঝড়ের বেগে ছুটে
শিকল কে সে বাঁধছে পায়ে!
কোন্‌ সে ডাকাত ধরছে চেপে টুটি!
-আঁধার আলোর সাগরশেষে
প্রেতের মতো আসছে ভেসে!
আমার দেহের ছায়ার মতো, জড়িয়ে আছে মনের সনে,
যেদিন আমি জেগেছিলাম, সেও জেগেছে আমার মনে!
আমার মনের অন্ধকারে
ত্রিশূলমূলে, দেউলদ্বারে
কাটিয়েছে সে দুরন্ত কাল ব্যর্থ পূজার পুষ্প ঢেলে!
স্বপন তাহার সফল হবে আমায় পেলে, আমায় পেলে!
রাত্রিদিবার জোয়ার স্রোতে
নোঙরছেঁড়া হৃদয় হ’তে
জেগেছে সে হালের নাবিক
চোখের ধাধায় ঝড়ের ঝাঁঝে
মনের মাঝে মানের মাঝে
আমার চুমোর অন্বেষণে
প্রিয়ার মতো আমার মনে
অঙ্কহারা কাল ঘুরেছে কাতর দুটি নয়ন তুলে,
চোখের পাতা ভিজিয়ে তাহার আমার অশ্রুপাথার-কূলে!
ভিজে মাঠের অন্ধকারে কেঁদেছে মোর সাথে
হাতটি রেখে হাতে!
দেখিনি তার মুখখানি তো,
পাইনি তারে টের,
জানি নি হায় আমার বুকে আশেক-অসীমের
জেগে আছে জনমভোরের সূতিকাগার থেকে!
কত নতুন শরাবশালায় নাবনু একে একে!
সরাইখানার দিলপিয়ালায় মাতি
কাটিয়ে দিলাম কত খুশির রাতি!
জীবন-বীণার তারে তারে আগুন-ছড়ি টানি
গুঞ্জরিয়া এল-গেল কত গানের রানি,
নাশপাতি-গাল গালে রাখি কানে কানে করলে কানাকানি
শরাব-নেশায় রাঙিয়ে দিল আঁখি!
-ফুলের ফাগে বেহুঁশ হোলি নাকি!
হঠাৎ কখন স্বপন-ফানুস কোথায় গেল উড়ে!
-জীবন মরু- মরীচিকার পিছে ঘুরে ঘুরে
ঘায়েল হয়ে ফিরল আমার বুকের কেরাভেন-
আকাশ-চরা শ্যেন!
মরুঝড়ের হাহাকারে মৃগতৃষার লাগি
প্রাণ যে তাহার রইল তবু জাগি
ইবলিশেরই সঙ্গে তাহার লড়াই-হল শুরু!
দরাজ বুকে দিল্‌ যে উড়–উড়-!
ধূসর ধু ধু দিগন্তরে হারিয়ে যাওয়া নার্গিসেই শোভা
থরে থরে উঠল ফুটে রঙিন-মনোলোভা!
অলীক আশার, দূর-দুরশার দুয়ার ভাঙার তরে
যৌবন মোর উঠল নেচে রক্তমুঠি, ঝড়ের ঝুঁটির পরে!
পিছে ফেলে টিকে থাকার ফাটকে কারাগারে
ভেঙে শিকল ধ্বসিয়ে ফাঁড়ির দ্বার
চলল সে যে ছুটে!
শৃঙ্খল কে বাধল তাহার পায়ে-
চুলের ঝুটি ধরল কে তার মুঠে!
বর্শা আমার উঠল ক্ষেপে খুনে,
হুমকি আমার উঠল বুকে রুখে!
দুশমন কে পথের সুমুখে
-কোথায় কে বা!
এ কোন মায়া
মোহ এমন কার!
বুকে আমার বাঘের মতো গর্জাল হুঙ্কার!
মনের মাঝের পিছুডাকা উঠল বুঝি হেঁকে-
সে কোন সুদূরে তারার আলোরে থেকে
মাথার পরের খা খা মেঘের পাথারপুরী ছেড়ে
নেমে এল রাত্রিদিবার যাত্রাপথে কে রে!
কী তৃষা তার!
কী নিবেদন!
মাগছে কিসের ভিখ্‌!
উদ্যত পথিক
হঠাৎ কেন যাচ্ছে থেমে-
আজকে হঠাৎ থামতে কেন হয়!
-এই বিজয়ী কার কাছে আজ মাগছে পরাজয়!
পথ- আলেয়ার খেয়ায় ধোঁয়ায় ধ্রুবতারার মতন কাহার আঁখি
আজকে নিল ডাকি
হালভাঙা এই ভুতের জাহাজটারে!
মড়ার খুলি-পাহাড়প্রমাণ হাড়ে
বুকে তাহার জ’মে গেছে কত শ্মশান-বোঝা!
আক্রোশে হা ছুটছিল সে একরোখা, এক সোজা
চুম্বকেরই ধ্বংসগিরির পানে,
নোঙরহারা মাস্তুলেরই টানে!
প্রেতের দলে ঘুরেছিল প্রেমের আসন পাতি,
জানে কি সে বুকের মাঝে আছে তাহার সাথী!
জানে কি সে ভোরের আকাশ, লক্ষ তারার আলো
তাহার মনের দূয়ারপথেই নিরিখ হারালো!
জানি নি সে তোহার ঠোঁটের একটি চুমোর তরে
কোন্‌ দিওয়ানার সারেং কাঁদে
নয়নে নীর ঝরে!
কপোত-ব্যথা ফাটে রে কার অপার গগন ভেদি!
তাহার বুকের সীমার মাঝেই কাঁদছে কয়েদি
কোন্‌ সে অসীম আসি!
লক্ষ সাকীর প্রিয় তাহার বুকের পাশাপাশি
প্রেমের খবর পুছে
কবের থেকে কাঁদতে আছে-
‘পেয়ালা দে রে মুঝে!’

  হিন্দু-মুসলমান – জীবনানন্দ দাশ

মহামৈত্রীর বরদ-তীর্থে-পুণ্য ভারতপুরে

পূজার ঘন্টা মিশিছে হরষে নমাজের সুরে-সুরে!
আহ্নিক হেথা শুরু হয়ে যায় আজান বেলার মাঝে,
মুয়াজ্জেনদের উদাস ধ্বনিটি গগনে গগনে বাজে,
জপে ঈদগাতে তসবি ফকির, পূজারী মন্ত্র পড়ে,
সন্ধ্যা-উষার বেদবাণী যায় মিশে কোরানের স্বরে;
সন্ন্যাসী আর পীর
মিলে গেছে হেথা-মিশে গেছে হেথা মসজিদ , মন্দির!

কে বলে হিন্দু বসিয়া রয়েছে একাকী ভারত জাঁকি?
-মুসলমানের হসে- হিন্দু বেঁধেছে মিলন-রাখী;
আরব মিশর তাতার তুর্কী ইরানের চেয়ে মোরা
ওগো ভারতের মোসলেমদল, তোমাদের বুক-জোড়া!
ইন্দ্র প্রস্থ ভেঙেছি আমরা, আর্যাবর্ত ভাঙি
গড়েছি নিখিল নতুন ভারত নতুন স্বপনে রাঙি!
নবীন প্রাণের সাড়া
আকাশে তুলিয়া ছুটিছে মুক্ত যুক্তবেণীর ধারা!

রুমের চেয়েও ভারত তোমার আপন, তোমার প্রাণ!
হেথায় তোমার ধর্ম অর্থ, হেথায় তোমার ত্রাণ;
হেথায় তোমার আশান ভাই গো, হেথায় তোমার আশা;
যুগ যুগ ধরি এই ধূলিতলে বাঁধিয়াছ তুমি বাসা,
গড়িয়াছ ভাষা কল্পে-কল্পে দরিয়ার তীরে বসি,
চক্ষে তোমার ভারতের আলো-ভারতের রবি, শশী,
হে ভাই মুসলমান
তোমাদের তরে কোল পেতে আছে ভারতের ভগবান!

এ ভারতভূমি নহেকো তোমার, নহকো আমার একা,
হেথায় পড়েছে হিন্দুর ছাপ- মুসলমানের রেখা,
হিন্দু মনীষা জেগেছে এখানে আদিম উষার ক্ষণে,
ইন্দ্রদ্যুম্নে উজ্জয়িনীতে মথুরা বৃন্দাবনে!
পাটলিপুত্র শ্রাবস্তী কাশী কোশল তক্ষশীলা।
অজন্তা আর নালন্দা তার রটিছে কীর্তিলীলা!
ভারতী কমলাসীনা
কালের বুকেতে বাজায় তাহার নব প্রতিভার বীণা!

এই ভারতের তখতে চড়িয়া শাহানশাহার দল
স্বপ্নের মণিপ্রদীপে গিয়েছে উজলি আকাশতল!
গিয়েছে তাহার কল্পলোকের মুক্তার মালা গাঁথি
পরশে তাদের জেগেছে আরব উপন্যাসের রাতি!
জেগেছে নবীন মোগল-দিল্লি-লাহোর-ফতেহপুর
যমুনাজলের পুরানো বাঁশিতে বেজেছে নবীন সুর!
নতুন প্রেমের রাগে
তাজমহলের তরুণিমা আজও উষার আরুণে ‌জাগে!

জেগেছে হেথায় আকবরী আইন-কালের নিকষ কোলে
বারবার যার উজল সোনার পরশ উঠিল জ্বলে।
সেলিম, সাজাহাঁ- চোখের জলেতে এক্‌শা করিয়া তারা
গড়েছে মীনার মহলা স্তম্ভ কবর ও শাহদারা!
ছড়ায়ে রয়েছে তন্দ্রাবিহীন-অপলক, অপরূপ!
যেন মায়াবীর তুড়ি
স্বপনের ঘোরে ত্বব্ধ করিয়া রেখেছে কনকপুরী!

মোতিমহলের অযুত রাত্রি, লক্ষ দীপের ভাতি
আজিও বুকের মেহেরাবে যেন জ্বালায়ে যেতেছে বাতি-
আজিও অযুত বেগম-বাঁদীর শষ্পশয্যা ঘিরে
অতীত রাতের চঞ্চল চোখ চকিতে যেতেছে ফিরে!
দিকে দিকে আজও বেজে ওঠে কোন্‌ গজল-ইলাহী গান!
পথহারা কোন্‌ ফকিরের তানে কেঁদে ওঠে সারা প্রাণ!
-নিখিল ভারতময়
মুসলমানের স্বপন-প্রেমের গরিমা জাগিয়া রয়!

এসেছিল যারা ঊষর ধুসর মরুগিরিপথ বেয়ে,
একদা যাদের শিবিরে সৈন্যে ভারত গেছিল ছেয়ে,
আজিকে তাহারা পড়শি মোদের, মোদের বহিন-ভাই;
আমাদের বুকে বক্ষে তাদের ,আমাদের কোলে ঠাঁই
কাফের যবন টুটিয়া গিয়াছে ছুটিয়া গিয়াছে ঘৃণা,
মোস্‌লেম্‌ বিনা ভারত বিকল, বিফল হিন্দু বিনা
মহামৈত্রীর গান
বাজিছে আকাশে নব ভারতের গরিমায় গরীয়ান!

    সময়ের কাছে -জীবনানন্দ দাশ

সময়ের কাছে এসে সাক্ষ্য দিয়ে চ’লে যেতে হয়

কী কাজ করেছি আর কী কথা ভেবেছি।
সেই সব একদিন হয়তো বা কোনো এক সমুদ্রের পারে
আজকের পরিচিত কোনো নীল আভার পাহাড়ে
অন্ধকারে হাড়কঙ্করের মতো শুয়ে
নিজের আয়ুর দিন তবুও গণনা ক’রে যায় চিরদিন;
নীলিমার কাছ থেকে ঢের দূরে স’রে গিয়ে,
সূর্যের আলোর থেকে অন্তর্হিত হ’য়েঃ
পেপিরাসে- সেদিন প্রিন্টিং প্রেসে কিছু নেই আর;
প্রাচীন চীনের শেষে নবতম শতাব্দীর চীন
সেদিন হারিয়ে গেছে।

আজকে মানুষ আমি তবুও তো- সৃষ্টির হৃদয়ে
হৈমন্তিক স্পন্দনের পথে ফসল;
আর এই মানবের আগামী কঙ্কাল;
আর নব-
নব-নব মানবের তরে
কেবলি অপেক্ষাতুর হ’য়ে পথ চিনে নেওয়া-
চিনে নিতে চাওয়া;
আর সে-চলার পথে বাধা দিয়ে অন্নের সমাপ্তিহীন ক্ষুধা;
(কেন এই ক্ষুধা-
কেনই বা সমাপ্তিহীন!)
যারা সব পেয়ে গেছে তাদের উচ্ছিষ্ট,
যারা কিছু পায় নাই তাদের জঞ্জাল;
আমি এই সব।
সময়ের সমুদ্রের পারে
কালকের ভোরে আর আজকের অন্ধকারে
সাগরের বড়ো শাদা পাখির মতন
দুইটি ছড়ানো ডানা বুকে নিয়ে কেউ
কোথাও উচ্ছল প্রাণশিখা
জ্বালায়ে সাহস সাধ স্বপ আছে- ভাবে।
ভেবে নিক- যৌবনের জোবন্ত প্রতীকঃ তার জয়!
প্রৌঢ়তার দিকে তবু পৃথিবীর জ্ঞানের বয়স
অগ্রসর হ’য়ে কোন্‌ আলোকের পাখিকে দেখেছে?
জয়, তার জয়, যুগে-যুগে তার জয়!
ডোডো পাখি নয়;

মানুষেরা বার-বার পৃথিবীর আয়ুতে জন্মেছে;
নব নব ইতিহাস-সৈকতে ভিড়েছে;
তবুও কোথাও সেই অনির্বচনীয়
স্বপনের সফলতা- নবীনতা- শুভ্র মানবিকতার ভোর?
নচিকেতা জরাথ্রুস্ট্র লাওৎ-সে এঞ্জেলো রুশো লেনিনের মনের পৃথিবী
হানা দিয়ে আমাদের স্মরণীয় শতক এনেছে?
অন্ধকারে ইতিহাসপুরুষের সপ্রতিভ আঘাতের মতো মনে হয়
যতই শান্তিতে স্থির হ’য়ে যেতে চাই;
কোথাও আঘাত ছাড়া- তবুও আঘাত ছাড়া অগ্রসরসূর্যালোক নেই।
হে কালপুরুষ তারা, অনন্ত দ্বন্দের কোলে উঠে যেতে হবে
কেবলি গতির গুণগান গেয়ে- সৈকত ছেড়েছি এই স্বচ্ছন্দ উৎসবে;
নতুন তরঙ্গে রৌদ্রে বিপ্লবে মিলনসূর্যে মানবিক রণ
ক্রমেই নিস্তেজ হয় ক্রমেই গভীর হয় মানবিক জাতীয় মিলন?
নব-নব মৃত্যুশব্দ রক্তশব্দ ভীতিশব্দ জয় ক’রে মানুষের চেতনার দিন
অমেয় চিন্তায় খ্যাত হ’য়ে তবু ইতিহাসভুবনে নবীন
হবে না কি মানবকে চিনে- তবু প্রতিটি ব্যক্তির ষাট বসন্তের তরে!
সেই সুনিবিড় উদ্বোধনে- ‘আছে আছে আছে, এই বোধির ভিতরে
চলেছে নক্ষত্র, রাত্রি, সিন্ধু, রীতি, মানুষের বিষয় হৃদয়;
জয় অস্তসূর্য, জয়, অলখ অরুণোদয়, জয়।’

  আমাকে একটি কথা দাও -জীবনানন্দ দাশ

 

আমাকে একটি কথা দাও যা আকাশের মতো
সহজ মহৎ বিশাল,
গভীর; – সমস্ত ক্লান্ত হতাহত গৃহবলিভুকদের রক্তে
মলিন ইতিহাসের অন্তর ধুয়ে চেনা হাতের মতন,
আমি যাকে আবহমান কাল ভালোবেসে এসেছি সেই নারীর।
সেই রাত্রির নক্ষত্রালোকিত নিবিড় বাতাসের মতো:
সেই দিনের – আলোর অন্তহীন এঞ্জিন চঞ্চল ডানার মতন
সেই উজ্জ্বল পাখিনীর – পাখির সমস্ত পিপাসাকে যে
অগ্নির মতো প্রদীপ্ত দেখে অন্তিমশরীরিণী মোমের মতন।

(বেলা অবেলা কালবেলা, ১৯৬১)

    মনে হয় একদিন-জীবনানন্দ দাশ

মনে হয় একদিন আকাশে শুকতারা দেখিব না আর ;

দেখিব না হেলেঞ্চার ঝোপ থেকে একঝাড় জোনাকি কখন
নিভে যায় – দেখিব না আর আমি এই পরিচিত বাঁশবন ,
শুঁকনো বাঁশের পাতা -ছাওয়া মাটি হয়ে যাবে গভীর আঁধার
আমার চোখের কাছে – লক্ষ্মীপূর্ণিমার রাতে সে কবে আবার
পেঁচা ডাকে জোছনায় – হিজলের বাকা ডাল করে গুঞ্জরন ;
সারা রাত কিশোরীর লাল পাড় চাঁদে ভাসে – হাতের কাঁকন
বেজে ওঠে : বুঝিব না – গঙ্গাজল ,নারকোলনাড়ুগুলো তার

জানি না সে কারে দেবে – জানি না সে চিনি আর সাদা তালশাঁস
হাতে লয়ে পলাশের দিকে চেয়ে দুয়ারে দাড়ায়ে রবে কি না …
আবার কাহার সাথে ভালবাসা হবে তার – আমি তা জানি না;
মৃত্যুরে কে মনে রাখে ?… কীর্তিনাশা খুঁড়ে খুঁড়ে চলে বারো মাস
নতুন ডাঙার দিকে – পিছনের অবিরল মৃত চর বিনা
দিন তার কেটে যায় – শুকতারা নিভে গেলে কাঁদে কি আকাশ ??

    তোমাকে – জীবনানন্দ দাশ

একদিন মনে হতো জলের মতন তুমি।

সকালবেলার রোদে তোমার মুখের থেকে বিভা–
অথবা দুপুরবেলা — বিকেলের আসন্ন আলোয়–
চেয়ে আছে — চলে যায় — জলের প্রতিভা। মনে হতো তীরের উপরে বসে থেকে।
আবিষ্ট পুকুর থেকে সিঙাড়ার ফল
কেউ কেউ তুলে নিয়ে চলে গেলে — নীচে
তোমার মুখের মতন অবিকল। নির্জন জলের রঙ তাকায়ে রয়েছে;
স্থানান্তরিত হয়ে দিবসের আলোর ভিতরে
নিজের মুখের ঠান্ডা জলরেখা নিয়ে
পুনরায় শ্যাম পরগাছা সৃষ্টি করে; এক পৃথিবীর রক্ত নিপতিত হয়ে গেছে জেনে
এক পৃথিবীর আলো সব দিকে নিভে যায় বলে
রঙিন সাপকে তার বুকের ভিতরে টেনে নেয়;
অপরাহে আকাশের রং ফিকে হলে। তোমার বুকের পরে আমাদের পৃথিবীর অমোঘ সকাল;
তোমার বুকের পরে আমাদের বিকেলের রক্তিল বিন্যাস;
তোমার বুকের পরে আমাদের পৃথিবীর রাত;
নদীর সাপিনী, লতা, বিলীন বিশ্বাস।
Likes Comments
০ Share

Comments (5)

  • - মাইদুল আলম সিদ্দিকী

    emoticons

    • - কাজী যুবাইর মাহমুদ

      emoticons

    - মেঘ আবির

    ভাল লাগলemoticons