Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.

কালপুরুষ

১০ বছর আগে লিখেছেন

বৃষ্টি,আমার ভালবাসা

বৃষ্টি,আমার ভালবাসা

আমি বৃষ্টিকে ভালবাসি। বৃষ্টি সেটা বুঝতে পারে। তাই মাঝে মাঝে আহ্লাদে আটখানা হয়ে হুটহাট আমার গায়ে এসে পড়ে। আমি কখনো নিজেকে আড়াল করি, কখনো ওর কাছে নিজেকে মেলেধরি। সে আমাকে ছুঁয়ে যায়। সে আমাকে ছুঁতে ভালবাসে, আমিও ওকে ছুঁতে ভালবাসি। আমার সাথে ওর মান অভিমান প্রায় লেগেই আছে। তাই সে হঠাৎ আসে আবার পালিয়ে যায়। বছরের একটা সময় তাকে খুব কাছে পাই। সেই সময় সে আমার কাছে আসার জন্য ব্যকুল হয়ে ওঠে। আর দীর্ঘ সময় ধরে সে আমার কাছে কাছেই থাকে। আমার দরজা খোলা পেলেই হঠাৎ না বলে ঢুকে পড়ে। দরজা খোলা না পেলে, জানালায় হুমড়ি খেয়ে পড়ে। আবার কখনো দরজা জানালা ছেড়ে টিনের চালে অবিরত টোকা দিতে থাকে। আসল কথা হলো আমার ঘরটা তার ভীষণ প্রিয়। সব সময় সে আমার ঘরে আসার বাহানা করে। আমি তাকে ঘরে প্রবেশ করতে দেইনা বলে দুয়ারে এসে তুমুল কান্নাকাটি করে জলে ভাসিয়ে দেয়। মাঝে মাঝে আমি জানালা খুলে তার উচ্ছলতা দেখি। তার অভিমানী কান্না আমার ভাল লাগে। মাঝে মাঝে আদর করার ছলে জানালার বাইরে হাত রাখি, সে আমাকে কপট ছলে ভিজিয়ে দেয়।

বৃষ্টির অভিমানী কান্না আমি বুঝতে পারিনা। তার কান্নার জলে গাছের সবুজ পাতাগুলো আরও সজীব হয়ে ওঠে। খাল-বিল-নদী-নালার সাথে ওর সখ্য দারুন। ওরা মনে হয় বৃষ্টিকে আমার চেয়েও বেশী ভালবাসে। আমার তখন হিংসে হয়। বৃষ্টি সেটা বুঝতে পারে। তবু সে আমার কাছে আসে। কারণ সে জানে আমি তাকে নিয়ে দু’কলম লিখতে পারি। ওরা সেটা পারেনা। ওরা বৃষ্টিকে পেয়ে অথৈ জলে ফুলে ফেঁপে ওঠে, বিনিময়ে কিছুই দেয় না। ওদের কোন আবেগ নেই, কোন অনভূতি নেই। ওরা নির্জীব। আমার কাছে আবেগ আছে, উষ্ণতা আছে, অনুভব করার মতো একটা মন আছে। তাছাড়া আমার কাছে কাব্য আছে, সেই কাব্যে উপমা আছে। বৃষ্টি তাতেই খুশী।

আমি বৃষ্টিকে সাজাতে পারি নানা রূপে, নানা বর্ণে, নানা ছন্দে। বৃষ্টি ভীষণ খুশী হয়। তাই আমি না চাইলেও সে আমার কাছে আসে। আমি ঘুমিয়ে থাকলে সে তার রিমঝিম সুরে অনবরত গান করে। আমার মনে নিত্য নতুন কাব্য সৃষ্টি করে। বৃষ্টি অবলীলায় আমার প্রিয়তমা হয়ে ওঠে। মেঘরাজা তার মেঘসৈন্য পাঠিয়ে সূর্যটাকে আড়াল করে রাখে। বর্ষারাণী সারাটা আকাশের গায়ে কাজল মাখিয়ে তার আদরের কুমারিকন্যা বৃষ্টিকে আমার হাতে সঁপে দেয়। আমি তাকে নিয়ে ঘর বাঁধিনা কিন্তু ঘর বাঁধার স্বপ্ন খুঁজে পাই। আমি তাকে নিয়ে বাসর সাজাইনা, কিন্তু বাসর গড়ার তাগিদ অনুভব করি। আমি তাকে নিয়ে সংসার করিনা কিন্তু সংসার গড়ার ইচ্ছে খুঁজে পাই। বৃষ্টি আমার মরুময় জীবনের সমস্ত রুক্ষতা ধূয়ে আমাকে বৃষ্টিস্নাত করে দেয়। তাই আমি অকপটে স্বীকার করি- বৃষ্টি আমি তোমাকে ভীষন ভালবাসি। আমার প্রেমিক মনে তোমার কুমারি হৃদয়ের অবিরাম সিঞ্চন যেন নিষ্পাপ এক প্রেমের আকুতি। আমি সাড়া না দিয়ে থাকতে পারিনা। ওগো বৃষ্টি, তুমিই আমার নীরব ভালবাসা।

Likes Comments
০ Share

Comments (1)

  • - ঘাস ফুল

    সরু রাস্তা, ইটের সারি, পাখি এরা যদি সব কিছু দূরে সরিয়ে রেখে একত্রে থাকতে পারে তবে আমরা কেন মানুষ হয়ে সব ভেদাভেদ ভুলে, জাতি ধর্ম বর্ণ ভুলে একত্রে থাকতে পারি না জানি না। তবে কি আমরা এখনো সভ্য হতে পারি নাই। ভালো লাগলো কবিতা অর্ক। 

    • - জাওয়াদ আহমেদ অর্ক

      আমরা একসাথে থাকতে পারি না দেইখাই আমরা মানুষ , না হলে ইট ,বালি , সিমেন্ট হইতাম । অর্থাৎ আমি যেইটা বলতে চাচ্ছি , মানুষ ভুল করবে এইটাই স্বাভাবিক । কিন্তু মানুষের সাথে মানুষের কোন্দল কমাইয়া আনার চেষ্টায় সব সময় লিপ্ত থাকতে হবে । তাহলে একদিন হয়ত সবাই মিলেমিশে থাকতে পারব । ধন্যবাদ  

    - আলভিনা চৌধুরী

    শেষের প্যারা টা বেশি ভাল্লাগসে :) 

     

    • - জাওয়াদ আহমেদ অর্ক

      ধন্যবাদ । 

    - মাসুম বাদল

    চমৎকার !!! 

    • - জাওয়াদ আহমেদ অর্ক

    Load more comments...