পাশা ভাই আগের দিন ফোন দিয়ে বলে দিলেন সময় মতো পুরস্কার বিতরণের দিন চলে আসবার জন্য। সময় মতো কথাটা আমাকে সব সময় ভাবিত করে! কথা দিলাম সময় মতো আশার চেষ্টা করবো অবশ্য আমার পূর্ব অভিজ্ঞতা বলে, ক্ষেত্র বিশেষ এবং যানজট জনিত সমস্যা না হলে কোথাও অসময়ে পৌঁছেছি বলে মনে হয় না। সময় জ্ঞান সব সময় আমাকে তাড়িত করে আর সে তাড়না থেকে নির্দিষ্ট সময়ের পূর্বে যে কোন স্থানে পৌঁছে যাওয়াটা আমার স্বভাবজনিত অভ্যাস বলা যায়। সে হিসেবে নক্ষত্র কার্যালয়ের নিচে গতকাল আধ ঘণ্টা আগেই পৌঁছে গেলাম। পোস্টে নক্ষত্র কার্যালয়ের ফ্লোর নাম্বার এবং অফিস গেটে নেমপ্লেট না থাকায় কয়েক মিনিট খোঁজাখুঁজি করে অবশেষে কার্যালয়ে উপস্থিত হতে পেরে ছিলাম।
ভেবেছিলাম পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান হবে উৎসব উৎসব ভাব নিয়ে হয়ত পুরস্কার গ্রহীতা দের অভ্যর্থনা জানাতে কর্তৃপক্ষ দারুণ আয়োজন নিয়ে অপেক্ষা করছেন কিন্তু সে চিন্তায় গুঁড়ে বালি! কার্যালয়ে প্রবেশ করেই দেখি আরিফুর রহমান ভাই ছাড়া আর কেউ নেই! নিজের পরিহিত পোশাকের দিকে তাকালাম আড় চোখে, নাহ, সবই তো ঠিক আছে, তাহলে সমস্যা কোথায়? ও হ্যাঁ বলে নেই, যদিও প্রতিযোগিতায় সম্মানিত পাঠক ভোটে ৩য় স্থান অধিকার করেছিলাম কিন্তু পুরস্কার গ্রহীতাদের মধ্যে আমিই ১ম উপস্থিত হয়ে ছিলাম পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে।
আরিফ ভাইয়ের সাথে আলাপ শুরু হল প্রতিযোগিতার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে। তাঁর সাথে কথার ফাঁকে নোটিশ বোর্ডের দিকে চোখ পড়তে আয়োজনের একটা সূচি দেখতে পেলাম এবং তাতে হালকা নাস্তার আয়োজন হবে তা বুঝতে পারলাম। এরই ফাঁকে প্রতিযোগিতায় ২য় ক্যাটাগরিতে ২য় স্থান অর্জনকারী ব্লগার কে এম রাকিব এসে উপস্থিত হলেন ততক্ষণে তিনটা বেজে গেছে। আমাদেরকে রেখে আরিফ ভাই বের হয়ে গেলেন। রাকিবের সাথে আলাপ চলার পর বাকিরা (পুরস্কার গ্রহণের জন্য যে ক’জন উপস্থিত ছিলেন) উপস্থিত হতে থাকলেন একে একে। শ্রদ্ধেয় নীল সাধু ভাই, পাশা ভাই এলেন তারপর। আমাদের দেশে কোন কাজ সময় মতো হয় না, সে কথাটিকে আরেক বার সত্য প্রমাণ করে দিয়ে অল্প উপস্থিতি নিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হল নির্দিষ্ট সময়ের প্রায় দেড় ঘণ্টা পর। যদিও দেরিতে শুরু করার কারণও কর্তৃপক্ষ বলেছেন কিন্তু আমার মতো যারা এ দুর্মূল্যের বাজারে এখনও সময়কে প্রাধান্য দিয়ে চলেন, তারা হয়ত বাহ্যিক ভাবে মেনে নিলেও প্রকৃত পক্ষে এ যুক্তি মেনে নেন নি।
যদিও প্রতিযোগিতায় ক্যাটাগরি ১ এ ৩য় স্থান লাভ করেছিলাম তবুও আমাকে প্রথমেই বলা হল অনুভূতি ব্যক্ত করার জন্য কিন্তু অনুভূতি যেখানে মিশ্র এবং কিছুটা অভিযোগ মিশ্রিত সেখানে বিস্তারিত অনুভূতি ব্যক্ত করলে অনেকেরই তা ভাল লাগবে না বিধায় কেবলমাত্র নক্ষত্র ব্লগের এ উদ্যোগকে শুভ কামনা জানিয়ে আগামিতে পাশে থাকবো এ প্রতিশ্রুতির কথা ব্যক্ত করে সংক্ষিপ্ত অনুভূতির প্রকাশ করে ফিরে আসি নিজ আসনে।
ও হ্যাঁ একটি কথা, দেশের ক্ষমতাশীল রাজনীতিবিদ গণ যেভাবে আম জন সাধারণের ওপর তাদের কাজের দায় ভার চাপিয়ে দেন, তেমনি সৃজনশীল ব্লগিং প্রতিযোগিতা ২০১৪ এর আয়োজকরাও প্রতিযোগিতার সমস্ত দায়ভার ব্লগার দের উপর চাপিয়ে দিয়ে তারা তাদের অবস্থান পরিষ্কার করতে চেষ্টা করেছেন। এক্ষেত্রে তাদের রক্ষণশীল মনোভাব আমার মতো কিছু কিছু ব্লগারকে ব্যথিত করলেও তাদের প্রচেষ্টা যে ভাল এবং ব্লগিংকে গতিশীল করার জন্যে, সে কথা ভেবে নিজেকে সান্ত্বনা দিয়েছি এবং মনে মনে শুভ কামনা জানিয়ে প্রাপ্ত পুরস্কার নিয়ে বইমেলার উদ্দেশ্যে চলে এসেছি। নক্ষত্র এগিয়ে যাক প্রকৃত সৃজনশীতলাকে সঙ্গী করে এই হোক শুভ কামনা। ধন্যবাদ কর্তৃপক্ষকে, ধন্যবাদ নক্ষত্রকে, আমাদের লেখালেখিকে প্রকাশের একটি প্লাটফর্ম তৈরি করে দিয়েছেন সে জন্যে।
অফ টপিক: আয়োজনে হালকা নাস্তার ব্যবস্থা থাকলেও কিন্তু শেষ পর্যন্ত কোনো নাস্তার ব্যবস্থা করা হয় নি। হয়ত আগত পুরস্কার গ্রহীতারা সংখ্যায় অপ্রতুল কিংবা মোটামুটি অখ্যাত ছিলেন বিধায় নাস্তার আয়োজন বাদ দেয়া হয়েছে, কিংবা এক কাপ চা দিয়েও আমাদের অপেক্ষারত কণ্ঠ ভেজানোর প্রয়োজন মনে করা হয় নি।
Comments (20)
বাবা হারানোর করুন ছড়া। সুন্দর লিখেছেন।
শুভকামনা রইলো মেঘালয়।
কষ্টের ছড়া
লেখা সুন্দর হইছে