এক ছিল রাজা। রাজার ছিল বিশাল ফুলের বাগান। অবসরে রাজা বাগানে পায়চারী করতো। বাগানের একপাশে ছিল মস্ত আম গাছ। আম গাছের মগডালে বাসা বেধেছিল এক গৃহী কাঁক। এ ভাগাড়, ও ভাগাড় ঘুরে ঘুরে দিব্যি দিন কাটাচ্ছিলো কাঁক। একদিন ময়লার ভীতর থেকে একটা টাকা কুড়িয়ে পায় কাঁক। সেই থেকেই শান্তির তিরোধান; অশান্তির আগমন। হঠাৎ অর্থ প্রাপ্তিতে কাঁকের মাথা ঘুরে যায়। সে আম গাছের মগডালে বসে সারাদিন গলা ফাটিয়ে গান গায়,
:আমি টাকার গরমে ম’লাম।
:আমি টাকার গরমে ম’লাম।
রাজ্যে একজন টাকার গরমে মারা যাচ্ছে রাজার তা সহ্য হবে কেন? রাজার হুকুমে সিপাহীরা কাঁকের বাসা থেকে টাকাটা নিয়ে রাজকোষে জমা দিলো। পরের দিন রাজা বাগানে ঢুকতেই কাঁকের নতুন গান শুরু হলো। মাথা দুলিয়ে, তাল মিলিয়ে কাঁক গান ধরলো,
:আমার ধন কে’না খায়?
:রাজা ব্যাক্তি সে’ও খায়!
কাঁকের এই গান শুনে রাজাতো লজ্জায় বেগুনী হয়ে গেল। যা ছিল মান, সবই বুঝি গেল। সসম্মানে কাঁকের টাকা ফেরৎ দেওয়ার হুকুম দিলেন। কাঁকের টাকা নেওয়ার জন্য এক সিপাহীকে বেত্রাঘাত করা হল। কিন্তু এত করেও লাভ হলনা। কাঁকের সংগীত প্রীতি তখনও যায়নি। সে আবার গান ধরলো,
:আমার ভয় কে’না পায়!
:রাজা ব্যাক্তি; সে’ও পায়!
গল্পটা অহেতুক। নেই কাজ তো খই ভাজ; এই আর কি! রাজ দন্ডাদেশে গল্পের কাঁককে শুলে চড়ানো হয়। বাস্তবে কাঁকের জীবনে অর্থের মূল্য নেই; মানুষের আছে। কাঁক টাকার গরমে মরলে মরুক কিন্তু মানুষের গায়ে একবার যদি টাকার গরম লাগে, অসুবিধা হয়ে যায়। অসুবিধা হয়ে যায়!