Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.

শুভ

১০ বছর আগে লিখেছেন

শুধু তোমারই জন্য (শেষাংশ)


আমি রাহাত

রাতের বৃষ্টি আমি অনেকদিন দেখিনা। রাতের মধ্য প্রহরে ঝুম বৃষ্টির মধ্যে হাঁটতে কেমন লাগে তা জানতাম না আমি।

রিষ্টওয়াচে প্রায় আড়াইটা বাজে। শরীরে বৃষ্টির হিমশীতল ফোঁটা তীরের মত বিঁধছে। প্রায় আড়াই ঘণ্টা ধরে হাঁটছি আমি। তবে ভালই লাগছে আমার। অন্যরকম অনুভুতি। দক্ষিণ আমেরিকার জঙ্গলের যুদ্ধগুলোর স্মৃতি মনে পরে যাচ্ছে। একদমই যে খারাপ লাগছে না তা নয়।

আমার এত প্রিয় দামী সেডানটার এমন ভয়ঙ্কর পরিণতি দেখলে দুঃখ হওয়ারই কথা। তবে মীরা আমাকে বোকা বানিয়েছে এটা ভেবে মজা পেয়েছি। ও আমার আসল পরিচয় খুব সম্ভবত আইএসআইয়ের কাছ থেকে পেয়েছে। সব জানতে পেরেই ও ফাঁদটা পেতেছে।

খুব ভাগ্যগুণে বেঁচে গেছি আমি। শুধু তখন যদি সিগারেট কেনার জন্য না নামতাম। এই বৃষ্টি দেখবার সৌভাগ্য আমার আর হতনা। সিগারেট কিনে গাড়ির কাছাকাছি আসা মাত্রই কলটা আসে আমার পার্সোনাল মোবাইলে। কলটা বলতে গেলে অপ্রত্যাশিতই ছিল। একটু দূরে দাঁড়িয়ে কথা বলতে বলতেই আমার শখের সেডান আমার চোখের সামনে অগ্নিগোলকে পরিণত হল। শকওয়েভের প্রচণ্ড ধাক্কায় উড়ে গিয়ে হাত দশেক দূরে গিয়ে পরলাম।

দশ মিনিট ওভাবেই পড়েছিলাম। যখন নিশ্চিত হলাম যে বেঁচে আছি তখন উঠে বসলাম। জনশূন্য রাস্তায় এই মাঝরাতেও লোক জমা হয়ে যাচ্ছে। আমি উঠে যেন কিছুই হয়নি এমন ভাব নিয়ে হাঁটতে শুরু করলাম। আর তখনই শুরু হল মুষলধারে বৃষ্টি।

দশ বছর আগে সি.আই.এ আমাকে একটা কাজ দেয়। কোন এক হ্যাকার তাদের অনেক হাইলি ক্লাসিফাইড ইনফরমেশন হ্যাক করে তাদের শত্রু দেশগুলোর কাছে বিক্রি করছে। আমার কাজ ছিল সেই হ্যাকারকে ট্র্যাক করে বের করা ও তারপর তাকে শেষ করে দেওয়া। আমি তখন ফিলিস্তিনের মুক্তিকামী গেরিলাদের সাথে যুদ্ধ করছিলাম ইসরায়েলের বিরুদ্ধে। কাজটা আমি ফিরিয়ে দেই। সেই হ্যাকার একটা কোড ব্যবহার করত। হায়াবুসা। মীরার কথায় আমার আর বুঝতে বাকি নেই মীরাই সেই হায়াবুসা।

সি.আই.এ, এম.আই.সিক্স, এফ.এস.বি, মোসাদ. সবার লিস্টের মোস্ট ওয়ান্টেড সাইবার ক্রিমিনাল। প্রায় সতেরো বছর ধরে সাইবার জগতের ত্রাস। সব ইন্টেলিজেন্স এজেন্সি বলে হায়াবুসা নাকি আনটাচেবল।

অবশ্য মীরা আমাকে না বললে আমিও জানতাম না। ও নিশ্চয়ই অনেক আগে থেকে এই কাজটা শুরু করেছে। আমরা কেউই জানতে পারিনি। আমাদের বন্ধুদের সাথে কখনোই শেয়ার করেনি। তবে একটা সমস্যা হয়ে গেছে। মীরা সম্ভবত জানেনা যে ওর পরিচয় ফাঁস হয়ে গেছে। মোসাদ ওকে ট্রেস করে ফেলেছে। মাসখানেক আগে মিডল ইস্টের এক সোর্সের কাছ থেকেই এই খবরটা পেয়েছে ওরা। ওরা ট্রেস করতে পারলেও এখনও ওর পরিচয় জানেনা। তবে যেহেতু ট্রেস করতে পেরেছে। পরিচয় বের করা মোসাদের জন্য ছেলের হাতের মোয়া। আমাকে ও মারতে চাইল কেন এই চিন্তা পরে আগে ওকে বাঁচাতে হবে।

রাস্তার পাশে একটা চায়ের দোকান দেখে এগিয়ে গেলাম আমি। আমার বৃষ্টিতে ভেজা বিদ্ধস্ত করুণ অবস্থা দেখে বৃদ্ধ চাওয়ালা অবাক চোখে তাকিয়ে রইল। আমি তার দিকে তাকিয়ে মিষ্টি করে হাসলাম।

-চাচা, একটা লাল চা আর একটা বেনসন দেন। আর ঢাকা যাওয়ার বাস কই পাব একটু বলেনতো।

বাস ছাড়বে ঘণ্টা দুয়েক পর। মোবাইলটা বের করলাম। মোসাদে আমার কিছু লিঙ্ক আছে এদের কাছ থেকে খবর নিতে হবে। আমার পার্সোনাল সেক্রেটারি লিসাকে কল দিলাম।

-হ্যালো স্যার। কি ব্যাপার? এত রাতে। কোন সমস্যা?

-লিসা তোমাকে আমি একটা ফোন নম্বর দেব। এখনই এই নম্বরে কল করে তুমি আমার এই নম্বরটা পাস করবে।

-জ্বি স্যার। আপনি নম্বর বলেন।

-এটা ইন্টারন্যাশনাল কল। এক ভদ্রলোক ধরবেন। তার সাথে বাংলায়ই কথা বোলো। উনি বাংলা জানেন। নম্বরটা লিখে নাও।

নম্বরটা আব্বাস আলী নামের একজন ব্যবসায়ির। এসপিওনাজ জগতের সব ধরনের খবর এর কাছে পাওয়া যাবে। এই লোক আমার পুরনো বন্ধু। থাকে ডেনমার্কে। সেখানে এর একটা রেস্টুরেন্ট আছে। সেটা শুধু নামেই। এই রেস্টুরেন্টের পেছনের ঘরে প্রতিদিন অনেক মুল্যবান গোপন তথ্য টাকার বিনিময়ে হাতবদল হয়। এক্স সি.আই.এ। এসপিওনাজ জগতের সর্বশেষ যেকোন ইনফরমেশন এর কাছ থেকে পাওয়া যাবে।

এটাই তার আসল ব্যবসা। রেস্টুরেন্টটা লোক দেখানো। হায়াবুসাকে শেষ করার কন্ট্রাক্ট দশ বছর আগে এই লোকই আমাকে এনে দিয়েছিল সি.আই.এর তরফ থেকে। তখন মধ্যপ্রাচ্চে সি.আই.এর অপারেটর ছিল এই লোক। ধরা পরেছিল গেরিলাদের হাতে। আমি ছেড়ে দিয়েছিলাম কিছু ইনফরমেশনের বিনিময়ে। আমাকে সেদিন বলেছিল সে পৃথিবীর যেখানেই থাকুক কোন আমার কোন প্রয়োজন হলে সে লাগলে জান দিয়ে দেবে।

আজ আমার সাহায্যের খুবই প্রয়োজন। মোবাইল ভাইব্রেট করছে। রক্তের প্রতিটি কনিকায় উল্লাস বোধ করলাম আমি। আবার খেলা জমে উঠেছে।

-“আব্বাস। আমি Phantom.”

-“আরে দোস্ত এতদিন কোথায় ছিলে? এত বছর পর বন্ধুকে মনে পড়ল?”

-“I need your help Abbas. Do you remember about project hayabusa? মোসাদের লেটেস্ট এক্টিভিটি কি?”

-“আরে দোস্ত! মোসাদের হারামি গুলো ওকে খুঁজে বের করেছে। ওরা একজন টেক এক্সপার্ট সহ চারজনের একটা ইউনিট পাঠিয়েছে ওকে খতম করার জন্য। আরেকটা মজার বিষয় কি জানো? এই হ্যাকার বাঙালী এক মহিলা।”

-“মোসাদ এজেন্টদের ডিটেইলস আমাকে মেইল কর জলদি।”

-“হুম। তা করছি। ওরা সবাই আমেরিকান টুরিস্টের ছদ্মবেশে বাংলাদেশে ঢুকবে। ওদের সবার কাছেই আমেরিকান পাসপোর্ট থাকবে। দুইদিনের মধ্যে অপারেশন শেষ করার অর্ডার আছে ওদের কাছে। সবাই কেনেডি এয়ারপোর্ট থেকে প্লেনে উঠেছে। আগামীকাল দুপুর দুটায় ওরা বাংলাদেশে পৌঁছবে।”

-“অনেক ধন্যবাদ। তোমার এই উপকার আমি কখনোই ভুলব না।”

-“ধন্যবাদ কেন old sport? তুমি না থাকলে আমি এতদিনে মরে ভুত হয়ে যেতাম। আমি তো তোমাকে কৃতজ্ঞতা জানানোর চেষ্টা করছি মাত্র।”

ফোন রেখে বড় একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললাম আমি। সামনে যুদ্ধ। রণকৌশল ঠিক করতে হবে। কিন্তু মেইলটা বিশেষ দরকার। জানা দরকার প্রতিপক্ষের দৌড় কতদুর।

০৯
আমি মীরা

ব্যালকনিতে একটা চেয়ারে হেলান দিয়ে বসে আছি আমি। মন ভাল নেই। কি করবো বুঝতে পারছি না।

রাহাতকে সত্যি ভালবাসতাম আমি। ওকে আমি এভাবে মারতে চাইনি। কিন্তু আমার কিছুই করার ছিল না। নিজের অস্থিত্ব রক্ষার জন্যই ওকে এভাবে শেষ করে দিতে হলো। সত্যি কিছুই করার নেই।

ভার্সিটির দিনগুলোর কথা একে একে মনে পড়ছে আমার। কি দিন ছিল! সারাদিন বন্ধুদের সাথে ক্লাশ, খুনসুটি, বেড়াতে যাওয়া, বাইরে টংয়ে বসে চা খাওয়া, খুব মিস করি সেইদিনগুলো।

আসফাককে প্রথমদিকে পছন্দ করতাম আমি। কিন্তু সেটা শুধু পছন্দই ছিল। মনের ভেতর থেকে ভালবাসার অস্তিত্ব টের পাইনি কখনো। তবুও কি মনে করে যেন ওর প্রস্তাবে রাজি হয়েছিলাম। ছমাস প্রেম করার পর ও আমাকে ছেড়ে চলে যায়। সত্যি বলতে একটু খারাপ লাগেনি আমার।

তারপর রাহাতকে দেখলাম আমি। ওর সাথে বন্ধুত্ব হলো। ওকে ভালবেসে ফেললাম। কিন্তু মুখ ফুটে বলতে পারিনি কখনো। আমাকে অনেক কষ্ট দিয়েছে ও। তাই পরে যখন ও আমাকে প্রপোজ করে, আমি সরাসরি সবার সামনে না করে দিই। এই না করাটাই আমার জন্য কাল হয়ে দাঁড়ায়।

আশফাক আবার আমার জীবনে ফিরে আসে। শুধুমাত্র রাহাতের উপর জেদ করেই আশফাককে আমার কাছে আসতে দিই আমি। ওকে বিয়ে করে ফেলি। নইলে কখনো আশফাকের মতো মানুষকে আমার ধারে-কাছেও ঘেষতে দিতাম না আমি। শুধু মাত্র জেদের বসে জীবনের সবচেয়ে বড় ভুলটা করে বসি আমি।

এখন মনে হচ্ছে, রাহাতকে তখন না করে দিয়ে কি ভুলটাই না করেছিলাম। জেদের বসে আশফককে যদি বিয়ে না করতাম, তাহলে হয়তো আমার জীবনটা এমন হতো না। রাহাতকেও এভাবে মেরে ফেলতে হতো না। এখন নিজেকে সারাটা জীবন দোষী ভেবে যেতে হবে।

কান্না পাচ্ছে আমার। এখন কাঁদলে কেউ দেখবে না। এখন কাঁদব আমি। কেঁদে নিজের ভেতরের আবেগটুকু বের করে দেবো। জ্বলোচ্ছাস যেমন তীরের সবকিছু ভাসিয়ে নিয়ে যায়, তেমনি কান্নাটা আমার সব আবেগকে ভাসিয়ে নিয়ে যাবে। আবার হয়তো ঘুরে দাড়াতে পারবো আমি।

আমাকে ঘুরে দাড়াতেই হবে।

১০
আমি রাহাত

দশটার দিকে ঢাকা পৌঁছলাম। প্রথমেই ধানমণ্ডির ফ্ল্যাটে এলাম। সেখান থেকে ফোন করে মা বাবার খোঁজ নিলাম। বললাম কিছুদিনের জন্য বেড়াতে যাচ্ছি। লিসাকে কল করে বললাম আমাকে অফিসের ল্যান্ডক্রুজারটা পৌঁছে দিতে।

এই বাড়ির বেডরুমে আমার সব ইকুইপমেন্ট রাখি আমি। ওয়াল কেবিনেটের নিচের তাক থেকে পুরনো একজোড়া শু নাইফ বের করলাম। বিশেষ ভাবে তৈরি জুতো। গোড়ালি মেঝেতে ঠুকলেই সামনে তিন ইঞ্চি ফলা বেরিয়ে আসে। কেবিনেটের পিছনের ফলস প্যানেল খুলে বের করে আনলাম একটা HK 45 পিস্তল। যত্নের সাথে তাতে একটা ট্যাক্টিকাল লেসার লাইট আর সাইলেন্সার লাগালাম। রান্নাঘরে লুকানো জায়গা থেকে নিলাম একটা কারাম্বিট নাইফ আর একটা স্টিলেটো। লিভিং রুমের সোফার গদির নিচ থেকে বের করে আনলাম একটা হেক্লার এন্ড কচ mp5. এটাচমেন্ট হিসেবে সেটাতে রেড ডট সাইট আর সাইলেন্সার লাগালাম। স্টোররুম থেকে নিয়ে এলাম বেশ কয়েকটা হ্যান্ডগ্রেনেড আর ফ্ল্যাশব্যাং।

এবার আমি তৈরি। লিসা বারোটার দিকে এসে গাড়ি দিয়ে যাবে। ততক্ষণে শাওয়ার নিয়ে নিলাম আমি। আব্বাসের মেইল থেকে ডোশিয়ে গুলো প্রিন্ট করে নিলাম। আব্বাস আরও কিছু তথ্য দিয়েছে। ওরা অস্ত্রের ব্যবস্থা করবে আন্ডারওয়ার্ল্ডের কাছ থেকে। এই ব্যাপারে ওদের “কানকাটা শহিদুল” নামের এক শীর্ষ সন্ত্রাসী সাহায্য করবে। যার বিনিময়ে সে প্রায় দু লাখ টাকা পাচ্ছে।

শার্টের নিচে একটা লাইটওয়েট বুলেটপ্রুফ ভেস্ট পরে নিলাম। কাঁধে ঝোলালাম শোল্ডার হোলস্টার । পায়ে শু নাইফ পরে নিলাম। গ্রেনেডগুলো আর সাবমেশিনগানটা একটা ব্যাগে ভরে নিলাম। সাথে নিলাম সাবমেশিনগান আর পিস্তলের জন্য বেশকিছু কার্তুজের ম্যাগাজিন। কলিংবেল বেজে উঠল। লিসা এসে গেছে।

চারটা বাজে প্রায়। দেড়ঘন্টা ধরে এয়ারপোর্টের এরাইভালের সামনে দাঁড়িয়ে আছি। এক পশলা বৃষ্টি অলরেডি হয়ে গেছে। আকাশের মুখ এখনো গোমড়া।

হঠাৎ ওদের দেখলাম আমি। চারজনের একটা হাসি খুশী দল। দেখে কিছুই বোঝার উপায় নেই। সবচে লম্বাজনের নাম সিজার। মোসাদের টর্চার স্পেশালিস্ট। চশমাওয়ালাটা রবিন। কোভার্ট অপসের লোক। একটা অত্যন্ত রূপবতী মেয়েকেও দেখছি। ও হচ্ছে জ্যানেট। এই মেয়েটাই ওদের পাথফাইন্ডার। মোসাদের সাইবার ক্রাইম ইউনিটের অপারেটর। শেষজন ডিউক। ও হচ্ছে আমারই মত একজন গুপ্তঘাতক। ফ্রিল্যান্সার। একটা মাইক্রো এসে ওদের তুলে নিল। মাইক্রোর ড্রাইভারটাই সম্ভবত শহিদুল। ওদের পিছু নিয়ে রূপসী বাংলা হোটেল পর্যন্ত গেলাম আমি। এবার মীরা আর নিধিকে বাড়ির ভেতর আটকাতে হবে। ওদের বাড়ির দিকে গাড়ি ঘোরালাম।

মীরাদের বাড়িটা অনেক সুন্দর। ডুপ্লেক্স বাড়ি। দারোয়ানটাকে ঘুম পাড়িয়ে রেখে এসেছি। মীরা আর নিধিও ঘুমাচ্ছে। নিধি বাদে বাকি সবাইকে ঘুমের ওষুধ ইঞ্জেক্ট করতে হয়েছে। একটা ব্যাপার লক্ষ করে অবাক হলাম মীরা আজ আমাকে দেখে খুশী হয়েছে। যেন আমি মরিনি বলে স্বস্তি পেয়েছে। খুশীতে খাবি খাচ্ছিল। এই মেয়েটাকে আমি কোনদিনও বুঝতে পারলাম না। পরে যখন আমি মীরাকে বিপদটা বোঝানোর চেষ্টা করি তখন ও ভয় পেয়ে যায় । তাও নিজের জন্য না নিধির জন্য। সব কথা আমাকে খুলে বলে সে।

ও ছিল চাইল্ড জিনিয়াস বা প্রডিজি। তার মা বাবা ছাড়া আর কেউই এই ব্যাপারটা জানেনা। অনেক অল্প বয়সেই হ্যাকিঙের বিদ্যা আয়ত্তে আসে তার। মাত্র পনেরো বয়স থেকেই এই কাজ করা শুরু করে সে। আমাদের সাথে যখন পড়ত তখন থেকেই হায়াবুসা নামে কাজ শুরু করে। একটা কম্পিউটার আর নেট কানেকশন থাকলে যেকোনো সিকিউরিটি সিস্টেম গুঁড়িয়ে দেবার ক্ষমতা ওর আছে। ও আমার পরিচয় জেনেই আমাকে হায়ার করে নিজেকে মারার জন্য। কারণ ও জানত যে এই কাজ আমি করতে পারব না। ওর স্বামী ওকে মারতে চায় এটা জানতে পারলে আমি ওর স্বামীকেই মেরে ফেলব এটা জাস্ট ওর অনুমান ছিল।

ওর হাসব্যান্ডের শারীরিক আর মানসিক নির্যাতনে অতিষ্ট হয়েই এটা করেছে সে। আমি থাকা মানেই অপরাধের প্রমাণ থাকা তাই আমাকেও শেষ করে দিতে চেয়েছিল।

ওকে আমার প্ল্যান ব্যাখ্যা করলাম। কিন্তু ও রাজি হল না। নিধিকে নিয়ে আমাকে পালিয়ে যেতে বলল। পরে জোর করে ঘুমের ইঞ্জেকশন দিতে হয়েছে। প্রচুর ধ্বস্তাধস্তি করতে হয়েছে বাকি সবার সাথেই। চব্বিশ ঘন্টার জন্য আমি নিশ্চিন্ত। নিধি আগেই ঘুমাচ্ছিল। ওকে এখনো জাগাইনি। ওকে ভেতরে আটকে রাখলেই হবে।

সন্ধ্যা মিলিয়ে এসেছে। কিছু অস্বাভাবিক এখন পর্যন্ত আমার চোখে পড়েনি। কফির কাপে চুমুক দিলাম আমি। তখনই মাইক্রোটা দেখলাম। বাড়ির চার দিকে চক্কর দিচ্ছে। তারপর আবার চলে গেল। mp5 কাঁধে ঝোলালাম আমি। পায়ের আওয়াজে পিছন ফিরে তাকালাম। নিধি দাঁড়িয়ে আছে। হাসলাম আমি।

-“আমার আম্মুটা কেমন আছে?”

-“ভাল। আঙ্কেল তুমি কেমন আছ? কখন এসেছ?”

-“একটু আগে। তুমি ঘুমাচ্ছিলে তাই ডাকিনি।”

-“আম্মু কোথায়?”

-“ঘুমাচ্ছে। নাও আম্মু। ঘুম থেকে উঠেছ দুধটা খেয়ে নাও।”

-“দুধ পচা।”

-“এটা চকোলেট মিল্ক। খুব টেস্টি।”

-“আচ্ছা দাও।”

আমি দুধের গ্লাসটা ওর হাতে ধরিয়ে দিলাম। নিধি দুধ খাচ্ছে। আমি চুপচাপ দেখছি। দেখতে ভাল লাগছে। কেমন যেন একটা অনুভুতি হচ্ছে আমার। ঠিক বোঝানো যাবে না। নিধিকে নিজের মেয়ের মতো মনে হচ্ছে। কিন্তু ও আমার মেয়ে নয়। মীরার মেয়ে। আচ্ছা, মীরার সাথে যদি আমার বিয়ে হতো, তাহলে কি আমাদের বাচ্চাটা নিধির মতোই হতো?
দুধের মধ্যে ঘুমের ওষুধ মেশানো আছে। কিন্তু খুব কম মাত্রার। মেয়েটা মিনিমাম বারো ঘন্টা ঘুমাবে। MP5 টেবিলের ওপর রেখে নিধিকে কোলে নিলাম আমি। জানালার কাছে গিয়ে দাঁড়ালাম।

রাত বারটার দিকে কাল রঙের একটা মাইক্রো এসে বাসার সামনে থামল। নিধি আমার কোলেই ঘুমিয়ে আছে। দ্রুত ওকে মিরার ঘরে শুইয়ে দিলাম আমি। দরজা বাইরে থেকে লাগিয়ে দিলাম।

কিচেনে ফেরার সঙ্গে সঙ্গে কারেন্ট চলে গেল। গলায় ঝোলানো নাইটভিশন গগলস পরে নিলাম আমি। সাবমেশিনগানটা শক্ত হাতে চেপে ধরলাম। টের পেলাম আমার শরীর টানটান হয়ে আসছে। রক্তে কোলাহল শুরু হয়ে গেছে। যুদ্ধ শুরু হচ্ছে! যুদ্ধ!

১১

তিনজনের একটা দল ঢুকল গেট দিয়ে। নাইট ভিশনে পরিস্কার দেখলাম আমি। দুজনের হাতে একে ৪৭। একজনের হাতে পিস্তল। পিস্তলওয়ালাটা রবিন। সে দল থেকে আলাদা হয়ে বাইরে সারভেন্টস কোয়ার্টার আর দারোয়ানের ঘর ঘুরে এল। সম্ভবত সবাইকে মেরে ফেলেছে। সিজার মূল দরজার দিকে এগিয়ে এল। ওর পিছে বাকি দুইজন।

আমি কিচেন ছেড়ে বেরিয়ে এলাম। সিঁড়ির কাছে গিয়ে উঁকি দিলাম। নিচের ঘরগুলো খুঁজছে ওরা। বাইরে হঠাৎ ভয়ঙ্কর আওয়াজে বাজ পড়ল। আমি সাবমেশিনগানের স্টক কাঁধে ঠেকালাম। ডান হাত দিয়ে mp5 ধরে বাম হাতে সিঁড়ি দিয়ে একটা গ্রেনেড গড়িয়ে দিলাম। রবিনের পায়ের কাছে গিয়ে থামল ওটা। সিজার আর ডিউকও দেখতে পেয়েছে ডিমের মত দেখতে মৃত্যুদূতকে।

মাটিতে ঝাপিয়ে পরে কভার নিল তিনজনই। প্রচণ্ড শব্দে ফাটল গ্রেনেড। রবিনের চিৎকার শুনতে পেয়ে বুঝলাম আহত হয়েছে ও। দরজা দিয়ে আবার সিঁড়িতে বের হলাম আমি। রবিন হলরুমে পড়ে ছটফট করছে। একটা পা দেখলাম আলাদা হয়ে গেছে। বাকি দুজনকে কোথাও দেখা যাচ্ছে না।

সাবমেশিনগানের ট্রিগার টিপে ধরলাম। দুপ দুপ করে শব্দ হল আর রবিন একটা চিৎকারের সাথে ভবযন্ত্রণা থেকে মুক্ত হয়ে পরপারের পথে যাত্রা করল। দ্রুত লাফিয়ে আবার ভেতরে ঢুকে গেলাম আমি। তখনই একে৪৭ এর ব্রাশফায়ার দরজার চৌকাঠ চুরমার করে দিল। সিজারের হিব্রু ভাষার চিৎকার শুনতে পাচ্ছি।

ফিলিস্তিনে কাজের সুবাদে হিব্রু জানি আমি। সিজার ওয়াকিটকিতে যা বলছে তার সারমর্ম হল তারা অজানা শত্রু কর্তৃক আক্রান্ত। আর রবিন মারা গেছে। শহিদুলকে ভেতরে পাঠানো হোক।

ওরা উঠে আসছে। আমি কিচেনে ঢুকে দরজা লাগিয়ে দিলাম। দরজার নিচের ফাঁক দিয়ে তীব্র আলোর ঝলকানি দেখতে পেয়ে বুঝলাম ওরা আমার ফাঁদে পা দিয়েছে। দরজার নিচে আমি একটা ফ্ল্যাশ গ্রেনেড এমন ভাবে বেঁধে রেখেছিলাম যেন কেউ ঢুকতে নিলেই সুতয় টান লেগে পিন খুলে যায় আর ফ্ল্যাশব্যাং বিস্ফোরিত হয়।

দরজা খুলে বের হয়ে বুঝলাম ভুল করেছি। ওরা ঢোকার আগে একটা ফ্ল্যাশব্যাং ছুড়েছিল ভেতরে। সেটাই ফেটেছে। সিজার আর ডিউক কাউবয়ের মত ভাব নিয়ে ভেতরে ঢুকছে এখন। মুহূর্তের মধ্যে আমার কারিগরি ফলানো ফ্ল্যাশব্যাংটা বিস্ফোরিত হল। তিনজনই অন্ধ হয়ে গেলাম।

সিজার আর ডিউক না দেখেই এলোপাথাড়ি গুলি চালাচ্ছে । আমি কিছুই দেখতে পাচ্ছি না। হঠাৎ বুকে হাতুড়ির বাড়ি পড়ল উড়ে গিয়ে রান্না ঘরে পরলাম। দম আঁটকে আসছে। নিশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে। বুঝলাম গুলি লেগেছে। কেভলার ভেদ করতে পারেনি এটাই বাঁচোয়া। হাচড়ে পাচড়ে উঠে দাঁড়ালাম। চোখে প্রায় কিছুই দেখতে পারছি না। আচমকা আমার বা চোঁয়ালে ভয়ানক একটা ঘুসি মারল কে যেন। সাথে সাথেই লাথি। পরে গেলাম সিঙ্কের ওপর। সামলে নিতে না নিতেই আবার।

“ওঠ। হারামজাদা! খা....র পুলা!” অশ্রাব্য ভাষায় গাল দিয়ে উঠল শহিদুল। “মাইয়াডা আর পিচ্চিডা কই ক, নইলে কাইটা গাঙ্গে ভাসাইয়া দিমু। ওঠ।”

সিজার আর ডিউক টলতে টলতে দরজায় এসে দাঁড়াল।

“Ask the bastard!” চেঁচিয়ে শহিদুলকে বললো সিজার, “Where is the girl?”

দুজনেই এগিয়ে এল। সিজার আর শহিদুল আমাকে ধরে দাড় করাল। ডীঊক প্রচণ্ড এক আপারকাট বসাল চোয়ালে। দুচোখে সর্ষেফুল দেখলাম আমি। দলের মেয়েটা এসে কিচেনে ঢুকল।

“Duke. They aren’t here.” জ্যানেট বলে উঠল। ও সম্ভবত পুরো বাড়িটা ঘুরে এসেছে এতোক্ষনে।

“What?” নিখাদ বিস্ময় ফুটে উঠল ডিউকের গলায়, “this is impossible.”

মীরা আর নিধি এ বাড়িতে নেই, খবরটা পাওয়ার পর শহিদুল আর সিজারের হাতের বাধনে ঢিল পরল খানিকটা। এটাই শেষ সুযোগ। মেঝেতে গোড়ালি ঠুকলাম আমি। শু নাইফের ফলা থ্যাচ করে বেড়িয়ে এল। সামনে ডিউক দারিয়ে ছিল। কষে লাথি মারলাম ওর তলপেটে। পুরো পেট ফেরে গেছে বেচারার। কোন আওয়াজ না করেই শুয়ে পরল।

শহিদুল আর সিজার কিছু বোঝার আগেই বেমক্কা মার খেয়ে পড়ে গেল। কিচেনের নাইফ কম্পার্টমেন্ট হাতের নাগালেই ছিল। মেয়েটা পিস্তল ড্র করছে। বেচারি অ্যামেচার। খুব স্লো। নাইফ কম্পারটমেন্ট একটা ফল কাটার ছুরি নিয়ে ছুড়ে মারলাম ওর দিকে। ঠিক গলায় গাঁথল সেটা। হাত থেকে পিস্তল ফেলে দিয়েছে মেয়েটা। সামনের দিকে ঝাপিয়ে পড়ে ওটা হস্তগত করলাম আমি। ডিগবাজী দিয়ে সোজা হয়েই হাঁটু মুরে বসেই গুলি চালালাম। প্রথমে সিজার সে রাইফেল তুলে ফেলেছিল। তারপর নাক চেপে ধরে বসা শহিদুল। টাইলস করা কিচেনে ওদের মগজ বিচিত্র লাল হলুদ নকশা তৈরি করল। ডিউক এখনো মরেনি। পিস্তল দিয়ে ওর খুলিও উড়িয়ে দিলাম। পুরো ব্যাপারটা এত দ্রুত ঘটল যে কিছু বোঝবার মত সময় পায়নি কেউ।

এইবার ক্লিনিং। মীরাকে ওরা পায়নি। পাওয়ার কথাও না। ওরা এই বাড়িতেই ছিল। মীরার বুদ্ধির প্রশংসা না করে পারছি না। এই বাড়িতেই একটা পাতালঘর আছে। মীরা খুব সম্ভবত ওই ঘরে বসেই তার গোপন কাজগুলো করত। সারা বাড়িতে একটা ল্যাপটপ ছাড়া আর কিছু না পেয়ে সন্দেহ হয় আমার। বসার ঘরে বড় সোফার নিচেই দরজাটা আছে। ভাল করে না দেখলে বোঝা যাবে না। ওখানেই মীরা আর নিধিকে লুকিয়ে রেখে এসেছি। লাশগুলোর দিকে তাকালাম আমি। এগুলোর একটা ব্যবস্থা না করলেই নয়।
১২

ভোর হয়ে গেছে। আমার ল্যান্ড ক্রুজার ছুটছে চট্টগ্রামের দিকে। দুপুরের আগে কক্সবাজার পৌছতে পারব বলে মনে হয় না। আকাশ মেঘলা। আজও সূর্যের চেহারা দেখব বলে মনে হচ্ছে না। আমাকে খুব সাবধানে ড্রাইভ করতে হচ্ছে।

আপাতত মীরাকে কক্সবাজারে লুকিয়ে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কারন বাকি পৃথিবীর জন্য ওরা দুজনেই এখন মৃত। বাংলাদেশ এখন আর ওদের জন্য নিরাপদ না। ওদের পরিচয় বদলে দূরে কোথাও পাঠিয়ে দিতে হবে। ওদের নতুন পরিচয় আর পাসপোর্ট যোগাড় করতে আমার সপ্তাহখানেক লাগবে। ততদিন ওদের লুকিয়ে রাখতে হবে।

মীরাদের বাড়িটা জ্বালিয়ে দিয়েছি আমি। পুলিশ জানবে শর্ট সার্কিট থেকে আগুন লেগেছে। বাড়ির দারোয়ান, মালি, কাজের বুয়া, মালিক আর তার মেয়ের আগুনে পুড়ে মৃত্যু। ভেতরে দুটো মর্গ থেকে চুরি করে আনা মহিলা আর বাচ্চার লাশ ছিল। কাজের লোকগুলোর জন্য খারাপ লাগছে। বেচারারা খামকাই মারা পড়ল। খুনিদের লাশগুলোর বেশ ভাল ব্যবস্থা হয়ে গেছে। এই জীবনে ওদের লাশ কেউ খুঁজে পাবেনা।

আকাশের দিকে তাকালাম আমি। মেঘ কেটে গেছে। ভোরের প্রথম সূর্যের আলো মীরার মুখে পড়ল। ভোরের প্রথম সূর্যের আলোতে অদ্ভুত সুন্দর লাগছে মীরাকে। আমার একবার মনে হল জাহান্নামে যাক সব। নতুন করে জীবন শুরু করি না কেন? আমি, মীরা আর নিধি। এই অপূর্ব মুখটার দিকে তাকিয়েই তো আমি জনম জনম পার করে দিতে পারব।

জীবনে তো প্রায় সবই পেলাম। বাকি অপূর্ণতাটুকুও ঘুচিয়ে দেই। আমারও তো ইচ্ছে করে আর দশটা স্বাভাবিক মানুষের মত বাঁচতে। আমারও তো ইচ্ছে করে সারাদিন পর বাসায় ফিরে একটি মায়াবতী মুখ দেখতে। মিষ্টি একটা বাচ্চা বাবা বাবা বলে ছুটে এসে জড়িয়ে ধরুক আমায়। এই খুন খারাবি আর কত? আমার আবার সেই আঠার বছরের তরুণটির আবেগ নিয়ে মীরাকে ভালবাসতে ইচ্ছে করল।

নিধির দিকে তাকালাম আমি। ওর বাবা যত বড় অপরাধীই হোক। এই বাচ্চা মেয়েটিকে তো আমিই পিতৃহীন করেছি। আমি কি পারবোনা ওকে পিতার ভালবাসা দিতে? নিজের প্রতি ঘেন্না হল আমার। আমি এত নিরুপায় কেন? নিয়তির সামনে আমি এতটা অযোগ্য এতটা অসহায় কেন?

পরিশিষ্টঃ

রাহাত সব ব্যবস্থা করে ফেলেছে। মীরা আর নিধি সুইজারল্যান্ড চলে যাচ্ছে। কাল রাত ১২টায় ফ্লাইট। ওখানে যাওয়ার তিন মাসের ভেতর মীরা আর নিধি ওখানকার সিটিজেনশিপ পেয়ে যাবে। মীরার আর ওর স্বামীর সব ব্যবসা সব এখন বোর্ড অফ ট্রাস্টির হাতে। সেই বোর্ডের প্রধান রাহাত। সে কিভাবে এত দ্রুত এত ব্যবস্থা করল মীরা জানেনা। জানার কোন ইচ্ছেও নেই।

সপ্তাহ খানেক ধরে রাহাত ওদের সাথেই ছিল। এই সময়ে মীরা রাহাতের সাথে একটা কথাও বলেনি। রাহাতও কথা বলার চেষ্টা করেনি। রাহাতের ওপর রাগ হচ্ছে মীরার। গাধাটা একবারও তাকে বললনা, “দরকার নেই তোর যাবার, যেতে হবেনা তোকে”।

যদি শুধু একবার বলত। কালকের পর হয়ত আর কখনোই দেখা হবেনা।

আজ সকাল থেকেই প্রচণ্ড বৃষ্টি হচ্ছে। মীরা দেখল রাহাত বাইরে বাগানে দাঁড়িয়ে ভিজছে। ওর মনে পড়ল ষোল বছর আগে এমনই এক দিনে রাহাত তাকে বলেছিল, “আজ আমরা বৃষ্টি বিলাস করব। তোকে নিয়ে আজ বৃষ্টিতে ভিজব। তুই আমার হাত ধরে থাকবি?“

সেদিন সে রাহাতকে ফিরিয়ে দিয়েছিল। ছেলেটা আসলেই বদ্ধ পাগল। একাই বৃষ্টিতে ভিজছে। এটাও জানেনা যে বৃষ্টি বিলাসে একজন সঙ্গী দরকার হয়। একা একা বৃষ্টি উদযাপন করা যায় না।

ঝুম বৃষ্টিতে মীরা বাগানে নেমে গেল। রাহাতের পাশে দাঁড়িয়ে ওর হাত ধরল। সেই হাত পরম মমতায় আর্দ্র। রাহাত শক্ত করে মীরার হাত চেপে ধরল। সেই হাত প্রতিজ্ঞা রক্ষায় কঠিন কিন্তু ভালবাসায় কোমল। আকাশের দিকে তাকাল মীরা। আকাশে মেঘ। জলভরা ঘনকাল মেঘ। অনেকটা ওদের জীবনের মতই।

                                                               ***সমাপ্ত***

প্রথম পর্বের লিঙ্কঃ
http://www.nokkhotro.com/me/show-post/139697-109553-441657-cb7d82-.45750-276

Likes Comments
০ Share

Comments (2)

  • - মোঃসরোয়ার জাহান

    besh laglo.......!

    কেমন আছেন ?মহান স্বাধীনতা দিবস লেখা প্রতিযোগিতা২০১৪ ক্যাটাগরি ১ এ আমার কবিতা “প্রিয় স্বদেশআছে,প্রতিযোগিতার জন্য।আপনাদের  কবিতাটি পড়তে আমন্ত্রণ রইল।যদি ভালো লাগে তবে আপনার মূল্যবান একটি ভোট চাই।ভালো থাকবেন শুভ কামনা রইল।নিচে কবিতাটির লিং দেওয়া হলো যাতে সহজে কবিতা পড়তে পারেন। http://www.nokkhotro.com/post/139582-212853-328e30-07c579-.52321-016।আজ রাত ১২টা পর্যন্ত ভোট দেওয়া যাবে যদি আমার কবিতা পড়ে ভালো লাগে তাহলে একটি ভোট চাই।

    - মাসুম বাদল

    খুব খুব ভাললাগা জানালাম...  

    - তৌফিক মাসুদ

     অনেক দিন পরে আপনার লেখা পেলাম। কেমন আছেন আপনি?