Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.

গোঁফওয়ালা

১০ বছর আগে লিখেছেন

বই ও ঋতু (ঋতু বৈচিত্র অনুযায়ী সাজানো বইয়ের তালিকা !)

বই পড়ার আসলে কোন ঋতু নাই। কে জানে কার কখন কোন বই পড়ে সেই সময়, পরিবেশ, প্রকৃতি মনের মাঝে এক অদ্ভুত মুগ্ধতার সৃষ্টি করে। সাগর অভিযান, পর্বতআরোহন এসকল এডভেঞ্চারের বই বা থ্রিলার, গোয়েন্দা কাহিনী কিংবা প্রেমের উপন্যাস এক ধরনের ঋতুর স্পর্ষতা মনের মাঝে বইয়ে দেয়। হয়তো ঘরে বসেই বই পড়ে মনে হতে থাকে সময়টা কোন নির্জন পাহাড়ে গ্রীশ্মকাল, সমুদ্রের মাঝে শীতকাল কিংবা বর্ষার গ্রামীন জীবন।

বইয়ের এই ঋতুটাকেই আমি ধরতে চেষ্টা করেছি। এটা মূলত আমার পড়া কিছু ভালো বইয়ের তালিকা দেওয়ারও একটা চেষ্টা।

ঋতু বৈচিত্র ও আমার বইঃ


বর্ষাকালঃ


“পদ্মা নদীর মাঝি”
সকাল থেকে সারাদিন ঝুম বৃষ্টি হচ্ছে এসময় এ বইটি পড়া শুরু করলে মন্দ লাগবে না। বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে আমি বলবো এটি একটি অতি অসাধারন সৃষ্টি। পাঠ্যপুস্তকে থাকার সুবাদে বইটি হয়তো সবাই পড়েছে, কিন্তু এটি বারবার পড়ার মত একটি বই।পদ্মা পাড়ের মাঝিদের জীবন নিয়ে লেখা মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের এ বইটির মাঝে এক অদ্ভুত গতিশীল আবেদন রয়েছে।

সমুদ্রের অভিযান কিংবা সমুদ্রের জীবনযাত্রা নিয়ে লেখা বইও আমার মনে হয় বর্ষাকালে আলাদা মজা পাওয়া যায়। এক্ষেত্রে বলবো জ্যাক লন্ডনের লেখা “দ্যা সী উলফ” বইটির কথা যার বাংলা অনুবাদ “সমুদ্রের স্বাদ –কবীর চৌধুরী”। একজন মানুষের সমুদ্রের অপরিচিত পরিবেশে নিষ্ঠুর এক জাহাজে কাটানো দিনগুলোই এই বইয়ের বিষয়বস্তু।এছাড়া পড়া যেতে পারে “দি ওল্ড ম্যান ইন দ্যা সী” “নীল অন্ধকার-ফ্র্যাঙ্কো পোলি” “দি অ্যামফিবিয়ান ম্যান(আলেকজান্ডার বেলায়েভ)” “ট্রেজার আইল্যান্ড - রবার্ট লুই স্টিভেনসন” ইত্যাদি।

শরৎ-হেমন্তঃ

“প্রথম আলো-সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়” এর মত কিছু ইতিহাস ভিত্তিক বই শরৎ-হেমন্তের মৃদুমন্দ বাতাসে পড়তে ভালোই লাগবে। সুনীলের লেখা মূলত আমার খুব একটা পছন্দ না কিন্তু ঐতিহাসিক পটভূমিতে লেখা এই বইটি সত্যি অসাধারান, মাস্টারপীস। এছাড়া পড়া যেতে পারে “মধ্যাহ্ন-হুমায়ুন আহমেদ”।

আরো পড়া যেতে পারে “নিঃসঙ্গতার একশো বছর-গ্যাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেজ” “শ্রীকান্তসমগ্র- শরৎচন্দ্র” “গল্পগুচ্ছ-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর” “চাঁদের পাহাড়-বিভূতিভূষণ বন্দোপাধ্যায়” এটি একটি দুর্দান্ত এডভেঞ্চার/ট্রাভেল ধাঁচের বই এবং অবশ্যপাঠ্য একটি কিশোর ক্লাসিক বই। “সর্বাপেক্ষা সহজতম শিকার- সৈয়দ মুজতবা আলী” ইত্যাদি।

শীতকালঃ

শীতের সকালে কোন ছুটির দিনে মৃদু রোদের আঁচে বসে সেবা প্রকাশনীর পেপারব্যাক পড়তে ভালোই লাগার কথা, এটার সাথে অনেকের অনেক স্মৃতি জড়িয়ে থাকার কথা।
আমার কেনো যেন মনে হয় শীতকালটা হচ্ছে থ্রিলার/এডভেঞ্চার/গোয়েন্দা কাহিনী পড়ার জন্য। প্রেমকাহিনী কিংবা ধ্রুপদী উপন্যাস ঠিক যায় না এই ঋতুর সাথে।

যা হোক শীতকালের জন্য আমার লিস্ট শুরু করিঃ

-ফেলুদা সমগ্র- সত্যজিৎ রায়
-শার্লক হোমস সমগ্র – স্যার আর্থার কোনান ডায়েল
-দ্য ডে অব দা জ্যাকেল- ফ্রেডরিক ফরসাইথ
-সী এন্ড দি রিটার্ন অব সী- এইচ হ্যাগার্ড
-জুলেভার্ন সমগ্র

এছার পড়া যেতে পারে তিন গোয়েন্দার “অথৈ সাগর, জলদস্যু দ্বীপ সহ যেকোনো বই। আরো পড়া যেতে পারে রবিনসন ক্রুস-ডেনিয়েল ডিফো, উভচর মানুষ-বেলায়েভ, দেশে ফেরা-জন ম্যাকফী, নেমেসিস, কন্ট্রাক্ট-নাজিম উদ্দিনের মৌলিক থ্রিলার, পথের পাচালী-বিভূতি ভূষন, কবি-হুমায়ূন আহমেদ, টম সয়্যার, হাকফিন (মার্ক টোয়েন) ইত্যাদি।
যদিও বলেছিলাম ধ্রুব সাহিত্য শীতকালের জন্য না কিন্তু ধ্রুব সাহিত্য ছাড়া বই পড়াটাই আসলে পানসে। আর এ ক্ষেত্রে বলবো আরো একটি কালজয়ী উপন্যাসের কথা “হাজার বছর ধরে-জহির রায়হান”



বসন্তকালঃ

প্রেমের উপন্যাস পড়ার জন্য ভালো সময়

পড়া যেতে পারে “শেষের কবিতা-রবীন্দ্রনাথ” “শেষ বিকেলের মেয়ে-জহির রায়হান” “চাঁদের আমাবস্যা-সৈয়দ ওয়ালিউল্লাহ” এই বইটি পড়লে আপনি ঘোরের মাঝে চলে যাবেন।

এছাড়াও মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক কিছু বইও ভালো লাগবে যেমন “জ্যোৎস্না ও জননীর গল্প” “একাত্তরের দিনগুলি-জাহানারা ইমাম”। আরো পড়া যেতে পারে আনিসুল হকের “মা” “টুনি মেম- সৈ. মুজতবা আলী” ইত্যাদি।


গ্রীশ্মকালঃ

“কবি-তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়” এর একটি অসাধারন উপন্যাস (মাস্টারপীস), এর ঘটনাবহুল কাহিনী মনে দাগ কাটতে বাধ্য। এছাড়া কিছু সৈয়দ মুজতবা আলীর রম্য রচনা/ভ্রমন ও দুর্দান্ত লাগবে যেমন- দেশে বিদেশে, চাচা কাহিনী।এ ২ টো আমার ভীষন পছন্দের।

আরো পড়া যেতে পারে অরন্যের দিন রাত্রি-সুনীল, বিভূতি ভূষনের কিছু লেখা, জাফর ইকবালের কিশোর উপন্যাস যেমন –আমি তপু, জারুল চৌধুরী মানিকজোড়, কপোট্রনিকের সুখ দুঃখ ইত্যাদি

অনুবাদ গ্রন্থের মধ্যে “রিভার গড-উইলবার স্মিথ” পড়া ফরজ। প্রাচীন মিশরের পটভূমিতে লেখা বইটী এক কথা অনবদ্য।

বই সংগ্রহ।।

Likes ২৩ Comments
০ Share