এত বড় মাঠ অথচ বসার জায়গা নেই!
- আছে তো! একটু পর পরই এবার বসার জন্য ছাওনি করা হয়েছে।
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে পাশাপাশি হাঁটছিলো আরিফ ও ঈশিতা। অনন্যা স্টলকে পাশ কাটিয়ে পেছনের দিকে যেতেই ছাওনি চোখে পরলো। তাতে কয়েকটা বাঁশের বেঞ্চি পাতা। অনেক লোক আগেই জায়গা দখল করে রেখেছে সেখানে। মাত্র একটা আসনের কিছুটা ফাঁকা রয়েছে। কেউ গিয়ে সেখানে বসতে পারে কিন্তু আরিফ ও ঈশিতার দুজনের জন্য জায়গা প্রয়োজন। ওরা আরেকটু এগিয়ে বাম পাশে পাম গাছের নিচে নিচে একটি দুটি পাঁচ ফুট আকারের কয়েকটা বেঞ্চ দেখতে পেলো। কিন্তু এখানেও সেই একই অবস্থা। কোন বেঞ্চ খালি নেই। ওরা হেঁটে এগুতে এগুতে একটা বেঞ্চ খালি হতেই আরিফ প্রায় ছুটে এগিয়ে গেলো ওটা দখল করতে। কাছাকাছি গিয়ে দেখলো বেঞ্চগুলোর উপরে ছাওনি না থাকলেও সবগুলো বেঞ্চকে অনেকটা গোলাকার আকৃতিতে বসানো হয়েছে। আরিফ ওই বৃত্তাকার অবস্থানকে পেছনে ফেলে সুচীপত্র প্রকাশনীর মুখোমুখী বসলো। পাশে আধ হাত দূরত্বে বসলো ঈশিতা।
- এখানে বিয়ে করার জন্যে কোন মেয়ে পাচ্ছি না! মনে হয় বিদেশে গিয়েই বিয়ে করতে হবে আমাকে, বুঝছো?
- কেন?
- হ্যাঁ! এখানে সবাই যেন অভিনেতা। ভাব দেখায় যেন কিচ্ছু বুঝে না! সেদিন একটা মেয়ে দেখতে গেলাম। সে তার দুলাভাইকে তো এনেছেই। এক কলীগকেও টেনে এনেছে। কর্মজীবী মেয়ে! একাই আসতে পারতো। কিন্তু কিছু তো বললোই না। এক পাশে চুপ করে বসে ছিলো। সব কথা কলীগই বললো।(চরম বিরক্তির সুরে বলে চললো আরিফ)
- হ্যাঁ! আমাদের দেশে এটা হয়। ছেলেরা প্রেমের ক্ষেত্রে এগ্রেসিভ ছটফটে দূরন্ত মেয়ে পছন্দ করলেও বিয়ের ক্ষেত্রে শালীন ও চুপচাপ মেয়েদেরই বেছে নেয় তো! তাই মেয়েরা ওরকম হতে বাধ্য হয়! নিজের ক্ষেত্রেই তো দেখলাম কত! পাত্রপক্ষ যেমন তাদের মত হয়ে নিজেকে উপস্থাপিত হতে হয়। অথচ, ফ্যামিলি বুঝে না যে মানুষের নিজস্বতা কখনো বদলানো যায় না। আমি যা, আমি যেমন তেমনটাই প্রকৃতভাবে বিচার করে আমাকে পছন্দ করা উচিত! অবশ্য অভিভাবকদেরও দোষ নেই! (ঈশিতা একটু বিদ্রুপের ভংগীতেই বলে উঠলো কথাগুলো।)
- এটা তো ঠিক নয়! আজকে আসার সময় টিএসসি’র কাছে একটা মেয়ে দেখলাম-স্মার্ট, হাসিখুশী। আমার ভালো লাগলো। আমি গিয়ে বললাম-‘আপনি কি সিঙ্গেল? বয়ফ্রেন্ড আছে?’ পাত্তাই দিলো না আমাকে!
- আজকে? রাস্তার মধ্যে খুঁজে নিয়ে জিজ্ঞেস করলে? তোমার মাথা খারাপ নাকি? তোমাকে চিনে না, জানে না! হঠাত একটা অচেনা ছেলের প্রস্তাব কেউ মেনে নেয়? আশেপাশে কোন ছেলে চোখে পরেনি? থাকলে ঠাস করে চড় কষে দিতো মেয়েটা!
- নাহ! আশেপাশে সেরকম কেউ ছিলো না! খেয়াল করেছি!
- ওহ! তাই? (ঈশিতা আবার হাসি ছুঁড়লো)
- হুম! ঐ যে দেখো সামনের মেয়েটা? সুন্দর না? (স্টলের সামনে দিয়ে হেঁটে হেঁটে বাম দিকে থেকে ডান দিকে যাচ্ছে একটি মেয়ে)
- হু! আছে মোটামুটি! (ঈশিতার মনে হলো-‘আমাকে খুঁজে নিলেই তো হয়!’)
ঈশিতা সামনে স্টলের দিকে চেয়ে আছে। একটু কুঁজো হয়ে বসে ডান কাঁধে রেখেছে বড় ভ্যানিটি ব্যাগটা। আর হাতের কবজিতে লালচে মেরুন রঙের বইয়ের ব্যাগ। ওতে দুটো বই। লেখক সেলিমা হায়াত দুটো বই উপহার দিয়েছে ঈশিতাকে। বনপাংশুল নামের স্টলটায়। ঈশিতা আরিফের কথা শুনছে আর বাচ্চাদের মত করে মৃদু মৃদু পা দুলাচ্ছে।
আরিফ একটু কাছে ঘেঁষে এলো-‘দেখি, তোমার হাতটা?’
‘হাত? হাত তো সুন্দর নয়!’
‘আরে ধুর! তালুটা মেলে ধরো!’
‘হাত দেখবে নাকি? জন্ম-মৃত্যু-বিয়ে-সন্তান এইসব?’ বলতে বলতে খিলখিল করে হেসে উঠেছে ঈশিতা। আবার ডান হাত মেলেও ধরেছে কিছুটা।
আরিফ ঈশিতার হাতের তালুতে একটু একটু করে নিজের আঙুল বুলিয়ে বলতে লাগলো-‘হুম! হাতে অনেক রেখা! বিদ্যা বুদ্ধি অনেক দূর গড়িয়েছে! তোমার মন অনেক প্র্যাকটিক্যাল! সাহসীও!’
ঈশিতা বলে উঠলো-‘হ্যাঁ! আমার রাশিতে পজিটিভ নেগেটিভ সবদিকে প্রখরতা একরকম!’
আরিফ বললো-‘আচ্ছা, নেগেটিভ কিছু বললে সেটা কি সহ্য করতে পারো?’
ঈশিতার কণ্ঠ একটু মিইয়ে গেলেও জবাব দিলো-‘হ্যাঁ! কোন সমস্যা নেই! বলে ফেলো।’ মনে মনে ভাবছে, কখন জানি হাত চেপে ধরে ঠোঁটে চেপে ওকে জড়িয়ে ধরে ফেলে ছেলেটা। জীবনের অধিকাংশ সময় প্রবাসে কাটানো পুরুষ মানুষগুলোর মানসিকতা একটু অন্য রকমের হয়। বাঙ্গালী কালচারে জন্ম হলেও ইংল্যান্ড থেকে এনভায়রনমেন্টাল এঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে পিএইচডি ও এমফিল করে আসা আরিফ মইনুল হকও বিদেশীদের মত জীবনযাপনে অভ্যস্ত হয়ে গেছে। ও দেশে যেমন ছেলেমেয়েদের অবাধ মেলামেশা, ইচ্ছে মত ডেটিং, লিভ টুগেদার সমাজের অন্যদের চোখে কোন বড় ইফেক্ট ফেলে না, আরিফ এ দেশেও সেরকমটাই আশা করে। আর সেরকম না পেয়ে বলে-‘এ দেশের কালচার কবে যে প্রগতির পথে যাবে!’ আরিফের সাথে প্রথম দিকের কথাবার্তায় এসব জেনেছিলো বলেই ওর সাথে দেখা হওয়ার কোন ইচ্ছেই ছিলো না ওর। ও আরিফকে বিয়ে করতে রাজী না থাকায় পরে আরিফ ওকে বলেছিলো ওর ম্যাচ-মেকার হতে; ওকে মেয়ে খুঁজে দিতে। ‘ও নিজেই যেখানে ক্যান্ডিডেট সেখানে ও আবার মেয়ে খুঁজে দেবে কোত্থেকে!’ এমন ধরনের হাসি ঠাট্টার আলোচনাতেই থেমে গিয়েছিলো ওদের সম্পর্কটা। রেগুলার যোগাযোগও হয় না অনেকদিন। আজ দুপুরে হঠাতই আরিফের ফোন আসে। তখন ঈশিতা অফিসের জিএম এর সাথে মিটিং শেষে মাত্র নিজের ডেস্কে ফিরেছে। চারটার পরে বইমেলায় ঢুঁ মারার ইচ্ছে ছিলো, তবু আসবেই অমন ভাবনা ছিলো না ওর। আরিফের ফোনটা পাওয়ার পরে মনে হলো- দেখাই যাক না ছেলেটা কেমন! তারপরেই ও বাংলা একাডেমিতে প্রবেশ করার আধা ঘন্টার মধ্যেই আরিফের ফোন পেলো। তারপরে দুজনে ঘুরে বেড়াতে বেড়াতে এখানে এসে বসা।
আরিফ বললো-‘তোমার খুব শীঘ্রই উইডো হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে! মানে জীবনে একটা বড় আঘাত আসবে!’ ঈশিতার দিকে চেয়ে দেখলো মলিন হয়ে উঠলো মুখটা। ওকে অবাক করে দিয়ে ঈশিতা বলে উঠলো-‘ধুর! বিয়েরই খবর নেই এখনো! বিধবা হবো কবে আবার?’ আরিফ বলে উঠলো-‘আরে বিয়ে হয়নি! হবে! আর উইডো হতেও দেরী আছে। প্রায় সত্তর বছর বয়সে গিয়ে! মনে করো এখনো পঁয়ত্রিশ-চল্লিশ বছর পরের কথা!’
আরিফ বলে চললো-‘পামিস্ট্রি অথবা হস্তরেখাবিদ্যাকে অনেক সময় কিরোলজিও বলা হয়ে থাকে। হাত দেখিয়ে ভবিষ্যত্ জানার ইচ্ছে এক বারের জন্যেও হয়নি এমন ব্যক্তি খুব কমই আছেন। বিশেজ্ঞদের মতে- হাতের তালুর মধ্যে লুকিয়ে থাকে মানুষের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য। তুমি কি এই প্রথম হাত দেখিয়েছো?’
ঈশিতা দেখলো সন্ধ্যা সাড়ে ছটা পেরিয়ে গেছে। আরিফের কথা সব ওর কান দিয়ে ঢুকছিলো ঠিকই কিন্তু সবটা ওর মনে প্রবেশ করছিলো না। প্রথমা প্রকাশনী থেকে তাহমিমা আনামের লেখা দ্য গুড মুসলিম এর অনুবাদ বইটা ও কিনবে। আজ মূলত নিজের পছন্দের কিছু বই কেনার জন্যেই বইমেলায় আসতে চেয়েছিলো ও। কোন পূর্ব পরিকল্পনা ছাড়াই আরিফের সাথে দেখা ও সাক্ষাৎ হয়ে গেলো। ছেলেটা বেশ হ্যান্ডসাম। লম্বাও। কালো চুলের ফাঁকে মাঝেমাঝে একটা দুটো পাকা চুল উঁকি মারছে। বয়সটা মন্দ নয়। একটাই প্রবলেম। বড় বেশি এগ্রেসিভ! কয়েকবার ডেটিং না করে ও নাকি কোন মেয়েকেই বিয়ে করবে না। কিন্তু এ দেশে সেটা যে সম্ভব নয় তা ওকে কে বুঝাবে?
ঘড়িতে যখন সন্ধ্যা সাতটা পেরিয়ে যাবে যাবে করছে তখন ঈশিতা উঠলো-‘চলো উঠি। দুয়েকটা বই কেনার আছে। তারপরে বাড়ি ফিরবো।’ আরিফও বলে উঠলো-‘হুম! ফিরতে হবে। তুমি বই কিনো। আমি চলি।’
আরিফের মন মানসিকতা ঈশিতার সাথে পুরোপুরি খাপ খায় না। যদিও ওর এগ্রেসিভনেস মনে মনে ঈশিতার ভালোই লাগে। কিন্তু ও ওকে আরও অশান্ত হবার সুযোগ দেয় না। নিজেকে নির্লিপ্ত করে রাখে। আরিফকে এখনই বিদায় জানাতে ইচ্ছে করছিলো না ওর। প্রথমা প্রকাশনী থেকে আনিসুল হকের দুটি বই কিনে ওরা মেলা থেকে বের হয়ে টিএসসি’র দিকে হাঁটতে থাকে। টিএসসি পৌঁছে ঈশিতার রিকশা নেয়ার সময় হয়ে যায়। তবু ও রিকশা নেয় না। আর আরিফ বলে- ‘এসো ভার্সিটির ভেতরে গিয়ে বসি একটু নিরালা কোন জায়গায়!’ ঈশিতা চোখেমুখে দুষ্টুমীর ঝিলিক তুলে বলে ওঠে-‘নিরালা জায়গা দিয়ে কী হবে? মতলব কী তোমার?’ আরিফ তো ফাজিলই। এখন সে আরও সাবলিল কণ্ঠে বলে-‘দেখি, সাথের রাজকন্যাটির হৃদয় ছোঁয়া যায় কিনা!’ ‘হৃদয় নাকি অন্য কিছু? ফাজিল ছেলেদের সুযোগ দিলে মাথায় উঠে বসে!’ মনে মনে ভাবলো ঈশিতা কিন্তু মুখে ধরে রাখলো হাসিটা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের গেট দিয়ে ঢোকার মুখে আরিফ দুটো চকলেট কোণ আইসক্রিম কিনে একটি ঈশিতার হাতে ধরিয়ে দিলো। ঈশিতা মৃদু স্বরে-ধন্যবাদ জানালো। অন্ধকার রাস্তা। হেঁটে হেঁটে আইসক্রিম খেতে খেতে ওরা রেজিস্টার্ড ভবনের দিকে যেতে লাগলো। আরিফের খাওয়া শেষ। এদিকে হালকা ঠান্ডা বাতাস ছুটেছে। আরিফ এতক্ষণে কোমরে বেঁধে রাখা চেইন দেয়া সোয়েটারটা গায়ে পরে নিলো। কারো মুখ পরিস্কার দেখা যাচ্ছে না। আশেপাশে অনেকেই হেঁটে যাচ্ছে। কেউ বা জটলা করে দাঁড়িয়ে আছে। কয়েকজন করে বসে আড্ডাও দিচ্ছে। আরিফ বলে উঠলো-‘তোমাকে জড়িয়ে ধরতে ইচ্ছে করছে!’ ঈশিতা-হাসলো। কিন্তু মনে মনে বললো-‘এইতো এখন আসল রূপ ধরা দিয়েছে!’ মুখে বললো-‘এইসব এলাকা রেস্ট্রিকটেড। এডুকেশন অফিসাররা ঘুরে বেড়ায়। অন্ধকারে জোড়া দেখলেই ধরতে আসবে। এ কথা শুনে আরিফ বললো-‘চুমো না হয় নাই দিলাম। হাত ধরলেও কি সমস্যা?’ ঈশিতা হাসলো। কিন্তু কিছু বললো না। ঈশিতার হাতের আঙুল ঠান্ডায় জমে আসছিলো। আরিফের কথা শেষ হতেই ও হাত বাড়িয়ে আরিফের হাতের কনুইয়ের কাছে সোয়েটারটায় হাত রাখলো কিন্তু ঘনিষ্ঠ হলো না। এভাবে রেজিস্টার্ড ভবনের সামনের মাঠের গাছের সারির মাঝ দিয়ে চলা রাস্তাগুলোতে ডানে থেকে বামে, বামে থেকে ডানে এভাবে ঘুরতে ঘুরতে হেঁটে হেঁটে বিশ্ববিদ্যালয় গেট ছাড়িয়ে চারুকলা ইনস্টিটিউট পর্যন্ত চলে এলো। নতুন হিল জুতোয় এতটা পথ হাঁটাহাঁটিতে ঈশিতার মোজাসহ বাম পায়ের কড়ে আঙুলে জ্বলতে শুরু করেছে। ঠোসাই পরে গেলো বোধহয়! আরো আগেই রিকশা নেয়া উচিত ছিলো। এখনো নেয়া যায়। কিন্তু ওরা হাঁটা থামালো না। তার পরেও হেঁটে হেঁটে শাহবাগ মোড়ে গণজাগরণ মঞ্চের কাছাকাছি এসে ঈশিতা বললো-‘আমি এ পাশ থেকে রিকশা নেই। তুমি ওপাশে গিয়ে বাস ধরো।’ দুজনের কারোই ফেরার ইচ্ছে হচ্ছিলো না। তবু ফিরতে তো হবে। আরিফ মন্তব্য করলো-‘একটা বিষয় ভালো লাগলো। তুমি খুব সাহসী মেয়ে। আবার কবে দেখা হবে?’ ঈশিতাও বলে উঠলো-‘হ্যাঁ আগামী সপ্তাহেই ভ্যালেন্টাইন ডে। এসো তাহলে!’
রিকশা ঠিক করে উঠে বসলো ঈশিতা। রিকশা চলতে শুরু করেছে আর ও ভাবছে-‘আজ সকালেও ও জানতো না যে এরকম চমৎকার একটা বিকেল ওর জন্যে অপেক্ষা করছিলো! মানুষের জীবন বইয়ের পাতা এভাবেই ভাগ্যরেখায় এক দৃশ্য থেকে আরেক দৃশ্যের অবতারণা করে চলে!’ আরিফকে ওর ভালো লেগেছে। কিন্তু খোঁজ খবর করতে হবে ওর।
পরদিন সকালেই ও আরিফের ইমেইল করা বায়োডাটাটা ওর বন্ধু নিষাদের কাছে পাঠালো। আর খোঁজ খবর নিতে বলে দিলো। বারিধারায় নিষাদ বড় ভাইয়ের কাছে থাকে। সেখান থেকে ডিওএইচএস কাছেই। খোঁজ নেয়ার জন্য বেস্ট। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ঈশিতাকে যেন খবর দেয়া হয়।
দশটা দিন পেরিয়ে গেলে না নিষাদ না আরিফ কারো সাথেই ফোন, ইমেইল, ফেসবুক কোনভাবেই কোন রকম যোগাযোগ হলো না ঈশিতার। অস্থির হয়ে উঠছিলো ঈশিতা। শেষে এগারোতম দিন সকালে নিষাদের বাসায় চলে এলো ঈশিতা। ইচ্ছেটা এই যে- ‘ও কোন অসুখে পরেনি তো?’ তা জেনে আসা। কিন্তু ও জানতো না যে ওকে এভাবে সারপ্রাইজড হতে হবে!আরিফ মইনুল হক এখন চুটিয়ে প্রেম করছে নিষাদ ইসলামের সাথে। হয়তো এ প্রেম খুব শীঘ্রই বিয়েতেও গড়াবে। এত সুদর্শন এত যোগ্য একটা ছেলেকে হাতের নাগালে পেয়েও কি বান্ধবীর হাতে ওকে সঁপে দেয়া যায়! অতটা দেবতা নিষাদ নয়।
ঈশিতার সাথে আরিফের প্রেম ছিলো না। কিন্তু জীবনসংগী হিসেবে ঈশিতা আরিফকে নির্বাচন করেছিলো। সবই আসলে ভাগ্য। নইলে একই শহরে থেকে পান্থপথ থেকে বারিধারার দূরত্ব কি বা তেমন! ও নিজেই যেখানে আরিফের বিষয়ে খোঁজ-খবর নিতে পারত সেখানে বান্ধবীকে দিয়েছিলো দায়িত্বটা! আর তাতেই ভাগ্য রেখাটা বদলে গেলো।
(সমাপ্ত)
@
জাকিয়া জেসমিন যূথী
৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৫
Comments (51)
অসাধারণ কবিতা
শাুভ কামনা
ধন্যবাদ :)