Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)

মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)

১০ বছর আগে লিখেছেন

ঋণী

তিন হাটুতে ভর করে চলাচল করতে হয় সমাজের অচেনা ব্যাক্তি নাছির সাহেবকে।জীবনে চলার পথে অনেক সংগ্রাম করতে হয়েছে জীবন সংসার কিংবা রাষ্ট্রীয় কোন দেশপ্রেমের সংগ্রামে।সে আজ অসহায় নিঃস্ব, যে ছিল একদিন বীরের দর্পের দাপুটে সে আজ কাঙ্গাল ভালবাসায়,স্নেহে,মমতায়।নাছির সাহেব গভীর অন্ধকারে ঝড়া জীর্ণ একটি আশ্রীত বিল্ডিংয়ে দিন রাত অতিবাহিত করছেন কখন বিধাতার ডাক পরবে বলে।তারই নাতি আজিম উদ্দিন অক্ষ্যাত লেখক আগামী বই মেলায় সে একটি বই বের করবে বলে কিছু লেখালেখি করছেন।এ ছাড়াও আজিম সাহেব মানব কল্যায়নমূলক কাজে নিজেকে সব সময় ব্যাস্ত রাখেন।আজিম সাহেবে বাবা এ সমাজের বিশিষ্ট শিল্পপতি এবং রাজনৈতিক কেন্দ্রীয় নেতা।আজিম সাহেব ভাষা আন্দোলনের উপর লিখবে বলে সে ঘুরে বেড়িয়েছে দেশের বিভিন্ন জেলায় জেলায় সংগ্রহ করেছেন জানা অজানা অনেক তথ্যাদি আরো কিছু তথ্যাদির জন্য অপেক্ষায় আছে তার বই প্রকাশের কাজ।তবে নিয়মিত লিখে যাচ্ছেন বিভিন্ন পত্র পত্রিকায়।

আজিম সাহেব আজ কোথাও যাননি ঘরে বসেই কি যেন লেখালেখি করছেন টেবিল ল্যাম্পের ক্ষীর্ণ আলোতে।তার ছোট ছোট এক ছেলে ও এক মেয়ে আছে।মেয়েটি তার লউগ্গা তাকে ছাড়া মেয়েটি থাকতে পারেনা।ছোট এই মেয়েটিকে আজিম সাহেব আদর করে মা মণি বলে ডাকেন।মেয়েটি তার বাবার লেখালেখি টেবিলের সামনে এসে এক বার এটা ধরে আর এক বার ওটা ধরে বাবাকে বিভিন্ন প্রশ্ন করে।বাবা আজিম সাহেবও লেখার মাঝে হ্যা-না বলে মেয়ের প্রশ্নের উত্তর দেন।এবার মেয়েটি টেবিল ল্যাপ্মের সুইচ এক বার অফ করে আবার অন করে ।বাবার লেখায় মনযোগ নষ্ট হয়।

-মা মণি একি করছ?তুমি দেখছ না আমি লিখছি।

-আব্বু সুইচ টিপ দিলে বাত্তি জ্বলে আবার নিভে কেনো?

আজিম সাহেব কোন উত্তর দেয়না। মেয়েটি আবারও একই প্রশ্ন করে।বিরক্ত হয়ে আজিম সাহেব মেয়ের প্রশ্নের উত্তর দেন।

-বিদুৎতের কারনে.. মা।

-বিদুৎ কি আব্বু?

-তুমি এদিকে আসো আমি বলছি।

মেয়েকে নিজের হাতের কাছে নিয়ে আবার লেখায় মনযোগ দেন।নাছড় বান্দা শিশু মেয়ে আবার আর একটি প্রশ্ন করে।

-আব্বু তুমি কি লিখছ।

-গল্প।

-গল্প কি আব্বু?

আজিম সাহেব এবার লেখায় মনযোগ হারিয়ে ফেলে সে তার মেয়ের কথার উত্তর দেন।

-গল্প হলো মানুষের জীবন কাহিনী।

-জীবন কি আব্বু?

আজিম সাহেব এবার মেয়ের প্রশ্নের উত্তর দিতে নারাজ কিন্তু মেয়ে তার প্রশ্ন চালিয়েই যাচ্ছে।

-ও আব্বু বলো না,জীবন কি..বলো না….বলোনা আব্বু…বলো?

-জীবন হচ্ছে আমাদের,এই আমি তুমি বেচে থাকা।

মেয়ের এবার আজিম সাহেবের লেখার নোট বইয়ের দিয়ে নজর পড়ে এবং প্রশ্ন করতে থাকে।

-আব্বু তুমি কি লিখছ?

-ভাষার জন্য যারা জীবন দিয়েছে,যারা সংগ্রাম করেছে তাদের সম্পর্কে লিখছি।

-বড় আব্বা কই?ফুপি বলেছে বড় আব্বু নাকি যুদ্ধ করেছে…..আচ্ছা যুদ্ধ কি আব্বু।

আজিম সাহেব এবার নড়ে চড়ে বসেন,সত্যিই তো দাদু ভাইকেতো শুনেছি অনেকে লড়াকু বলে ডাকত।কিন্তু সে এখন কোথায়?আব্বুর কাছে শুনেছি স্বাধীনতা যুদ্ধের পর পর সে নাকি দেশান্তর হয়েছেন,কিন্তু কোথায় গেছেন দাদু ভাই?আজিম সাহেব উপরের তাক হতে পুরনো একটি ব্রিফকেটস নামিয়ে আনেন।পুরনো ব্রিফকেটস জং পরে গেছে ধুলাবালি আর তাপে ব্রিফকেটসের নিজস্ব রং জ্বলে ফ্যাকাশে হয়ে গেছে ।ব্রিফকেটস খুলে আজিম সাহেব তার দাদার ছবিটি বের করেন।বেশ স্বাস্হ্যবান এবং লম্বা ফর্সা তার দাদা।ছবিতেই অনুমান করা যায় বয়সকালে সে কতটা পালোয়ান ছিল।ছবিটা দেখে মেয়ে আবার প্রশ্ন করে।

-এই কি আমার বড় আব্বু?

-হ্যা…অজানা এক ব্যাথায় আজিম সাহেবের চোখের পানি টল টল করছে যে কোন সময় তা গড়িয়ে পড়তে পারে মাটিতে।

-বড় আব্বু কি যুদ্ধ করেছিল?

-হ্যা,বড় আব্বু অনেক বড় যোদ্ধা ছিলেন।

-বড় আব্বু এখন কোথায়?

-জানিনা….বলে চোখের পানি মেয়ের হাতের উপর পড়ে।

-আব্বু তুমি কাদছঁ কেনো?

-এমনিই…

-বারে..;;শুধু শুধু কেউ বুঝি কাদেঁ!

বাবার চোখের পানি দেখে মেয়ের মনও খারাপ হয়ে যায় সে বাবাকে বুঝাবার চেষ্টা করে।

-ঠিক আছে আব্বু…. আমি আর বড় আব্বুর কথা জিজ্ঞাস করবনা।

আমিজ সাহেব মেয়েকে টান দিয়ে বুকে নিয়ে চোখের বান ছেড়ে দেন।চোখের পানি ঝড় ঝড় করে ঝড়ছে আর আপন মনে বলে যাচ্ছে অজানা ব্যাথা জানবার ব্যার্থতাকে।

-কি করে তোকে বলব দাদু এখন কোথায়,জীবিত আছে না মরে গেছে আমি এ প্রশ্নের উত্তর অনেক খুজারঁ চেষ্টা করেও ব্যার্থ হয়েছি….ব্যার্থ হয়েছিরে মা ব্যার্থ…..।

আজিম সাহেব আজ খুব সকালেই ঘুম থেকে বেরিয়ে যান তার লেখক কিছু বন্ধুদের সাথে দেখা করতে।বন্ধুরা গতকাল বলেছিল কোথায় যেন একজন দেশপ্রেমিক মুক্তি যোদ্ধা আছে তার সাথে দেখা করে আরো কিছু তথ্য জেনে নেবেন লেখকরা।সেই উদ্দ্যেই আজিম সাহেব ঘর থেকে বের হয়ে বন্ধুদের মিলিত গঠিত “লেখক বন্ধু ক্লাবে” যান।আজিম সাহেব ক্লাবে ঢুকার সাথে সাথে বন্ধুরা কি যেন বলাবলি করছিল তা হঠাৎ থেমে যায়।

-কি ব্যাপার সবাই এ ভাবে হঠৎ চুপসে গেলে?ঘটনা কি?

এক লেখক বন্ধু আজকের পত্রিকাটি তার সামনে ছুড়ে দেয়।আজিম সাহেব পত্রিকার পাতায় চোখঁ রাখতেই অবাক হন।একি!এ তো আব্বুর ছবি!।দূর্ণিনিতীর দায়ে ফেসে গেল বিশিষ্ট শিল্পপতি রাজনৈতিকবিদ আকমল হোসেন”বড় বড় হেড লাইনে বের হয়েছে তার পিতার কু-কৃর্তির কথা।সহকর্মীর অনেকেই অনেক মন্দ বলছেন অনেকে আবার আজিম সাহেবকে কিছু মনে না করতে অনুরোধ করছেন।আজিম সাহেব সাথীদের নিয়ে চলে গেলেন তাদের নিদিষ্ট প্লানিংয়ের কাজে।

সরকারী কোন সংস্হা নয় বেসরকারী ভাবে সমাজের কয়েকজন বিবেবান ব্যাক্তি মিলে বৃদ্ধাশ্রমের মত একটি সংস্হা তৈরী করেছেন সেখানে এক বৃদ্ধ বয়স প্রায় আশি/পচাশিরঁ উপরে।লোক মুখে জানা যায় এই বৃদ্ধ লোকটি ভাষা আনন্দোলন,’৬৯ এ গণঅভূৎখান,’৭১ স্বাধীনতা যুদ্ধের সম্মূখ ভাগের আন্দোলনকারী ছিলেন।তার কাছ থেকে কিছু তথ্য জানতেই আজিম সাহেব বন্ধুদের সাথে সেখানে গেলেন।সেখানে ছোট্র এক কামড়ায় চামড়া ঝুলে যাওয়া চোখে কালো ফ্রেমের চশমা দেয়া এলোথেলো চুল আর নাক মূখ ভর্তি গোফ দাড়িওলা দু’জন পিচ্চির সাথে বসে বসে লুডু খেলায় মগ্ন তাদের দেখে সে খেলায় আরো বেশী মনযোগ দেন।বরাবর সে কোট টাই পড়া লোক দেখলে তেমন কোন কথা বলে না সাধারনতঃ সে এড়িয়ে যায় এবারো তাই করল সে।আজিম সাহেবের এক বন্ধু তাকে সালাম জানান কিন্তু সে না শুনার ভান করে পিচ্চিদের সাথে লুডু খেলায় মগ্ন।

-আস সাআলাইমু আলাইকুম।

কোন উত্তর নেই ।আবার বললেন তারপরও কোন উত্তর নেই।এবার আজিম সাহেব তার নাক বরাবর করে মাটিতেই বসে পড়লেন হঠাৎ বৃদ্ধ চেচিয়ে উঠেন।

-এ কি করছেন মাটিতে কেন?ঐ তোরা কই সাহেবরে বইতে দে।

এক লোক এসে তাদের বসতে দিল।বৃদ্ধ আবার খেলায় মগ্ন।

-দাদু আমরা আপনার কাছে এসেছিলাম কিছু জানতে আপনি কি আমাদের সাথে একটু কথা বলবেন?

বৃদ্ধ হা না কিছুই বলছে না।আজিম সাহেব আবারও বললেন।

-দাদু শুনেছি,আপনি নাকি ভাষা আনন্দোলন করেছিলেন।

-ভূল শুনেছ আমি কোন আন্দোলন ফান্দোলন করি নাই….. কথার লাইগ্গা কথা কইছি।আর ঐ সব জাইন্না কি লাভ?

-দাদু…চেয়ে দেখুনতো…চেয়ে দেখুনতো আমার চোখেঁ আপনার প্রতিচ্ছবি দেখা যায় কি না?

দাদু এবার আজিম সাহেবের দিকে তাকায়।কিছুক্ষন নিশ্চুপ কেবল তাকিয়ে থাকে।পাশে আজিম সাহেবের অন্য একজন ক্যামেরায় দাদুর ছবি বন্দী করে।দাদুর স্নহের সকল মায়া যেন আজিম সাহেবের চোখেঁ জলছবি হয়ে ধরা দিল।

-দাদু.. কিছু না বলুন অন্ততঃ আপনার জম্ম স্হানটা কোথায় তা যদি বলতেন?

দাদুর কাছ থেকে ঠিকানা তার নাম এবং তার বড় ছেলের নাম,বড় ছেলে কোথায় থাকেন কি করেন সব জেনে আজিম সাহেব সব নোট করেন।কিন্তু অবাক হন দাদুর বড় ছেলের নাম শুনে।দাদুর বড় ছেলের নাম এবং দাদুর নাম ঠিক আজিম সাহেবের বাবা এবং দাদার নামের অবিকল,ঠিকানাও মিলে যাচ্ছে……তাহলে এই বৃদ্ধটিই কি তার হারিয়ে যাওয়া দাদু ভাই?কেমন যেন প্যাচ লেগে গেল কাহিনীতে সে ঠিক মিলাতে পারছে না সত্যি কি?

-জানলাম আপনার জম্ম স্হানের কথা,এবার একটু বলবেন আপনার বীরত্ত্বের কিছু কাহিনী?

-বীরত্ত্ব!বীর..তাই যদি তোমরা ভাবতে তাহলে আজ আমাদের মত বীরেরা না খেয়ে অনাদরে প্রান দিত না।বাঙ্গালী বীরত্ত্বের প্রথম স্বাক্ষী ভাষা আন্দোলন।সেই ভাষা আন্দোলনকারীদের তোমরা কি রাষ্ট্রীয়ভাবে স্বীকৃতি দিতে পেরেছ?পারো নি।প্রকৃত শহীদের কিংবা জীবিত ভাষা আন্দোলনকারীদের নামের লিষ্টও তোমরা রাষ্ট্রীয়ভাবে পূর্ণাঙ্গ করতে পারোনি তোমরা।খোজঁ রাখনি যারা নিজের প্রান দিয়ে মায়ের ভাষাকে রক্ষা করেছিল তাদের। তাহলে আর কি জানতে চাও বলো,কি বলব তোমাদের একটি অকৃজ্ঞ জাতির জন্য?

আজিম সাহেব সেদিন আর কোন কথা বলতে পারেননি।তরুন প্রজম্ম হিসাবে নিজেকে নিজের বিবেককে ধিক্কা দিয়ে গেল।আজিম সাহেব বাসায় চলে এলেন বৃদ্ধার তোলা ছবিগুলো প্রিন্ট দিয়ে নিতে ভূল করেনি।সংগ্রহে রাখা তার দাদুর ছবির সাথে সদ্য তোলা বৃদ্ধার ছবি মিলাতে ব্যাস্ত। তার ছবিতে দাড়ি গোফ একেঁ কম্পিউটারে তা ম্যাচিংয়ের চেষ্টা করেন।এক সময় সে নিজেকে সেটিসফাই করেন যে, এই সেই তার বাবার মূখে শুনা হারিয়ে যাওয়া দাদু ভাইটি।নিজেকে নাতী হিসাবে পরিচয় দিয়ে দাদুকে ঘরে আনতে আর যে দেরী সইছেঁ না আজিম সাহেবের কিন্তু ততক্ষনে অনেক রাত হয়ে গেছে তাই এখন নতুন দিনের নতুন সূর্য্যের অপেক্ষায়।

পরদিন ভোরে উঠেই আজিম সাহেব ফিরে পাওয়া দাদুকে আনতে তার ছোট মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে বের হয়ে গেলেন।দাদুর আশ্রীত বাড়ীর কাছাকাছি গিয়ে অবাক হন অনেক লোকজন দেখে, কারো কারো মাথায় টুপি,বাহিরে পেতে দেয়া টেয়ারগুলোতে লোকের বসা এবং পবিত্র কোরআনের তেলওয়াতের সূর কানে আসছে…ভেবেছেন অন্য কেউ হয়তো ইন্তেকাল করেছেন।ধীরে ধীরে আরো কাছাকাছি লাশের খাটের সামনে দাড়িয়ে লোকজনকে যখন জিজ্ঞাস করে জানতে পারেন এটা ভাষা সৈনিক নাছির সাহেবের লাশ তখন আজিম সাহেব কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন লাশের খাটের উপর।এলাকার স্হানীয় মাতব্বরদের কাছে আজিম সাহেব লাশের পরিচয় খুলে বলে লাশটিকে নিজ বাড়ীতে নিয়ে যাবার অনুরোধ করেন।মাতাব্বররাও তাই চাইছিল যদি তার কোন আত্ত্বীয় স্বজন থাকে তাহলে তাদের বুঝিয়ে দিবেন।

আজিম সাহেব খাটে করেই ভাষা সৈনিককে কাধে তুলে নেন সাথে ছোট মেয়ে এবং আরো বেশ কিছু ভক্ত এবং এলাকার জনগণ আজিম সাহেবের সাথে হাটছেন জিকিরে সহিত।দেশপ্রেমিকের এমন করুণ মৃত্যু যেন আমাদের বিবেকের দরজাকে নাড়া দিয়ে গেল।

আজিম সাহেবের বিশাল অট্ট্রেলিকার খোলা উঠোনে বীর ভাষা সৈনিকের লাশের খাটটি রাখেন। আজিম সাহেব অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকেন সামনের দিকে। আজিম সাহেবের বাবা আকমল হোসেনকে পুলিশ হাতকড়া পড়িয়ে নিয়ে যাচ্ছেন।লাশের কাছাকাছি এসে আকমল সাহেব মুখ খোলা বাবার নিথর দেহটি দেখে কান্নায় হাটু গেড়ে লাশের খাটের পাশে বসে পড়েন……শুধু অনুসূচনায় একটি কথাই বলে…

আকমল সাহেব হ্যান্ডকাপ হাতে ছল ছল নয়নের জলে নাতিকে বুকে লাগান। সামনের দিকে তাকিয়ে অবাক হন....আমার বাবা!ধীরে ধীরে লাশটির খাটের পাশে এগিয়ে এসে এক বার আজিম সাহেবের দিকে তাকিয়ে কাফনের ফাকে খোলা মুখটি দেখে আকমল সাহেব হঠাৎ বাবা বলে চিৎকার দিয়ে খাটের পাশে হাটু গেড়ে বসে পড়েন। অনুসূচনায় চোখে জলের সাগর বয়ে যান আর নিজের অজান্তে কিছু অপ্রকাশিত বাক্য মুখ থেকে বেরিয়ে আসে।

-বাবা গো... আমার বাবা আমাকে ক্ষমা করে দিও আমি তোমার অবাধ্য সন্তান।তুমি বলেছিলে,এ দেশে যারা এ দেশের ক্ষতি করবে তারা এক দিন শাস্তি পাবেই....এক দিন এই বাঙ্গালী জাতিই হিসাব চাইবে,বিচার করবে সব দেশদ্রোহী আর অপরাধীদের(যুদ্ধাপরাধী) ।আমি... তোমার সে দিনের কোন কথাই রাখিনি অবশেষে সেই যে তুমি ঘর ছাড়লে আর এলে না....সারাটা জীবন টাকার নেশায় এতটাই অন্ধ ছিলাম যে তোমাকে খোজঁ করার কোন প্রয়োজনও মনে করিনি....আমি পাপী,আমি অপরাধী,আমি এ সমাজের সমাজপতিদের একটি জগণ্য কীট....সেইতো এলে লাশ হয়ে,তাও আবার আমার চলে যাবার সময় যখন হল.....।

আজিম সাহেব পুলিশদের অনুরোধ করছেন আপাতত তার বাবাকে ছেড়ে দিয়ে....দাদুকে দাফন-কাফনের সমাপ্তি পর্যন্ত সময় প্রার্থনা করেন।কিন্তু পুলিশ সেই মুহুর্তে অপরাগতা স্বীকার করেন।আকমল সাহেব যেন একটু নিজেই নিজেকে  তিরস্কার করেন।

-না,..থাক হয়তো এটাই আমার পাপের শাস্তি...চলুন দারোগা সাহেব।

আকমল সাহেব পুলিশের সাথে যাচ্ছেন আর নয়ন ভরা জলে বার বার পিছু ফিরে দেখছেন বীর বাবার মুখটি।তার পরিবার পরিজন সবাই অশ্রু ভেজাঁ নয়নে আকমল সাহেবের দিকে তাকিয়ে তার চলে যাবার বিদায়ী দৃশ্য দেখছিলেন।এক সময় দৃশ্যের সমাপ্তি ঘটে।

"এটা কোন সত্য ঘটনা অবলম্বনে নয় এ রকম ঘটনা নাও ঘটতে পারে সম্পূর্ণ কাল্পনিক তবে.......

এ ভাবে অযত্নে অবহেলায় এবং রাষ্ট্রীয় গাফলতি সর্বোপরি যারা এ দেশের প্রকৃত রাজনিতীবিদ ছিল তাদের দায়ীত্ত্বজ্ঞান হীনতায় আমাদের শ্রদ্ধাভাজন ভবিষৎ প্রজম্মের আদর্শ এ দেশের বীর সন্তানরা যারা ছিল তারা এভাবে নিরবে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে আমাদের ঋণী করে চলে যায়। আমরা তথা নতুন প্রজম্মরা,কার কাছ থেকে জানব এ দেশের গর্বিত প্রতিটি প্রকৃত ইতিহাস?আসছে নতুন প্রজম্মকে কি ভাবে বলবো এরা তোমাদের আদর্শ যেখানে আমরা নিজেরাই সন্দেহের ভিতরে বসবাস করছি।ভাষা আন্দোলনে নারীদেরও ভূমিকা ছিল কিন্তু আজও শুনিনি জুরে সূরে তেমন কোন নারী ভাষা সৈনিকের নাম।কিন্তু কেনো?

(বিঃদ্রঃ)সত্য এখানে….

চলে গেলেন ভাষা সৈনিক “সাঈদ উদ্দিন”

কিছু দিন আগে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে চলে যান ভাষা সৈনিক সাঈদ উদ্দিন আমরা ক’জনই বা খবর রেখেছি।এ ভাবে নীরবে চলে গেছেন,চলে যান,চলে যাবেন আমাদের গর্বিত সৈনিকরা হয়তো এভাবেই খোজঁ না নেয়ায় মুছে যাবে অনেকের নাম

Likes Comments
০ Share

Comments (3)

  • - কামাল উদ্দিন

    চা আর খামু না

    • - ডাঃ এন এইচ সার্জা

      লিমিটের ভিতরে থেকে খেতে হবে ! 

    - ঘাস ফুল

    আমার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ পোষ্ট। কারণ বেশী চা খাওয়ার বদ অভ্যাসটা এখনো ছাড়তে পারি নাই। ধন্যবাদ ডাক্তার ভাই। 

    • - ডাঃ এন এইচ সার্জা

      শুভেচ্ছা রইলো! 

    - নুসরাত জাহান আজমী

    পানি তো খাওয়াই হয় না। সারাদিনে তিন গ্লাস। আর চা?? ঐটা ৩ থেকে ৪ বার... কাহিনী তো তাইলে আমার ভালো না। কি করুম??

    • - ডাঃ এন এইচ সার্জা

      আপাতত, পানি খাওয়ার পরিমান বাড়ায় দেন... এতেই কাজ হবে! 

    Load more comments...