আমাদের দেখার জন্য দুটি চোখ আছে। আমরা তা দিয়েই এই পৃথিবীর সকল কিছু দেখি।
যা ভালো লাগে তা দেখি বেশী বেশী; যা খারাপ লাগে তা হয়তো কিছু কম।
দেখার এই চোখ একেকজন মানুষের একেক রকম। কেউ কচু পাতার শিশির দেখে আনন্দিত। কেউবা ঝাউ বন, কেউবা জাগতিক কিছু।
আজকে কিছু কথা বলি এই দেখার চোখ নিয়ে। আমাদের পঞ্চেন্দ্রিয়ের মধ্যে ৮৩ ভাগই নিয়ন্ত্রণ করে এই চোখ। তাই এই ইন্দ্রিয়ের ব্যাবহার আমাদের জীবনে একটি বিশেষ গুরুত্ব বহন করে।
আমার মনে হয় এই নগরের মানুষগুলোর চোখের দৃষ্টি বদলে যাচ্ছে দিনদিন।
অশিক্ষিত মানুষদের কথা বাদ দিয়েও বলা যায় শিক্ষিত তরুণ যুবা, মধ্য বয়স্ক সকলেরই দৃষ্টি কেমন যেন বদলে যাচ্ছে খুব দ্রুত।
আমার মনে আছে ৮০ এর দশকেও আমরা মেয়েদের দিকে পূর্ণ দৃষ্টি নিয়ে তাকাইনি কোনদিন। এদিক সেদিক তাকানোর ছল করে যদি দেখা যায়। তখনকার সামাজিক অবস্থাটা এমনই ছিল। মুরুব্বী শ্রেণীর কারো চোখে চোখ রাখা ছিল বেয়াদপী।
তাদের মুখে মুখে কথা বলা ছিল বেয়াড়া আচরণের উদাহরণ।
অথচ আজ?
২০১৩ তে দাঁড়িয়ে আমি নিজে খুব লজ্জিত হই মানুষের দৃষ্টি দেখে। তার দেখার ইন্টেনশন দেখে। আমি নিশ্চয়ই সবার কথা বলছি না। তবে বেশীরভাগ মানুষের চোখের দৃষ্টির নিশানা দেখেই বলছি। আমি ৩ বছর চাকুরিসুত্রে মধ্যপ্রাচ্যের একটি দেশে ছিলাম; ফিরে আসার পর আমার চোখে প্রথম যে ব্যাপারটি খটকা লাগলো তা হল মানুষের চোখের দৃষ্টি।
এভাবে এমন নগ্ন অশ্লীল-ভাবে কারো দিকে তাকানো যায় তা মনে হয় এই দেশে না এলে বোঝা যাবে না। আমি প্রথম প্রথম রীতিমত অবাক হয়েছি। এখন গা সওয়া হয়ে গেছে ব্যাপারটি।
শুধু ভাবি মেয়েরা কি করে এই নগ্ন কুৎসিত চোখের সামনে প্রতিদিন হাঁটছে, কাজ করছে; যেখানে আমি পুরুষ হয়ে কুণ্ঠা বোধ করছি?
সবার প্রতি আমার একটা অনুরোধ থাকবে, আসুন আমরা আমাদের দৃষ্টিকে সংযত করি। ভালো কিছু দেখি। সুন্দর কিছু দেখি এবং তা শোভনীয়ভাবে।
অশোভন ভাবে অশ্লীল ভাবে যেন আমি কোন কিছুই না দেখি- আজকে সবাই এই প্রতিজ্ঞা করি।
ধন্যবাদ।
ভালো থাকুন সবাই।
[লেখাটি ঈষৎ সম্পাদিত- রিপোষ্ট]
কপিরাইট@নীলসাধু
লেখক/কবি,
মানবাধিকার এবং সমাজকর্মী