Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.

‘২৬ জুলাই মুভমেন্ট’ এবং একজন দেশপ্রেমিকের গল্প

 

১৯৫৬ সালের কথা। একজন প্রবল দেশপ্রেমিক এবং জাতীয়তাবাদী বিশ্বাসে বলীয়ান এক তরুন সেচ্ছা নির্বাসন থেকে তার নিজ দেশে ফিরে আসেন। স্বাধীন চেতা এই তরুন ২৬ জুলাই মুভমেন্ট নামে একটি বিদ্রোহী দল তৈরী করেন এবং ধীরে ধীরে তিনি দুর্নীতি পরায়ন,নৈতিকভাবে দূর্বল ও যুক্তরাষ্ট্র প্রভাবিত সরকারের বিরুদ্ধে গেরিলা যুদ্ধ শুরু করেন। তিনি মনে প্রানে বিশ্বাস করতেন যে তিনি তার দেশের মানুষের জন্য সমতা ও সমৃদ্ধি বয়ে নিয়ে আসতে পারবেন।

তার নাম ফিডেল ক্যাস্ট্রো। দুই বছরের মধ্যে তার দল সাধারন মানুষের সমর্থন লাভ  করে এবং ক্রমেই গেরিলা যুদ্ধে  শক্তিশালি হয়ে উঠে। এতটাই শক্তিশালি হয়ে উঠে যে এক র্পযায়ে কিউবার যুক্তরাষ্ট্র প্রভাবিত শাসককে দেশ ত্যাগ করতে বাধ্য করে। ফিডেল ক্যাস্ট্রো হয়ে যান দেশটির কর্তা। এরপরের ৪৯ বছর তিনি তীব্র জাতীয়তাবাদী এবং মার্কসবাদী মনোভাব দ্বারা দেশটি শাসন করেন।

গেরিলা যুদ্ধের সময় থেকে ফিডেল ক্যাস্ট্রো দাঁড়ি রাখতেন। এর বাস্তব কারনও ছিল। তিনি বলেছিলেন এক সাংবাদিককে,তুমি যদি দিনে ১৫ মিনিট করে হিসেব কর তবে শেভিং-এ বছরে ৫০০০ মিনিট ব্যয় হয়। আমি বরং আরও  গুরুত্বপুর্ন কাজে ঐ সময় ব্যয় করবো।

স্কুলে পরার সময়, ১৯৪০ সালের দিকে, ফিডেল ক্যাস্ট্রো  যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ফ্রাঙ্কলিন রুজভেল্টকে ১০ ডলার চেয়ে একটি চিঠি লিখেছিলেন এবং এর বিনিময়ে তিনি কিউবার লৌহ খনি চিনিয়ে দিতে চেয়েছিলেন যা যুক্তরাষ্ট্রের জাহাজ নির্মান শিল্পের জন্য লৌহ যোগানের উৎস হতে পারত। টাকাটি কখনও পৌছায়নি। তার এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে কোন বন্ধুত্বও কখনো  হয়নি।  বরং তিনি ক্ষমতায় আশার পর শত্রুতা বাড়তে থাকে।

 যুক্তরাষ্ট্রের খুব কাছে বসে যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসনকে অস্বীকার করে ফিডেল ক্যাস্ট্রো যুগের পর যুগ টিকে আছেন। তিনি ৬৩০ বার যুক্তরাষ্ট্রের হামলা থেকে রক্ষা পেয়েছেন। তাকে বিষাক্ত ক্যাপসুল, সিগারেট এবং ডাইভিং স্যুট এ রাশায়নিক বিষ মিশিয়ে হত্যার চেষ্টা করা হয় কিন্তু সব চেষ্টাই ব্যর্থ হয়। কোন  ষড়যন্ত্র ফিডেল ক্যাসট্রোকে মারতে বা দমাতে পারেনি। অবশেষে অসুস্থতার জন্য রাষ্ট্রের প্রধান পদ থেকে তিনি অবসর গ্রহন করেন।  ১৯৬০ সালে একবার তার এক  বান্ধবী যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা সি আই এর সংগে একটি চুক্তি করে এবং সেই অনুযায়ী তাকে বিষযুক্ত ক্যাপসুল খাওয়াতে রাজী হয়। তার শোবার ঘর পর্যন্ত বিষযুক্ত ক্যাপসুল নিয়ে যেতে মহিলাটি সমর্থ হয়েছিল। কিন্তু ফিডেল ক্যাস্ট্রো ষড়যন্ত্র বুঝে ফেলেন। তিনি তার বন্দুকটি বের করেন এবং নাটকীয়ভাবে বান্ধবীর হাতে তুলে দিয়ে বলেন- আমি ক্যাপসুলের পরিবর্তে গুলি বেশী পছন্দ করি।এই শুনে বান্ধবী কাঁদতে শুরু করে এবং বলেআমি এটি করতে পারবনা,অনুগ্রহ করে ক্ষমা করে দাও ফিডেল।

 

যুক্তরাষ্ট্রের ৫০ বছরের বানিজ্য নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও ফিডেল ক্যাস্ট্রো তার দেশে বিশ্বমানের সাস্থ্য ব্যবস্থা গড়ে তোলেন। কিউবায় মানুষের গড় আয়ু ৭৭.৫ বছর যেখানে যুক্তরাষ্ট্রে ৭৮.১ বছর। কিউবায় নারী ও শিশু মৃত্যু হার যেকোন ইউরোপিয়ান দেশের তুলনায় ভাল। কিউবাতে প্রতি ১৭০ জন লোকের জন্য ১ জন ডাক্তার আছে যা অনেক উন্নত দেশের তুলনায়ও বেশ ভাল। কিছুদিন হলো যুক্তরাষ্ট্র সহ অনেক দেশ কিউবার হেলথ কেয়ার সিস্টেম অনুকরণ শুরু করেছে।    

 

ফিডেল ক্যাস্ট্রোর প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের শাসকদের তীব্র ঘৃণা বাংলাদেশকে ১৯৭৪ সালের দূর্ভিক্ষর সময়ে বেশ বিপদে ফেলে। দুর্ভিক্ষটি ঘটেছিল তিব্র তাপদাহ,খাদ্য সঙ্কট এবং টাকার মান কমে যাওয়ার কারনে। পনেরো লাখ মানুষ সেই সময় মারা যায়। ঐ  মুহুর্তে ফিডেল ক্যাস্ট্রো বাংলাদেশ থেকে ৫ মিলিয়ন ডলারের বিনিময়ে ৪ মিলিয়ন পিস পাটের ব্যাগ কিনতে চেয়েছিলেন। যখন যুক্তরাষ্ট্রে এই চুক্তি সম্বন্ধে জানতে পারে তখন বাংলাদেশের দুর্ভিক্ষ মোকাবেলার জন্য পাঠানো ২২০,০০০ টন খাদ্য সাহায্য মাঝ পথে থামিয়ে দেয়। খাদ্য সাহায্য বন্ধ করার আরেকটি উল্লেখযোগ্য কারন অবশ্য  ছিল বাংলাদশে সরকার কে পাকিস্তানি যুদ্ধাপরাধীদের বিরুদ্ধে মামলা না করার জন্য চাপ দেয়া। দুটোই কাজে লাগে। বাংলাদেশ কিউবার সাথে কখনও দীর্ঘমেয়াদী ব্যানিজ্য চুক্তি করতে পারেনি এবং পরবর্তী র্দীঘ ৩৬ বছরে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু করতে পারেনি। 

 

ফিডেল ক্যাস্ট্রো এখনো বেঁচে আছেন তবে রাষ্ট্র পরিচালনায় অংশগ্রহন করেন না।


মুল লেখাঃ Fidel Castro & Bangladesh - the tie that never took shape
লিঙ্কঃ http://bangladesh-kothai-jai.blogspot.com/2014/04/fidel-castro-bangladesh-tie-that-never.html

০ Likes ০ Comments ০ Share ৩৬৭ Views

Comments (0)

  • - সোহেল আহমেদ পরান

    ছোট্ট । সুন্দর।

    (চাঁদ)

    শুভেচ্ছা emoticons

    - Shopnil Shagor

    ধন্যবাদ ভাই। আপনাকেও শুভেচ্ছা

    - রুদ্র আমিন

    লালemoticonsএর শুভেচ্ছা।

    • - Shopnil Shagor

      thank u vai

    Load more comments...