Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.

একজন আনমনা

১০ বছর আগে

২০ ডিসেম্বরের আনন্দমুখর আড্ডা, অনুপুস্থিতদের আফসোস এবং একটি প্রস্তাবনা।

 

 

গতকাল নক্ষত্র ব্লগ আড্ডা হয়ে গেলো দারুন ভাবে। কর্তৃপক্ষের নিরলস পরিশ্রমের পর এই ফলাফল। ব্যক্তিগত ভাবে দেখেছি হাতে গোনা মাত্র কয়েকজন মানুষ কিভাবে এমন একটা অনুষ্ঠান এতো সুন্দর ভাবে সম্পন্ন করেছেন। যারা আসতে পারেননি তারা আসলেই মিস করেছে। আপনাদের আফসোস হওয়া স্বাভাবিক এবং একদিক থেকে বিবেচনায় উচিৎ ও বটে। কর্তৃপক্ষের এর প্রচেষ্টার প্রতি আমার আন্তরিক শ্রদ্ধা। কয়েকজন মানুষকে আমার ব্যক্তিগত শুভেচ্ছা। সুমন ভাই, নীল’দা, পাশা ভাই। এদের সাথে আমাদের সবচেয়ে বড় শুভেচ্ছা টা সেই মানুষ গুলোর জন্য যারা একটা জায়গা কে এতো সুন্দর করে তুলেছেন, যারা কাজ করেছেন, সবাই যেই খাবার খেয়ে তৃপ্তির ঢেকুর তুলেছেন সেই রন্ধন শিল্পীদের, যারা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আমাদের কিছু না কিছু দিয়ে সাহায্য করেছেন যেই লোকগুলোকে। এবং সময় নিয়ে যারা আড্ডায় যোগ দিয়েছেন এবং একটি আয়োজন কে সুসম্পন্ন করেছেন তাদের আন্তরিক ধন্যবাদ। কালকের আয়োজন নিয়ে আমি এর বেশী কিছু লিখবোনা। কাল থেকে অনেকেই ছবি, পোস্ট, আড্ডার অভিজ্ঞতা নিয়ে লিখেছেন। আমি তাই একটু অন্যদিকে যাই।  

 

 

কাল থেকে আজকের বেশীর ভাগ আড্ডা সংক্রান্ত পোস্টের মন্তব্যে শুধু আফসোস এবং আফসোস কারন নক্ষত্র ব্লগের আড্ডায় অনেকেই উপস্থিত হতে পারেননি এবং খুব চেয়েও অনেক আয়োজনে অংশগ্রহণ করা সম্ভব হয়না।সম্ভাব্য কারন গুলো হয়তো অনেকটা এইরকম-

 

১) ঢাকায় বসবাসরত অনেক ব্লগারই সেইদিন ঢাকার বাইরে ছিলেন। 

২) একই দিনে ব্যক্তিগত অথবা অধিকগুরুত্বপূর্ণ অন্য অনুষ্ঠান ছিলো।  

৩) সেইদিন দেশেরসার্বিক অবস্থা খারাপ ছিল।

৪) কেউ কেউ অসুস্থ ছিলেন।

৫) অন্যান্য জেলার ব্লগারদের বেশীরভাগই দেশের অবস্থার কারনে ঢাকার আসতে পারেননি।

৬) অনেকেই দেশের বাইরে থাকেন, চাইলেই আসতে পারেন না। আবার দেশে থাকলে তখন একটা অনুষ্ঠান থাকে কিনা সেটাও সন্দেহ। ব্যক্তিগত ভাবে কজনকেই খুজে নেয়া যায়??

 ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও আড্ডায় যোগ দিতে না পারারমোটামুটি এগুলোই তো কারন, তাই না? আর আফসোস তো থেকেই যায়। এমন আড্ডা তো শুধু আড্ডা নয় একটা মিলনমেলা, নবীন-প্রবীণের সরাসরি বন্ধন সৃষ্টিক্ষেত্র, জানা অজানা অনেক গল্পের সমারোহ, ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা ভাগ করে নেয়ার জায়গা অবশেষে অনেক কিছু জানা, সেখা বোঝা। আফসোস তো হবেই। 

 

নক্ষত্রের ব্লগারদের জানাশোনা আর বন্ধন আরেকটু দৃঢ় করার জন্য, ব্যক্তিগত আফসোস দূর করার জন্য আমার একটি ছোট্ট প্রস্তাবনা।

 

নক্ষত্রে ব্লগারদের আড্ডা দেবার একটা নির্দিষ্ট জায়গা আছে। বেশ সুন্দর এবং নিজেদের। আমি ব্যক্তিগত ভাবেই বলতে চাই-নক্ষত্র থেকে এইটা একটা বড় পাওয়া ব্লগারদের।

শুধু নির্দিষ্ট কিছু দিবসে বা অনুষ্ঠানে একত্রিত না হয়ে বরং তার সাথে সাথে একটা নিয়মিত পাঠচক্র করি, কি বলেন?   

"নক্ষত্র-পাঠচক্র"- সপ্তাহিক ছুটির দুইদিন-শুক্রবার (বিকাল ৪টা থেকে-৭টা) শনিবার (বিকাল ৪টা-৭টা)।

প্রতিদিন সবার আসতে হবে তা নয়।যে যেদিন সুযোগ পাবে চলে আসবে। অন্নদিন গুলোতে যে আসা যাবেনা তা নয়। তবে নির্দিষ্ট দিনে পাঠচক্র হবেএতে করে যা লাভ হবে বলে আমার ধারনা-  

১) ব্লগের পাশাপাশি কয়েকটি অনুষ্ঠানে দেখা ছাড়াও দেখা হওয়ার বিষয় টা বাড়বে, বন্ধন ভালো হবে। এতে করে সব কিছুতেই পাশে থাকার একটা মনোভব তৈরি হবে।খুব সহজেই ভাব কিংবা তথ্য বিনিময় হবে সরাসরি। এতে করে মানসিক ভাবেও একটা বন্ধন তৈরি হয়ে যাবে সবার মাঝে।

২) ব্লগারদের নিজেদের লেখা গুলো সরাসরি উপস্থাপন, মন্তব্য এই নিয়ে সকলের ভাবনা। সিনিয়র দের অনুপ্রেরনা, কারো টুকিটাকি ভুল শুধরে দেয়া অথবা একটু ভালো করা যেতে পারে কি করে তা নিয়ে একটু আলোচনা সেই সাথে নতুন্দের ইচ্ছা সব পাওয়া যাবে সরাসরি। ভালোলাগা খারাপলাগা, বুঝার ব্যাপার সব নিয়েই হবে আলোচনা সমালোচনা সব। আলোচনা থেকে উঠে আসে অনেক বড় বড় শিক্ষণীয় ব্যাপার। এইটা তো অনস্বীকার্য।

 ৩) যেকোনো নির্দিষ্ট দিবসে কেউ যদি অনুষ্ঠানে কোনো সমস্যার জন্য যোগ দিতে না পারেন তবে আর আফসোস নেই। ধরেন সে আজ ঢাকা আসলো তাহলে এই সপ্তাহের পাঠচক্রে এসে ঘুরে যেতে  পারলো। আগের টা মিস হলো তাই কোনো আফসোস থাকলোনা। যারা দেশের বাইরে থাকেন তারা যখনই দেশে আসবেন কোন নির্দিষ্ট অনুষ্ঠান না থাকুক তারা সবসময় পাঠচক্র খোলা পাবেন। ব্লগারদের কাছে পাবেন। আফসোসের আর জায়গা কোথায়? 

৪)প্রতিদিন গুরুগম্ভীর কথা বলতে হবে তা হয়। গল্প কবিতা গান সব হবে। যে যা পারেন উপস্থাপন করতে পারবেন, জানাতে পারবেন।একদম ঘরোয়া আড্ডার মত।যেকোনো উদ্যোগ, মানবিক কাজ সংক্রান্ত ব্যাপারেও বলতে পারবেন। এতে ব্লগারদের ঐক্যমত পেয়ে যাবেন সহজে। পাশেও পাবেন নিশ্চিতভাবে।ব্যক্তিগত যত অভিজ্ঞতা, স্মৃতি রোমন্থন, জীবনের গল্প, যা জানালে অনেক কিছু জানা হবে শেখা হবে তাও জানাতে পারবেন। ইতিহাস জানা থাকলে তা। সব কিছু একজন অন্যজনকে সহজেই জানাতে পারবেন। জানতেও পারবেন। ইতিহাস আমরা কতটুক জানি?? যততুক জানি তাও অনেক কম।জানার কি শেষ আছে? যতটুকু জানার সুযোগ আছে জেনে নেই না। আমি ব্যক্তিগত ভাবে বিশ্বাস করি আমার জানার সীমাবদ্ধতা আমাদের দলীয় প্রেম বাড়ায় আর ধ্বংস করে দেশপ্রেম।   

৫) ছোট্ট একটা সংগ্রহ শালা থাকবে। “নক্ষত্র পাঠাগার” এই পাঠাগারের বৈশিষ্ট্য হবে-  এখানে সব ব্লগার দের যত বই বের হয়েছে তার একটা করে কপি থাকবে। সঙ্কলন গুলোও থাকবে। যেকারো যেকনো ছাপা হয়েছে এমন লিখা গুলো থাকবে।এখানে বসেই সেই বই গুলো সবাই পড়তে পারবেন। এতে করে কার কি লেখা ছাপা হয় সব জানা হবে, সংগ্রহ হবে এবং সেখান আলোচনা থেকে অনেক কিছু শেখা হবে। সেইসাথে অনুপ্রেরনা নেয়া বা দেয়ার বিষয় টাও থাকবে।থাকবে কিছু এমন সংগ্রহ যা পড়ে জানা যাবে ইতিহাস। এমন কিছু বই যা হয়তো এই প্রজন্মের কাছে খুব সহজে পৌছাতেও পারেনা। এমন কিছু বই যেখান থেকে অনেক কিছু জানার আছে অথচ এক দুইজন ছাড়া কেউ এই বইটার নাম পর্যন্ত জানিনা। যারা জানেন জানাবেন তারপর তা সংগ্রহ করবে নক্ষত্র। ব্লগারদের সহযোগিতা থাকবে অবশ্যই।    

৬) কেউ একটা নতুন বই পড়লেন। যেই বইটার কথা অনেকেই জানেনা। হয়তো সহজলভ্যও নয় কিন্তু তার মনে হল এর ভেতরের কথা গুলো জানানো উচিত। একদিন বসুন, জানান সবাইকে। আমরাতো জানতেই চাই।

৭) মাঝে মাঝে এক-দুই’ জন করে গুনী ব্যক্তিত্বদের আমন্ত্রণ জানান এই পাঠচক্রে। শুনি, জানি তার গল্প। তার বিষয়ের খুঁটিনাটি সব অজানা বিষয়। তার কাজ, তার পথচলা তার জীবন সেই সাথে অনুধাবন করে নেই আমাদের সকল সীমাবদ্ধতা আর বহিঃপ্রকাশ।  

 

 

শুরু হোক নক্ষত্রের নিয়মিত পাঠচক্র। দৃঢ় হোক ব্লগার-ব্লগার বন্ধন। সবাই সবার পাশে থাক। আর সবাইকে সাথে নিয়ে এগিয়ে যাক নক্ষত্র।  

আমাদের কি চাই তা জানতে চায় নক্ষত্র। আমরা চাইলে এমন কিছু একটা খুব সহজে করা সম্ভব এবং এতে বিনয়ে পাশে থাকবে নক্ষত্র এই আমার বিশ্বাস। কারন নক্ষত্রের সাথে সাথে আমরাও বিশ্বাস করি "নক্ষত্র ব্লগ নয়, ব্লগাররাই নক্ষত্র"।   

৩ Likes ৬৩ Comments ০ Share ৯১১ Views

Comments (63)

  • - মেঘলা মেয়ে

    আমার গল্প ভাল লেগেছে। 

    • - তাহমিদুর রহমান

      ধন্যবাদ 

    - ধ্রুব তারা

    আসলেই আমরা বর্ণবাদী। ধন্যবাদ আপনাকে এটি তুলে ধরার জন্যে।

    • - তাহমিদুর রহমান

      আপনাকেও ধন্যবাদ 

    - ঘাস ফুল

    অনেকে শুধু গায়ের কালার দিয়ে বর্ণবাদ বিচার করে। কিন্তু বর্ণবাদ যে আরও কত রকমের হতে পারে এবং এটা যে আমাদের সমাজের আরও কত গভীরে লুকিয়ে আছে সেটা কেউ সহজে অনুধাবন করে না। আপনার তুলে ধরা ৬টি ঘটনা থেকে অনেকেই হয়তো নিজেদের ধারণা পাল্টিয়ে নিতে পারবে। ভালো লাগলো তাহমিদ। বর্ণবাদের মতো একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়বস্তু নিয়ে খণ্ড খণ্ড গল্প দিয়ে এর ভাবার্থকে বিস্তৃত করেছেন। বেশ সাবলীল ভাষায় লিখেছেন। ভালো লাগলো। 

    • - তাহমিদুর রহমান

      ধন্যবাদ ঘাসফুল ভাই। আপনার মন্তব্যের তুলনা নেই।