হীরের ঘাসফুল
তোমার স্যাঁতসেঁতে মনে প্রেমের তাপ ছড়াতে ছড়াতে একদিন আমার ভালবাসা ছাইচাপা আগুনে বদলে গেল। তুমি অবিশ্বাসী চোখে সেই ছাই হাতড়ে দেখলে, সেখানে কোন মাণিক-রতন নেই আছে মূল্যহীন প্রেম। অবশেষে অবিশ্বাসের ভাঙ্গা কুলায় একদিন সেই ছাই উড়িয়ে দিলে পথের ধূলোয়। তুমি ঘুনাক্ষরেও টের পাওনি সেই ছাইয়ের মধ্যে লুকিয়ে ছিল অযত্নে ফেলে রাখা প্রেম নামের হীরের নাকফুল। একদিন ভালবেসে আমিই তোমাকে সেই নাকফুলটা দিয়েছিলাম। কখন যে মনের অজান্তে সেই হীরের নাকফুল ভালবাসার আগুনে পুড়তে পুড়তে আর আমার চোখের জলে ভিজতে ভিজতে ফুলের বীজ হয়ে গেছে, কেউ তা জানতে পারিনি। সেদিন ছাই ভেবে পথের ধূলোয় যে প্রেমবীজ ছড়িয়ে দিয়েছিলে আজ সেই বীজ থেকে অসংখ্য ঘাসফুল ফুটে আছে পথের দু’ধারে।
একদিন এক যুবকের হাত ধরে তুমি হেঁটে যাচ্ছিলে সেই পথ ধরে। হঠাৎ যুবকটি পথে হেঁটে যেতে যেতে দু’পায়ে মাড়িয়ে যেতে লাগলো ফুটে থাকা ঘাসফুলগুলো। তুমি চীৎকার করে উঠলে! আহা একি করছো! যুবকটিকে ওভাবে পায়ে মাড়াতে নিষেধ করলে, বললে- এভাবে ঘাসফুল মাড়িয়ে যাচ্ছ কেন? যুবকটি হো হো করে হেসে উঠলো। পথের দু’ধারে অযত্নে বেড়ে ওঠা ফুলগুলোর জন্য তোমার কষ্টের কারণ জিজ্ঞেস করলো। তুমি বললে- “ওগুলো আমার অবহেলায় ফুটে থাকা বিশেষ এক অহংকার”। যুবকটি অবাক হলো! তোমার চোখের কোণ বেয়ে ততক্ষণে একফোঁটা অশ্রুজল গড়িয়ে পড়ছে পথে ফুটে থাকা ঘাসফুলের উপর। ঠিক যেন ছোট্ট একটা হীরের নাকফুল জমে আছে ঘাসফুলে। সূর্যের আলো এসে ঠিকরে পড়ছে তোমার চোখে মুখে, ঐ ঘাসফুলে। নাকের কোণে তখনো জমে আছে একফোঁটা জল। হঠাৎ যেন হীরের দ্যুতির মতো ছড়িয়ে পড়লো যুবকের চোখে। যুবকটি চমকে উঠলো! বিষ্ময়ে হতবাক হয়ে বলে উঠলো,একি! তোমার নাকে হীরের নাকফুল! কোথায় পেলে এটা? তুমি তখন নিশ্চুপ। আলতো পায়ে এগিয়ে গেলে ঘাসফুলের কাছে। খুব যত্ন করে কুড়িয়ে নিলে পথের ধূলোয় পড়ে থাকা দুমরানো,মোচড়ানো, থেঁতলে যাওয়া কিছু ঘাসফুল। যুবকের চোখে মুখে তখন বিষ্ময়ের ঘোর! সামান্য ঘাসফুলের প্রতি তোমার ভালবাসা দেখে অবাক হলো যুবকটি। দিগন্তে তখন সূর্য ডুবে আসছিল।
Comments (11)
বাহ!
ব্যাপক।
ধন্যবাদ জানবেন।
ভালো লাগল
কথোপকথনগুলো দারুণ লাগলো। ফিনিশিংটা দিয়েছেন চমৎকার করে। ধন্যবাদ ইশতিয়াক।
খুব ভালো লাগলো কথোপকথন।
শুভকামনা রইলো।