Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.

সুবিধার রকমফের! একের ভেতর অনেক কিছু!!!

ভার্সিটিতে সেমিস্টারভিত্তিক পড়াশুনায় সময় যেন রকেটের গতিতে ছুটে চলে। প্রতিটি সেমিস্টারে চার চারটি মাস এত দ্রুত শেষ হয়ে পরীক্ষার তারিখ চলে আসে যে নাভিশ্বাস উঠে যায়।

তুপা সেই ভোর বেলায় ঘুম থেকে উঠে। সারা দিনের রান্না চড়িয়ে দিয়ে বাচ্চাকে স্কুলে যাওয়ার জন্য এবং হাজবেন্ডকে অফিসে যাওয়ার জন্য তৈরী করিয়ে নিজে স্কুলে যাওয়ার জন্য রেডি হয়। মতিঝিল থেকে সকাল আটটার আগেই বেরুতে না পারলে আজিমপুর জামিলা খাতুন গার্লস স্কুলে এসেম্বলীর আগে পৌঁছুনো যায় না। গণিতের সহকারী শিক্ষিকা ও। প্রথম ক্লাসটাই ওর। তাই কোনভাবেই মিস করা যায় না। সারাদিনের কর্মব্যস্ত দিনের শেষ হয় বিকেল ৪টায়। সেখান থেকে তড়িঘড়ি ছুটতে হয় ঢাকা ইউনিভার্সিটির সান্ধ্যকালীন এম এড ক্লাস করার জন্য। সাড়ে পাঁচটা থেকে শুরু হয়ে রাত ন’টা সোয়া ন’টা পর্যন্ত ক্লাস হয়। পর পর তিনটা ক্লাস। এম এড এর বিষয়গুলো যেরকম নতুনত্বের তেমনি সেগুলোর কোন নির্দিষ্ট বই সাজেস্ট করা নেই। যে কারণে ক্লাসে খুব মনযোগী হয়ে লেকচার শুনতে হয়। এবং সেই সাথে নোটসও টুকে নিতে হয়। সারাদিনের ক্লান্তির পরে রাতের ক্লাসে মনযোগ দেয়া কষ্টকর হয়ে যায়। তবু চেষ্টা করে সবকিছু লিখে নেয়ার। কিন্তু একই সাথে শোনা এবং লেখায় লেকচার বুঝতে কষ্ট হয় অথবা কিছু পয়েন্ট মিস হয়েই যায়।

এই সমস্যা নিরসনে কয়েকদিন মোবাইল ফোনে লেকচার রেকর্ড করার চেষ্টা করেছে। কিন্তু তা বাসায় নিয়ে গিয়ে দেখেছে অনেক কথাই পরিস্কার শুনা যায় না।

ছুটির দিন বাসায় বসে তুপা ফেসবুকে বান্ধবীর সাথে চ্যাটিং করছিলো। আর ফাঁকে ফাঁকে হোম পেজ দেখছিলো। হোম পেজে একটা বিজ্ঞপ্তি চোখে পরলো। একটা কলম, হাত ঘড়ি আর সানগ্লাস।

ছবিগুলোর উপরে বড় করে লেখা স্পাই ভিডিও ক্যামেরা।



তুপা একটু অবাক হয়েই ছবিগুলো বড় করে দেখতে চাইলো। প্রথম ছবিটা কলমের। একটি ছবিতেই একটি কলমের মাথা, একটি ইউএসবি, কিছু তার, ছোট ডিভাইস আর পাশে বিবরণ দেয়া যে এটি আসলে কলম হলেও এটির মাধ্যমে ছবি তোলা যায় এবং ভিডিও করা যায়।





পরের ছবি দুটিতেও একই কাহিনী। হাত ঘড়ি হলেও তা হাতঘড়ি নয়।



সানগ্লাসটিও ঠিক তাই।





প্রথমবার ও খেয়াল করেনি যে নিচে মূল্য লেখা আছে। মূল্য দেখতে পেলো। কীভাবে কিনবে এটা ভাবতেই চোখে পরলো কাস্টোমার কেয়ার নাম্বার দেয়া আছে। ও কিছু না ভেবেই নাম্বারে ডায়াল করে বসলো।

-   হ্যালো, আসসালামু আলাইকুম। নক্ষত্র শপিং থেকে বলছি।

-   জ্বী, একটা কলম দেখলাম, ভিডিও অপশন আছে!

-   জ্বী ম্যাম, এটা কি আপনি অর্ডার করতে চাইছেন?

-   এটা আমি এখনই কিনতে পারবো? কিন্তু কীভাবে পাবো? অফিসটা কোথায়?

-   জ্বী ম্যাম, অফিসটা পান্থপথ। আপনি অর্ডার করলে ঠিকানা আর ফোন নাম্বার টেক্সট করে দিন এই নাম্বারে। আমাদের হোম সার্ভিস আপনার হাতে পৌঁছে দেবে।

-   টাকা কীভাবে পে করবো?

-   আপনি কোত্থেকে বলছেন?

-   মতিঝিল থেকে।

-   ঠিক আছে ম্যাম। আপনি আমাদের ০১৬১৩৪৪১১১০ নম্বরে টাকা বিকাশ করে দিতে পারেন অথবা ক্যাশ অন ডেলিভারীও করতে পারেন। অর্থাৎ পার্সেল হাতে পেয়ে রশিদে লেখা মূল্য পরিশোধ করবেন। ঢাকা শহরের জন্য আমাদের ডেলিভারী চার্জ মাত্র ত্রিশ টাকা।

তুপা জানালো ঠিক আছে, আমি একটু পরে আপনাকে কনফার্ম করছি। সে ফোনটা কেটে দিয়ে হাজবেন্ডের সাথে কথা বলে নিলো। তারপরে কয়েক মিনিট পরে যে নাম্বারে কথা বলেছিলো সেখানে পুনরায় ফোন করে কনফার্ম করলো যে সে একটি ‘১৬ জিবি মেমোরী কার্ড সহ স্পাই ভিডিও পেন’ কিনবে। এর সাথে ও হাজবেন্ডের অফিসের ঠিকানা টেক্সট করে দিলো। ওকে জানানো হলো বিকেল ৪টার মধ্যেই সে জিনিসটা হাতে পেয়ে যাবে। আর মাত্র দু’ঘন্টা সময়। নতুন জিনিসটা হাতে পাওয়ার অপেক্ষায় রইলো ও। বিকেলে অফিস থেকে ফিরে তুপার হাজবেন্ড রাতুল ওর হাতে জিনিসটা তুলে দিলো।



রাতুল অফিসে বসেই ডেলিভারী ম্যানের হাত থেকে জিনিসটির ব্যবহার বুঝে নিয়েছে। সেই সাথে বাক্সের সাথে দেয়া ম্যানুয়াল এর মাধ্যমেও বুঝতে পেরেছে। জিনিসটি দেখে খুবই পছন্দ হয়েছে। যাক! মাত্র দু’হাজার টাকায় কলম, ভিডিও আবার ক্যামেরা!

পরদিনই এম এড এর ক্লাসে গিয়ে তুপা ক্লাস লেকচার ভিডিও করে এনেছে। এখন প্রতিদিনের লেকচার ও সম্পূর্ণ লিখে তো আনেই সেই সাথে ভিডিও করে। বাসায় ফিরে নিজের ল্যাপটপে সমস্ত লেকচার সুন্দর করে ফাইল করে রেখে দিতে পারছে। ওর দেখাদেখি এরপরে রাতুলও একটা হাতঘড়ির অর্ডার দিয়ে দিলো। হাতেও থাকবে আবার গুরুত্বপূর্ণ কনফারেন্স এবং মিটিং এর তথ্য টুকে নেয়া যাবে। নক্ষত্র শপিং থেকে পর পর দুটো প্রোডাক্ট কিনে ই-কমার্স সুবিধাকে সহ বাংলাদেশকেই যেন নতুন করে চিনলো। বাইরের দেশের মত বাড়ছে এখন এদেশেরও মানুষের কর্মব্যস্ততা।

এখন তাই তুপা আর রাতুল ওদের কর্মব্যস্ত সময়ের বাইরে শুধু বাচ্চাকে নিয়ে কোথাও বেড়াতে বেরোয়। কিন্তু কেনাকাটার জন্য জ্যামের মহানগরীর শপিং কমপ্লেক্সগুলোতে শুধু শুধু সময় নষ্ট করেনা। নক্ষত্র শপিং এই রয়েছে নিত্য প্রয়োজনীয় পোশাক, জুতো স্যান্ডেল, জুয়েলারী, ফ্যাশন আইটেম সবকিছু। ঘরে বসে শুধু ব্রাউজ করা। অর্ডার করলে সব বাসায় অথবা অফিসে বসেই হাতে পেয়ে যায়। কখনো বিকাশ আবার কখনো ক্যাশ অন ডেলিভারীতে বন্ধুদের বাড়িতে উপহারও পৌছে দেয়। উপহার প্যাকিং এর ঝামেলাও নেই। সব ঐ ই-কমার্স সাইট থেকেই করে দেয়। আর কী চাই!

২ Likes ২ Comments ০ Share ২৪৬৬ Views