রোদেলা দুপুর।সময় ৪টার ও কিছু পরে।
সুর্য দক্ষিন থেকে আলো ছড়াচ্ছিল।
সাজু আনমনা হাটছিল তাদের বাড়ীর দক্ষিনে ফলের বাগানে।
সাজুদের বাড়ীর দক্ষিনে পুরোটায় নানা ধরনের দেশী ফুল ও ফলের গাছে পরিপূর্ন।
তার পরে আরও বড় ধানের ক্ষেত।
যতদূর চোখ যায় পুরোটাই সবুজ।মন জুড়ানো সবুজের সমারোহ।
সাজুদের বাড়ীর বাগানে নানা ধরনের ফলের গাছ।
কি নেই এই বাগানে আম, কাঠাল, জাম, জাম্বুরা, জামরুল, আনারস, আতা,
লিচু, বরই, বাতাবী লেবু, কামরাঙ্গা, নারিকেল, সফেদা, তেতুল, পেয়ারা, আমলকি, আরও অনেক।
গাছের ডালে নানা জাতের প্রজাপতি ও পাখী। নানা রং এর প্রজাপতি ও পাখীর সুমধুর ডাক সব মিলিয়ে দারুন অপরুপ সাজে সেজেছিল সাজুদের বাগান ও সেদিনের প্রকৃতি।
পুরো বাগান নানা ধরনের ফুল ও মৌসুমী ফলে পরিপূর্ন ছিল।
বাগানে ছিল ফুল ও ফলের সুগন্ধে মোহনীয় এক পরিবেশ।
বাগানটি ছিল নানা জাতের পাখী ও নানা রংয়ের প্রজাপতির অভয়ারন্য ।
আনমনা প্রজাপতির রংগীন পাখা দেখতে দেখতে সাজু হাতে নেয় একটি পাথর।
তাদের বাগানের সিন্দুর আম গাছ পেরিয়ে যেতে
হঠাৎ খেয়াল হল অপরুপ এক সুন্দর পাখী জামরুল গাছের ডালে বসে আছে।
সাজুর মাথায় হঠাৎ দুষ্টমি ভর করল।
অজান্তেই হাতের পাথরটি সে ঐ পাখীর দিকে নিশানা করে ছুড়ে মারল,
পাখীটি কিছু বুঝে উঠার আগেই সাজুর ছোড়া পাথরের আঘাতে তীব্র শব্দ করে গাছ থেকে নীচে মাটিতে এসে পড়ল।
হঠাৎ এ ঘটনায় সাজু হতবিহবল হয়ে চিন্তা করল দৌড়ে পালিয়ে যেতে।
কিন্তু পরক্ষণেই দেখল পাখীটি একটু একটু নড়াচড়া করছে দ্রুত পাখীটি তুলে নিয়ে সে পুকুর ঘাটে গিয়ে আহত পাখীটার মাথায় পানি দিল।
কিছুক্ষন পানি ঢালার পর পাখীটি ওর সুন্দর অপরুপ চোখ দুটো খোলে সাজুর দিকে তাকাল এবং ডানা ঝাপটিয়ে উড়তে চেষ্টা করল।
পাখীটাকে ছেড়ে না দিয়ে সাজু ওর ঘরে এনে রাখল।
সূর্য পশ্চিম দিকে হেলে পড়ছে।
চারিদিকে রক্তিম আভা।
সাজু হাতমুখ ধুয়ে আসার পথে ওর মা জানতে চাইলো তুই এতক্ষন কোথায় ছিলি।
মিথ্যা কথা না বলে সাজু তার মাকে সব ঘটনা খুলে বললো।
আরও বলল আমি পাখীটাকে একটা খাঁচায় রাখতে চাই।
মায়ের কাছে আবদার করল একটি খাচাঁ কিনে দেওয়ার জন্য।
সাজুর মা সব শুনে সাজুকে বুঝিয়ে বলল,এ কাজটা খুব খারাপ হয়েছে।
আমাদেরকে এই দুনিয়ায় বেঁচে থাকতে হলে গাছ , বিভিন্ন ধরনের পাখী, প্রজাপতি এসব যারা প্রকৃতির ভারসাম্য বজায় রাখে তাদের কে টিকিয়ে রাখতে হবে।
আমাদের চারিপাশ পরিবেশ বিপর্যয়ের দিকে ক্রমশ এগিয়ে যাচ্ছে ।
এখন থেকে আমরা সচেতন না হলে,
আমাদের আগামী প্রজন্ম বেড়ে উঠার জন্য উপযুক্ত ভাল কোন পরিবেশ থাকবেনা।
সাজুর মা সাজুকে বলল দেরী না করে পাখীটাকে বাইরে নিয়ে ছেড়ে দিয়ে আস।
সাজু মায়ের কথায় সায় দিল।ওর ভুল বুজতে পারল।
দুজনে মিলে পাখীটাকে আকাশে উড়িয়ে দিল।
মুক্তি পেয়ে পাখীটি ডানা মেলে নীল আকাশে উড়ে গেল।সীমাহীন নীল আকাশ।
Comments (6)
comment
reply