Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.

সাহিত্যে প্রথম নোবেল বিজয়ী ফরাসি কবি সুলি প্রুদোম'র ১৭৫তম জন্মবার্ষিকীতে শুভেচ্ছা

ফরাসি সাহিত্যিক সুলি প্রুদোম। সাহিত্যে নোবেল পুরস্কারপ্রাপ্ত প্রথম ব্যক্তি। ফরাসি এই সাহিত্যিক ১৯০১ সালে তিনি সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। ১৮৮৮ সাল পর্যন্ত তিনি কেবলমাত্র কবিতাই লিখেছেন। পরবর্তীকালে তিনি দার্শনিক প্রবন্ধও রচনা করতে শুরু করেন। মাত্র ২৬ বছর বয়সে তাঁর ‘স্ট্রাঁসেস প্যোমেস’ নামে কবিতা সংকলন প্রকাশিত হয়। ১৮৮৮ সালে প্রকাশিত তাঁর ‘লা বলিউর’ কবিতাটি খুব জনপ্রিয়তা লাভ করে। কবিতাটির মাধ্যমে তিনি পাঠকের মনে সুখ, আনন্দ ও আত্মত্যাগেরও ভাব উদ্রেক করতে সমর্থ হন। আজ এই মহান সাহিত্যিকের ১৭৫তম জন্মদিন। ১৮৩৯ সালের আজকের দিনে তিনি ফ্রান্সের প্যারিসে জন্মগ্রহণ করেন। জন্মদিনে নক্ষত্র ব্লগের পক্ষ থেকে তাঁর প্রতি আমাদের গভীর শ্রদ্ধা।

সুলি প্রুদোম ১৮৩৯ সালের ১৬ই মার্চ ফ্রান্সের প্যারিসে জন্মগ্রহণ করেন। তার প্রকৃত নাম (René Armand François Sully Prudhomme) রনে আরমঁ ফ্রাঁসোয়া (সুলি) প্রুদোম। দু’বছর বয়সে তিনি বাবাকে হারান। তার শৈশব কাটে মা আর বড় বোনের সান্নিধ্যে। ছোটবেলা থেকেই অত্যন্ত মেধাবী ছিলেন প্রুদোম। স্কুলের পাঠ শেষে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন উচ্চতর গণিতে। এরপর ভর্তি হন প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে। কিন্তু অপথ্যালমিয়া রোগে আক্রান্ত হওয়ায় তার পড়াশোনা ব্যাহত হয়। ফলে শিক্ষাজীবনের ইতি টেনে তিনি প্যারিসে এক নোটারি অফিসে চাকরি নেন। সারাদিন অফিসের কাজ শেষে রাতে কবিতা লিখতেন। একই সঙ্গে ধর্মতত্ত্ব নিয়েও উত্সাহিত হয়ে পড়েন। তবে ঈশ্বর সম্পর্কে কোনো ধর্মের ব্যাখ্যাই তার মনঃপূত হয়নি। সুন্দরী খালাতো বোনের সঙ্গে তার শৈশব কাটে। খালাতো বোনের অন্যত্র বিয়ে হয়ে গেলে প্রুদোম একেবারে ভেঙে পড়েন। সিদ্ধান্ত নেন জীবনে কখনও বিয়ে করবেন না।

১৮৬৯ সালে সুলি প্রুদোম লুক্রাতিউসের ‘লে সলিটুডে’র ফরাসী অনুবাদ করেন। ১৮৭০ সাল ছিল তার জীবনের সবচেয়ে দুঃখের বছর। এ বছর তার মা, বড় বোন এবং যে চাচার কাছে তিনি থাকতেন তারা সবাই একে একে মৃত্যুবরণ করেন। প্রুদোম হয়ে পড়েন সম্পূর্ণ স্নেহহীন। এ বছরই তিনি ফ্রাঙ্কো-প্রুশিয়ান যুদ্ধে যোগ দেন। এই যুদ্ধের অভিজ্ঞতা থেকে তিনি "ইমপ্রেশন্‌স অফ ওয়ার" নামক কাব্যগ্রন্থটি রচনা করেছিলেন। ১৮৭০ সালেই মাত্র একত্রিশ বছর বয়সে চিকিৎসকের ভুল চিকিৎসার কারণে প্রুদোম চিরদিনের জন্য পঙ্গু হয়ে যান, যদিও তার লেখনী সচল থাকে।

সুলি প্রুদোমের কবিতার বিষয়বস্তু বেশ জটিল। তার কবিতায় প্রেম ও ব্যর্থতা ঘুরেফিরে আসে। জীবনের বাস্তব অভিজ্ঞতার সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম ব্যাখ্যা তার কবিতায় পরিস্ফুটিত ছিল। এতে বিশেষ স্থান ছিল অচেনা বাস্তব ও চেনা অভিজ্ঞতার। এর সাথে জীবন আর শূন্যতার জন্য তার হৃদয়ে যে দ্বন্দ্ব বিরাজ করতো তার প্রভাব সুস্পষ্ট ছিল তার কবিতাতে।১৮৮৮ সালে তার সর্বশ্রেষ্ঠ সৃষ্টি হ্যাপিনেস প্রকাশিত হয়। এটি অমর মহাকাব্যের মর্যাদা পেয়েছে।

১৯০১ সালে তিনি সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। উল্লেখ্য ১৯০১ সাল থেকেই নোবেল পুরস্কার প্রদান শুরু হয়। সাহিত্যে প্রথম এই পুরস্কার পান ফরাসী কবি সুলি প্রুদোম। তার জীবনের শেষ রচনা ছিল "দ্য সাইকোলজি অফ ফ্রি উইল" যা ১৯০৬ সালে প্রকাশিত হয়। ১৯০৭ সালের ৭ সেপ্টেম্বর তারিখে প্যারিসের দক্ষিণে অবস্থিত নিজ বাসভবন "Chatenay Malabry"-তে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিলো ৬৮ বছর। মৃত্যুর পূর্বে তার নোবেল পুরস্কার থেকে প্রাপ্ত সব অর্থ দিয়ে একটি অনুদানমূলক পুরস্কারের ব্যবস্থা করে যান। এটি নবীন লেখকদের উৎসাহ দেয়ার জন্য প্রদান করা হয়। ফ্রান্সে এখনও এই পুরস্কারের রীতি চালু আছে।

সাহিত্যে প্রথম নোবেল বিজয়ী হিসেবে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকা এই মহান সাহিত্যিকের আজ ১৭৫তম জন্মদিন। জন্মদিনে নক্ষত্র ব্লগের পক্ষ থেকে তাঁর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা।

০ Likes ১ Comments ০ Share ৪২০ Views

Comments (1)

  • - ইকবাল মাহমুদ ইকু

    সুন্দর লিখেছেন। ভালো লাগলো অনেক। শুভেচ্ছা জানবেন ।

    • - বাংলার পাই বাপা

      মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। আপনার শুভেচ্ছা গ্রহণ করলাম। আর শুভেচ্ছা জানানোর জন্য আবারও ধন্যবাদ। আপনার জন্য ও  শুভকামনা রইলো।

    - মাসুম বাদল

    খুব খুব ভাললাগা আপনার কবিতায়...

    - বাংলার পাই বাপা

    ধন্যবাদ ভাই। শুভেচ্ছা জানবেন।

    Load more comments...