Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.

সাত পাকে বাঁধা!!

 

নতুন একটা রেসিপি দেখলেই না বানানো পর্যন্ত আর আমার শান্তি নাই। দু-তিন দিন আগের কথা। আম্মাকে বললাম আমার এই এই লাগবে, একটা পিঠা বানাবো। আম্মা বললো-‘চালের গুড়ি তো নাই। আনাতে হবে।’

সেদিনই বিকেলে আব্বা বাইরে গিয়েছিলো। বাসায় ফিরে বলে-“দোকানী বললো-খালু এই গুড়ি দিয়া তো পিটা অইবো না!”

এরপরে ঠিক হলো গুড়ি ভাঙ্গিয়ে আনবে। তারপরে পিঠা বানানো হবে। আজকে গুড়ি ভাঙ্গিয়ে আনার পরে সন্ধ্যায় মাগরিবের নামাজের পরে বানাতে শুরু করলাম।

অনলাইনে রেসিপি, বর্ণনা আর ছবি দেখে কিছুটা সংশয় ছিলো-আসলেই যে চেহারা দেখলাম সেরকমই হবে তো! যাই হোক-বিসমিল্লাহ বলে কাজ শুরু করলাম।  

 

উপকরণঃ

১) আধা কাপ চালের গুড়ি

২) ১টি ডিম

৩) ১ চা চামচ বেকিং পাউডার

৪) চিনি চা চামচের চার চামচ

৫) তেল দেড়-দুই কাপ

৬) এক চা চামচ গুড়া দুধ

৭) এক চিমটি লবণ।

 

বর্ণনাঃ

আমি প্রথমে আধা কাপ চালের গুড়ি নিলাম। কাপের মধ্যেই বেকিং পাউডার ও গুড়া দুধ চামচ দিয়ে নিয়ে শুকনা চামচ দিয়ে উপর নিচ করে মিশানোর চেষ্টা করলাম। তারপরে সেটা আটা চালুনির উপরে ঢেলে চালুনির নিচে একটা পেপার বিছিয়ে নিয়ে আটা যেভাবে চালে সেভাবে চাললাম। চালুনির নিচে পেপারের উপরে মিহি গুড়া পাওয়া গেলো। চালের গুড়ির সাথে গুড়া দুধ আর বেকিং পাউডার ভালোভাবে মেশানোর জন্যই চালুনি ব্যবহার করলাম।

এই মিহিগুড়া আপাতত পেপারের উপরে থাকুক। অথবা, এটা পেপার থেকে একটা শুকনা কাঁচের বাটিতেও রাখা যেতে পারে।

এবার আমি একটা শুকনা মাঝারী আকারের বাটিতে ডিমটা ভেঙ্গে নিয়ে কাটা চামচ দিয়ে ভালোভাবে কুসুম আর সাদা অংশটা ফেটে নিলাম। তারপরে ফেটানো ডিমের মধ্যে চিনি ও এক চিমটি লবণ ছেড়ে দিয়ে ডিমে্র সাথে ভালোভাবে মিশালাম। এরপরে চালের গুড়াগুলো সবটুকু ঐ ডিমের মিশ্রণে ছেড়ে দিয়ে ভালোভাবে মিশালাম। এই পিঠা বানাতে নাকি পানি দিতে হয় না। পানি দরকার নেই। মিশ্রণ যত ভালোভাবে ফেটানো আর তরলটাও যথেষ্ট পাতলা রাখার কথা বলা ছিলো, আমিও সেরকম রাখতে চেষ্টা করলাম।

এইবার গ্যাসের চুলা জ্বালিয়ে কড়াইটা চুলার উপরে বসালাম। তারপরে প্রয়োজনীয় তেল ঢেলে দিলাম কড়াইতে। জ্বাল বাড়িয়ে দিলাম। তেল সহ কড়াইয়ের কাছাকাছি হাতের তালু মেলে দেখলাম, হাতে আঁচ লাগে কিনা। এর মানে হলো তেল গরম হয়েছে কিনা দেখছি। তেল গরম হয়ে গেলে সুপের চামচে করে ডিমের মিশ্রণ থেকে এক চামচ তুলে নিয়ে কড়াইয়ে তেলের ভেতরে ছেড়ে দিলাম। খুব তাড়াতাড়ি বাদামী রং ধারণ করার আগেই উলটে দিয়েই মিনিটের মধ্যেই ওটাকে তেল ছেঁকে কড়াই থেকে তুলেই আবার ডিমের মিশ্রণে চুবালাম। ঘুরিয়ে উলটে পালটে ভাজা পিঠাটিকে ডিমের মিশ্রণে লাগিয়ে নিয়ে আবার কড়াইতে ভাজতে ছাড়লাম। উলটে সামান্য ভাজা হতেই আবার ওটাকে উঠিয়ে নিয়ে ডিমের মিশ্রণে ছাড়লাম। আগের মতো আবার একই কাজ করলাম। বার বার ডিমের মিশ্রণে ভেজে তোলা তেলের পিঠাটিকে ডুবালাম এবং বার বার ভাজলাম। এভাবে সাত আট বার করার পরে ডিমের মিশ্রণ যখন শেষ, আমার পিঠা বানানোও তখন খতম। এখন কেটে দেখার পালা। আসলেই কিছু হইলো কিনা।  

গরম পিঠাটি শেষ অবস্থায় দেখতে হয়েছে একটা বড় সাইজের ভাপা পিঠার সমান। ওটাকে গরম অবস্থায়ই তেল থেকে তুলে নিয়ে বড় চ্যাপটা একটা প্লেটের উপরে টিস্যু বসিয়ে তার উপরে নিলাম যাতে টিস্যু পিঠার গায়ের বাড়তি তেল শুষে নেয়।

এইবার, ফল বা কেক কাটার ছুড়ি দিয়ে পিঠাটি গরম থাকতে থাকতে তেরছা করে টুকরো টুকরো করে কাটলাম। তেরছা করে কাটার কারণে ভেতরের ডিজাইনটা সুন্দর দেখাবে।

হয়ে গেলো আমার ‘সাত পাকে বাঁধা পিঠা’! বারে বারে ডিমের মিশ্রণের মধ্যে চুবিয়ে বানানো হয় বলেই  এরকম নাম। এই পিঠাটিকে ডিমের বাহারী কেকও বলা হয়ে থাকে।

খেতে সুস্বাদুই হয়েছিলো। কিন্তু, প্রথমবারের চেষ্টা বলে আমি দুটো ডিম নিয়ে করেছি। প্রথমে একবার এক ডিম দিয়ে বানিয়ে খেয়ে স্বাদ দেখে নিয়ে পুনরায় আরেকটা ডিম নিয়ে বানিয়েছি। মাত্র দুটো ডিম দিয়ে বানানো পিঠা ঘর ভর্তি সবাইকে নিয়ে খাওয়া সম্ভব হবেনা। তাই প্রয়োজনে পরিমাণ বাড়িয়ে নিতে হবে। বাবা এজতেমাতে থাকার কারণে ছোট খালার তিন ছেলের জন্য দিয়ে আসলাম। ওরা খেয়ে বললো মজাই হয়েছে।

কাজের ফাঁকে ফাঁকে কিছু ছবি তুলেছি। সেগুলো শেয়ার দিলাম-

 

 

 

 

০ Likes ২৩ Comments ০ Share ৯০২ Views

Comments (23)

  • - আমির আসহাব .

    - আমির আসহাব .