Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.

Golam Rabbani Chowdhury

৬ বছর আগে

সমাধি রেখায় মুঘল সম্রাজ্য



Timurid dynasty নামে খ্যাত মুঘল সম্রাজ্যের প্রথম সম্রাট বাবরের আমল থেকে শুরু করে শেষ মুঘল সম্রাট বাহাদুর শাহ্ পর্যন্ত মুঘল সম্রাজ্যের সীমানা কতটুকু ছিল তা নিঁখুত ভাবে বলা মুশকিল তবে মোটামুটি ভাবে বলায় সম্রাট বাবর থেকে সম্রাট বাহাদুর শাহ্ এর মুঘল সম্রাজ্যের বিস্তৃতি ছিল আফগানিস্থানের কাবুল থেকে শুরু করে মূলতঃ বর্তমান ভারেতের উত্তর অংশ, পাকিস্থান ও বাংলাদেশ। মুঘল সম্রাটগন ভারতের কাবেরী নদীর দক্ষিন পাশে বর্তমান ভারেতের কেরালা ও তামিল নাডু প্রদেশ ও বাংলাদেশের বর্তমানের তিন পার্বত্য জেলা মুঘল সম্রাজ্যের বা মুঘল ঝান্ডার আওতার বাইরে ছিল।

সমাধি রেখায় মুঘল সম্রাজ্য নামে পোষ্টটিতে মুঘল সম্রাজ্যে তাঁদের সমাধি স্থল দিয়ে মুঘল সম্রাজ্যের কোন ধারণা না পেওয়া গেলেও একটি ভিন্ন ধরণের চিত্র পাওয়া যায়, তা এই পোষ্টে শেয়ার কলা হলো।

কাবুলে প্রথম মুঘল সম্রাট জহির-উদ্দিন মোহাম্মদ বাবরের সমাধী, এবং সমাধীঅটি কাবুলের বাগ-ই-বাবুরে অবস্থিত এটি একটি মুঘলদের বাগান । ( ( ছবিটি উইকিপিডিয়া থেকে সংগ্রিত )

উল্লেখ্য যে, প্রথম মুঘল সম্রাট বাবর ভারতের আগ্রায় শাহাদাৎ বরণ করলেও বিশেষ কারণে তাঁর কবরটি কাবুলে - এই কাহিনীটি অন্য একটি পোষ্টে শেয়ার করা যেতে পারে।

সম্রাট জহির-উদ্দিন মোহাম্মদ বাবরের পুত্র সম্রাট নাছির-উদ্দিন মোহাম্মদ হুমায়ুনের সমাধিটি দিল্লীতে ( ছবিটি উইকিপিডিয়া থেকে সংগ্রিত )

মুঘল-ই- আজম নামে খ্যাত সম্রাট নাছির-উদ্দিন মোহাম্মদ হুমায়ুনের পুত্র সম্রাট জালাল-উদ্দিন মোহাম্মদ আকবরের সমাধিটি আগ্রা থেকে প্রায় ৮ কিলোমিটার দূরে মাথুরা রোডে আগ্রা দিল্লী হাই-ওয়ের পাশে সিকান্দ্রায় ( ছবিগুলি ২০১৩ সালে ভারত ভ্রমণের সময় তোলা )

সম্রাট জালাল-উদ্দিন মোহাম্মদ আকবরের পুত্র সম্রাট নূর-উদ্দিন মোহাম্মদ সেলিম বা জাহাঙ্গীরের সমাধিটি লাহরের শাহ দারা বাগে। (ছবিটি উইকিপিডিয়া থেকে সংগ্রহিত)

সম্রাট নূর-উদ্দিন মোহাম্মদ সেলিম বা জাহাংগীরের পুত্র সম্রাট সাহাব-উদ্দিন মোহাম্মদ শাহ-জাহানের সমাধি সকলের জানা - বিখ্যাত তাজমহলে, ( ছবিটি ২০১৩ সালে ভারত ভ্রমণের সময় তোলা )

( ছবিটি উইকিপিডিয়া থেকে সংগ্রহিত) মমতাজ মহলের কবরটি মহলের প্রধান গম্বুজের ঠিক নিচে, শাহ জাহানের কবরটি তাঁর স্ত্রী মমতাজের পাশে।

সম্রাট সাহাব-উদ্দিন মোহাম্মদ শাহ-জাহানের পুত্র সম্রাট আবু মোজাফ্ফর উদ্দিন মোহাম্মদ আওরঙ্গজেবের সমাধিটি ভারতের মহরাষ্ট্র প্রদেশের অরঙ্গাবাদের খুলদাবাদে। মুঘোল সম্রাজ্যে আরও মোট ১৭ জন এবং ১৭তম সম্রাট ও শেষ মুঘল সম্রাট বাহাদুর শাহ্ মুঘোল সম্রাজ্যে শাসন করেন। তবে সম্রাট বাবর থেকে আওরঙ্গজেবের শামনকাল ছিল সবচেয়ে ঘটনা বহুল এর পরের সম্রাটগন ছিলেন দূর্বল প্রকৃতির। ( ছবিগুলি উইকিপিডিয়া থেকে সংগ্রহিত)

সম্রাট আবু মোজাফ্ফর উদ্দিন মোহাম্মদ আওরঙ্গজেব ছিলের তার পূর্ব পুরুষদের থেকে ভিন্ন, তাজ-মহল তৈরীকে কেন্দ্র করে মুঘোল রাজ ভান্ডার যখন প্রায় শূণ্য হতে চলেছিল তখন তিনি মুঘোল সম্রাজ্যকে রক্ষার জন্য পিতা শাহ-জাহানকে বন্দী করে ক্ষতমা গ্রহন করেন।

তার জীবন ধারণ তার পূর্ব পুরুষদের মত ছিল না বলে ইতিহাস থেকে জানা যায়, তিনি পবিত্র কোরাণ নিজ হাতে নকল করে লিখে ও টুপি সিলাই করে জিবিকা নির্বাহ করতেন।

তিনি চেয়েছিলেন তার সমাধি হবে সবুজ ঘামে মেশানো ও খোলা আকাশের নিচে ( শিল্পীর তুলিতে আরংগোজেবের সমাধি ( ছবিগুলি উইকিপিডিয়া থেকে সংগ্রহিত)

আরংগোজেবের সমাধিটি ১৯১১ সালে ভরতের তৎকালিন ইংরেজ গভর্নর লর্ড কার্জনের চোখে পড়লে তিনি খুব মর্মাহত হন ও সংঙ্কারের উদ্যোগ নেন সংঙ্কারের পরে আরংগোজেবের সমাধি ( ছবিগুলি উইকিপিডিয়া থেকে সংগ্রহিত)

আমাদের এই বাংলা অঞ্চলে ঢাকায় বুড়িগঙ্গা নদী পাড়ে লাল বাগ কেল্লাটি মোঘল স্থাপত্যের বড় নিদর্শন, এই কেল্লা বা মোঘল সামরিক দূর্ঘটি প্রতিষ্টিত হয়েছিল আনুমানিক ১৬৭৮ থেকে ১৬৮৪ সালের মধ্যে। লাল বাগ কেল্লা গড়ার কাজে হাত দিয়েছিলেন সম্রাট আওরংগজেবের পুত্র শাহজাদা আজম আর পরবর্তিতে দিল্লীর সম্রাট আওরংগজেবের সুবেদর শায়েস্তা খানের আমলে দূর্গটি অসমাপ্ত অবস্থায় পরিত্যক্ত হয়। ( নিজের তোলা ছবি )

উল্লেখ্য যে, সম্রাট শাহ জাহান সম্রাজ্ঞী মমতাজ মহলের সাথে ছিল বিবি পরির রক্তের সম্পর্ক, যে সমাধি সৌধের কারণে মমতাজ মহল সারা বিশ্বে পরিচিত, বিবি পরির সমাধি সৌধ্যওটি মোঘল সম্রাজ্যে বা মোঘল স্থাপত্যে পরিচিতি এনে দেয়। ( নিজের তোলা ছবি )

সম্রাট জাহাংগীর সম্রাজ্ঞী নূর-জাহানের ভ্রাতা ছিলের আবুল হাসান আসফ খান, আর আসফ খার কন্যা সম্রাজ্ঞী মমতাজ মহল, অন্য দিকে শায়েস্তা খান ছিলেন মমতাজ মহলের ভ্রাতা ও মোঘল সেনাপতি। কথিত আছে যে, বংগদেশে আসার আগে বিবি পরীর সাথে মোঘল এক শাহজাদার সাথে তাঁর বাগদান সম্পূর্ন হয়েছিল কিন্তু ঢাকায় বিবি পরী অকাল মৃত্যুতে আর বিবাহ সম্পূর্ন হয় নি। ( নিজের তোলা ছবি )

ঢাকার লালবাগে বিবি পরীর সমাধিটিও মুঘল সমাধি হিসাবে ধরা গেলে মুঘল সম্রাজ্যের সীমানা আরও বেড়ে যায় সমাধি রেখায় মুঘল সম্রাজ্য। ( নিজের তোলা ছবি )

আর শেষ মুঘল সম্রাট অবশেষে ১৮৬২ সালের ৭ই নভেম্বর ৮৭ বছর বয়সে সাথে শেষ মুঘল সম্রাট বাহাদুর শাহের মৃত্যু হলে তাঁকে রেঙ্গুণের কোন নির্জন স্থানে সমাহীত করা হয়, যা ঘাসে ঢাকা ছিল আর তা ইংরেজ শাসন আমল পর্যন্ত তাঁর সমাধীর কোন উল্ল্যেখ যোগ্য ঠিকানা ছিল না। ইংরেজরা খুব সম্ভবত চেয়েছিল শেষ সম্রাট্রের সমাধীটি যেন আর খুঁজে পাওয়া না যায়।

১৯৯১ সালের ১৬ই ফেব্রয়ারী কিছু সংখ্য মুসলিম মায়নমার বাসী উপযুক্ত প্রমান সহ শেষ সম্রাটের পারিবারিক সমাধী আবিস্কার করেন এর পর থেকে পাশাপাশি তিনটি সমাধী সর্বশেষ মুঘোল সম্রাট, সম্রাজ্ঞী ও তাদের এক নাতির সমাধীস্থলটি বাঁশের বেড়া দিয়ে ঘেরা ছিল, ১৯৯৪ সালের ১৫ই ডিসেম্বর মায়ানমায়ের ধর্ম মন্ত্রী ও ভারতের হাই কমিশনারের তত্বাবধানে বাহাদুর শাহ জাফরের দরগা বা সুফি সিরিনী নামে একটি মাজার শরীফের কাজ সমাপ্ত করেন। বর্তমানে মাজার শরীফটির ঠিকানা হচ্ছে- রেংগুনের বা ইংয়াগনের 6 Ziwaca Street near U Wisara Road in Dagon township.

এই ধারাবাহিকতায় ২০১২ এর ২৮শে মে ভারতের তৎকালিন প্রধান মন্ত্রী মনমোহন সিং Bahadur Shah Zafar’s “Dargah” (Sufi shrine) পরিদর্শন করেন এবং সেখানে প্রার্থনা করেন, একই ভাবে ২০১২ সালের মে মাসে পাকিস্থানের সাবেক রাষ্ট্রপতি আসিফ আলী জারদারী Bahadur Shah Zafar’s “Dargah” (Sufi shrine) পরিদর্শণ করেন এবং কেয়ার টেকারকে মাজার উন্নয়নে ৫০ হাজার মার্কিনী ডলার দান করেন ।

১ Likes ৩ Comments ০ Share ৩৮৪ Views