Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.

সমাজ!!!

একজন মানুষ, ধনী কিংবা গরীব, ছোট অথবা বড় হতে পারে কিন্তু অনুভূতি প্রত্যেকের সমান।
আজ যারা অট্টালিকায় বাস করছে কিংবা বিএমডব্লিউতে ঘুরে বেড়াচ্ছে, অপমানবোধ কিংবা খারাপ লাগার অনুভূতি কেবল তাদের জন্যেই নির্দিষ্ট নয়। যারা দু'বেলা ঠিকভাবে খেতে পায় না, যাদের মাথা গোঁজার মত একটা ছাউনি নেই, এই খারাপ লাগার অনুভূতিটা তাদের মাঝেও সমানভাবেই কাজ করে। কারন সৃষ্টির এই শুরু থেকেই প্রত্যেক মানুষের মাঝেই অনুভব করার ক্ষমতা আল্লাহ দিয়ে দিয়েছেন, যার কাছে কেউ ছোট অথবা বড় নয় বরং সবাই সমান। কিন্তু নিজেকে অতিরিক্ত সামাজিকভাবে উপস্থাপন করতে গিয়ে এই সত্যতা আমরা প্রায়ই ভুলে যাই।
এটা খুবই সহজ, ভিক্ষা চাইতে আসা বৃদ্ধ লোকটাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়া অথবা রাস্তার পাশে দেখা কোন টোকাইকে নোংরা বলে দূর দূর করে তাড়িয়ে দেয়া। হয়ত আপনি এটা করতে পেরে নিজেকে খুব বড় মনে করেছেন কারন নিচু জাতকে আপনি ঘৃণা করেন। আপনি ঘৃনা করেন সেই ছেলেটাকেও যে দু'পয়সা পাবে বলে আপনার দামী গাড়ীটা পরিষ্কার করে দিয়েছিল, অথচ আপনি ভেবেছিলেন ছেলেটার নোংরা হাত আপনার গাড়িটাকে নোংরা করে দিয়েছে! তাই আপনি ছেলেটাকে বকেছেন কারন আপনি ছেলেটাকে নিচু জাতের ভেবেছেন, আপনি ভেবেছেন নিচু জাতের লোকগুলো মানুষ নয়, তারা সমাজের উচ্ছিষ্ট ছাড়া আর কিছু নয় আর তাই তাদের অপমানিত হওয়ার মত মনও নেই। কি অদ্ভুত! এই একই ব্যাপারটা যখন আপনার সাথে ঘটে, যখন একটা সামান্য ভুলে আপনার বস আপনাকে কথা শোনায় তখন আপনার মন খারাপ হয়ে যায়। আপনার খারাপ লাগে কারন আপনি ভিতরে ভিতরে অপমানিতবোধ করেন। তখন 'খারাপ লাগা' কি জিনিস আপনি সেটা বোঝেন কিন্তু তখন বোঝেন না যখন আপনি নিজে অন্যকে ছোট করছেন। আপনি ভুলে যান স্ট্যাটাস দিয়ে কখনই মানুষ যাচাই হয়না, হোক সে উঁচুস্তরের অথবা নিচু কারন স্বয়ং সৃষ্টিকর্তার কাছেও সবাই কিন্তু সমান।
আর কে বলে অসহায়দের সাহায্য করার জন্য অনেক থাকতে হবে আপনার, পাশে দাঁড়ানোর জন্য, একটু ভরসা দেয়ার জন্য কি মানিব্যাগ ভর্তি টাকা থাকতেই হবে? আমি মনে করছি না। রাস্তার পাশের এই অসহায় মানুষগুলোকে একটু হাসি উপহার দিতে পারারটাও সাহায্য কেননা এই হাসিটাও ওরা পায়না। পোলাও মাংস নয়, দুপুরে একবার ডাল-ভাতও চাইলে তাদের খাওয়ানো যেতে পারে কিন্তু আমরা পারিনা। কারন বহু যুগ ধরে চলে আসা যে সমাজের নিয়মে আমরা আবদ্ধ হয়ে আছি, সেই নিয়ম আমাদের বলে রাস্তার পাশে বেড়ে উঠা ছেলেটাকে পাশে বসিয়ে রাস্তার পাশের হোটেলটাতে খাওয়াটা লজ্জাজনক। এই চক্ষুলজ্জার জন্যে আমরা মানুষ হতে চেয়েও পারিনা। আমরা নিজেদেরকে বোঝাই আমরা সমাজের অংশ, আমরা সামাজিক অথচ নিজেকে সামাজিক বলতে বলতে কখন যে মনুষ্যত্ব থেকেই ছিটকে আসি, নিজেরাই বলতে পারিনা। অথচ আমরা চাইলেই পারি, এর জন্য প্রয়োজন তো বেশি কিছু নয়, কেবল একটু সাহস আর শুরু করার মানসিকতা। যেই সমাজে আমরা এখন বসবাস করছি, সেই সমাজের নিয়মগুলো আমাদেরই সৃষ্টি আর এর প্রয়োজনীয় সংশোধন আমরাই করতে পারি। চাইলেই পারি


০ Likes ০ Comments ০ Share ৩১৫ Views