বাড়ি থেকে সিকি মাইল দূরে
জমিদারদের পোড়ো বাড়ি, তারই পাশে বটদীঘি-
প্রকান্ড বটগাছ; তার কোল ঘেঁষে আরও একটি পুকুর,
অদূরে নাপিত বাড়ি। ছনের নয়, গোলপাতার নয়-
টিনেরও নয়- প্রাসাদতুল্য অট্টালিকা সেটি!
এগুলো দেখতে দেখতেই স্কুলের পথ ফুড়াতো আমার।
আবার সেই পথটায় বাড়ি ফিরতে বকুল গাছের নীচে
কিছুটা আড্ডা- কিছুটা ফুল কুড়ানোর উৎসব।
এ সবই আমার শৈশবের গল্প ...
আমাদের বাড়ির সামনে দিগন্ত ছোঁয়া ধান ক্ষেত
মেঠো পথ আঁকাবাঁকা, সে পথে বৃষ্টিতে ভিজে
ডাক নিয়ে আসতো ত্রিশূল হাতে রানার মহব্বত।
আমাদের বাড়ির পোস্ট অফিসে বসে
মহব্বতের কাছে ওর গল্প শুনেছি দু:খের-বেদনার,
আমার শৈশব মহব্বতকে খুঁজে ফেরে এখনও!
বাড়ির পাশেই ছোট্ট নদী-খাল,
ঘাটে বাধা থাকতো জব্বার মাঝির পানসি নৌকা,
আমাদেরর ডিঙি ছিল ছোট একটি।
চাঁদনী রাতে বাবার সাথে জাল ফেলে মাছ ধরার
উৎসবে মেতেছি কত দিন! সে সব এখন
চোখের জলে ভেসে যায় মসজিদের পাশে
বাবার জীর্ণ কবর দেখে দেখে দেখে!
আমার শৈশব এখন ঠায় দাঁড়িয়ে থাকে বেতস বনে
নিকানো উঠানে, বটের ছায়ায়
পাখির ডানায় সোনালী রোদের ঝিলিকে;
ঝাউবনে জোনাকি পোকার উৎসবে।
কাজে-অকাজে, দ্রোহ আর ভালোবাসার জমিনে।
বাসস, পুরানা পল্টন, ঢাকা
২৮ আগস্ট, ২০১৩
Comments (1)
এত সাবলিল ভাষায় বলে গেলেন ছেলে বেলার কথা। মনে হলো যেন দু'চার বছর আগের কথা বলছেন। আপনার স্মৃতিশক্তি আর লেখনীর প্রশংসা না করে পারছি না।
শুভকামনা অনন্ত।
প্রিয় কাবুল ভাই! আপনার স্মৃতিচারণ পড়ে স্মৃতিকাতর হলাম।
অতীতই পথ চলার শক্তি। আমি খুব ফিরে যেতে চাই সেখানে।
শুভেচ্ছা জানবেন!