Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.

লেখকের মন

লেখকের মন কেমন হওয়া চাই,এ প্রশ্ন কেউ করে না কিন্তু জানতে চায়। বেশির ভাগ মানুষই এক কথায় উত্তর দেয়-লেখকের মন হয় সবার থেকে আলাদা। আবার দেখা যায় গল্প করতে বসলে তর্ক-বিতর্কে আমরা প্রত্যেকে যে আলাদা আলাদা তা তুলে ধরতে চাই। অনুকরণ কিংবা অনুসরণের কথা বেমালুম ভুলে যাই। অর্থাৎ বিষয়টা এভাবে বললে বোধ হয আরো ভালো হয়,আমি কারো মতো নই-আমি সম্পূর্ণ আলাদা। তাহলে এবার বলতে হয় লেখকরা আর সবার থেকে আলাদা হয় কিভাবে ?

 

আসলে সাধারণ মানুষেরা যা ভাবে লেখকের মন সত্যিই তা হওয়া্‌ উচিত। না হলে লেখক যে লেখকই তা বোঝা যাবে না। লেখকের মন যে সাধারণের থেকে আলাদা,লেখকের কার্যকলাপে তা প্রমাণ করা উচিত। নইলে লেখক সাধারণের ভিড়ে অসাধারণ তো হতেই পারবে না উপরন্তু ধিক্কারের পাত্র হবেন।                          

 

তাহলে লেখকের মন কেমন হওয়া উচিত?এক কথায় বললে তা সাধারণের মতো বোঝাবে। লেখকের মন হওয়া উচিত- সকালের মত শুভ্র। নদীর পানির মত স্বচ্ছ  সাগরের পানির মত নোনা নয়। নারীর কোমল হৃদয়ের মত। শিশুর না বোঝা খেলার মত,দাঙ্গা পুলিশের মতো নয়। চাঁদনী রাতের রূপালী আলোর মত,পাষাণ ডাক্তারের মত নয়। প্রচন্ড যুক্তিবাদী কিন্তু দালালের মতো নয়। জীবনে বাঁচার জন্য অর্থের প্রয়োজন আছে কিন্তু শিল্পনীতি বিক্রি করে নয়। প্রচন্ড ভাবে আশা জাগাবে কিন্তু আশাহত হবে না। নিজে অসংখ্যবার ঠকবে কিন্তু কাউকে ঠকাবে না। অহংকার থাকবে নিজেসতার  কিন্তু কাউকে বিবেক বিকিয়ে দেবে না। সংসারে থেকেও সংসারের বিবাগী হবে। কাউকে সু-পরামর্শ ছাড়া কু-পরামর্শ দেবে না। নিজের যতো ক্ষতি হোক কারো ক্ষতি করবে না। বহুমুথী চরিত্রের স্রষ্টা হলেও আপন চরিত্রের স্বকীয়তা বজায় রাখবে। সবার মাঝে প্রেম সৃষ্টি করবে কিন্তু প্রেম প্রত্যাশি হবে না। স্বপ্নের  ফেরিওয়ালা হয়ে বাহ্যিক স্বপ্ন  দেখাবে কিন্তু ফ্রাসটেশনে ডুব দেবে না।

 

একজন লেখকের এইসব গুণ থাকে,থাকতে হয়। এটা অসম্ভব কিছু নয়। কিন্তু এতো গুণের অধিকারী লেখক নিজে হয় ঠিকই কিন্তু সে নিজেই জানে না। তা জানার জন্য কোনো আয়নার দরকার নেই অথবা কোনো ভিডিও সিডি নেই যে এক নজরে তা দেখা সম্ভব। লেখকের মন দেখা যায় তার সৃষ্টির ভেতর;তার স্বজনের  ভিতর। তার শিষ্যের ভিতর। তার পাঠকের ভিতর। সর্বোপরি তার কর্মের ভিতর। লেখকের মন যদি সবুজ পাতার শিশিরের মতো না হয় তবে সেই লেখক সাধারণের মতোই বিদায় নেয়। তাকে কেউ মনে রাখে না। তার সৃষ্টি সকল পাঠক না পেয়ে গভীর জলে ডুব দেয়। লেখকের মনের মৃত্যু ঘটে।

 

গভীর সমুদ্রে ডুব দিয়ে মুক্তো সন্ধানী যেমন মুক্তোর খোঁজ করেন,লেখকের মনও তেমনি মানুষের মনের গভীরে প্রবেশ করে পাঠককে তার সন্ধান দিবেন। জীবনের পজেটিভ নেগেটিভ দু’টোই গভীরভাবে উপলদ্ধি করবেন কিন্তু পাঠককে পজেটিভের দিকে টানবেন। লেখকের আন্ত:শক্তির আলোয় সাধারণ পাঠকের দৃষ্টি শাণিত ও অনুভূতিকে জাগ্রত করবে। ভুল-শুদ্ধি নিরূপন ত্রবং ভালোলাগা মন্দলাগার কথা জানবেন। লেখককে হতে হয় একাগ্র,সজাগ,দায়িত্বশীল এবং রুচিনিষ্ট। লেখককে হতে হয় উচ্চমানের মনোবিশ্লেষক ত্রবং সুপাঠক। চমৎকার লেখক তিনিই যিনি তার পাঠকের মনকে নাড়া দিতে পারেন ত্রবং পাঠককে ভাবার অবকাশ তৈরী করতে পারেন। লেখক যদি আত্নবিশ্বাসী না হন,যদি স্থির না হতে পারেন,লেখক হয়ে লেখকে অবিশ্বাস করেন,যদি চোকলখোর হন,তবে বলতে হয় সে লেখক স্বশিক্ষিত  নয়। লেখক হতে গেলে মনকে তৈরী করতে হবে আত্ম-বিশ্লেষণ,শিল্পচর্চা করে। ভ্রমন করতে হবে,মানুষকে ভালোবাসতে হবে। কারো অধিকার কেড়ে নেয়া যাবে না। প্রতারণা করা যাবে না। কাউকে ঠকানো যাবে না। সর্বোপরি চর্চার মাধ্যমে নিজস্বতা  তেরি করত হবে।                                    

 

 

 

১ Likes ০ Comments ০ Share ৪১৪ Views