“চাই জীবনের স্বাভাবীক মৃত্যুর গ্যারান্টি”
বাংলাদেশ স্বাধীন হলো প্রায় ৪৩টি বছর।এই দীর্ঘ সময়ে তুলনা মুলক ভাবে অন্যান্য সেক্টর থেকে এল জি আর ডি মন্ত্রনালয়ে উন্নয়ন তেমন একটা দেখতে পাওয়া যায়না। বর্তমান আওয়ামিলীগ কিছু উন্নয়নমুলক কাজের উড়াল ফ্লাঈ ওভার উদ্ভোধন সহ কিছু পরিকল্পনায় রানিং রেখেছেন। একটি উন্নয়নশীল দেশের কত গুলো শর্তের মাঝে দেশের যোগাযোগ ব্যাবস্হা একটি। অনেক দিন যাবৎ ভাবছি এবিষয়ে কিছু লিখব জানিনা কতটুকু পারব। এই অনুন্নত রাস্তা খাটে চলে বাস, ট্রাক, টেক্সি, টেম্পু, সিএনজি। গাড়ী এবং চালক দুটোই ফিট থাকাটা জীবনের জন্য খুবই গুরুত্ত্বপূর্ণ। এ সব কাজ তদারকী করতে আছে সরকারী সংস্হা বি আর টি এ। কিন্তু আমাদের এই সংস্হা কতটুকু দায়ীত্ত্বশীল তার উপর নির্ভর করবে রাস্তায় আমাদের জীবনের নিরাপত্তার বিষয়টি। অবস্হা দৃষ্টে যা দেখছি তাতে আমরা শংকিত….কিছু রোড দূর্ঘটনার ভিডিও ক্লিপ ইউটিউভ দিলাম।
http://www.youtube.com/watch?v=vu60arZLWkk
http://www.youtube.com/watch?v=lPaBc_KfWdE
http://www.youtube.com/watch?v=HnL7GfWWhII
http://www.dailymotion.com/video/xjvje6_bangladesh-road-accident_news
http://www.youtube.com/watch?v=ZVuVNy9hwTk
http://www.youtube.com/watch?v=HznDI7dXhGE
প্রাকৃতিক দূর্যোগ, বন্যা, খড়া, এবং রাজনৈতিক সংঘর্ষে প্রায় প্রতি দিন কোথাও না কোথাও লোকের মৃত্যুর খবর আমরা শুনতে পাই। মৃত লোকগুলো কারো না কারো মা, বোন ভাই। কিন্তু যখন ঘটনা নিউজ হয় তখন পুরো জাতিই সাফার করে। ২০১১সালের ১৩ইআগষ্ট এটিএন টিভির সিও মিশুক মুনির এবং বাংলাদেশের উজ্জল নক্ষত্র প্রতিভাবান চলচ্চিত্রকার দেশ প্রেমিক তারেক মাসুদ রোড অ্যাকসিডেন্টে অকালে পরলোক গমন করেন । বরেণ্য প্রতিভাবান এই দুই জনের মৃত্যুতে জাতি সে দিন ধিক্কার জানিয়ে ছিল বি আর টি এ কে। কিন্তু হাজারো বছরে জাতির ভাগ্যে তৈরী হয় এমন কিছু ব্যাক্তি অকাল বিয়োগের ক্ষতি, জাতি কিভাবে পুসে নেবে।আর একটি তারেক মাসুদ আর মিশুক মুনির কি ফিরে পাবো? হয়তো পাবো কিন্তু অপেক্ষা করতে হবে যুগের পর যুগ। এভাবে আরো কত নাম না জানা অকাল মৃত্যু হচ্ছে প্রতি দিন কিন্তু এর একটি বিচারও সুষ্ঠু ভাবে আজও হয়নি।হবে কি করে আমাদের গোড়ায় যে গন্ড গল।আইন আছে ভঙ্গুর, যা আছে তার প্রয়োগ নেই। চিত্র নায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন সে “নিরাপদসরকচাই” সংঘটনের নামে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন বেশ কয়েক বছর যাবৎ আমরা কি তার পাশে কিংবা ভিন্ন কোন কায়দায় রোড অ্যাকসিডেন্টের ভঙ্গুর আইনগুলোতে সর্বোচ্চ সাজা ফাসি রেখে বাস্তবায়নে রাষ্ট্র কর্ণধারদের চাপ প্রয়োগ করতে পারি না ? যত দিন আমাদের মাঝে এর সচেনতা না বাড়বে এবং আইনের কঠোরতা না হবে ততদিন আমাদের এভাবে অকাল মৃত্যুকে আলিঙ্গন করতে হবে। রাষ্ট্র আমাদের কি দিচ্ছে না দিচ্ছে জীবনে স্বাভাবিক নিরাপত্তা না পাচ্ছি আইনের শাসন। অবস্হা দৃষ্টে মনে হয় রাষ্ট্র তথা কথিত যানবাহন অ্যাসোসিয়সনের কাছে জিম্ভি।
সিঙ্গাপুর দেখেছি প্রতিটি যাত্রীবাহী গাড়ী নিদিষ্ট একটি ষ্টপে সে থামে। এতে যেমন যান জটের ঝামেলা থাকে না তেমনি অ্যাকসিডেন্টের ও ভয় নেই। সেখানে হাই ওয়ে নিদিষ্ট দাগ থাকে কোন আইটেমর গাড়ী কোন দাগে চলবে দাগের হেরফের হলে জরিপানা সহ শাস্হির বিধান আছে। এ্যাম্মুল্যান্সের গাড়ী, ফায়ার সার্ভিসের গাড়ীর নিদিষ্ট দাগে অন্য কোন গাড়ী চলতে সাহস পায় না কেবল মাত্র আইনের কঠোরতায়। প্রায়ই প্রতিটা সিগনালে সি সি ক্যামেরায় ২৪ ঘন্টা পর্যবেক্ষন করছেন ট্রাফিক বিভাগ। সিগনালে যাওয়া সম্ভব তবুও আইনের কঠোর প্রয়োগে সিগনাল শেষ না হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষ মান থাকতে হয় ড্রাইভারকে। ট্রাফিক আইন বাস্তবায়নে রাস্তায় কোন লোকের প্রয়োজন হয় না শুধু রাস্তার পাশে লাগানো সাইন বোর্ডের নির্দেশনা, রাস্তার দাগ এবং লাল, হলুদ, আর সবুজ রংয়ের লাইটের খেলা। আমি সিঙ্গাপুর ছয় বছরে একটি গাড়ী হর্ন এর শব্দও শুনতে পাইনি। আমরা এক্ষত্রে উল্টো উচ্চ স্বরে শব্দ বা হর্ন না বাজলে যেন গাড়ী চলেনা। আমাদের এর কিছুই তেমন একটা নেই যা আছে তাও মানা হয়না। আর ট্রাফিকের চাকরী পেতে হলে লাগে মোটা অংকের ঘোষ আর মামা-চাচা অভিজ্ঞতা শিক্ষার তেমন কোন গুরুত্ত্ব নেই। এ সব ঘূনে ধরা সিষ্টেম ভাঙ্গতে হবে অন্তত জীবনের নিরাপত্তার জন্য। নিচে কিছু নিয়ম দিলাম যা আমাদের বিআরটিএ হতে লাইসেন্স পাওয়ার সময় ট্রেনিংয়ের বই পুস্তকেই হয়তো থাকে মানা হয় না।
০১.গাড়ী চালানোর সময় চালকে চলন্ত অন্য গাড়ী হতে ডিস্টেনস মেনে চালাতে হবে। অসুস্হ কিংবা মন ভালনা থাকলে গাড়ী না চালানোই উত্তম।
০২.অবশ্যই ওভার টেক করা যাবে না এবং গতি সীমা নিদিষ্টে রাখতে হবে।
০৩.গাড়ী চালানোর সময় মোবাইলে কথা বলা যাবেনা।কথা বললে অ্যায়ারপ্লাগে বলতে হবে।
০৪.অবশ্যই অন্য গাড়ীর স্প্রিডের সাথে প্রতিযোগিতায় অবতীর্ন হওয়া যাবে না।
০৫.চলন্ত অবস্হায় কোন ভিডিও দেখা যাবেনা বা বিরত থাকতে হবে।
০৬.চলন্ত অবস্হায় পাশে সাইন বোর্ডে লাগানো রাস্তায় উপর বিভিন্ন নিয়মের প্রতীক মেনে চলতে হবে।
০৭.ট্রাফিক আইনের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করা বাধ্যতামুলক।
০৮.প্রতি ছয় মাস অন্তর অন্তর গাড়ীর ফিটনেস চেক করতে হবে।
০৯.প্রতি দিন সকালে গাড়ী নিয়ে রাস্তায় বের হওয়ার আগে অবশ্যই গাড়ীর প্রতিটা পার্টসের যেমন লাইট, হর্ন, ব্রেক ওয়েল, ব্রেক, ইত্যাদি ওকে কিনা তা দেখতে হবে।
১০.অবশ্যই রাতে এবং ভোরে গাড়ী চালাতে ফ্লাগ লাইট ঠিক থাকতে হবে।
১১.প্রত্যক গাড়ী ইনসুরেন্স থাকা বাধ্যতামুলক।
১২.প্রত্যকে চালানোর সময় বেল্ট ব্যাবহার করতে হবে।
১৩.গাড়ী চালনায় গাড়ীর সকল বৈধ কাগজপত্র সাথে রাখতে হবে।
১৪.ব্রীজের কাছাকাছি এলে মনে রাখতে হবে স্পিড আইল্যান্ড এবং বাউন্ডারী খুটি।
অবশ্যই চালানোর সময় চালকের সাথে গল্প করা যাবেনা এবং গাড়ী চালনায় তাড়াহুড়ার প্রয়োজন নেই। এবং দক্ষ ওয়ার্কসপে গাড়ীর মেরামত করতে হবে।
রাষ্টের দায়ীত্ত্ব রাষ্ট্র পালন করবে আপনার কেবল সচেনতা এবং নিয়ম কানুন মেনে চলা। আমরা আর চাই না অকালে কোন প্রান ঝড়ে যাক। নিজে বাচুন অন্যকে বাচান। মনে রাখবেন জীবন একটাই বিয়োগ হলে ফেরত পাবেন না।আর পথচারী যারা তাদের পারা পাড়ে নিদিষ্ট স্হানে পারা পার হতে হবে অথবা ওভার ব্রীজ ব্যাবহার করুন।
আমাদের সচেনতাই বাচিয়ে দিতে পারে অকালে হাজারো প্রানের মৃত্যু।
।ধন্যবাদ সবাইকে।
Comments (5)
অসাধারণ...
অনেক ধন্যবাদ বাদল ভাই।
শুভেচ্ছা রইলো।
জীবন শেষ এখানেই
অনেক সুন্দর লিখেছেন সুখ দা
জীবন এখানেই শেষ
তা যা বলেছেন, বেশ
শুভেচ্ছা রইলো এই মেঘ এই রোদ্দুর।
বাহ দারুন লাগল কবি,
মাঘের মৌনতা ভাঙে,পানকৌড়ির ডুবসাঁতারে!
অনুপ্রানিত হলাম মান্নান দা।
শুভেচ্ছা রইলো ।