দৃষ্টিভঙ্গি বদলান, জীবন বদলে যাবে
অন্ধকারকে মানুষ ভয় পায়। অন্ধকারে কিছুই দেখা যায় না। তাই অজানা আশঙ্কা চেপে বসে তার মনে। ভোরের আলোয় আঁধার কাটতে শুরু করলে অজানা আশঙ্কাও কেটে যায়। সে বেড়িয়ে আসে ঘর থেকে। নেমে পরে কাজে। এগিয়ে যায় সামনের দিকে।
সকল অন্ধকারের নিকৃষ্ট অন্ধকার অবিদ্যা। অবিদ্যা জন্ম দেয় নেতিবাচকতা, অশান্তি, লোভ, লাম্পট্য, শোষণ, বঞ্চনা, প্রতারণা, ব্যর্থতা, রোগ, শোক, হতাশা। অফুরন্ত সম্ভাবনা নিয়ে জন্মগ্রহন করেও তারুণ্য ও যৌবনের শক্তি পরিণত হয় প্রতারক, শোষক, লম্পট, শোষিত বা দাসে।
অবিদ্যার অন্ধকার দূর হয় বিদ্যার আলোয়। বিদ্যার সুচনা হয় মুক্ত বিশ্বাস থেকে। আর মুক্ত বিশ্বাসের পথে অন্তরায় হচ্ছে অহেতুক প্রশ্ন। শয়তানের কৌশল হচ্ছে বিশ্বাস থেকে বিরত রাখতে না পারলে সংশয় সৃষ্টি করে দেয়া। আর অহেতুক প্রশ্ন ঢুকে পরে মানুষের স্বভাবজাত কৌতূহল বা জানার আগ্রহের সদর দরজা দিয়ে। সৃষ্টি হয় সংশয়।
অবিদ্যার অন্ধকার দূর করার জন্যই কোয়ান্টাম ডাক দিয়েছে মুক্ত বিশ্বাসের। বলেছে, হে তরুণ! শক্তি তোমার মধ্যেই রয়েছে। অন্তরের শক্তিকে জাগ্রত কর। কোন অভাব থাকবে না। যা দেখে তুমি বিস্মিত হও, সে বিস্ময় সৃষ্টি করার ক্ষমতা তোমার মধ্যেই আছে।
হাজার হাজার মানুষের কৌতূহল আর আগ্রহ সৃষ্টির পাশাপাশি এসেছে হাজারো প্রশ্ন। আর এ প্রশ্নগুলোর জবাব পেতেও তাদের সময় লাগে নি। দ্বিধা সংশয় ভেসে গেছে বাস্তবতা ও বিদ্যার আলোয়। তারা পৌঁছে গেছেন সাফল্যের স্বর্ণদ্বারে।
কোয়ান্টাম মেথড চর্চার গত ২০ বছরের এমনি অসংখ্য প্রশ্নের জবাবের সংকলনই হচ্ছে "কোয়ান্টাম|| হাজারো প্রশ্নের জবাব" আর লিখেছেন মহাজাতক। আপনার মনের সন্দেহ সংশয় বলে যদি কিছু থাকে তা দূর হবে অনায়াসে। কৌতূহল ও জানার আগ্রহ পাবে পূর্ণ তৃপ্তি। আপনি উপলব্ধি করবেন জীবনের আসল সত্য। লাখো মানুষের মতো আপনিও বলবেন- আমিও বিশ্বাস করি। আমিও পারি।
আজকের পর্বের দুটি প্রশ্ন এবং উত্তরঃ
প্রশ্ন-৩) বিশ্বাস করি। কিন্তু বিশ্বাসকে ধরে রাখতে পারছি না। মন সংশয়ী হয়ে ওঠে। বাঁচার উপায় কী?
উত্তরঃ আসলে বিশ্বাস ধরে রাখাটাও একটু কঠিন ব্যাপার। কারণ শয়তান তো সব সময় লেগেই আছে। শয়তানের কৌশল হচ্ছে if you can’t convince, then confuse অর্থাৎ যদি কাউকে convince করতে না পারো, তবে তার মধ্যে confusion অর্থাৎ সংশয় ঢুকিয়ে দাও, প্রশ্ন তুলে দাও। ‘কী জানি! হলে হতে পারে, না হলে তো না-ও হতে পারে’ বা ‘এটা সবার জন্যে ঠিক আছে কিন্তু আমার জন্য বোধ হয় ঠিক না’ ইত্যাদি।
কাজেই যখন অহেতুক প্রশ্ন আসবে, বুঝবেন শয়তান বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে, সংশয় ঢোকাচ্ছে। আর সংশয় এবং অবিশ্বাসের মধ্যে মূলতঃ কোন পার্থক্য নেই। বরং সংশয় অবিশ্বাসের চেয়েও খারাপ। যেমন মোনাফেকি কুফরীর চেয়েও বেশী খারাপ, ক্ষতিকর। আর অবিশ্বাস বা সংশয় জন্ম দেয় নেতিবাচকতা যা আপনার সামনে এগুনোর পথ বন্ধ করে দেয়। ইতিবাচক, বিশ্বাসী হওয়ার জন্য আপনাকে নিয়মিত মেডিটেশন করতে হবে।
প্রশ্ন-৪) সাধারণ মানুষ কেন দুর্দশার বৃত্ত ভেঙে বেড়িয়ে আসতে পারে না?
উত্তরঃ সে বৃত্ত ভাঙতে ভয় পায়। সে তার প্রচলিত গণ্ডির বাইরে আসতে চায় না। এমনকি তার সন্তান এ বৃত্ত ভেঙে বেড়িয়ে আসুক তা-ও চায় না। এক নরসুন্দর চল্লিশ পঁয়তাল্লিশ বছর ধরে নিজ পেশা ধরে রেখেছিলনে। সে মারা যাবার পর তার ছেলে এখন সে কাজ করে। কারণ সে তার ছেলেকে এ কাজ ছাড়া অন্য কোন কাজ শিখিয়ে যায় নাই। দোকানটাও ছেলেকে দিয়ে গেছে। এখন ছেলে দোকান দিয়েই জীবন চালাচ্ছে। অন্য আর কিছুর কথা ভাবতে পারে না।
এই যে স্বর্ণকার, যারা সোনার গয়না বানায়, তাদের জীবনে কিন্তু সোনার চাকচিক্য কখনো ধরা দেয় না। বংশানুক্রমিকভাবেই তারা স্বর্ণকার। দোকানে সোনার গয়না বানাচ্ছে। অথচ এদের পারিশ্রমিক সবচেয়ে কম। ভারতের হীরা শ্রমিকদের মজুরি যে কত কম তা আমরা কল্পনাও করতে পাড়বো না। এক সময় ধরে নেয়া হতো, মা যে বাড়িতে গৃহকর্মীর কাজ করছে, মেয়েও সে বাড়িতেই গৃহকর্মী হবে। কারণ অনিশ্চয়তার ভয়। মেয়ে ভাবতো বাইরে কোথায় যাবো, পরিণতি কী হবে ইত্যাদি। তার চেয়ে এ বাড়িই ভালো। মার খেলেও অন্তত দু’বেলা তো খেতে পারছি, অত্যাচার করলেও একজনই করছে, বাইরে গিয়ে না জানি কোন ঝামেলায় পড়বো।
অর্থাৎ আমাদের মূল শৃঙ্খল এটাই যে, আমরা নুতন কিছুকে ভয় পাই। শৃঙ্খলগুলো কখনো ধর্মের নামে, কখনো রাষ্ট্রের নামে, কখনো সমাজের নামে, কখনো পিতৃপুরুষের নামে চলে আসছে।
গ্রন্থঃ কোয়ান্টাম|| হাজারো প্রশ্নের জবাবঃ মহাজাতক
Comments (51)
বাহ! চমৎকার করে লিখেছেন তো!! গানটার একটা অডিও নিজেই বানিয়ে ফেলুন, অফিসে বসে কোরাসে গান, আর তারপরে অডিওটা এটাচ করে দিন এখানে। ভালো লাগবে সবার।
কর্ত্রিপক্ষত সাংঘাতিক।
আমার ফুট নোট কেটে দিয়ে শুধু গান্টা দিয়ে দিলো,ভালো।
ভালো থেকো যূথি।
গানে ভাব জগতের বন্দনা সুস্পষ্ট। চমৎকার!
গানটি কী ২০১০ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি তারিখে লিখেছিলেন, নাকি তারিখটি উল্লেখ করার অন্য কোন উদ্দেশ্য আছে? ধন্যবাদ, বোন রোদেলা।
kono uddeshsho nai vai,oi shomoy prothom alo bloge likhesilam.
খুব ভাল লাগল।
আকাশ পানে উড়াল ঘুড়ি
নাটাইবিহীন জীবন তরী
অন্ধ বলেই যত বাহাদুরি
অচিনপুরে ঠিকানা ভুলে
লালসায় আজ সকলি।
আমিনুল ভাইয়া, খুব সুন্দর লিখেছেন কিন্তু।