Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.

মারিও হরতাল বনাম হরতাল-প্যাকেজ ব্যবসা

              মারিও হরতালের সঙ্গে আমাদের বাংলাদেশী হরতালের কোন সম্পর্ক নেই। হাঙ্গেরীয় শিল্পী ও কবি পল হরতালের সঙ্গে মারিওর পারিবারিক নামের মিল থাকলেও তাঁদের মধ্যে কোন আত্মীয়তা নেই। তবে মারিও হরতালের সঙ্গে বাংলাদেশী হরতালের কাকতালীয় মিল একটি রয়েছে ঠিকই! উভয় ক্ষেত্রেই ‘ব্যবসা’র জাদু কাজ করছে! মারিও হরতাল ব্যবসায়ী, চিলেকোঠার ছাদের স্কাই-লাইটের ব্যবসা তার। আমি যখন হন্যে হয়ে ভাল কোয়ালিটির স্কাই-লাইট খুঁজছিলাম, আমার প্রতিবেশী ইয়ার্ডাই তখন মারিও হরতালের খোঁজ দেয় আমাকে। 
আবার বাংলাদেশী হরতালও ব্যবসা একটি, রাজনীতির মোড়কে প্যাঁচানো ‘পণ্য।’ তবে, মিল এই পর্যন্তই! মারিও খেটে খাওয়া ব্যবসায়ী; কাস্টমার যত খুশি ততই তার ব্যবসার প্রসার, কিন্তু আমাদের হরতাল যত হিংস্র হবে, দমাদ্দম সাধারণ মানুষের লাশ পড়বে, পুড়ে মারা যাবে বা নিদেনপক্ষে মারা না গেলেও পঙ্গু হয়ে টিকে থাকবে, যানবাহন পুড়বে ততই তার সাফল্য। 
আধুনিককালের হরতাল কি ‘গণ-আন্দোলন’-এর প্রতিশব্দ? মোটেই নয়। নয়ত গান্ধীজী যখন ব্রিটিশ রাজের বিরুদ্ধে অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেন, সেটি যদি এখনকার দেশী হরতালের অন্তত দশ শতাংশ চেহারা নিত তো কোন ‘রাজ’ই তা সহ্য করত না। ধরে ধরে সোজা আন্দামান দ্বীপে পাঠিয়ে দিত। আপাতদৃষ্টে, ‘হরতাল’ শব্দটি গুজরাতি ভাষা থেকে নেয়া। গান্ধীজীর ‘হরতাল’ ছিল আসলে গণআন্দোলন, সঙ্গে অহিংসতার কড়াপাক। ব্রিটিশ-রাজ ছিল ভিনদেশী; তাদের পরাধিকারপ্রবেশকে প্রতিহত করতে মানুষজন স্বতঃর্স্ফূত সাড়াও দিয়েছিল। গান্ধীজীর মাধ্যমে ‘হরতাল’ প্রাতিষ্ঠানীভূত হলেও, এর যথেচ্ছ ও ব্যাপক অপব্যবহার শুরু হয় অনেক অনেক পরে। ভারতে শ্রমিক ইউনিয়ন ও বামপন্থীদের প্রিয় হাতিয়ার ছিল ‘বন্্ধ’, সঙ্গে কখনও ঘেরাও। কিন্তু ‘পূর্ব পাকিস্তানে’ আমরা করতাম গণআন্দোলন, পোস্টার ও সেøাগানসমৃদ্ধ বিক্ষোভ মিছিল; মিছিলের সামনে পেছনে পুলিশী নজর মিছিলকে স্যান্ডউইচ করে রাখত। ছোট বড় দোকানদার, মুদিওয়ালা, রিকশাওয়ালা, বাস ড্রাইভার- এমনকি যে ভিক্ষা করত, সেই ভিখিরিটির পর্যন্ত সায় থাকত। কারণ, রাজনৈতিক ইস্যুর প্রশ্নে হমোজিনীঅটি থাকায় সর্বজনীনতার আবেদন ছিল। 
হরতাল শেষপর্যন্ত কেমন করে যেন দক্ষিণ এশিয়ার নানা দেশের ভাষায় ঢুকে পড়ে; বাগধারার মর্যাদা নিয়ে-আক্ষরিক অর্থেই, জনজীবনে নতুন হুমকিস্বরূপ আবির্ভূত হয়। অথচ কি আর্শ্চয যে পশ্চিমের দেশে, কোন দেশেই- হরতাল তো দূরের কথা, জাঁকজমক করে ধর্মঘটটি পর্যন্ত হয় না! সেলুকাস, কি আজব এই পশ্চিম, তাই না? 
সফল গণ-আন্দোলন ও বিক্ষোভ-মিছিল জনসমর্থন ছাড়া হয় না, আবার সামাজিক বিন্যাসগত বৈচিত্র্যের কারণে সামাজিক ইস্যুগুলোতেও বিবর্তন ঘটেছে। ফলে, কোন ইস্যুই, একমাত্র জাতীয় অস্তিত্ব ও সার্বভৌমত্ব ছাড়া, আর সর্বজনীন নয়। এককালের সর্বজনীন জনসাড়াকে ‘মেরিট’ বললে, না থাকাকে ‘ডিমেরিট’ বলা যেতে পারে। ফলে, ইনোসেন্ট গণ-আন্দোলন ও বিক্ষোভ-মিছিল তার গ্ল্যামার হারাতে থাকে। শূন্যস্থানটি দখল করে নেয হরতাল। কারা নেয় দখল করে? যারা হরতাল করে, তারা। দেশী-বিদেশী, এক্সট্রা-ন্যাশনাল ব্রেনট্রাস্ট তাদের সহায়; ফলে, জন সমর্থন পাওয়ার টেকনিক্যাল সমস্যাটির পরিপাটি সমাধান হয়ে যায়! 
ধর্মঘটের ক্ষেত্রে যেমন অনশন ধর্মঘট বলে একটি বিষয় রয়েছে, হরতালনামায়ও অনশন হরতালের বিষয়টি রয়েছে কিন্তু। অনশনের মানে-ভাতজল, রুটি- কিচ্ছুটি না খেয়ে খেয়ে প্রতিবাদ করা। কালেভদ্রে কেউ কেউ যে ভুখ-হরতাল করে না, তা নয় কিন্তু; তবে ইয়ার্ডার মতে তারা ‘পাগল’ হরতালকারী। হরতাল ডাকিয়েরা করছেন ‘হরতালের রাজনীতি বা পলিটিক্স অব হরতাল’, কাজেই ‘হার্ড’ হরতালই ডাকা হয় সবসময়। ইদানিংকালে আবার হরতালের ফাঁকে ফাঁকে অবরোধ নামক একটি উপাদান ঢোকানো হয়েছে। এই দুইয়ের মধ্যে তফাৎ খোঁজার ব্যর্থ চেষ্টা করে মানতেই হয় যে, উভয় ক্ষেত্রেই প্রস্তুতিপর্ব, ঘটনাপ্রবাহ ও আলটিমেট ফলাফল একই। হরতালের রাজনীতি কাম অবরোধ নতুন মাত্রা নিয়ে দিনকে দিন নিষ্ঠুর নৃশংসতা ও বিপদসংকুলতার ঘনত্ব বাড়িয়ে দিচ্ছে। 
সপ্তাহের পর সপ্তাহ ধরে দু’শ’-আড়াই শ’ ঘণ্টার লাগাতার হরতালের কি অবরোধের সময়েÑ রিক্সা, সিএনজি বা বাসে করে আসতে যেতে বোমা খেতে হয় বা আগুনে পুড়ে মরতে হয়, আর নারী-পুরুষ, শিশু-বুড়ো, গরিব-দুঃখী ইত্যাদির বাছবিচার কেন করা হয় না- তার ব্যাখ্যা দিতে ইয়ার্ডা বলে যে যারা এসব করছে, তাদের অন্তত ‘ডিসক্রিমিনেশন’ ও ‘গণতান্তিক অসমতা’র অপবাদ দিতে পারবে না, হয়ত তাই! বলেই প্রাণখোলা হাসি হেসে বলে, সরি! এরকম তামাশাকে আমরা বলি ব্ল্যাক হিউমার! তোমাদের দেশে হরতাল, ছোট-বড় মার্চ টার্চ হলেই রেডিও ইয়েরেভানের একটি ব্ল্যাক জোক মনে পড়বেই পড়বে আমার। সেই আমলে রেডিও ইয়েরেভানের বরাত দিয়ে রাজনৈতিক জোকের খুব চালাচালি হতো। তারই একটি ছিল, যেমন : এক রুশ, এক জাপানী, এক চেক ও এক ভিয়েতনামিজ রাতের ট্রেনে চেপে বেশ দূরের আরেক শহরে যাচ্ছে। নিঃশব্দ রাতে ট্রেন ছুটছে ঝিক ঝিক ঝিক ঝিক শব্দ তুলে। এবার জাপানী যাত্রী সিট ছেড়ে উঠল, মাথার উপরকার মালপত্রের জায়গা থেকে ব্যাগটি নামিয়ে খুলে ফেলল। বের করল সুন্দর অত্যাধুনিক থ্রি ইন ওয়ান; অন করে রেডিওর নিউজ শুনল, কিছুক্ষণ শুনল ক্যাসেটের গান, টিভি নিয়েও নাড়াচাড়া করল কিছুক্ষণ। তারপরে সম্পূর্ণ যন্ত্রটি অফ করে দিয়ে ট্রেনের জানালা খুলে ছুড়ে ফেলল বাইরে। জাপানীর কান্ডকারখানা দেখে রুশ আর চেক লাফিয়ে উঠে বলল : করো কি, করো কি? তাচ্ছিল্যের সঙ্গে জাপানী বলল : ও আমাদের অনেক আছে! ট্রেন চলছে তো চলছেই। এবারে রুশ তার কাঁধের ব্যাগ হাতড়ে বের করল স্তলিচনায়া ভদকার একটি বোতল; মুচড়ে তার মুখ খুলে ঢকঢক করে কিছুটা খেয়েও ফেলল। রাতের ট্রেন ছুটছে; রুশ এবারে বোতলের মুখ লাগিয়ে জানালা খুলে ছুড়ে ফেলল বাইরে। রুশের এই কান্ডকারখানায় জাপানী আর চেক লাফিয়ে উঠে বলল : করো কি, করো কি? রুশের তাচ্ছিল্যপূর্ণ উত্তর : সে আমাদের অনেক আছে। জাপানী ও রুশের এই জাহির করার প্রদর্শনীর পরে চেক ভাবছে- তাকেও কিছু দেখাতে হয়! কিন্তু কি? রাতের ট্রেন ছুটছে, ছুটেই চলেছে। কি করি কি করি? আর দেরি করা চলে না; উঠে প্রথমেই জানালা খুলে ফেলল, তারপরে ভিয়েতনামিজের দুই কাঁধ ঠেসে ধরে সাই করে জানলার বাইরে ছুড়ে দিল। জাপানী আর রুশ লাফিয়ে উঠে বলল : করো কি করো কি? চেক নির্বিকার উত্তর দিল : ও আমাদের অনেক রয়েছে। 
- ইর্য়াডা সামান্য দম নিল, তারপরে বলল : তোমাদের হরতাল ডাকিয়েদের সঙ্গে কার বেশি মিল রয়েছে? ‘জাপানী’, নাকি ‘রুশ’ নাকি ’চেক’? 
ব্ল্যাক হিউমার বাদ দিয়ে অন্যকথা বলার প্রস্তাব ইয়ার্ডাই দিল। 
হরতাল, অবরোধ তো পালা করে হরহামেশাই হচ্ছে! এগুলোর পাইকারি আয়োজন যারা করছে, তারা তো ব্রেন-ট্রাস্টের নীলনকশা ধরেই করছে। সোসাইটাল কন্ট্রোলের তো দরকার নেই; তাই তা থেকে দূরে, বহুদূরে চলে এলেও কোন ক্ষতি নেই তো? বরং নিয়মতান্ত্রিক পদ্ধতিতে সোসাইটাল কন্ট্রোলকে কব্জা করার বিষয়টি বেশ সময় সাপেক্ষ, তার পরোয়া করা কেন? ভোটদাতারা, যেকোন বিবেচনায়ই হোক না কেন, চারচারটে গুরুত্বর্পূণ শহরের মেয়রগিরির চেয়ার তুলে দিলেও, অবস্থার তাই হেরফের হয় না কোন! হরতাল প্যাকেজের মাধ্যমে ‘রাষ্ট্র’ নামক প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে সংযুক্ত হতে পারলে, বাইরের জগতের কাছে রাষ্ট্র তখন বাফার বা ফিল্টারের সুন্দর পরিপাটি কাজটি করবে, কোন রাজনৈতিক জবাবদিহিতা ছাড়াই! রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার আসল সাইটটি তখন কোন্ প্রভাবশালী ব্রেন-ট্রাস্টের হাতে থাকবে, ভেবে দেখবার মতো! 
ফলে, অজস্র পোড়ার যন্ত্রণায় কস্ট পেয়ে পেয়ে গার্মেন্টস শ্রমিক নাসিমারা মারা যায়, রিক্সা আরোহী চাষী আবুল কাশেমরা পেট্রোল বোমার আগুনে পুড়ে মারা যায় বা মধ্যবয়সী মুসতাফিজুর রহমানরা, মন্টু পালের মতো স্বর্ণকাররা মারা যাচ্ছে অহরহ। ছলাকলাহীন এই নাগরিকের সরল সহজ আত্মীয়স্বজন বন্ধুবান্ধবরা অবাক হয়ে বলে : আমরা তো বাবা রাজনীতি করি না, তবে ধরে ধরে আমাদের মারা কেন? সত্যিই তো তাই! শহর গঞ্জের সুন্দর বড় বড় গাছগুলোরও তো রেহাই নেই! আমাজনের বারিবনে বহুজাতিক কর্পোরেটগুলোর নির্দয় বেপরোয়া গাছ কাটার পরিমাণকে কিছুটা অন্তত কমিয়ে আনার প্রচেষ্টায় ব্রাজিল কত হিমশিম খাচ্ছে, আর সারা বাংলাদেশে গাছ কেটে কেটে রাস্তায়, রেল লাইনের উপরে ব্যারিকেড দেয়া হয়! অথচ বালুর দেশ সৌদি আরব বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার খরচা করে মরূদ্যান বানাচ্ছে, গমের চাষ করছে; গাছপালা লাগিয়ে গরম দেশকে সংযুক্ত আমিরাতও সবুজ করে তুলছে! বোমাই বা কারা বানায়? আর কারাইবা সরবরাহ করে, কে জানে! কারাই বা গাছ কাটার বুদ্ধি দেয়! অথচ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ক্রেডিট কার্ড দিয়ে কি কি কিনলাম, কোন সব্জি, কি বই, জামাকাপড়, প্লেনের টিকেটÑ সব খবর মেগাডাটায় চলে যাচ্ছে! 
ইয়ার্ডা বলেই চলে- কিন্তু এগুলো অর্গানাইজের ‘নৈতিক’ ও আর্থিক জোর কোত্থেকে আসছে? কে বা কারা তাদের অরওয়েলিয়ান ‘বিগ ব্রাদার?’ আড়াই হাজার মাইল দূরের পাকিস্তান ১৯৭১ সালে তোমাদের মুক্তিযুদ্ধের সময়ে প্রেসিডেন্ট নিক্সনকে চীনা নেতাদের সঙ্গে গোপন মিটিং করিয়ে দেয়ার পুরস্কার এখনও পেয়ে আসছে। পাকিস্তান নামক ‘টেরোরিস্ট ইন্ডাস্ট্রির বদৌলতে আন্তর্জাতিক বাজারে ভাল ব্যবসা তাদের অনেক দিনের, লজিস্টিক্সও ঈর্ষণীয়। সোভিয়েত আমলের তালেবান ও সোভিয়েত পরর্বতীকালের তালেবানদের সঙ্গে ব্যবহারটি খেয়াল করো! প্রায় প্রতিদিনই ড্রোনের মারও খাচ্ছে বটে তবে পুষিয়ে ষায় তাদের! অবস্থা এমন এলোপাতারি করে রাখা হয়েছে যে ড্রোনের মারে আহত নিহতরা উপরওয়ালার হাতে সব ছেড়ে দিয়েছে! এমনকি ওসামা বিন লাদেনের গোপন নিবাসের কথা ফাঁস করেও তাদের লাভ হয়েছে প্রচুর, যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লার জন্য কাঁদলে ক্ষতি তো নেই, বরং লাভই রয়েছে। চৌকস ক্রিকেট খেলোয়ার ইমরান খান পাঞ্জাবি নয়; তাকে যদি পাকিস্তানি রাজনীতিতেও চৌকস হওয়ার জন্য আমাদের মুক্তিযুদ্ধের নিরপরাধী ভিকটিমদের বেসিক রাইটস অস্বীকার করতে হয়, তো কি করা যাবে? দোকানে মেড ইন পাকিস্তান লেখা তেঁতুলের খাট্টার বোতল দোকানদারইবা আগে অফার করে কেন, আর খদ্দেরও সেটি কেনে কেন? মেড ইন পাকিস্তানের জুস না খেলেই কি নয়? ক্রিকেটার ইমরান খানদের মাথায় তুলে মাতামাতি করার কি আদৌ দরকার আছে? ইয়ার্ডা বলে, তোমরা কি করবে না করবে, তোমাদের ব্যাপার, তবে আমরা কিন্তু বয়কট করতাম ঠিকই! 
তোমাদের মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী ও যুদ্ধাপরাধীর বিচার জনতার রায় নিয়েই অনুষ্ঠিত হয়। খবরে দেখলাম যে মার্কিনী উপরতলাও বাংলাদেশের যুদ্ধাপরাধীর পক্ষে তদবির করতে পিছপা হয়নি! অথচ ন্যুরেমবার্গ ট্রায়ালস তো ঠিকই হয়েছিল! এই ট্রায়াল্স্ ছাড়াও, ন্যুরেমবার্গের বাইরে- কম করে আরও বারোটি যুদ্ধাপরাধীর বিচার যুক্তরাষ্ট্র একাই পরিচালনা করেছিল। যেমন : দখলদার বাহিনী হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র জেনারেল হিদেকি তজোসহ ১৪জন জাপানীকে প্রথম শ্রেণীর যুদ্ধাপরাধী বলে চিহ্নিত করে শাস্তি দিয়েছিল। জাপানের প্রধানমন্ত্রী সম্প্রতি তাদের সমাধি দর্শনে গিয়ে যে অগ্রহণযোগ্য পাপ করেছেন, তারই খেসারত বাবদ বর্তমানে চীন ও দক্ষিণ কোরিয়ার মহাক্রোধ সামলাতে ব্যতিব্যস্ত তিনি। মহাক্রোধ হবেই তো-তজোর দলবল দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের সময় চীনা ও কোরীয়দের মানবাধিকার লঙ্ঘনসহ ইচ্ছামতো কচুকাটা করেছিল! 
ইয়ার্ডা বলতে থাকে, সে যাহোক! যে ব্রেন-ট্রাস্টই তোমাদের হরতাল-প্যাকেজটি রেডি করে দিক না কেন, তাদের উদ্ভাবনপটুতার প্রশংসা করতেই হয়! নতুন আরেকটি এন্ট্রি - ‘র্মাচ ফর ডেমোক্রেসি’ দেখেছে? অনির্দিষ্টকালের জন্য অনঢ় অবস্থানের কথাটিও উল্লেখ করতে হয়- তা বিরোধী নেত্রী যদি গুলিয়ে ফেলে ‘ডেমোক্রেসি ফর রোড র্মাচ’ বা মার্চ বলেন, বা ক্রোধ সামলাতে না পেরে ‘গোপালী’ টোপালী সø্যাং বলেও ফেলেনÑ কিছু করার নেই! অপ্রিয় শহর গঞ্জের নাম পাল্টে দেয়ার হুমকির মধ্যে অবশ্য ক্ষমতা কব্জার পথে অহেতুক দীর্ঘসূত্রিতায় র্ধৈযচ্যুতির লক্ষণ গভীর মনস্তাত্ত্বিক ইস্যুর মধ্যে পড়ে। উঁচু পদের বিদেশী কূটনীতিকরা তাঁকে অবশ্য প্রফুল্ল­ রাখার চেষ্টা করে যাচ্ছেন! তাই সফল অসফল ‘র্মাচ’ নিয়ে টকশোতে গলদঘর্ম হওয়ারও কারণ দেখি না কোন! 
তবে ২০১৩ সালের শেষদিন পর্যন্ত ‘প্রো-পিপল’ প্রো-জনতার জন্য একটি ‘ড্রিমের’ও উচ্চারণ শুনেছ তোমরা? না। হরতাল-প্যাকেজে নতুন আর কোন এন্ট্রি রয়েছে? কোন বান্দার-বুশ হরতাল ডাকিয়েদের এমন কড়া ডোজের এলিক্সির মহৌষধের যোগান দিচ্ছে? 
তোমরা তো আস্তিক মুসলমানে নাস্তিক মুসলমানে বিভক্ত হয়ে রয়েছেই; সঙ্গে রয়েছে তেঁতুল-তত্ত্ব! এবারে তোমাদের বেসিক মানবাধিকার তথা গণতন্ত্রকে হাইজ্যাক করে হরতাল-প্যাকেজের তা-বে এলোপাতাড়ির যে সমুদ্রে ঠেলে দেয়া হচ্ছে, তাতে করে, যেমন : খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণা কি ধরে রাখতে পারবে তোমরা? খুব, খুবই কঠিন কাজ হবে বা গত কয়েক বছর ধরে স্বপ্নের বিদ্যুতের উৎপাদন যেমন বাড়ছে, এই টেম্পো কি থাকবে? 
বঙ্গোপসাগরের গভীর জলের তলায় লুকিয়ে থাকা বিশাল প্রাকৃতিক সম্পদের মালিকানার যে স্বপ্ন পুষছ, সেটি কি স্বপ্নই থেকে যাবে না তোমাদের! তোমাদের দিকে তাকালে, দক্ষিণ আফ্রিকার কথা বার বার মনে পড়ে যায় আমার! দক্ষিণ আফ্রিকাকে ঈশ্বর অকৃপনভাবেই বিশাল সম্পদ দিয়েছিলেন! কিন্তু নব্বই দশকে বর্ণবাদ বিলোপের প্রস্তুতিলগ্নের অংশ হিসেবে দেশী-বিদেশী কিছু এলিটের মধ্যে দক্ষিণ আফ্রিকানদের সম্পদগুলো সুন্দর ভাগ-বাটোয়ারা হয়ে যায়। একে থ্যাচারিজম, এলিট-ট্রানজিট, অলিগার্কি- যা খুশি বলা হোক না কেন, তাতে হাইজ্যাক হয়ে যাওয়া গণতন্ত্রের মীমাংসা নেই কোন। হরতাল-প্যাকেজের স্রোতে ব্যক্তিগত ডিগনিটি ও চারিত্রিক অখ-তাকে হারিয়ে হারিয়ে যা পাওয়া যাবে, সেটি আসলে চয়েসলেস গণতন্ত্রেরও অধম।      পদটিকা ...........................     এই লেখাটি আমার নয় । এটি আমাদের সবার প্রিয় ও শ্রদ্ধেয়   প্রবাসী আপু নাদিরা মজুমদার এর তিনি বাংলাদেশ এর প্রথম মহিলা সাংবাদিক এবং দীঘ দিন ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন এর প্রসাশন বিভাগে কর্মরত । তিনি দীঘও দিন ধরে বাংলাদেশ এর জাতীয় দৈনিক গুলতে নিয়মিত সমসামিয়ক কলাম লিখে থাকেন ।তিনি ব্লগার  নয় কিন্তু শত ব্যাস্ততার মধ্যও নিয়মিত বাংলা ব্লগ এর ব্লগারদের  লেখা পড়ে থাকেন । পেশাগত কারনে ওনার সাথে আমার মাঝে মাঝে দেখা হয়ে থাকে । আমি অনার লেখার একজন দারুন ভক্ত । ইছে আছে কখন ও সময় সুযোগ হলে আপু কে নিয়ে একটি পোস্ট দেওয়ার । আপুর  এই লেখাটি আমার কাছে অনেক ভাল লাগায় আপুর অনুমতি নিয়েই লেখাটি পোস্ট দিলাম । আশা করি আপনাদের সবার ভাল লাগবে ।   আপুর সাথে যোগাযোগ করতে পারেন    নাদিরা মজুমদার   
nadirahmajumdar@gmail.com 
০ Likes ৩ Comments ০ Share ৪৩২ Views

Comments (3)

  • - ইকবাল মাহমুদ ইকু

    লিখা ভালো। কিন্তু গসিপিং টাইপ কিছু আমার কখনই ভালো লাগে না 

    • - সনাতন পাঠক

      ধন্যবাদ।

    - সুমন আহমেদ

    এই ধরণের লেখা গুলো শেয়ার না করাটাই শ্রেয় মনে করি।

    • - সনাতন পাঠক

      সঠিক।

    - ফরিদ সুমন

    এই ধরনের মিথ্যা সংবাদ প্রচার বন্ধে অভিযুক্ত তারকাদের সোচ্চার ভূমিকা রাখার সুযোগ কোথায়? তাঁরা তো ভিকটিম। সোচ্চার ভূমিকা রাখতে হবে এসব খবরের পাঠক ও দর্শকদের। এ ধরনের খবরের লিংক দেখামাত্র একশ্রেণীর পাঠক/দর্শক হুমড়ি খেয়ে পড়েন। মুহূর্তেই সাইটের হিট বেড়ে যায়। তাই জনপ্রিয়তা পাবার সস্তা লোভে কিছু অনলাইন সংবাদমাধ্যম এবং অসাধু মানুষ এসব প্রচার করে বেড়ায়। 

    সুতরাং পাঠক/দর্শক হিসেবে আমরা সেসব লিংকে না গেলেই পারি। জনপ্রিয়তা না পেলে ওরা আর এসব প্রচার করবেনা। 

    আরেকটা কথা, আপনার পোস্টের সাথে ছবিটি কি সঙ্গতিপূর্ণ? ভেবে দেখবেন। 

    • - সনাতন পাঠক

      আপনার মতামতে সহমত। ইনক্লুডিং ছবি। ধন্যবাদ।

    Load more comments...