Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.

রাজীব নূর খান

৭ বছর আগে

মানব জীবনে সেক্স কতটা প্রয়োজন

কি আছে একজন নারীর শরীরে? একজন নারী যখন রাস্তা দিয়ে হেঁটে যায়- সব শ্রেনীর মানুষ খুব কুৎসিত ভাবে তাকায়। ছাত্র, শিক্ষক, চাচা, মামা,খালু, রিকশাওয়ালা, হকার, এমন কি মাত্র নামাজ শেষ করে মসজিদ থেকে বের হওয়া একজন মুরুব্বী পর্যন্ত। যারা এই কুৎসিত ভাবে তাকায়, তখন আমি তাকাই তাদের দিকে- তাদের দিকে তাকিয়ে তখন আমার মনে হয় দুনিয়ার সবচেয়ে নোংরা কিছু তাদের চোখে মুখে খেলা করে। একদিন আমার খুব রাগ হলো- আমি একজনকে প্রশ্ন করলাম- ভাই এইভাবে তাকিয়ে আছেন কেন? মেয়েটিকে কি আপনারে পরিচিত? কুৎসিত ভাবে তাকানোর কি আছে? এখন কেউ যদি আপনার মা, বোন অথবা আপনার স্ত্রী'র দিকে এভাবে তাকায়! লোকটি আমার ওপর রেগে গেল। 

খবরের কাগজে যখন কোনো ধর্ষণ এর খবর পড়ি- আমি প্রচিন্ড অবাক হই। ব্যথিত হই। যারা ধর্ষণ করে তাদের চেয়ে খারাপ লোক আর এই দুনিয়াতে নেই। মেয়েরা যতই শিক্ষিত হোক, তারা আসলে বোকা। ৯০ ভাগ শিক্ষিত মেয়েরা বিয়ের আগেই শারীরিক সম্পর্ক করে। বোকা মেয়ে গুলো বুঝে না শারীরিক সম্পর্ক দিয়ে ছেলেরদের আটকে রাখা যায় না। তারা ঠিকই ছুটে যায়। আপনাকে ভোগ করে, অন্য মেয়ের পিছে ছুটে। আপনার সাথে মিথ্যা প্রেমের অভিনয় করবে, আপনাকে বিয়ের কথা বলবে- আপনাকে মানসিক ভাবে দুর্বল করে আপনাকে বিছানায় নেবে। যৌন সুখ ভোগ করবে- দিনের পর দিন। তারপর আপনাকে ছুড়ে ফেলবে। আপনি কাঁদবেন। কিন্তু কেঁদে ফয়দা নেই। অবশ্য তাতে আপনার কিছু যায় আসে না। আপনার বাবা মা আপনাকে অন্য কারো সাথে বিয়ে দিয়ে দিবে। এই ভাবেই চলছে এযুগের প্রেম ভালোবাসা। 

আমি যখন রাস্তা দিয়ে বোনকে নিয়ে হেঁটে যাই- কেউ আমার দিকে তাকায় না। সবাই হা করে আমার বোনের দিকে তাকিয়ে থাকে। না, আমার বোন কোনো অশ্লীল জামা পড়েনি। তাদের এই নোংরা ভাবে তাকানো দেখে- আমার নিজেরই লজ্জা লাগে। আবার আমি যখন আমার স্ত্রীকে নিয়ে কোথাও যাই- তখনও রাস্তা ঘাটে নানা শ্রেনীর মানুষ কুৎসিত ভাবে তাকিয়ে থাকে। এই সমস্ত লোক গুলো শুধু আমার বোন বা আমার স্ত্রীর দিকে না তারা রাস্তা ঘাটে সব মেয়ের দিকেই কুৎসিত ভাবে তাকায়। তারা কি জানে(?) তাদের মা বোন আর স্ত্রী'র দিকে অসংখ্য লোক কুৎসিত ভাবে তাকায়। একদিন আমার বোনকে কলেজ থেকে বাসায় ফেরার পথে রাস্তার পাশে চায়ের দোকান থেকে কয়েকটা ছেলে কুৎসিত ইশারা করল এবং একজন আরেক জনের দিকে তাকিয়ে বলল- সেই রকম 'মাল' দোস্ত। আমি ছেলেটিকে ডেকে বললাম- সমস্যা কি? এই ররকম নোংরা কথা বললে কেন? তোমার বাবা মা কি এই শিক্ষা দিয়েছেন তোমাদের? তারা রেগে-মেগে আমাকে মারতে আসলো। সেই দিন আমি সত্যি সত্যি বাংলা সিনেমার নায়কের মতো- আচ্ছা মতো মারলাম তিন বদমাশকে আশা করি তারা বাকি জীবনে কোনো মেয়ের দিকে তাকিয়ে কোনো ইশারা বা নোংরা কথা বলবে না। 

এখন, নিজের কথা বলি- আমি যখন রাস্তা দিয়ে চলাচল করি- কোনো মেয়ের দিকে তাকাই না। ইচ্ছেই করে না তাকাতে। কেন কুৎসিত ভাবে তাকাবো? লাভটা কি? আমার পাশ দিয়ে কানা খোড়া নাকি বিশ্ব সুন্দরী গেলো তাতে আমার কি? যে আমার পাশ দিয়ে যাচ্ছে- সে তো কারো না কারো আদরের সন্তান, কারো বোন অথবা কারো স্ত্রী। অনেক সময়- অনেক আত্মীয় স্বজন বা পরিচিতরা বলেন- সেদিব তোমাকে দেখলাম- আমার পাশ দিয়ে গেলে কিন্তু আমার দিকে ফিরেও তাকালে না। অনেকে ভাবেন আমি ভাব দেখাই। আসলে আমার কোনো দিনই- এক মুহূর্তের জন্যও কোনো মেয়ের দিকে তাকাতে ইচ্ছা হয়নি। যারা রাস্তা ঘাটে কুৎসিত ভাবে মেয়েদের তাকায়, ভিড়ের মধ্যে মেয়েদের গায়ে হাত দেয় অথবা খারাপ মন্তব্য করে আমার ইচ্ছা করে তাদের জুতা দিয়ে মারি। কান ধরে তাদের বাবা-মা'র কাছে নিয়ে যাই। বাবা-মাকে বলি- দেখুন আপনার সন্তান কি করছে? সন্তানকে সঠিক শিক্ষা দেন। যদি সন্তানকে ভালো শিক্ষা না দিতে পারেন তাহলে সন্তান জন্ম দিবেন না। 

সেক্স কি? আমি বলব সেক্স হলো ক্ষনিকের একটা মোহ। এই মোহ কে যারা জয় করতে পারে, তারাই জীবনে সাফল্য পায়। সেক্স'ই জীবনের সব নয়। নিজের কাজ কে ভালোবাসুন। যারা ধর্ষণ করে, তাদের যদি খুব সেক্স করতে ইচ্ছা হয়- তাহলে তারা কোনো হোটেলে গিয়ে টাকার বিনিময়ে সেক্স করে আসুক। কেন একটা অসহায় মেয়েকে জোর করে ক্ষত বিক্ষত করে দেয়া। একটা পরিবারকে ধ্বংস করে দেয়। একটা ছোট্র ঘটনা বলি- আমাদের পাশের বাসার এক মহিলার খুব গর্ব তার ছেলে খুব ভদ্র-ভালো। সে বাড়ি বাড়ি গিয়ে তার ছেলের সুনাম করে। একদিন দেখলাম তার ছেলে মেয়েদের স্কুল কলেজের সামনে গিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে- নানান বাজে মন্তব্য করে। আরেকদিন দেখলাম- শপিংফ মলে ফাস্ট ফুডের দোকানের এক কোনায় এক মেয়ের সাথে জড়াজড়ি করছে। যাই হোক, কিছু দিন আগে সেই ছেলে এবং তার বন্ধুরা মিলে একটা নিশি কন্যাকে ভাড়া করে তাদের বাসার ছাদে নিয়ে আসে। এবং হাতে নাতে ধরা খায়। এইখানেই শেষ না আরও আছে- সেই ছেলের ঘর থেকে কম্পিউটার ভরতি থ্রি এক্স এবং প্রায় ১০০ সিডি। সেই ছেলের হবি হচ্ছে- পৃথিবীর সব দেশের পর্ণ ভিডিও সংগ্রহ করা। এবং সেই ছেলে বেশ কয়েকজন মেয়েদের সাথে যৌন ক্রিয়া করে আবার ভিডিও করেছে। আমি ছেলেটির মাকে বললাম- আপনার ছেলের এই অধপতনের জন্য আপনিই দায়ী। ছেলেটির মা বলল- আমার ছেলে দায়ী না, যে মেয়ে গুলো আমার ছেলের কাছে আসছে- ওই মেয়ে গুলোই দায়ী। তারাই আমার ছেলের মাথা খেয়েছে।

ধরুন, আপনি বিয়ে করেছেন। আপনার স্ত্রী'র সাথে যখন খূশি শারীরিক সম্পর্ক করতে পারেন। কিন্তু আপনি যদি বেকার হোন বা অল্প বেতনে চাকরি করেন, সংসারে অভাব- তখন কিন্তু আপনি হাজার বার সেক্স করেও মনের শান্তি পাবেন না। তার মানে জীবনে সেক্সটাই সব নয়। মানুষের জীবনে কর্মটাই আসল। বুদ্ধদেব গুহ তার 'একটু উষ্ণতার জন্য' উপন্যাসে লিখেছেন- ''পুরুষ মানুষের সবচেয়ে বড় স্বার্থকতা তার কাজের ক্ষেত্রে, ঘরের মধ্যে বা বিছানায় নয়। যে পুরুষ মানুষ দক্ষ, পরিশ্রমী, যে তার কাজের ক্ষেত্রে সম্মান পেয়েছে , সে তার জীবনের সবচেয়ে বড় পরীক্ষায়ই কৃতকার্য হয়েছে। 
যে পুরুষ মানুষ তার কাজের চেয়ে তার প্রেমিকা বা স্ত্রীকে বেশী ভালোবাসে, সে যথার্থ পুরুষ কি না সে বিষয়ে আমার বরাবরই সন্দেহ ছিল। 
কাজের ক্ষেত্রের পরেই তার ব্যক্তিগত জীবন। সে জীবনে প্রেম তার সবচেয়ে বড় উপাদান। যে পুরুষের জীবনে কোনো মেয়ের সত্যিকারের ভালোবাসা নেই, সে স্ত্রীরই হোক বা প্রেমিকারই হোক , সে যত দক্ষই হোক না কেন , সে একদিন না একদিন হেরে যেতে বাধ্য।

আমার একজন পরিচিত লোকের কথা বলি- বিয়ে করেনি। ভালো চাকরি করে। দেখতে শুনতে ভালো। সে মনে করে সেক্স ছাড়া জীবনে আর কিছু নেই। সে ফেসবুক এর সাহায্য মেয়েদের সাথে সম্পর্ক করে। সারারাত মোবাইলে কথা বলে। তারপর বাইরে দেখা করে- এবং সেক্স করে। গত দশ বছর ধরে তাই'ই নিয়মিত করছে। সে গর্ব করে বলে ইনশাল্লাহ এ বছর সেঞ্চুরী করবো। এই সমস্ত মেয়ে গুলো বিয়ের আগেই কেন নিজেকে বিলিয়ে দেয়? তারা তাদের রতিক্রিয়া এক আকাশ আনন্দ নিয়ে নিজ ইচ্ছায় ভিডিও করে। তারপর ছড়িয়ে দেয় ইন্টারনেটে। এজন্য তাদের কোনো লজ্জা হয় না। নিজেরা যেমন অন্যের যৌন ক্রিয়া দেখে বিপুল আনন্দ লাভ করে, তাই তারা চায় তাদের যৌন ক্রিয়া দেখে অন্যরাও আনন্দ লাভ করুক। আমার এক বন্ধু একদিন আমার কাছে এসে বলল- আমি রোজিনা কে খুব ভালোবাসি। রোজিনা'র সাথে আমার বিয়ের তারিখ সব ঠিক-ঠাক। আর তিন মাস পর আমাদের বিয়ে। কিন্তু অন্য কোনো-কোনো মেয়েকে দেখলে জড়িয়ে ধরতে ইচ্ছা করে, সেক্স করতে ইচ্ছা করে। নিজেকে কন্টোল করতে খুব কষ্ট হয়ে যায়। রাস্তা ঘাটে, বিয়ে বাড়িতে, শপিং মলে এমন কি অফিস আলাদলে কোনো-কোনো মেয়েকে দেখলে- আমার নুনু শক্ত হয়ে যায়। কিন্তু আমি রোজিনা'কে ভালোবাসি। রোজিনা'কে বিয়ের পরও বন্ধুর সমস্যার সমাধান হয়নি। এখন তার মেয়ে দেখলে নুনু শক্ত হয়, জড়িয়ে ধরতে ইচ্ছা করে। সেক্স করতে ইচ্ছা করে। কিন্তু রীজিনাকে সে প্রচন্ড ভালোবাসে। 

আমার বন্ধু রফিক এর কথা বলি। সে বিয়ে করেছে। ভালো চাকরি করে। সারাদিন প্রচুর পরিশ্রম করে। সে তার স্ত্রীকে অসম্ভব ভালোবাসে। ছুটি পেলেই স্ত্রীকে নিয়ে দূরে কোথাও বেড়াতে যায়। সেক্স ব্যাপারটাকে রফিক একেবারেই অপছন্দ করে। তার কাছে এটা একটা গা ঘিন ঘিন করা ব্যাপার। নোংরা ব্যাপার। না, তার কোনো অসুখ বিসুখ নেই। রফিক এর স্ত্রী জোর করে তাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেছে- ডাক্তার বলেছেন- অত্যাধিক পরিশ্রম এর কারনে সহবাসে তার এত অনীহা। আমার বন্ধুর ভাষায়- যৌনতা অতি তুচ্ছ বিষয়। বিছানায় স্ত্রীর সাথে লটকা-লটকি করার চেয়ে সমুদ্রের পাড়ে হাতে হাত রেখে হেঁটে যাওয়া অনেক বেশি আনন্দের। 

যারা রাস্তায় কুৎসিত ভাবে মেয়েদের দিকে তাকায়, বিচ্ছরি মন্তব্য করে অথবা সুযোগ পেলেই বাসে, মেলায় বা শপিং মলে গায়ে হাত দেন- এসব করা থেকে বিরত থাকুন। মেয়েদেরকে মানুষ ভাবুন। তাদের শ্রদ্ধা করুন। সম্মান করুন। তাদের সাথে পবিত্র সম্পর্ক রাখুন। তাদের বিপদে স্বচ্ছ ভাবে এগিয়ে আসুন। আপনারা তাদের কে সম্মান করবেন, শ্রদ্ধা করবেন, আপনার মা বোনকে তাহলে অন্য পুরুষরা শ্রদ্ধা করবে, সম্মান করবে। একে অপরের প্রতি স্বচ্ছ ভালোবাসায় সহযোগিতায় শ্রদ্ধায় এবং শুদ্ধ মানসিকতায় এগিয়ে যাবে দেশ। নিজের মাকে ভালোবাসুন। অন্যের মাকেও ভালোবাসুন। নিজের বোনকে স্নেহ করুন, মায়া করুন, অন্যের বোনকেও মায়া করুন, স্নেহ করুন। অন্যের স্ত্রী'র দিকে পবিত্র দৃষ্টিতে তাকান, সম্মান করুন তাহলে মানুষ আপনার স্ত্রী'র দিকেও কুৎসিত ভাবে তাকাবে না। 

আমার চোখে পুরুষ-রমনী কোনো ভেদাভেদ নাই।
বিশ্বে যা কিছু মহান সৃষ্টি চির কল্যাণকর
অর্ধেক তার করিয়াছে নারী, অর্ধেক তার নর।
----কাজী নজরুল ইসলাম 
১ Likes ১ Comments ০ Share ৬৫২ Views

Comments (1)

  • - এই মেঘ এই রোদ্দুর

    ভোট করলাম

    • - দীপঙ্কর বেরা

      ধন্যবাদ