সুবহে সাদিক...
রাত্রির আঁধার থেকে সূক্ষ্ম আলোর রেখা বেরিয়ে আসার মুহূর্ত। এক্ষুণি আঁধার থেকে আলো পৃথক হয়ে যাবে। ইয়াসরীবের (মদিনা) এক দুর্গের চূড়ায় মহা হুলস্থুল পড়ে যায়।
একজন আত্মমগ্ন ইহুদি জ্যোতিষ দুর্গের চূড়ায় উঠে চিৎকার শুরু করে দেয়। আধফোটা সকালে ইয়াসরীবের লোকজন ছুটে আসে ঐ চিৎকার শুনে। সবায় জানতে চায় কী হয়েছে? কী হয়েছে?? পাগলা জ্যোতিষ কী বলতে চায়???
লোকটি বলে, শোন! ইহুদিরা শোন!! আজ রাতে আকাশে এক নতুন তারা উঠেছে। আর সেই তারার নিচে জন্মগ্রহণ করবেন আহ্মাদ।
এই আহ্মাদ-ই হচ্ছেন বিশ্ব মানবতার আশীর্বাদ, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব, সাইয়্যেদুল মুরসালীন, নবীকুল শিরমণি হযরত মুহাম্মাদ সা.।
তাঁর জন্মের আগেই তিনি আহ্মাদ নামে পরিচিত হয়ে যান। তাঁর মা বিবি আমিনাও স্বপ্নে দেখেছিলেন, কে যেন তাঁকে বলছে, আপনার ছেলের নাম ‘আহ্মাদ’ রাখুন।
আহ্মাদ মানে হচ্ছে চরম প্রশংসিত। সু-প্রাচীন ধর্মগ্রন্থগুলোতেও এই আহ্মাদ নামের উল্লেখ আছে।
জন্মের সাতদিন পর তাঁর দাদা আবদুল মুত্তালিব প্রিয় নাতির আকিকার আয়োজন করলেন। সে এক বিশাল আয়োজন। মহা ধুমধামের ব্যবস্থা করা হলো। মক্কার সবায়কে আমন্ত্রন জানালেন তিনি। সবায় এলেন দাওয়াতে। দাওয়াতে আসতে পেরে সবায় খুব খুশি। শিশুটিকে দেখে আরও বেশি খুশি।
সবায় বলতে লাগলো এতো সুন্দর ফুটফুটে শিশু আর এতো সুন্দর আয়োজন বহুদিন কেঊ দেখেনি।
এই আকিকার অনুষ্ঠানেই শিশুর নাম রাখা হবে। আয়েস করে খেয়ে সবায় বসে আছে। ভাবছে কী নাম রাখা হবে এই শিশুর?
সবার মনে বড় বড় দেব-দেবীর নাম এলো। কিন্তু নাম তো রাখবেন মক্কার দলপতি মুত্তালিব।
তিনি মহানন্দে ঘোষণা করলেন আমার দাদুর নাম হবে– মুহাম্মাদ।
মুহাম্মাদ! এ আবার কেমন নাম!! এই নাম তো জীবনেও শুনিনি। দাদার আর কি কোন নাম মনে এলো না?? সবায় প্রশ্ন করলো মুত্তালিবকে, কোন দেবতার নাম রাখলেন না কেন?
দাদা বললেন, না, না, দেবতার নাম কেন! ওর নাম তো মুহাম্মাদ, মানে চরম প্রশংসিত। তিনি উজ্জ্বল আনন্দে বললেন, “আমার এই নাতি হবে বিশ্ববরেণ্য। সবার মুখে মুখে থাকবে তাঁর নাম।”
উপস্থিত সবায় অত্যন্ত খুশি হলেন এবং শিশু মুহাম্মাদের জন্য প্রাণভরে দোয়া করলেন।
দাদার মহান ইচ্ছা নাতি মুহাম্মাদের জীবনে দুর্বার বেগে কার্যকর হয়ে চলল।
দাদা মুত্তালিব যে বৃক্ষের চারাটি লালন করলেন, ক্ষণিকের নানা বাঁধা বিপত্তি ঝড়ঝাপটা তাপরৌদ্রকে ম্লান করে বৃক্ষচারা একদিন বিরাট মহীরূহে পরিণত হলো।
মহান আল্লাহ্ তা’আলার কাছেও তিনি সবচেয়ে সম্মানিত এবং সবচেয়ে প্রিয়। তিনি খুব সম্মানের সাথে তাঁকে ডাক দেন। পবিত্র কুর’আনে আল্লাহ্ তা’আলা তাঁকে সম্বোধনের সময় সরাসরি মুহাম্মাদ না বলে খুব সম্মানের সাথে-
ইয়া আইয়্যুহান নাবিয়্যু (হে নবী!),
ইয়া আইয়্যুহাল মুজ্জাম্মিল (হে কম্বলাবৃত!) প্রভৃতি নামে ডেকেছেন।
শৈশবে তিনি সবার এতো বেশি বিশ্বাস অর্জন করেছিলেন যে, মক্কার লোকেরা তাঁকে তাঁর আসল নামে ডাকতেন না- ডাকতেন ‘আল আমীন’ নামে।
একজন মহাসম্মানিত, বিশ্বনন্দিত মানুষের এতো উপাধী শুধু তাঁর অসামান্য সততার জন্য। অনেক চেষ্টা করেও এই মহামানবকে শ্রেষ্ঠত্বের আসন থেকে শতাব্দীর পর শতাব্দী এক বিন্দুও টলানো যায়নি।
বিশ্বখ্যত মনীষী জোসেফ হেল বলেন– মুহাম্মাদ সা. এমনই একজন মহান ব্যক্তি, যাকে না হলে বিশ্ব অসম্পূর্ণ থেকে যেতো। তিনি নিজেই নিজের তুলনা। তাঁর কৃতিত্বময় ইতিহাস মানবজাতির ইতিহাসে এক সমুজ্জ্বল অধ্যায় রচনা করেছ।
বিশ্ব এবং বিশ্ব মানবতা চিরধন্য এই মহামানবের মহানুভবতায়।
Comments (9)
ফাঁসি নিয়ে কেন এমন তালবাহানা হল তুহিন ভাই? খুবই মর্মাহত হয়েছি। ফাঁসি না হওয়া পর্যন্ত শান্তি পাবো না।
কি করে এমন হলো বুঝা মুশকিল।
ফাঁসি কি হবে? নাকি সামনে কাদের মোল্লাকে মন্ত্রীর পদে দেখবো !বাংলাদেশে সবই সম্ভব ।
জামায়াতে ইসলামীর হুমকিঃ-
তাদের নেতার ফাঁসি হলে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক মৃত্যু নিশ্চিত হবে।
তার আগে ওদেরই মৃত্যু নিশ্চিত করা উচিৎ।