নারী এখনো অর্ধেক মানুষ। নারীকে একটি পরিপূর্ণ সত্বা হিসেবে পরিস্ফুটিত হতে আমরাই দিচ্ছিনা। একটি বাংলা ব্লগের নীতিমালায় দেখলাম লেখা আছে-নারী লেখকদের সঙ্গে কটাক্ষমূলক আচরণ করা যাবে না। নারী কী তাহলে ভিন্ন একটি প্রপঞ্চ। নারীকে আমরা একটি আলাদা সত্ত্বা ভাবতেই স্বাচ্ছন্দ বোধ করি। নারীকে নিয়ে ভাষাগত এক লৈঙ্গিক রাজনীতি শুরু হয়েছে। নারী ভাষা, রুচিবোধ এক হতে দেবেনা এ সমাজ মানস। বাংলা ভাষায় নেতিবাচক শব্দগুলো তৈরি হয়েছে নারীকে ঘিরেই। গালি শব্দ (Slang word) থেকে শুরু করে নিত্যস্ত্রীবাচক শব্দগুলোর অধিকাংশই নারীকে অধ:স্তন করার মানসে চয়ন করা। নারীর প্রতি ভাষাগত এই বিভাজন লিঙ্গ বৈষম্য তৈরি করেছে। নারীকে করে রাখা হয় চারদেয়ালের অতন্দ্র প্রহরী।
যারা জেন্ডার বিষয়ে কাজ করেন তাদের জেন্ডার ইকুইটি ও ইকুয়ালিটি প্রকল্পের ধারা দেখে আমরা বিস্মিত হই, মর্মাহত হই, কখনো বাহবা দেই। গণপরিবহনে আমরা মহিলাদের নির্ধারিত আসন ব্যবস্হার কথা সবাই জানি। আমাদের মানসিকতায় পরিবর্তন জরুরী। বাসে উঠে এক অসম প্রতিযোগিতায় নামতে হয় মেয়েদের। আর পাশে বসা ভদ্রমহোদয়গণের কটাক্ষের মাত্রা পৌছে চরমে। যে পরিশীলিত মূল্যবোধটুকু তাদের মাঝে থাকার কথা তা মোটেও কাজ করেনা। সংরক্ষিত আসনগুলো নারীদের অধিকার সংরক্ষন না করে বরং নারীর প্রতি ভাষিক নিপীড়নের মাত্রাই বাড়িয়ে দেয়।
এখানে নারীকে সম্মান দেখানো কিংবা তার নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচ্য নয়। নারী যেন কোন এক ভিন গ্রহের বিচ্ছিন্ন একটি প্রানী। আমরা প্রতিনিয়ত অবলোকন করছি নারীর যেন নিজস্ব কোন সত্বা নেই। এ কথাগুলো বলা হচ্ছে নারীদেরকে খাটো করার জন্য নয়। বরং পুরুষতান্ত্রিক সমাজের কাছে আমার কথাগুলোর যুক্তিখন্ডন করাই মূখ্য বিষয়। যারা সমালোচনা করেন, তারা বলেন- পুরুষরা নারীবাদী হতে পারেনা। তারা নারীবাদী হবার ভান করে।
মানুষের যৌক্তিক বিষয়গুলো তুলে ধরার জন্য নারীবাদী হবার প্রয়োজন নেই। নাইবা হলাম নারীবাদী । শুধু তারা স্বস্তিতে বেঁচে থাকার অধিকারটুকু পাওয়ার কথা বলি । তথ্য-প্রযুক্তিতে ঠাসা একটা অস্হির সময় পার করছে আমাদের প্রজন্ম। ছোট মেয়েটা তার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গন্ডি পেরোতে না পেরোতেই তাকে দেখে শিস বাজায়। মেয়েদের ছোটবেলা বলে কিছু নেই। তাদের সব বড়বেলা। দশ বছর পার হলেই নিজেকে রক্ষার কথা ভাবতে হয়।
[ভাষা, নারী ও পুরুষপুরাণ: হাসান ইকবাল]
Comments (4)
শুভেচ্ছা আপনার জন্য!
আমি গিয়েছি সেখানে। যদিও আমি অতো ঘুরে দেখিনি তবে CRP নিয়ে কিছু তথ্য জানি।মিরপুরেরটায় গিয়েছিলাম একবার। সুন্দর ছিমছাম পরিবেশ।
আমিও আপনার সাথে সহমত জানাই।
ভালো থাকুন। শুভেচ্ছা -
ধন্যবাদ নীল ভাই।
সিআরপি বাংলাদেশের একটি অন্যতম প্রতিষ্ঠান যারা পঙ্গু সহ প্রতিবন্ধীদের চিকেৎসা করে যাচ্ছে। দুঃখের বিষয় হলো এই গুলো ভালভাবে প্রচার হয়না। আপনার পোস্টের জন্য ধন্যবাদ।
পাশাপাশি আরো বিস্তারিত এবং ছবি সহ দিলে অনেক ভালো হতো। অনেকেই হয়তো জানেইনা কিভাবে তাদের সেবা নিতে হয়। তারা বেশ উপকৃত হতো।
আমি শুনেছি এই প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে। মিরপুর-১৪ তে যেটা আছে সেই হাসপাতালে আমি গিয়েছি। বাংলাদেশে এমন সেবা প্রতিষ্ঠান আছে সেটা জেনেই ভাল লাগছে।
সত্যি কথা হল আমি CRP সম্বন্ধে কিছুই জানি না। তবে যেটুকু জানলাম তাতেই অবাক হয়েছি। আমাদের দেশেও এই ধরণের প্রতিষ্ঠান আছে। পাশা ভাই ঠিকই বলেছেন। যদি ছবিসহ আরও বিস্তারিত লিখতেন, তবে হয়তো অনেকের উপকার হত এবং এর একটা প্রচারও হয়ে যেত। আশা করছি, ভবিষ্যতে তা করবেন। ধন্যবাদ চমন।