Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.

কবীর আলমগীর

৮ বছর আগে

ভালো সাব এডিটর হতে চাইলে (কিস্তি ২)

সংবাদপত্র অফিসে একজন সাব এডিটরের ভূমিকা বেশ গুরুত্বপূর্ণ। একজন সাব এডিটরের কাজ হলো সংবাদ সংগ্রহ করা এবং তা সম্পাদনা ও প্রকাশের ব্যবস্থা করা। তিনি বিভিন্ন সংস্থা, প্রতিনিধি, প্রতিবেদক ও বিভিন্ন উৎস থেকে প্রাথমিকভাবে সংবাদ সংগ্রহ করেন এবং সেগুলো বাছাই করেন। তবে তিনি সব সংবাদ প্রকাশ করতে পারবেন না। এ কারণে তাকে গুরুত্বপূর্ণ এবং মজাদার সংবাদ সংগ্রহ ও বাছাই করতে হবে। বাছাই করার পর তিনি সেগুলো ভালোভাবে সম্পাদনা করবেন। এই প্রক্রিয়ায় নিয়োজিত ব্যক্তিকেই সাব এডিটর বলা হয় এবং তিনি যে কাজ করেন তাকে বলা হয় সাব এডিটিং বা সাবিং। ভালো সাব এডিটর হতে বেশকিছু বিষয় মেনে চলা দরকার। বিস্তারিত লিখেছেন : কবীর আলমগীর

শিক্ষাগত যোগ্যতা : সাব এডিটর হওয়ার জন্য শিক্ষাগত যোগ্যতার ধরাবাঁধা কোনো নিয়ম নেই। তবে তা নির্ভর করে প্রতিষ্ঠানভেদে। কোনো কোনো প্রতিষ্ঠানে এইচএসসি পাশ সাব এডিটর আছে আবার কোনো প্রতিষ্ঠানে অনার্স-মাস্টার্স পাশ করা সাব এডিটরও আছে। তবে কমপক্ষে ¯œাতক হলে ভালো। মনে রাখবেন পড়ার বিষয় মুখ্য নয়, এখানে মুখ্য আপনার এডিটিং। তবে সাংবাদিকতায় পড়াশোনা হলে হাউজ অগ্রাধিকার দেয়। কেননা সাংবাদিকতায় পড়াশোনা থাকলে তার সাংবাদিকতার প্রাথমিক কনসেপ্টগুলো জানা থাকে। হাউজ তো তাকেই গুরুত্ব দেবে। তবে সাংবাদিকতায় পড়াশোনা না থাকলেও সমস্যা নেই। আপনি ভালো কাজ পারলে মূল্যায়ন অবশ্যই পাবেন।

ইংরেজিটা জানুন : ধরা যাক, আন্তর্জাতিক খবর এডিট করার জন্য অফিসে যার দায়িত্ব রয়েছে তিনি অনিবার্য কারণে অফিসে আজ আসতে পারলেন না। বার্তা সম্পাদক বা শিফট ইনচার্জ জরুরি কোনো ইংরেজি সংবাদ অনুবাদ করার জন্য আপনাকে দায়িত্ব দিলেন। ডেস্ক থেকে যে হুকুম করা হবে একজন সাব এডিটর কর্মক্ষেত্রে থাকাকালীন সেটি মানতে বাধ্য, এটিই অফিসিয়াল শৃঙ্খলা। আপনি যদি সেই মুহূর্তে বলে বসেন- ‘আমি তো ভাই ইংরেজি জানি না।’ আপনি কিন্তু নিজের অযোগ্যতাকে প্রকাশ করলেন। ইংরেজি সংবাদ ভাষান্তরের জন্য খুব বেশি ইংরেজি জানা লাগে না। তাই কয়েকদিন অভ্যাস করুন, ইংরেজি সংবাদ পড়ুন আশা করি পারবেন। অনেক সাব এডিটর ভয়ে ইংরেজি সংবাদ পড়তে পড়তে চান না, এই অভ্যাস ত্যাগ করুন।

পত্রিকা কিংবা পোর্টালের নাম জানুন : ধরুন আপনি প্রিন্টিং কোনো পত্রিকায় চাকরি করেন। আপনাকে অন্তত জাতীয় দৈনিকগুলোর নাম ভালো করে জানা দরকার। জেনে রাখুন তার সম্পাদক-প্রকাশকদের নাম। বাইরের দু একটি প্রিন্টিং পত্রিকা সম্পর্কেও ধারণা রাখুন। তাহলে সেই সব পত্রিকা থেকেও অনেক সময় সংবাদ সংগ্রহ করতে পারবেন। আপনি যদি অনলাইন পোর্টালে চাকরি করেন তাহলে আপনাকে অন্তত ১০টি অনলাইন পোর্টালের নাম ও ওয়েব ঠিকানা মুখস্থ থাকা দরকার। ধরুন, ডেস্ক থেকে আপনাকে বলা হলো- প্রধানমন্ত্রীর নিউজটি অমুক পোর্টালে প্রকাশ হয়েছে কিংবা অমুক পোর্টালে এসেছে কি না দেখুন তো, যদি এসে থাকে তাহলে ওখান থেকে তথ্য নিয়ে নিজের মতো করে একটি নিউজ বানাতে হবে। দেখা গেল আপনি সেই পোর্টালের ঠিকানা জানেন না। তাহলে এটি আপনার আগ্রহ কম থাকার ইঙ্গিত দিল।

নিউজ বানাতে হবে : অনেক সময় প্রতিনিধি যে নিউজ দেয় কিংবা আপনি সোর্স থেকে যে নিউজ পাবেন তা রিমেইক করার দরকার হতে পারে। এমনও হতে পারে এটির ইন্ট্রু অংশ কিংবা হেডলাইন কিংবা নিউজটির অ্যাঙ্গেল পুরোটাই চেঞ্জ করতে হতে পারে। অনেক সাব- এডিটর আছেন যারা রিপোর্টারের পাঠানো নিউজের বাইরে বাড়তি কিছু করতে পারেন না। তারা কেবল বানান-বাক্য দেখেই নিউজ প্রকাশ করে দেন। ওই নিউজে কোনো তথ্য আরও যুক্ত করার আছে কি না তা তারা ভেবেও দেখেন না। মনে রাখতে হবে আপনি কোনো প্রতিষ্ঠানে প্রুফ দেখছেন না, আপনার কাজ নিউজ সম্পাদনা করা। সুতরাং কাজটি করতে হবে মনোযোগ দিয়ে।

অলরাউন্ডার হতে হবে : নিউজ সম্পাদনার জায়গায় আপনাকে অলরাউন্ডার হতে হবে। কোনো কোনো সাব এডিটর আছেন তিনি কেবল রাজনীতি, কিংবা অর্থনীতি কিংবা মফস্বলের নিউজ এডিট করেন। অন্য কোনো নিউজে তার আগ্রহ নেই। যদি আপনি কোনো একটি বিটের সাব- এডিটর হন তাহলে সেটা আলাদা কথা। কারণ আপনার বিটের বাইরে আপনি সবসময় অন্য নিউজ দেখার সময়ও নাও পেতে পারেন। কিন্তু সাধারণ যারা সাব এডিটর তাদের আগ্রহটা হওয়া চাই বহুমুখী। তাকে অর্থনীতি জানতে হবে, রাজনীতি জানতে হবে, খেলাধূলা সম্পর্কে জানতে হবে। এ সব ক্ষেত্রের বিভিন্ন টার্ম সম্পর্কেও মোটামুটি ধারণা রাখতে হবে। এই সাব এডিটরই কোনো এক সময় শিফট ইনচার্জ কিংবা বার্তা সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করবেন। সেক্ষেত্রে আপনি যদি বহুমুখী বিষয়ে আগ্রহী না হন তাহলে আপনার পেশাগত দক্ষতা খুব বেশি দেখাতে পারবেন না।

সম্পাদনার আগে পড়ে নিন : কোনো নিউজ সম্পাদনা করার আগে অন্তত একবার পড়ে নিন। কোনো তথ্যের দরকার হলে সে ব্যাপারে রিপোর্টারের সঙ্গে কথা বলুন। কিংবা রিপোর্টারের সঙ্গে কথা বলার আগে নিউজরুমে দায়িত্বপ্রাপ্ত কারো সঙ্গে কথা বলে নিন। তিনি যদি তথ্য সংযুক্ত করতে বলেন তখন আপনি রিপোর্টারের সঙ্গে কথা কলতে পারেন। নিউজটির ভেতরে কোনো অংশ পরিবর্তন করতে হলে তা দায়িত্বপ্রাপ্ত সিনিয়রের সঙ্গে আলোচনা করুন। হেডলাইন ফাইনাল করার আগে আলোচনা করে নিন। অনেকে চুপচাপ কাজ করেন, আওয়াজ দিতে হবে।

সিদ্ধান্ত নিজে নিজে নিবেন না : মনে করুন, কোনো রিপোর্টার একটি নিউজ পাঠালেন ৩০ বাক্যে। আপনি মনে করলেন অপ্রয়োজনীয় ৫ লাইন রয়েছে কিংবা আরো ৫ লাইন যুক্ত করা যায়। যা করলেন আপনি একা একাই। নিউজ ছাপানোর পর বার্তা সম্পাদককে অভিযোগ দিলেন রিপোর্টার। অভিযোগ আপনি তাকে না জানিয়ে ৫ লাইন ফেলে দিয়েছেন। রিপোর্টার হয়ত মনে করেছিল ওই ৫ লাইনও গুরুত্বপূর্ণ। কিংবা অভিযোগ দিল আপনি না জানিয়েই ৫ লাইন যুক্ত করে দিয়েছেন। এ সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে অন্তত রিপোর্টারের সঙ্গে আলাপ করে নিন, যাতে রিপোর্টারের সঙ্গে আপনার ভুল বোঝাবুঝি না হয়। কিংবা সিনিয়রের সঙ্গে কথা বলুন। তাহলে আপনার দোষ থাকল না। নিজে নিজে সিদ্ধান্ত হলে অনেক সময় ভুল হতে পারে।

সম্পাদনা শেষে পড়ুন : সম্পাদনা করা নিউজটি অনেকে আরেকবার রিভিশন না দিয়েই ফাইনাল ফোল্ডারে পাঠিয়ে দেন। এটি ভুলে করবেন না। অনেক সময় বাক্যের কোনো অংশ কিংবা কোনো শব্দ বাদ পড়ে যেতে পারে। তাই দ্বিতীয়বার নিউজটি পড়া জরুরি। অনেক পোর্টালে নিউজ প্রকাশ করার কাজ সাব এডিটরদেরই করতে হয়। সেক্ষেত্রে প্রকাশিত নিউজ ঠিকঠাক লোকেশনে গেল কি না, কোনো প্যারা ঠিকমতো এল কি না, ছবিটি ঠিক আছে কি না তা দেখে নিন। কিছু কিছু হাউজে আপলোডার নিউজ প্রকাশের ব্যবস্থা করেন। অনেক সময় আপলোডার একজনের ছবির জায়গায় ভুলে আরেক ছবি বসিয়ে দেন। এক নিউজের জায়গায় আরেক নিউজ দিয়ে দিতে পারেন। তাই নিউজটি ঠিকমতো প্রকাশিত হলো কি না সেটিও দেখা আপনার দায়িত্ব।

প্রকাশিত নিউজ সম্পর্কে দখল চাই : আপনি যদি প্রিন্টিং পত্রিকায় চাকরি করে তাহলে ডেস্কে বসার আগে অন্তত আপনার পত্রিকাটি কিছুক্ষণ পড়ে নিন। কোন কোনো নিউজ প্রকাশিত হলো তা মাথায় রাখুন। ধরুন আপনি আপনার কোনো কলিগের সঙ্গে চা খেতে গেলেন। চা খাওয়ার একপর্যায়ে আপনার ওই কলিগ আপনাকে বলল আমাদের পত্রিকায় এই বিষয়ক নিউজটি পড়েছেন কি না? নিউজটি সুন্দর হয়েছে। আপনি চায়ের কাপে চুমুক দিতে দিতে বললেন, তাই নাকি? আজ তো পত্রিকায় পড়িনি।’ অথচ আপনি কিন্তু নিউজ এডিটিং করতেই অফিসে এসেছেন, অথচ পত্রিকা পড়েননি। যারা অনলাইনে কাজ করছেন তাদের জন্যও একই পরামর্শ। অন্তত নিউজ এডিট শুরুর আগে কয়েকমিনিট নিজের সাইট পড়ে নিন। অনেক সময় ডেস্ক থেকে আপনাকে বলা হবে, আমাদের সাইটে এই নিউজটি গেছে, আপনি ওখান থেকে তথ্য নিয়ে ফলোআপ আরেকটি নিউজ করেন। দেখা গেল, নিজের সাইটের নিউজ আপনি নিজেই খুঁজে পাচ্ছেন না।
০ Likes ০ Comments ০ Share ৪৯৭ Views

Comments (0)

  • - প্রলয় সাহা

    যত বড় হচ্ছি স্মৃতির একটা-একটা পাতা উল্টে যাচ্ছে, উড়ে যাচ্ছে-যাচ্ছে উড়ে তোমার বর্তমান না জানা ঠিকানায়...

    বুকটা ভারী হয়ে গেল রে ভাই... ভালো থাক, থাকবি সবসময় এটাই আশা করি।

    - প্রান্ত সাহা

    ধন্যবাদ দাদা...