দুরারোগ্য ব্যাধি হচ্ছে সেই ব্যাধি যার কোন চিকিৎসা নেই। ক্লাশ টেনের আর্টস বিভাগের সাধারণ বিজ্ঞান বইয়ে জনসংখ্যা ও পরিবেশ চ্যাপ্টারে এমনই লেখা। ছাত্রীকে পড়াতে গিয়ে শাহেদ থমকে গেছে। সে নড়াচড়া করছে না...
-কি হল স্যার?
-ব্যাধি।
-মানে?
-দুরারোগ্য ব্যাধি।
-এইডস!
-নাউজুবিল্লাহ!
-সূচ বা সিরিঞ্জের মাধ্যমেও এইডস ছড়ায়। শুধু শুধু নাউজুবিল্লাহ বললেন কেন?
-সরি।
-কথায় কথায় সরি বলবেন না। আপনার হয়েছে কি?
-দুরারোগ্য ব্যাধি।
-ব্যাধির নাম কি?
-ব্যাধির নাম 'মন খারাপ'।
-আপনার মন খারাপ?
-হ্যা।
-দেখলে তো মনে হয় বিশাল আনন্দে আছেন।
-ও আচ্ছা।
-ডাক্তার দেখান।
-কি দেখাবো?
-আপনাকে দেখাবেন। যাওয়ার আগে ভালো একজোড়া জুতা পরে যাবেন। আপনার জুতা ছেঁড়া।
শাহেদ নড়েচড়ে বসে। পায়ের জুতা খেয়াল করে দেখার বিষয় না। এই মেয়ে খেয়াল করেছে। তার প্যান্টের নিচের দিকটা, যে অংশ জুতার কাছে থাকে তাও ছেঁড়া। জুতা খেয়াল করলে এটাও খেয়াল করার কথা। খেয়াল করলেও শাহেদের কিছু যায় আসে না। তার একমাত্র চিন্তা দুরারোগ্য ব্যাধি নিয়ে। অযথাই তার মন খারাপ হয়। অযথা মন খারাপ হওয়া প্রেমের দ্বিতীয় লক্ষন। প্রথম লক্ষন হল অকারণে ছটফট করা। শাহেদ অকারণে ছটফট করে। আসলেই কি প্রেমে পরে গেল নাকি? প্রেমে পড়লে সর্বনাশ হবে। ছেঁড়া জুতাওয়ালার প্রেমিকারা বদরাগী হয়।
-গরম লাগছে স্যার?
-না।
-ঘামছেন কেন?
-কই?
-ঠাণ্ডা পানি খাবেন?
-না। টনসিল।
-টনসিল খাবেন?
বলেই বৃষ্টি হি হি করে হাসি শুরু করল। এর মধ্যে হাসির কি আছে শাহেদ ধরতে পারে না। তবে একটা জিনিস ধরতে পারছে। সে আসলেই ঘামছে। ঘামার কারণ বোঝা যাচ্ছে না। মাথার উপর ফ্যান নিঃশব্দে ঘুরছে। বাতাস আছে। ঘামার কোন কারণ নেই। ঘাম মুছতে টিস্যু লাগবে। শাহেদের কাছে টিস্যুও নেই। ছেঁড়া জুতা পায়ে দেয়া যুবকদের পকেটে টিস্যু থাকে না। টিস্যু আছে বৃষ্টির কাছে। সে প্রতি দশ মিনিটে একটা টিস্যু দিয়ে মুখ মোছে। টিস্যু তে পারফিউমের গন্ধ। শাহেদের পারফিউমের গন্ধ ভালো লাগে না। মাথা ব্যাথা করে। মাথা ব্যাথা বিষয়টা ভালো না। দুরারোগ্য ব্যাধিও ভালো না। অতিসত্বর ডাক্তার দেখাতে হবে। কমদামী ডাক্তার। ষাট টাকা ভিজিট টাইপ। তারা জুতার দিকে খেয়াল করবে না। নতুন জুতা কিনে ফেললে ভিজিট দেয়া যাবে না।
Comments (6)
পরে পড়বো। ধন্যবাদ
পড়েছি। শান্ত এবঙ পুতুলের করুণ কাহিনী সুন্দরভাবে গল্পে ফুটে উঠেছে। শুভেচ্ছা রইল।
আপনাকে এই ব্লগে পেয়ে আমি আনন্দিত। শুভকামনা জানবেন।
’লাইক’ দিলাম। সুন্দর বার্তা দিয়েছেন গল্পে।
প্রিয় তৌফিক মাসুদকে অনেক শুভেচ্ছা