নিচের নোটটি পড়ার আগে তসলিমা নাসরিনের "বোরকা একটি হাস্যকর পোশাক" পড়ে আসার অনুরোধ রইল।
বিগত যৌবনা বেশ্যাদের খরিদ্দার থাকেনা। তখন তারা নামে ভিক্ষাবৃত্তিতে আর যারা বেশ্যা পাড়ার মায়া ছাড়তে পারেনা তারা হয় বেশ্যা ঠিকাদার। কারন তাদের সভ্য সমাজে কোন স্থান থাকেনা। তসলিমা নাসরিন সঙ্গত কারনে ভিক্ষাবৃত্তিতে নামতে পারছেনা তাই আধুনিকতার খোলসে বেশ্যার ঠিকাদারীটাই নিয়েছে।
তসলিমাকে বিগত যৌবনা বেশ্যা এবং বর্তমান বেশ্যার ঠিকাদার বলাতে অনেকেরই কান খাড়া হয়ে উঠতে পারে। আমাকে আক্রমন করবেন এই ধোয়া তুলে যে আমি তসলিমাকে বেশ্যা বলে নারীকে অসন্মান করেছি। আপনাদের প্রতি সন্মান রেখেই বলছি আমি তসলিমাকে মোটেও অসন্মান করিনি। কেননা আধুনিক রাস্ট্রে তথা সমাজে বেশ্যাবৃত্তি নিষিদ্ধ নয়। অপরাধও নয়। অভিজাত পাড়ায় নানান নামে বেশ্যাবৃত্তি বেশ সমাদৃত। নারীদের সাহসিকতার পরিচায়ক। ইসলামে বেশ্যা বৃত্তির স্থান না থাকলেও তসলিমা যে সমাজের প্রতিনিধিত্ব করে এবং তার দেওয়া থিউরি অনুসারে বেশ্যাবৃত্তি মোটেও খারাপ পেশা নয়। যেহেতু আমি অইসলামিক সমাজে বাস করি সেখানে বেশ্যা কোন অসন্মান জনক নাম নয়। সুতরাং এতে আপত্তি থাকার কোন কারন নেই। তাছাড়া তসলিমা সমাজ গঠনে কি ভুমিকা রেখেছে? বা সাহিত্য মান কি আছে তা নিয়ে বিতর্কে যাবোনা। তসলিমা সমাজে একজন যৌন কর্মী হিসেবেই পরিচিত। যার জীবনে সর্বোচ্চ পরিচিতি এসেছে যৌনতাকে পুজি করেই।
যদি বলেন আমি তসলিমাকে ব্যক্তিগত আক্রমন করেছি তা আমি অস্বীকার করবোনা। মেনেই নিবো। হ্যা আমি তাকে তাই করেছি। ইসলাম ভুল কি সত্য সেই তর্কে যাবোনা। তবে তার “বোরকা একটা হাস্যকর পোশাক ছিল” লেখায় সে একটা বৃহত্তর জনগোষ্টীকে মিথ্যাচারের মাধ্যমে আক্রমন করেছে। যে ব্যক্তি কোন গোষ্টীকে আক্রমন করতে পারে তার প্রতিবাদে তার জন্য কেউ ফুলের মালা নিয়ে দাড়িয়ে থাকবে এমনটা আশা করা ভুল। চোরকেও চুরির দায়ে ফাসিতে ঝুলানো ঝাবেনা। তাকেও কেউ খুন করতে চাইলে সে প্রতিবাদ করবে সে নিজে অপরাধী জেনেও। অথচ যারা কোন অপরাধ করছেনা। কাউকে গায়ে পড়ে আক্রমন করছে না তারা কারো দ্বারা আক্রমনের শিকার হলে তার প্রতিবাদ করবেনা এমনটা হতে পারেনা।
লেখার শুরুতেই তসলিমা নিজের ইস্কুলের গল্প দিয়ে বুঝাতে চাইলো বোরকা পড়া মেয়েটা খারাপ গালিগালিজ করতো। সে লিখেছে,”হ্যাপি তার হবু-স্বামীর কথা বলতো আর তার বাপ মা তুলে গালাগালাজ করতো। আমি অবাক হয়ে ওসব শুনতাম। ক্লাসের সবচেয়ে ডাকাবুকো মুখ-খারাপ মেয়ে কিনা বোরখা পরে। আর আমরা যারা কোনও গালি জানি না, আমরা যারা সরল সোজা ভালোমানুষ, তারা কোনওদিন বোরখার কথা কল্পনাও করতে জানতাম না।“
গল্পটা যে বানোয়াট এবং মিথ্যা এতে কোন সন্দেহ নেই। কেননা সে লিখেছে সে নিজে সরল সোজা ভালো মানুষ। কি আশ্চর্য যে তসলিমা পুরো এক গোষ্টীর মুল ধরে নাড়িয়ে দিয়েছে। যে তার মেয়েবেলা বইতে লিখেছে সে কি পরিমান ডানপিটে ছিল। শুধু তাই নয় সে নিজে লিখেছে ছেলেদের নিয়ে মায়ের মুখের উপর দরোজা বন্ধ করে যৌনলীলায় মেতে উঠার গল্প । সে নাকি সরল সোজামানুষ ছিল। গল্পটা দিয়ে প্রমান করতে চেয়েছে বোরকা পড়া মেয়েরা খারাপ। অথচ আমি হাজার উদারহরন দিতে পারবো বোরকা না পড়া মেয়েরাও গালাগালি করতে পারে। আমার ইস্কুলের ক্লাসমেট বর্তমানে নির্বাচন কমিশনে চাকুরীরত সে ইস্কুলে পড়ার সময় ছেলেদের মত গালাগালি করতো। তার কমন গালিই ছিল “তর মারে....।“ সে কোনদিন বোরকা পড়েনি। তার বক্ষবন্ধনীর মাপ ক্লাসের বোকা ছেলেটাও জানতো। ডিসকো ডিজে পার্টিতে যারা গ্রুপেযৌনতা করে তারা কেউ বোরকাউয়ালী নয়। আপসুস বয়সের ভারে তসলিমা গল্প গুলো ঠিক মত গুছিয়ে লিখতে পারছেননা। বাস্তবতা হলো বোরকার সাথে গালাগালি করবে কি না তার কোন সম্পর্ক নেই। আমি অনেককে জানি যারা বোরকা পড়েনা কিন্তু তারা ভালো।
আমি বুঝে উঠতে পারিনা তার বোরকার উপর এত আক্রোশ কেন? দেশে বিদেশে হাজার হাজার ধরনের পোশাক আছে। তার কিছু মেয়েরা কিছু ছেলেরা পড়ে। কিছু উভয়েই পরে। আবার অনেক পোশাক আছে যা বয়সের সাথে পরিবর্তিত হয়। হাজারো পোশাকে ভীড়ে বোরকা একটি পোশাক ছাড়া কিছুই নয়। তাও আবার নির্দিষ্ট বয়সেরই পরে বা পরতে হয়। এতো পোশাক থাকতে এটা নিয়ে এতো অস্তির কেন?
তসলিমা লিখেছে সে দেশের সম্পর্কে খরব রাখেনা। আসলে আমার কাছে মনে হচ্ছে সে পৃথিবীর খরবই রাখেনা। তার কাছে যৌন জগত ছাড়া আর কোন জগত নেই।
সে লিখেছে “দু'একজন যারা(বোরকা) পরতে বাধ্য হতো, তারা লজ্জায় রাস্তাঘাটে মাটির সঙ্গে মিশে থাকতো।“
এটা একটা ডাহা মিথ্যাচার। কত বড় মুর্খ হলে এই কথা বলতে পারে। আসলে যারা বোরকা পড়ে তারা কেউ লজ্জা পায়না। আমার পরিচিত যারা বোরকা পড়ে তারা কেউ বোরকা পড়ে লজ্জা পায়না। তবে অবিভাবকের নির্দেশনা অনেকাংশেই থাকে। কিন্তু অবিভাবকের ইচ্ছাতে বোরকা পড়লে আপত্তির কি আছে? বোরকার কথা না হয় বাদই দিলাম। এর বাইরেও কি আমরা ইচ্ছামত পোশাক পড়তে পারি। ইস্কুলে গেলে ড্রেস নির্দিস্ট, আফিসে গেলে ড্রেস নির্দিস্ট, সুইমিং এ গেলে ড্রেস নির্দিস্ট এমনকি খেলাধুলা সর্বত্র স্থান কাল পাত্র ভেদে পোশাক নির্দিষ্ট করা আছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন রকম পোশাক প্রচলিত আছে যা এক দেশের সাথে আরেক দেশের মিলেনা। এক দেশে যে পোশাক শালিন অন্য দেশে তা আপত্তি কর। ঠিক তেমনি বোরকাও সর্বত্র পড়ার পোশাক নয়। তারও একটা স্থান কাল পাত্র আছে। সব দেশে প্রচলনও নেই। আবার যে সব দেশে বোরকা আছে তা সব একরকমও নয়। এমন কি রঙয়েরও নয়। উনি এত কিছু বুজেন এই টুকু বোঝার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছে নাকি, কোন কালেই ছিলনা। বিশ্ব ব্যপী লাখো পোশাক থাকতে বোরকা নিয়ে এত এলার্জি কেন?
বিশ্ব ব্যপি অসংখ্যা মতাদর্শ প্রচলিত আছে। যদি ধরে নেই একশ। তাহলে ইসলামী আদর্শ তার একটা। তাহলে আরো নিরান্নব্বই মতাদর্শ আছে যে গুলোর আদর্শিক দ্বন্ধ আছে। সেই গুলিও আদর্শিক ভাবে একমত নয়। তসলিমা বাকী নিরান্নব্বই সাথেও একমত নয়। কেননা একজন কখনো একের অধিক মতের সাথে সহমত পোষন করতে পারেনা। তাহলে সে এত কিছু থাকতে ইসলামের বিরুদ্ধে কেন? এর উত্তর দুটো।
এক: মানুষের তিনটি জিনিসের প্রতি চাহিদা কোন সময় কমেনা। (ক) সম্পদ (খ) ক্ষমতা (গ) যৌনতা। সত্যি বলতে ইসলাম এই তিনটি জিনিসের লাগাম টেনে ধরে। ইসলাম বিদ্বেসী শক্তি গুলো সারা বিশ্বে সক্রিয়। পৃথিবী ব্যপি যে লড়াই চলছে তার সব গুলোই সম্পদ ক্ষমতা আর যৌনতার জন্যে। পশ্চিমা বিশ্ব ক্ষমতার চরম শিখরে পৌছে গেছে। পৃথিবীর বাইরে কি আছে সেই গুলো খরবাখবর প্রচারের মাধ্যমে নিজের ক্ষমতার জানান দিতে চায়। সম্পদের লোভে ধ্বংস করে যাচ্ছে পৃথিবার একের এক দেশ। আর যৌনতা? পশ্চিমা বিশে প্রতি বছর যে পরিমান অর্থ সার্কুলেশন হয় তা ৯০ ভাগ হয় যৌনতার নির্ভর। যা পুরোপুরি ইসলামের আদর্শের সাথে সাংঘর্ষিক। ফলে তারা ইসলামের বিরুদ্ধে বিশ্ব ব্যপি পেইড এজেন্ট নিয়োগ করে রেখেছে। কোটি কোটি টাকা অর্থায়ন করছে ইসলামের বিরুদ্ধে। তসলিমা সেই সকল পেইড এজেন্টদেরই একজন।
দুই: তসলিমার অর্থ উপাজন, পরিচিতি সব কিছুই ইসলাম বিদ্বেসী যৌনতা নির্ভর। ফলে সে ব্যক্তিগত স্বার্থে এই কাজ গুলো করে যাচ্ছে। এছাড়া সে নিজেও একজন যৌন কাতর নারী।
ফলে সে আর যাই হোক সমাজে মানুষের কল্যানে কাজ করতে পারেনা। কেননা একটা কথাই বলি ইসলাম নারীকে যৌন সামগ্রী ব্যতিত কোন কিছু হতেই বাধা প্রদান করেনা।
অন্যদিকে মিতা হকও যে পেইড এজেন্ট এতে কোন সন্দেহ নেই। তবে সমস্যা হলো মিতা হক নিচুমানের। তার অভিজ্ঞতা কম ফলে সে শিখানো কথা বলতে গিয়ে গুলিয়ে ফেলেছে। স্ববিরোধী কথা বলে ফেলেছে। তার মতে বাঙ্গালী নারীরা বোরকা পড়েনা। মাথায় কাপড় দেয়না। অথচ দেশের সকল নারী নেত্রীরাই মাথায় কাপড় দেয়। তার মানে তারা কেউ বাঙ্গালী না? আবার সে নিজেকে খাটি বাঙ্গালী দাবী অথচ সে পছন্দ করে সালোয়ার কামিজ , চাইনিজ ফুড, বিদেশী সংস্কৃতি যার একটাও বাঙ্গালী না।
তসলিমা যে বিশ্ব ব্যপি খরব রাখেনা আর ধর্ম সম্পর্কে জ্ঞান কত কম রাখে তার উদাহরন দেখুন। সে লিখেছে,”বোরখা ঠিক আরবের পোশাক নয়, বোরখা ইসলামের পোশাক।“
কিন্তু বাস্তবতা হলো বোরকা ইসলামের পোশাক নয়। ইসলামী বিধানের কোথাও বোরকার কথা পাওয়া যাবেনা। বলা হয়েছে পর্দার কথা। পর্দার শুধু মুসলমানদের নয় সকল ধর্মেই বলা আছে। কোন ধর্মই পোশাক নিদির্স্ট করে দেয়নি,পোশাকের আকারও নির্দিস্ট করে দেয়নি। শুধু সীমা নির্ধারন করে দিয়েছে। আর পোশাকের সীমা নির্ধারন শুধু ধর্মই করেনি সকলেই করেছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু খেলার মাঠ থেকে নাটকের মঞ্চ, এমনকি পর্নছবির সেট সহ সর্বত্র। আবার পর্দা শুধু মাত্র নারীদের জন্য নয় পুরুষের জন্যেও। আবার পর্দা শুধুমাত্র পোশাকেই সীমাবদ্ধ নয় পর্দা করতে হয় দৃষ্টির, করতে হয় কথার এমনকি চলার পর্যন্ত। তাহলে এত কিছু থাকতে তার বোরকা নিয়া মাতামাতি কেন? পর্দার বিধান আসার পর সবাই যার যার মত পোশাক বানিয়ে নিয়েছে। মুসলমানরা বড় চাদর বা থান কাপড় ব্যবহার করতো এরপর সুবিধা হয়েছে বিধায় বোরকা বানিয়ে নিয়েছে যা সহজেই পরিধান করা যায় আবার তাদের পোশাকের সীমাটাও পালন হয়ে যায়। খ্রীস্টানরা বানিয়ে নিয়েছে গাউন যা বোরকার মতই শরীরের সকল অংশ ঢেকে রাখে। এছাড়া দেশের আবহাওয়া ও পরিবেশের উপর ভিত্তি করে গ্রীস্ম প্রধান দেশের নারীরা শাড়ী ব্যবহার শুরু করেছে, পুরুষেরা লুঙ্গি পাঞ্জাবী ধুতি, আর শীত প্রধান দেশের নারীরা ওভার কোট পুরুষেরা প্যন্ট শার্ট কোট ইত্যাদি যা তাদের পোশাকের শর্ত পুরন করে। বাস্তবতা হলো এখন পর্যন্ত নারীর তুলনায় পুরুষরা বেশী পরিমান কাপড় পরে, বেশী মোটা কাপড় পড়ে। এরপরও তসলিমা যখন মেয়েদের একটা মাত্র পোশাক বোরকা নিয়া এত ক্যাচ ক্যচ করে তখন তার প্রতি করুনা করতেও ঘৃনা লাগে। তারপরেও যুক্তির খাতিরে ধরে নিলাম বোরকা বলতে পর্দাকেই ধরে নিয়েছে।
সে লিখেছে,”মেয়েদের বোরখা পরার অর্থ হল, মেয়েরা লোভের জিনিস, ভোগের বস্তু, মেয়েদের শরীরের কোনও অংশ পুরুষের চোখে পড়লে পুরুষের যৌন কামনা আগুনের মতো দাউ দাউ করে জ্বলে, লোভ লালসার বন্যা নামে, ধর্ষণ না করে ঠিক শান্তি হয় না। পুরুষদের এই যৌনসমস্যার কারণে মেয়েদের আপাদমস্তক ঢেকে রাখতে হবে। এই হলো সপ্তম শতাব্দিতে জন্ম হওয়া ইসলামের বিধান। এই বিধান বলছে , পুরুষেরা সব অসভ্য, সব বদ, সব যৌন কাতর, ধর্ষক, তারা নিজেদের যৌন ইচ্ছেকে দমন করতে জানে না, জানে না বলেই শরীরের আপাদমস্তক ঢেকে রাখার দায়িত্ব মেয়েদের নিতে হয়। সত্যি কথা বলতে কী, বোরখা মেয়েদের যত অপমান করে, তার চেয়ে বেশি করে পুরুষদের। বোরখার প্রতিবাদ পুরুষদেরই করা উচিত। অবাক হই, পুরুষেরা কী করে তাদের নিজেদের ধর্ষক পরিচয়টিকে টিকিয়ে রাখতে চায় মেয়েদের বোরখা পরার বিধানটি জারি রেখে! নিজেদের আত্মসম্মানবোধ বলে কিছুই কি নেই পুরুষের? তারা কেন এখনও বলছে না, ‘আমরা মেয়ে দেখলেই ঝাঁপিয়ে পড়বো না, আমরা আমাদের যৌনইচ্ছেকে সংযত করতে জানি, আমরা বর্বর নই, আমরা অসভ্য অসংযত ধর্ষক নই। আমরা শিক্ষিত, সভ্য। মেয়েরাও আমাদের মতো মানুষ। মেয়েদেরও তো যৌনইচ্ছে আছে, সে কারণে আমাদের তো বোরখা পরতে হয় না। যদি মেয়েরা তাদের যৌনইচ্ছেকে সংযত করতে জানে, আমরা জানবো না কেন? আমরা জানি মেয়েদের সম্মান করতে। আমাদের দোহাই দিয়ে মেয়েদের বোরখার কারাগারে ঢুকিয়ে অত্যাচার করা আর চলবে না’।“
এখানে দেখুন কিভাবে ঢালাও হারে মিথ্যাচার করে গেছে। ইসলামের জন্ম নাকি সপ্তম শতাব্দীতে। অথচ পৃথিবীর আদি পুরুষ আদমও ইসলামের অনুসারী। এছাড়া হয়রত ইব্রাহীম(আ:) পৃথিবীতে আগমনের বয়স সাড়ে সাত হাজার বছর পেরিয়ে গেছে। যারা ইতিহাস জানেনা তারা এই মিথ্যাচার করার অনুমতি কোথায় পেলো।
বোরকা ছাড়া নারী দেখলেই নাকি পুরুষরা ধর্ষন করে। কি জঘন্য মিথ্যাচার। বরং উলঙ্গ মেয়েদেরই কেউ ধর্ষন করেনা। কোন পর্ন ছবির নায়িকাকে কেউ কোনদিন ধর্ষন করেছে শুনেছেন। এখন কি নারীকে ধর্ষনের হাত থেকে বাচানোর জন্য সবাইকে পর্ন নায়িকা হতে হবে? আমিতো জানি ভাল মেয়েরাই ধর্ষিতা হয়। তাহলে পর্দার পক্ষে বা বিপক্ষে যাওয়ার অর্থ কি? তাহলেতো দেখি পর্দার বিরোধীতা করাই উত্তম।
পর্দার বিধানের কোথাও বলা নেই পর্দা করলেই পুরুষ তাকে ধর্ষন করবেনা। পর্দা কোন লোহার বর্ম নয় যে তার ভেদ করে পুরুষ পৌছাতে পারবেনা। তাহলে পর্দা কি এবং তার প্রয়োজন কেন? সেটা অনেক লম্বা বিষয়। সংক্ষেপে বলি
১। পর্দা নারী পুরুষ উভয়ের জন্যই প্রযোজ্য ,( পর্দা করতে হবে শুধু মাত্র বেগানা নারী বা পুরুষ থেকে। নিজ স্বামী স্ত্রী, ভাইবোন মা বাবা থেকে নয়।)
২। উভয়েই নিজের শরীর অন্যকে দেখানো থেকে বিরত থাকবে।
৩। উভয়েইই নিজে অন্যদের দেখা থেকে বিরত থাকবে।
৪। উভয়েই নিজের কন্ঠ কে অন্যের কাছ থেকে পর্দা করবে।
৫। উভয়েরই যৌনতার উদ্দেশ্যে একে অন্যের প্রতি গমনে বিরত থাকবে।
এই পাচটি কাজকে সামস্টিক ভাবে পর্দা বলা হয়। আর নারীর বোরকা ২ নং পয়েন্টের নারীর পর্দার নিশ্চিত করে মাত্র। সামগ্রিক নয়। সুতরাং সব বাদ দিয়ে একটা পয়েন্টে পরে থাকা উদ্দেশ্য মুলক। তারপরেও দেখা যায় পুরুষ নারীর প্রতি বেশী আকৃষ্ট থাকে। পুরুষই নারী সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দিয়ে থাকে তারপরেও পুরুষের হাতে নারী অনিরাপদ হয়ে উঠে। তাই নারীর সাবধানতা বেশী নিতে হয়। এটা শুধু ধর্মের বিধান নয় এই বিধান সর্বত্র। যেমন অনিয়ন্ত্রিত যৌনাচারে নারীর গর্ভবতী হতে পারে। পুরুষ নয়। আবার মধ্য রাতে একা রাস্তায় একজন পুরুষ শুধু অর্থ /সম্পদ হারাতে পারে কিন্তু একই সময়ে একজন নারী অর্থ সম্পদের পাশাপাশি ধর্ষিতাও হতে পারেন। সম্পদ যার হাতে থাকে তারই সাবধানে থাকতে হয়।
জানালার পর্দা ঘরের রোদ এবং ধুলা আসা থেকে বাচায়, অসাবধানী প্রতিবেশী দৃষ্টি থেকে বাচায়। বাতাস থেকে নয়। ছাতা আপনাকে বৃষ্টি থেকে বাচায় ঝড় থেকে নয়। আপনার ঘরের দরোজার তালা আপনাকে চোরের হাত থেকে বাচায় ডাকাত থেকে নয়। তাই বলেকি আপনি ঘরে পর্দা দিবেন না, ছাতা মাথায় দিবেননা। ঘরে তালা দিবেন না। আপনার ঘরে সম্পদ দামী হলে ঘরে গার্ড নিতে পারেন, আরো সাবধানী হয়ে স্বর্নালংকার ব্যংকের ভল্টে রাখতে পারেন। তাতে আপনার গা জ্বলে না। অন্যের অনাংকাংখিত দৃষ্টি দেখে বাচার জন্য নিজের পোশাকটা পড়তে এতো লাগে কেন? আর বোরকা বা পর্দার নামে মিথ্যাচারইবা কেন? বোরকা তো এমন কথা কোথাও বলেনি যে বোরকা নারীকে ধর্ষন থেকে বাচাবে। বরং যা বাচাতে পারে তা হলো পর্দা। আগেই বলেছি পর্দা মানে নারীর গায়ে এক টুকরা কাপড় নয়। প্রয়োজনে তা হতে পারে ব্যংকের ভল্টের মত। এখন আপনি ঠিক করবেন আপনার সম্পদ কত দামী। তা ফুটপাতের মাদুরে রাখার মত, নাকি ব্যংকের ভল্টে রাখার মত। আর ধর্ষন বন্ধ করতে চাইলে সবার আগে দৃষ্টির পর্দা টাটুন। পর্দার বিধানে দেখা আর দেখানো দুটোই অপরাধ। আপনি সম্পদ দেখাবেন, দেখবেন আর সেই গুলো ভোগ করার নিত্য নতুন কলা কোশল দেখাবেন আর তা দেখার পর লোভ হলে তা হরন করলে চিল্লাবেন তা হতে পারেনা।
আর সকল পুরুষরাই তো ধর্ষক নয়। তারা কি নিজের মা বোন স্ত্রীকে নিরাপত্তা দিচ্ছেনা? কোন কোন নারী বা পুরুষরা অসংখ্য অপরাধ করে। আর নারী নিগ্রহ বা ধর্ষক তার একটি মাত্র। আমরা কি কোনদিন ঘরের দরোজা খোলা রেখে চোরকে গিয়ে বলবো ভাই তুমি ভালো হয়ে যাও। আমরা ঘরে দরোজা খোলা রেখেছি তুমি যেয়োনা। তাহলে কেন নারীকে উলঙ্গ করে রাস্তায় নামিয়ে দিয়ে পুরুষকে গিয়ে বলবো তোমরা দেখনা। তোমরা টিনের চশমা পড়ে হাটো। বরং তাদের উল্টো শাস্তি দেয়া উচিত যা উলঙ্গ হয়, উলঙ্গপনা প্রচার করে এবং সমর্থন করে এবং তারা এক শ্রেনীর পুরুষকে ধর্ষকে পরিনত করছে এর পরিনামে ওই সব উলঙ্গ নারীদের হাতে কাছে না পেয়ে সাধারন নিরীহ নারীদের ধর্ষন করছে।
আর পুরুষরা বোরকা পরবে কেন? নারীদের এমন অনেক পোশাক আছে যে গুলো কোন কালই পুরুষরা পড়েনা আবার পুরুষের কিছু পোশাক আছে যে গুলো কোন কালেই নারীরা পড়েনা। এখন কি একজনের পোশাক আরেকজনকে জোর করে পড়াতে হবে? মুলত তসলিমা নাসরিন এখন বিভ্রান্ত। তার কথার কোন মুল্য নেই। বয়সের ভার আর নিস্বঙ্গতা তাকে পাগল করে তুলছে।
তসলিমা অনেক কথাই ভুল বলে। মিথ্যা বলে। পরস্পর বিরোধী কথা বলে ফলে দেশের মানুষ তা গ্রহন করতে পারেনি। সে নারী জাতি বলতে শুধু মাত্র বাংলাদেশী মুসলমান নারীদের নিয়ে উদ্বিগ্ন। তাও শুধু মাত্র বাংলাদেশের। বিশ্বব্যপি নারী সমাজ নিয়ে তার কোন অভিজ্ঞতাই নেই।
লক্ষ্য করুন সে মুসলমানদের পাঞ্চাবী নিয়ে উদ্বিগ্ন। অথচ পাঞ্জাবী হিন্দুরাও পরে। আবার সংস্কৃতিতে যেমন নাটক সিনেমায় হিন্দু ধর্মীয় রীতিনীতি প্রবল ভাবে দেখা যায়। অথচ তার চুলকানি মুসলমানদের নিয়ে। ভন্ডদের মুখোশ এক সময় বেড়িয়ে পরে। তার তত্বযে কতখানি ভুল তার তাকে বুঝাতেই তাকে দেশ ছাড়া করা হয়েছে। কেননা তার মত হতে গেলে, চলতে গেলে দেশের সকল মেয়েকে বেশ্যা হতে হবে। তাদের পরিবার থাকবেনা, সমাজ থাকবেনা। ফলে অনিয়শ্চতার মধ্যে পরবে পরবর্তী প্রজন্ম। এই প্রজন্মের কেউ তা চায়না বলেই তাকেই বিতাড়িত করেছে। এমনকি তার খোজ পর্যন্ত কেউ নিচ্ছেনা। ইতিমধ্যে ভারতে বেশ কয়েক বার হিন্দু/মুসলমান কতৃর্ক আক্রমনের শিকার হয়েছে কিন্তু লজ্জায় কাউকে জানাতে পারেনি। এখন আর কেউ খোজ নিচ্ছেনা বলেই মাঝে মাঝে যৌনতা সম্বলিত রগরগে কথা নিয়ে হাজির হয়। মুলত ভারতে বসবাসরত সানি লিউন আর তসলিমার মধ্যে কোন পার্থক্য নেই। উভয়ের যৌনতা নির্ভর জীবন যাপন করে। কিন্তু সেই তুলনায় সানি লিউন তসলিমার চাইতেও সৎ। সে অন্তত মিথ্যা বলেনা।
শেষের দিকে আবারো কিছু মিথ্যা কথা বলে গেছে তসলিমা। যার সাথে বাস্তবতার কোন মিল নেই। পয়গম্বররা বোরকা প্রচলন করেনি। ধর্মীয় বিধান মেনে চলেছেন মাত্র। এবং সেই বিধান বোরকার নয়। তা ছিল পর্দার। সুতরাং তসলিমা পর্দা আর বোরকাকে গুলিয়ে ফেলেছে যা তার অজ্ঞতাকেই প্রকাশ করে। তবে মুখ ফসকে সে কিছু সত্যও বলেছে। যেমন অপরাধীরা অপরাধী ঢাকতে বোরকা পরে। ঠিকই বলেছে। সে নিজেও একবার বোরকা পড়ে বাংলাদেশের কোর্টে এসেছিল। আসলে যে যেমন সে সবাইকে ওরকমই মনে করে।
পরিশেষে একটা কথাই বলি তার পুরো লেখা পরার পর মনে হয়েছে তসলিমা উন্মাদ হয়ে গেছে। আসলে বোরকা হাস্যকর পোশাক নয় বরং নিজেই একজন হাস্যকর নারী।
Comments (12)
মেঘ এবং আকাশ দুটোকেই দেখা যায় কিন্তু ধরা যায় না। আকাশের বিশালত্বে মেঘ ছোটাছুটি করে বেড়ায় অথচ ধরা দেয় না। মায়াই বৈকি। কথোপকথন ভালো লাগলো ইশতিয়াক। তবে এটাকে গল্প ক্যাটাগরিতে না দিয়ে কবিতা ক্যাটাগরিতে দিলেই মনে হয় বেশী ভালো হত। ধন্যবাদ।
ক্যাটাগরিটা বুঝতে পারিনি।
অনেক ধন্যবাদ রইলো...
কথোপকথনটা বেশ চমৎকার। মায়া আসলেই খারাপ। মায়া টানেই মানুষ পথ হারা হয়। আবার উল্টোটাও সত্য মায়া না থাকলে পৃথিবীতে ছায়া থাকতোনা। কেউ শীতল হতোনা। সবাই অস্থির থাকতো।
মায়া আহ মায়া
ধন্যবাদ রইলো ... :)
ভালো লাগা রইলো। ধন্যবাদ।
আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ... :)