Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.

নুমান আহমদ

১০ বছর আগে

বাদশাহ এবং কৃপণ!

মূল আরবী গল্পটি পড়তে হলে এখনে জাঁতা দিন।

অনেক আগে এক কৃপণ বাস করত। তার অতি কার্পণ্যতার দরুন সর্বদা এমন একটি পন্থার চিন্তায় থাকত যা দ্বারা সে মাল অর্জন করবে। অথবা এমন একটি পন্থা যা দ্বারা সে এমন ব্যক্তি থেকে দূরে থাকবে যে সামান্য মাল তার কাছে চেতে পারে।

 

অধিক কৃপণতার কারণে সে এক গ্রাম থেকে অন্য গ্রামে ঘুরছে। অবশেষে একটি গ্রাম পেল যার সকল বাসিন্দা ভদ্র। সে তাদের সাথে বসবাস শুরু করল। আর প্রকাশ করতে থাকল যে, সে খু্বই দরিদ্র। তাদের অতি কৃপা ও করুণার কারণে তারা তাকে দান-খয়রাত করতে লাগল এবং সেও খাবার দ্রব্য থেকে শুরু করে যাবতীয় পরিধেয় বস্ত্র তাদের কাছ থেকে পেতে লাগল।

 

একদিন সকালে তারা একটি অদ্ভুত ঘটনা দেখতে পেল যে, লোকটি তার সামনের দরজাটি গ্রামবাসীদের জন্য বন্ধ করে দিয়েছে। তার ঘরের এমন একটি দরজা খুলেছে যা দ্বারা খালি জমির দিকে দৃষ্টি পড়ে। তারপরও মানুষের উপস্থিতি অব্যাহত ছিল। যখন তার অবস্থা তাদের কাছে প্রকাশ পেল তখন তারা হাসতে লাগল। তারা দেখতে পেল যে, তার একটি ছাগল আছে যা অনেক দুধ দেয়। সে অনেক ভয় পেয়ে গেল যে, কেউ না তার কাছে একটু দুধ চেয়ে ফেলে। তাই তার ঘরের দরজা তাদের কাছ থেকে দূরে সরিয়ে নিল।

 

এজন্য কিছু লোক কানাঘুষো শুরু করে দিল যে, এই লোকটি খুবই ধনী। সে প্রত্যেক স্থানে গর্ত খুদে সেখানে সোনা রুপার দিনারসমুহ সংগ্রহ করছে। তারপরও লোকেরা হাসিমুখে  তাকে ভালোবাসে এবং তার অবস্থার কারণে তাকে দান করতে থাকে।

 

একদিন একজন অশ্বরোহী খুব ক্ষুধার্ত এবং তৃষ্ণার্ত অবস্থায় ঐ গ্রামে আসছিলেন।তিনি ঊর্ধ্বশ্বাসে সে দিকে আগাচ্ছিলেন।এবং চাচ্ছিলেন যে, নিকটতম বাড়িটিতে গিয়ে পৌঁছবেন যার দরজা বনের দিকে ছিল। যখন তিনি সেখানে পৌঁছলেন তখন ঐ বাড়ির মালিক যে নিজেই একটা কৃপণ লোক, তার কাছে প্রয়োজন প্রকাশ করার ইচ্ছা করলেন। কৃপণ লোকটি তা অনুভব করে চিৎকার দিয়ে বলল:

এদিকে এসো না হে লোক! আমার গৃহে এমন কোন বস্তু নেই যা তোমাকে দান করব। না কোন খাবার আছে না কোন পানীয়। এমনকি কোন শুকনো ঘাসও নেই। অশ্বরোহী বিষণ্ণ হলেন।তাঁর চেহারায় বেদনা এবং অত্যন্ত ক্লান্ততার চিন্থ ফুটে উঠল। তিনি ধ্বংশের ধারপ্রান্তে গিয়ে পৌছছিলেন।না মুখ খোলতে পারছিলেন না কথা বলতে পারছিলেন।তিনি তাঁর ঘোড়ার মুখ ফিরিয়ে গ্রামে  প্রবেশ করলেন এবং একটি বাড়ির সামনে থামলেন এবং যা ঘটেছে তাতে তিনি বিস্মিত হলেন।

 

বাড়ির মালিক এবং বাড়ির অন্যান্য সব সাথে সাথে বের হয়ে তাকে স্বাগত জানাল এবং যাতে সে দ্রুত ঘোড়া থেকে নামতে পারে সে জন্য তারা তাকে সাহায্য করল। এবং তাঁর ঘোড়াটিকে বেঁধে রেখে ঘোড়ার জন্য পানির ব্যবস্থা করল। এবং তাঁর হাত মুখ পরিস্কার করার জন্য পানির ব্যবস্থ করল। তার সামনে তারা খাবার দাবার উপস্থিত করল। এবং তার বিশ্রামের ব্যবস্থা করল।

যখন তিনি ঘুম থেকে জাগলেন তখন তাদেরকে বড় শহরের কথা জিজ্ঞেস করলেন।তারা তাঁকে শহরের রাস্তা দেখিয়ে দিল। তখনই তিনি ঘোড়ায় আরোহণ করে চলে গেলেন।তিনি অত্যন্ত আশ্চর্য হলেন যে,  তারা তাঁকে একটি প্রশ্ন করল না যে, তিনি কে এবং কেন তাঁর এ অবস্থা এবং কীভাবে তিনি এখানে পৌঁছলেন।

 

কতেকদিন পর গ্রামবাসি বিস্মিত হয়ে গেল। সবাই বের হয়ে গেল ঐ অশ্বরোহীকে দেখতে। সে সৈন্যবাহিনীর মত একাটি অশ্বরোহী দল নিয়ে উপস্থিত হল। তারা অনেক উপটৌকন এবং মালবাহী ঘোড়া ও গাধা নিয়ে আসছিল। সবাই এসে একটি দরজার সামনে এসে উপস্থিত হল। বাড়ির মালিক সবাইকে অভিবাদন জানাতে ব্যস্ত হয়ে গেল। সে চিনে ফেলল যে, সে তো ঐ অশ্বরোহী যে ক্ষুধার্ত এবং তৃষ্ণার্ত অবস্থায় তাদের বাড়িতে এসেছিল। সে তো রাজা! বাড়ির মালিক বড় একটি ভোজোৎসবের আয়োজন করল। এবং তাতে গ্রামের সবাইকে নিমন্ত্রণ করল।

বাড়ির মালিক রাজার কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করার পর রাজাও তার দিকে এসে তার কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করলেন এবং তার মর্যাদা স্বীকার করলেন। যখন রাজা জানলেন যে, গ্রামের সবাই তার মত। তখন তিনি একে একে সবার সাথে সাক্ষাৎ করলেন এবং বললেন, ঐমহান আল্লাহর কৃতজ্ঞতা আদায় করছি যিনি আমার রাজত্বে আপনাদের মত মহৎ মানুষ রেখেছেন।

 

ঐসময়যখনসবাই খাবর শেষ করে আমোদ-ফুর্তি করছিলেন, তখন রাজা এবং সকলে একটি কাঁদার শব্দ শুনতে পেলেন। সবাই সেদিকে গিয়ে দেখলেন সেই কৃপণ লোকটি কাঁদছে। তখন রাজা কারণ অন্বেষণের জন্য একজন লোক প্রেরণ করলেন।সে দ্রুত গিয়ে জিজ্ঞেস করল, তোমার কী হয়েছে?  কিন্ত সে কোন জবাব দিল না। তার নিকটবর্তি এক মহিলা হেসে হেসে উত্তর দিল,  এসকল উপটৌকনের মালিক নাকি সে। কিন্ত মানুষ তাকে তা গ্রহণ করতে নিষেধ করছে।

 

রাজা তাকে জিজ্ঞেস করলেন, তুমি এসবের মালিক কেমনে হলে?  অতচ আমি তোমারও রাজা! সে অশ্রু মুছে মুছে উত্তর দিল, নিশ্চয়ই এসব আমার মাল। আমি আমার জ্ঞান এবং কৌশলের অভাবে নিজের হাতে তা নষ্ট করেছি।

তিনি তাকে বললেন, কীভাবে?  কৃপণ লোকটি বলল,

আপনি কী প্রথমে আমার বাড়ির ইচ্ছা করেননি? আপনি কী আমার বাড়িতে মেহমান হিসেবে অবতরণের ইচ্ছা করেননি? ...আহ..হায় দুর্ভাগ্য আমার....হায় দুর্ভাগ্য আমার....।

তখন রাজা এবং তাঁর সাথীবর্গ হেসে উটলেন এবং সকল গ্রামবাসিও হাসল। রাজা হাসির মধ্যেই তাদেরকে বললেন, আশ্চর্য! আপনাদের গ্রামে এমন একটি কৃপণ বাস করে কেমনে?

 

 তখন কৃপন লোকটিই উত্তর দিল, অনেক ভালো চলছে হে নেতা! তারা আমাকে দান করে কিন্ত কোন কিছু জিজ্ঞেস করে না এবং কোন কিছু ফিরিয়ে নেয় না। তারা সকলে আবার হাসতে লাগল এবং সে কাঁদতেই থাকল। কিন্ত তার কাঁদার আওয়াজ তাদের হাসির মধ্যে হারিয়ে গেল।

কোন ভুল হলে দয়া করে বলে গেলে আপনার কাছে কৃতজ্ঞ থাকব।

১ Likes ১৬ Comments ০ Share ৬৬২ Views

Comments (16)

  • - লুৎফুর রহমান পাশা

    কিছু কিছু জায়গায় লেখা বেশ ভালো লেগেছে। আবার কিছু জায়গায় দুর্বোধ্য ঠেকেছে। তবে লেখকের লেখনি শক্ত তা স্পস্ট। অনুবাদক আরো যত্নবান হলে আমরা সুন্দর একটা অনুবাদ পাবো আশাকরি।

    • - মোঃ মুজিব উল্লাহ

      কিছু কিছু শব্দ/শব্দগুচ্ছের ফুটনোট দিলে লেখাটি আরো বোধগম্য, সমৃদ্ধ হবে বলে আমার বিশ্বাস। এ নিয়ে কাজ করবো। আর আপনার মতামতটিও খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ভবিষ্যতের জন্য মনে রাখবো। পাঠকদের আকৃষ্ট করার জন্য সাবলীলতা ও সহজবোধ্যতা অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর।

    - নীল সাধু

    শুভেচ্ছা সুপ্রিয় মোঃ মুজিব উল্লাহ।

    আমার কাছে অনবদ্য লেগেছে। ধন্যবাদ এই প্রচেষতার জন্য। আপনি ইদানিং অনুবাদে ঝুকেছেন মনে হচ্ছে। বেশ কিছু লেখা পেলাম এই বিষয়ে। নাইস। 

    ভালো থাকুন। শুভেচ্ছা নিরন্তর।

    • - মোঃ মুজিব উল্লাহ

      উচ্চশিক্ষার জন্য একাধিক অপশান হাতে রাখার লক্ষ্যে অনুবাদে কিঞ্চিত আগ্রহী তবে এ্যাকাডেমিক মেজর নির্ধারিত হওয়ার আগ পর্যন্ত কোন কিছুতেই বেশি সময় থাকার সম্ভাবনা কম। স্টাডি ও ক্যারিয়ারের উপর অনেক কিছুই নির্ভর করছে।

    - সনাতন পাঠক

    ভাল লেগেছে অনুবাদ। ধন্যবাদ আপনাকে  

    • - মোঃ মুজিব উল্লাহ

      শুভেচ্ছা নিন। ভাল থাকুন সতত।

    Load more comments...