কিছু দিন আগেও ইংরেজি বর্ণমালায় বাংলা লিখতে হয়েছে ব্লগারদেরকে। অথচ আজ দেখুন বাংলা ব্লগসাইটের সংখ্যা একশত হয়ে যাবে, যেখানে সৃষ্টি হচ্ছে সহস্র ব্লগ পোস্ট। তবু অনেকে মনে করেন, ইংরেজির দৌরাত্মে বাংলা কনটেন্টস এর কোন পাঠক-উপযোগিতা নেই। বাস্তবতা সকল পূর্বধারণাকে হার মানায়। বাস্তবতা হলো বাংলা ভাষায় রয়েছে বহুসংখ্যক একটিভ ব্লগার, যাদের মনে আছে গভীর স্বদেশ প্রেম আর আত্মপ্রকাশের ক্ষয়হীন প্রেরণা। তাদের একত্রিত প্রচেষ্টা বিভিন্ন সময়ে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে আর চেতনা যুগিয়েছে সাধারণ মানুষের মধ্যে।
বাংলা ব্লগের সম্ভাবনা
বাংলা ভাষায় ব্লগিং বা সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং যে কত সম্ভাবনাময়, এর অন্তত একশ’টি কারণ আছে। এর মধ্যে কয়েকটি আমি তুলে ধরছি:
• বাংলা ভাষায় কথা বলা লোকের সংখ্যা ২১ কোটিরও ওপরে এবং এটি রাশান, জার্মান বা জাপানি প্রভৃতি প্রভাবশালী ভাষাগুলোর চেয়েও বেশি প্রচলিত।
• থ্রিজি’র সম্প্রসারণে অতি অল্প সময়ে ইন্টারনেট চলে যাচ্ছে প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের কাছে।
• কমিউনিটি ব্লগের দ্রুত সম্পসারণের কারণে বলা যায়, ইংরেজির পরই বাংলা ভাষার ব্লগ এবং ব্লগারদের তৎপরতা বেশি।
• ইংরেজি ভাষার কনটেন্টস বেশি হলেও এটি বিশ্বের তৃতীয় এবং মাত্র ৬% মানুষের ভাষা। বাংলা ভাষায় পৃথিবীর ৩% এরও বেশি লোক কথা বলে।
• লেখার মান ভালো হলে বাংলা ভাষার কনটেন্টস, বিশেষত ব্লগ, ইংরেজির পরই স্থান করে নেওয়াটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। বর্তমানে বাংলা আর ইংরেজি’র মাঝামাঝি অবস্থানরত তিনটি ভাষা হলো: হিন্দি, আরবি ও পর্তুগীজ।
ভালো কনটেন্টস, অধিক হিট, সুসংহত বাংলা ব্লগ
ব্লগারদের একটি বড় অংশ জুড়ে আছেন শিক্ষার্থী এবং কর্মপ্রত্যাশী। নির্দিষ্ট উদ্দেশ্য বা চেতনা নিয়ে ব্লগিং করছেন এরকম ব্লগারের সংখ্যা কম এবং তারা অনিয়মিত। শিক্ষার্থী এবং কর্মপ্রত্যাশী ব্লগারদের সংখ্যাটি বেশি হওয়ায় তাদের লেখার মান বৃদ্ধি করা সবচেয়ে বেশি জরুরি।
আমার মতে, তারা যদি নিজেদের পড়াশুনার বিষয়গুলো নিয়েও আরেকটু গভীরভাবে চিন্তা করেন এবং তা ব্লগে তুলে ধরেন, তবে তা বাংলা ব্লগের অনেক উপকারে আসবে। আর
আর যারা কর্মপ্রত্যাশী বা পড়াশুনা করে একটি সফল কর্মজীবনের অপেক্ষা করছেন, তারা যদি তাদের পছন্দের পেশা নিয়ে আরও অনুসন্ধান করেন, তবে সেটা তাৎক্ষণিকভাবে তাদের উপকারে আসবে। বাংলা ব্লগের জন্য তা হবে অতিরিক্ত পাওয়া।
ইংরেজি ব্লগ গুলোর অধিকাংশই গসিপ আর ট্রিভিয়া’র মেলা। তবে এসব ব্লগসাইটগুলো পড়লে নিজের লেখার কনটেন্টস সম্পর্কে অনেক ধারণা পাওয়া যায়। গুগলে সার্চ দিলে এরকম শত শত ব্লগটসাইট ভেসে ওঠে পলকে। সেরা ২৫টি ব্যক্তিগত এবং জনপ্রিয় ব্লগের তালিকা পাওয়া যাবে নিচে দেওয়া লিংকে।
এখন সময় ব্লগারদের
ব্লগ আর ব্লগের সম্ভাবনা নিয়ে অনেক তো বলেছি। অনেকে মনে করেন, এত কিছু জেনে কী লাভ? সত্যিই কোন লাভ নেই। তবে যারা ব্লগিংকে সিরিয়াসলি নিতে পারেন, তারা এখান থেকে অনেক কিছু পেতে পারেন। ভাষাগত দক্ষতা নিয়ে অনেকে চিন্তিত হন, অথচ বড় চ্যালেন্জ হলো লেখার সারবস্তু। সৃজনশীল চিন্তা আর ভালো আইডিয়া যদি থাকে, তবে ভাষাগত দক্ষতা অর্জন করতে আর কী সমস্যা। সৃজনশীলতার চাপেই বাকি সব পাওয়া যায়।
এমন কোন বিষয় কি আপনার আছে যা নিয়ে বিশ্বের মানুষ মহা-কৌতূহলী? এমন কোন বিষয় নিয়ে কি আপনি ভাবেন, যা লেখলে সকলেই হুমরি খেয়ে এসে পড়বে? এর সঙ্গে যদি থাকে নিয়মিত লেখে যাবার সময় ও মানসিকতা, তবে আর দেরি কেন? বসে পড়ুন লিখতে। পৃথিবী এখন ব্লগারদের হাতে!
*পরিশিষ্ট:
Comments (27)
শুভেচ্ছা শামীম আরা আপা।
বেশ সুন্দর কিছু কথা জানা হল। ভালো লেগেছে অনেক।
এমন বন্ধুত্বই গড়ে উঠুক মানবের মাঝে,যা ব্যক্তি, দেশ ও দশের মঙ্গল বয়ে আনে। সর্বপরি মানুষের কল্যানে প্রসারিত হোক বন্ধুত্বের হাত, শত্রুর নয়। সহমত জানাই
“যদি বন্ধু হও যদি বাড়াও হাত, জেনো থামবে ঝড়, মুছে যাবে এই রাত, হাসি মুখ তুলে, অভিমান ভুলে, রাঙা সূর্য বলবেই সুপ্রভাত”। শুভমিতার গানের কথা ভাল লাগলো।
ধন্যবাদ নীল সাধু, আপনি বরাবরই এক। আন্তরিকতার অভাব নাই।
পত্রবন্ধুত্বের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত দুই নোবেল বিজয়ী নারী। প্রথম জন সেলমা লেগারলফ আর দ্বিতীয় জন নেলি সাক্স। দু’জন ছিলেন দুইদেশের অধিবাসি। সেলমা লেগারলফ সুইডেনের আর নেলি সাক্স ছিলেন জার্মানির।
দারুণ পোস্ট । হারিয়ে যাওয়া পত্র যদি সত্যি ফিরে আসতো ----
সত্যি খুব মন চায় সেই দিনের কাছে ফিরে যেতে। ধন্যবাদ
ধন্যবাদ। সুন্দর পোষ্ট!
ধন্যবাদ আপনাকেও