একবারে হঠাৎ করেই দেখা হয়ে গেল সেজুতির সাথে। এভাবে ওর সাথে দেখা হয়ে যাবে ভাবিনি কখনও। তবে দেখা হবে এমন একটা অপেক্ষায় ঠিকই ছিলাম। তবুও ভীষণ অবাক লাগছে। লাইব্রেরীতে বসা হয় না অনেকদিন। ছাত্রজীবনেই যা একটু আধটু অভ্যেস ছিল। পাবলিক লাইব্রেরীর পাশ দিয়েই যাচ্ছিলাম তাই কি মনে করে ভাবলাম একটু ঢু মেরে যাই। এসে দেখা হয়ে গেল সেজুতির সঙ্গে। কিন্তু সেজুতিই বা এখানে কেন? সে যাই হোক এই পরিবেশে ওকে মানিয়েছে ভাল। চশমা ও আগে থেকেই পড়ত তবে সময়ের ব্যাবধানে তার ফ্রেমের ডিজাইনে পরিবর্তন এসেছে। একসময় ভাবতাম ওকে দেখলে বুঝি চিনতে পারবনা। ভুলে যাবার চেষ্টাগুলোও ছিল সুনিপুন। ট্রাংকের ধুলো জমা কাগজপত্রের স্তুপ থেকে বের করে সবগুলো ছবিও একদিন জ্বালিয়ে দিলাম। তবে হৃদয় থেকে সে ছবি এত সহজে মুছতে পারিনি। নাহলে আজ নয় বছর ধরে দেখা নেই তবুও এক দেখাতেই দুজন দুজনকে চিনে ফেললাম কত সহজে। সেজুতিই প্রথম কথা বলল, ভালো আছো? আমি বললাম, এইতো, ভালো, তুমি? সেজুতি মৃদু হাসলো। অনেকক্ষণ আলাপ হলো দুজনে। ঘর-সংসার, ছেলে-মেয়ে এইসবই বিষয়বস্তু। মানুষের জীবনও কত অদ্ভুত। কার ভাগ্যে কি ঘটবে তা কেউ আমরা জানিনা। না হলে যেই সংসার স্বপ্ন নিয়ে ফোনালাপে রাত পার করে দিতাম দুজনে সেই আমরাই হঠাৎ কত দূরে চলে গেলাম। অথচ জীবন আমাদের কারও কিন্তু থেমে নেই। শুধুজীবন সাজানোর মানুষগুলো বদলে গেছে। সেজুতিকে এখন উঠতে হবে। মেয়ের স্কুল ছুটির সময় হয়ে গেছে। আমাকেও বেরোতে হবে। পরষ্পরের কাছথেকে বিদায় নিয়ে রাস্তার দুই দিকে হাটতে থাকলাম দুজনে। কি মনে করে একবার পেছন ফিরে তাকিয়েছি কিন্তু কি অদ্ভুত ব্যাপার সেজুতিও তাই। ঠিক সেই আগের দিনগুলোর মত।
Comments (0)
খুব সুন্দর ।