Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.

ফেসবুক বন্ধুতা

 

 

গল্পের প্রথম পর্ব এইখানে 

গল্পের দ্বিতীয় পর্ব এখানে 

গল্পের তৃতীয় পর্ব এখানে 

 

শেষ পর্বঃ 

লোকটাকে ভালোভাবে বুঝিয়ে যখন কিছুতেই ক্ষ্যান্ত করতে পারলো না, ও তখন ফেসবুক ওয়ালে একটা নোটিশ দিয়ে দিলো-“বন্ধুরা, আমি একটি বিপদে পরেছি। আমার অনুমতি ছাড়া একটি ভিডিওতে সরল আহমেদ নামের এক তরুন আমার ছবি এটাচ করেছে। কিভাবে এ থেকে উদ্ধার পাওয়া যায়? সাহায্য করুন। প্লিইইইজ!”

একই ধরনের ম্যাসেজ ঐ ভিডিওটির নিচে অন্য যারা কমেন্ট করেছে সেখানেও সে দিয়ে দিলো যাতে ঐ লোকের বন্ধুরাও জেনে যায় বিষয়টা। ফেসবুক একাউন্টে হেল্প অপশনে গিয়েও একটা ডায়রী করলো।

এর মধ্যে সরল আবার অফলাইনে। যখন অনলাইনে আবার তাকে দেখা গেলো, সামান্থা বুঝে গেলো এই লোককে শায়েস্তা করতে অন্য পথ ধরতে হবে! তাতে কাজ হলে হতেও পারে! লোকটা যা করেছে তা এক ধরনের প্রপোজালই বলা যায়! অদ্ভূত ভিন্নতা সে আবেদনে!

সে ম্যাসেজ অপশনে গিয়ে আবার ম্যাসেজ দিলো লোকটাকে। “আপনি যে কাজটা করেছেন, একটু ভেবে দেখুন তো, আমার হাজবেন্ড দেখলে সে কি মনে করবে?”

এরপর অনেকক্ষণ কোন রিপ্লাই নেই। এর আগে বেশ কিছুক্ষণ মেসেজ-পাল্টা মেসেজ দেওয়া-দেওয়ি চলছিলো। মেসেজের জবাব আসার অপেক্ষা করতে করতে সে আবার চেক করে দেখলো ভিডিওটা। ভালো করে খুঁটিয়ে দেখার পরে সারাদিনের তীব্র মাথার যন্ত্রণাটা দূর হয়ে গেলো। এতক্ষণ যেমন মনে হচ্ছিলো বুকের ভেতরে কেউ ছুরি চালিয়ে দিয়েছে। এখন মনে হচ্ছে ছুরিটা যেন কেউ বের করে নিয়েছে বিনা ব্যাথায়।শেষ ট্রিকসটা কাজে লাগলো তাহলে! ওকে ম্যারিড ভেবে সরলের প্রেম উধাও! সারাদিন অনেক কড়া কড়া কথা শুনিয়ে ফেলেছে লোকটাকে। রাগে। তা না করেই ওর উপায় কি ছিলো! লোকটার যদি ওকে ভালো লেগেই থাকে অন্য কোনভাবে জানাতে পারতো সেটা। তা না করে যেটা করেছে তা খুবই অবিবেচকের কাজ! একটা ভদ্র ঘরের মেয়ের সম্মান জড়িয়ে আছে যেখানে! এটা সে বুঝবেনা? ও তো কোন মডেল বা সেলিব্রেটি নয়। ওর ছবি কেন একজন অচেনা ছেলের সাথে ভিডিওতে থাকবে!!

এখন বিপদ কেটে যেতেই লোকটাকে ধন্যবাদ জানাতে ইচ্ছে করলো। হাজার হোক ও তো অভদ্র নয়। ওর ম্যাসেজ এর উত্তর এলো, “উফ্! আপনি একটা অসহ্য! ক্যানো জ্বালাচ্ছেন?”

কয়েক সেকেন্ড পর ফেসবুক এর অন্যান্য বন্ধুদের প্রোফাইল ঘুরে এসে ওর বলতে ইচ্ছে হলো, “আমি কোথায় আপনাকে জ্বালিয়েছি! আপনিই তো সারাদিন আমাকে অসহ্য যন্ত্রণার মধ্যে রেখেছেন!”

কিন্তু, ওই লোকের নামে ক্লিক করে মেসেজ দিতে চেয়ে দেখা গেলো, লোকটা ওর ফ্রেন্ড লিস্টে নেই। নিজেই ওকে ডিলিট করে দিয়েছে। সামান্থার মুখের কোণে মুচকি হাসি দেখা গেলো।

“যাক্ বাবা বাঁচা গেলো! জঞ্জাল নিজেই পথ পরিস্কার করে বিদায় নিয়েছে।”

 

পরিশেষঃ এই ঘটনার পর সহজ সরল মেয়ে সামান্থার একটা উচিত শিক্ষাও হয়েছে। “লোকটার অবশ্যই কোন খারাপ উদ্দেশ্য ছিলোই। নইলে নিজে বন্ধুতার অনুরোধ না পাঠিয়ে কেন ওকে দিয়েই সেটা করিয়ে নিয়েছিলো! আর এক রাতের মধ্যেই এমন একটা অঘটন কেন ঘটিয়েছিলো!” অনেক ভেবেও এর কোন সদুত্তর পায়নি ও। তবে, এরপর থেকে ও আর অচেনা কাউকে ওর ফ্রেণ্ড লিস্টে যোগ করেনা। এমনকি ওর ফেসবুক এর সমস্ত জায়গায় ও কড়া প্রহরার ব্যবস্থা করে নিয়েছে। অর্থাৎ, রেস্ট্রিকশন দিয়ে দিয়েছে যেন ইচ্ছে করলেই একেবারে ঘনিষ্ঠ বন্ধু, আত্মীয়-স্বজন ছাড়া কেউ আর ওকে বাইরে থেকে দেখতে না পায় বা ওর সম্বন্ধে বেশি কিছু তথ্য না পায়। আর নিজের অনেক ছবি ও ব্যক্তিগত তথ্যও ও ফেসবুক থেকে মুছে ফেলে বাস্তব জীবনের সাথে ভার্চুয়াল জীবনের একটা সীমারেখা টেনে নিয়েছে। এই একটি ঘটনা ওর সরল সাধারণত্ব পালটে ওকে অনেক কঠিন করে দিয়েছে। এখন আর ইচ্ছে করলেও ফেসবুক বা অনলাইনে নিজের ব্যক্তিগত অনেক কিছুই শেয়ার করা থেকে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করে রাখে।

 

(সমাপ্ত) 

 

০ Likes ১২ Comments ০ Share ৪৭৮ Views

Comments (12)

  • - শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

    তাঁর জন্ম দিনে আমাদের শুভেচ্ছা।

    • - সকাল রয়

      উনাকে চিনিনা। 

      মৃত্যুর পর জন্মদিন দিয়া  আর কি হবে?

    - ইকবাল মাহমুদ ইকু