Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.

ফেসবুক বন্ধুতা

 

  

 

আগের পর্ব দেখুন এইখানে  

 

এতক্ষণে ইনবক্সের ওই ম্যাসেজটার অর্থ পুরোপুরি বোধগম্য হলো। লোকটা এই রোম্যান্টিক গানের মধ্যে একটি ছেলে আর একটি মেয়ের ছবি ব্যবহার করেছে। গানের সুরে সুরে মেয়ের ও ছেলেটার ছবি মাঝে মাঝে পর্দায় ভেসে উঠছে। ছেলের ছবিটা ওই সরল আহমেদের নিজের। আর, মেয়েটা অন্য কেউ নয়। সামান্থার!

ভিডিওটি দেখে মনে হচ্ছে, প্রেমিক প্রেমিকার ভূমিকায় যেন ওই সরল আর সামান্থা!

এতক্ষণে চোখে পরলো, গানের সাথের কিছু কমেন্ট। এদের কাউকেই সামান্থা চিনতে পারছে না। বোধহয় সরল নামের লোকটার পরিচিত।

পুলক হাসানঃ “কি রে সরল,গানের ভেতরে কাকে দেখছি? ইনি কি আমাদের সরলের সরলা নাকি?”

ইশরাত নূপুরঃ “গানের সাথে ভিডিওটা বেশ লাগছে! ছবিগুলো দারুন এটাচ করেছেন।”

সরল আহমেদঃ “পুলক, তুই ঠিক ধরেছিস! সরলা পেলাম এতদিনে!”

সরল আহমেদঃ “ধন্যবাদ, নূপুর।”

স্মৃতি হায়াতঃ “ভালো লাগলো ভিডিওটা। কংগ্র্যাটস্ সরল!”

সরল আহমেদঃ “থ্যাংক্স, স্মৃতি।”

 

হায় হায়! এই দৃশ্য যদি পরিবারের কারো চোখে পরে তাহলে কি হবে ভাবতেই ভয়ে কেঁপে উঠলো ও। এমনিতেই ইন্টারনেট আর ফেসবুক ইউজ করা নিয়ে বহুত বকা শুনতে হয় ওকে। মেহজুবাও প্রায়ই বলে, “বন্ধু, তুমি তো আছো এক ফেসবুক লইয়া!” আর ভিডিওটা দেখলে তো কথাই নেই। ক্ষ্যাপাবে! “এখন কি করবো? লোকটাকে সামনে পেলে কাঁচা খেয়ে ফেলতাম! শালা শয়তান! কোন ব্যাক্কলে যে ব্যাটার নাম সরল রাখছে! সরল না গরল! এই ব্যাটা একটা পাজির পা ঝাড়া! ছেলেগুলোর হয়েছে এই এক বদ স্বভাব। এদের বসতে দিলে মাথায় চড়ে বসে!!! এরকম একটা কাজ কিভাবে করতে পারলো? ওওহ, আমি এখন কি করবো!!!” রাগে গর গর করতে করতে মাথার চুল চেপে বলতে থাকলো সামান্থা।

পরবর্তী কয়েকটা ঘন্টা ওর অন্য সব কাজ মাথায় উঠলো। কিভাবে এই ভিডিও ডিলিট করা যায়! সেরকম কোন অপশন পেলোনা। তাতে মাথা গরম হয়ে উঠলো আরো। কি করা যায়! কি করা যায়! কম্পিউটার টেবিলের চেয়ার থেকে উঠে বার বার ঘরের মধ্যে পায়চারী করতে লাগলো। একবার খাটে বসে তো একবার বিছানায়। সারাদিন কম্পিউটার চালানো। মাঝে আবার দু’বার কারেন্ট চলে গেছে। কাজের সময়েই যত ঝামেলা! কারেন্ট যাওয়ারও দরকার পরছে আজকে! যত্তসব!

‘ফেসবুক অথরিটি’ বলে একটা বিষয় আছে এই ব্যাপারে ওর একটা ক্ষীণ ধারণা থাকলেও সেটা কিভাবে করতে হয় তা সামান্থার জানা নেই।

দুপুরের দিকে সরল আহমেদকে অনলাইনে পাওয়া গেল। ও রিকোয়েস্ট করলো ভদ্রভাবে। কারণ মা বলে,“শত্রুর সাথে খারাপ ব্যবহার না করে মোলায়েম ভাবে কথা বলতে হয়। নইলে শত্রু ক্ষতি করে।”

যাহোক মিস্টার সরল ওটা ডিলিট করে দিবে বলে ওকে আশ্বস্ত করলে ও কিছুটা শান্ত হলো। দুপুরে আধো ঘুম আধো জাগরণের বিশ্রাম হলো। বিকেলে আবার অনলাইনে বসলো সে। আবার ভিডিওটা চেক করে দেখে, কিসের কি। ঐটা তো বহাল তবিয়তেই আছে! এবার আর ও চুপ করে থাকতে পারলো না। লোকটাকে হাজার বার রিকোয়েস্ট করতে লাগলো। মেসেজের পরে মেসেজ দিতেই থাকলো। বার বার বুঝালো-“ভাইয়া প্লিইইজ!ওটা থেকে আমার ছবিটা সরিয়ে ফেলুন।”

রাতে আপু ও দুলাভাই দু’জনেই অনলাইনে বসে। রেগুলার। তাছাড়া দেশে বিদেশে ওর আরো কত আত্মীয়-বন্ধু থাকে। ওদের কেউ যদি দেখে ফেলে ভিডিওটা। তারপরে বাসায় জানিয়ে দিলে কেয়ামত হয়ে যাবে।কারন ওটা তো ওর ওয়ালে একেবারে প্রথমেই অবস্থান করছে।

(চলবে...)

   

শেষ পর্ব পড়ুন এখানে

০ Likes ১৪ Comments ০ Share ৪৪৮ Views