হাসিখুশি চমৎকার উচ্ছ্বল চঞ্চল মেয়ে সামান্থা। কথা বলতে খুব ভালোবাসে। বেশ মিশুক। অপরিচিত নতুন কোন মানুষের সাথে বন্ধুত্ব করে ফেলতে ওর একটুও সময় লাগে না। মুহূর্তেই এতটা আপন করে নেয় যে মনে হয় কত দিনের চেনা!
ফেসবুক ব্যবহার করার মাধ্যমে নতুন নতুন দেশে বিদেশে থাকা সিনিয়র জুনিয়র অনেক মানুষের সাথে পরিচয় হয়েছে। নিজের আত্মীয় বন্ধুরা ছাড়াও ফেসবুক এর অন্য বন্ধুদের তালিকা থেকে বা হোম পেজ এ দেওয়া ‘বন্ধু হিসেবে যোগ করতে পারেন’ এমন কাউকে দেখলেই নাম কিংবা প্রোফাইল পিক দেখে পছন্দ হলে যোগ করে নেয়। এমনি করে জানা অজানা অনেক অনেক বন্ধু এখন ওর।
বড় বোন আতিফা বলে, “তুই এতসব অচেনা লোককে কেন যোগ করিস? সবাই কিন্তু সমান নয়।আজেবাজে লোক দিয়ে ভার্চুয়াল এই জায়গাটা ভরা থাকে। ঝামেলা বাঁধলে বুঝবি!”
এসব কথায় সামান্থা কখনো পাত্তা দেয়না। ফেসবুক বন্ধুদের কারো কাছ থেকে কোন অপ্রীতিকর কিছু কখনোই সে পায়নি। আপু অযথাই ভয় পায়।
দেশে বিদেশে ওর বন্ধুতা লিস্টে থাকা বিভিন্ন বয়সী নানান নারী-পুরুষ বন্ধুদের কারনে ওর উপকারই বেশি হয়েছে। এইসব নতুন নতুন মানুষের সাথে পরিচয়ের মাধ্যমে নিজে অনেক কিছু জানতে পেরেছে। একেক মানুষের জীবনের অভিজ্ঞতা শেয়ারিং এর মাধ্যমে অনেক কিছু শেখা যায়। তবে,সবাইই যে নির্ভেজাল ভালো মানুষ তা নয় অবশ্য। কিছু মানুষ আছে আজাইরা বকবক করে ওর মাথাটা খেয়ে নিতে চায়। সব সময় কি আর কথা বলতে ভালো লাগে! সময় অসময় আছে না! এরকম হলে ও ফ্রেণ্ড লিস্ট থেকে তাকে ছাটাই করে দেয়। তাও আবার জানিয়ে। “দেখুন ভাই,আপনি না ভীষণ বিরক্তিকর! মাফ করবেন। আপনাকে ডিলিট করে দিচ্ছি”এই বলে। নিজের কান্ড দেখে ওর বেশ হাসি পেয়ে যায়! মুছে দিবি। দে!আবার জানানো কেন!
সেদিন রাতে এক অদ্ভূত কাণ্ড হয়েছে। ফেসবুক এর ম্যাসেজ ইনবক্সে দেখে এক তরুণ ওকে ম্যাসেজ পাঠিয়েছে- “আমাকে আপনার বন্ধুতা লিস্টে জায়গা দেয়া যায়? তাহলে প্লিজ আমাকে রিকোয়েস্ট পাঠান।” প্রো-পিক দেখে মনে হলো, ওরই বয়সী হবে। সামান্থা একটু অবাকই হয়ে গেলো। বন্ধু হিসেবে যোগ করতে ইনবক্সে ম্যাসেজ দিতে হয় নাকি? রিকোয়েস্ট পাঠালেই তো চলে। লোকটার সম্পর্কে কৌতূহল হলো। তবু আগে লোকটার প্রোফাইল ঘেঁটে দেখে নিতে চাইলো। যতটা দেখা গেলো তাতে সন্দেহজনক কিছুই নেই। যা হোক সে নিজেই বন্ধুতার রিকোয়েস্ট সেন্ড করে দিলো। "দেখাই যাক না! খারাপ হলো পরে না হয় ডিলিট করে দেওয়া যাবে!"
লোকটাকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠানোর সাথে সাথে ওকে এক্সেপ্ট করে নেওয়া হলো। লিস্টে যোগ হওয়ার সাথে সাথে সামান্থা ভালো করে নতুন বন্ধুর প্রোফাইলের সবকিছু ঘেঁটেঘুঁটে দেখা শুরু করলো। দেখতে দেখতে বেশ রাত হয়ে গেলো। ঘুমানো দরকার। রাত আড়াইটা পেরিয়ে গেছে। এখনো পুরো প্রোফাইল, নোটস, ছবি, ভিডিও ইত্যাদির কিছু কিছু দেখা বাকি রয়ে গেছে। লোকটা কোত্থেকে ওর নাম পেয়েছে বার বার জিজ্ঞেস করেও ও এখনো জবাবটা পায়নি। কোন মিউচুয়াল ফ্রেন্ডও তো নাই। জানলো কি করে! কিন্তু,আর বেশি রাত জাগতে ইচ্ছে করছে না। “থাক। সকালে উঠে দেখে নেবো বাকিটা। কয়েকদিনের কথাতে লোকটা নিশ্চয় নিজে থেকেই জানাবে” ভেবে সামান্থা ইন্টারনেট লাইন অফ করে দিলো। কিন্তু, মনের ভেতরের খচখচানিটা কিছুতেই গেলো না। যা তার আর কোন সময়েই হয়নি। আজ কেন যেন শুয়েও শান্তি পেলোনা ও।
(চলবে...)
Comments (20)
শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
জাহাঙ্গীরনগরের অথিতিরা আমারে ডাকছে।ভালো লাগল ।
শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ। খুব শীঘ্রই জাহাঙ্গীর নগরে যেতে হবে।