Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.

মেঘলা মেয়ে

৯ বছর আগে

প্রফেশনাল ব্লগার হতে অত্যাবশ্যকীয় করনীয়

আপনার ব্লগটির (কোন ব্লগে আপনার প্রোফাইল) জন্য আপনার শ্রম, সাধনা দেওয়ার পরেও তা থেকে কাঙ্খিত ফলাফল পাচ্ছেন না? তার মানে বুঝতে হবে আপনি আপনার জ্ঞানকে ঠিকমত প্রয়োগ করতে পারছেন না। আর এটাই প্রফেশনাল ব্লগার হবার পথের প্রধান অন্তরায়।

একজন প্রফেশনাল ব্লগার কখনই এই চিন্তা করবে না যে, সে হঠাৎ করেই নামীদামি হয়ে যাবে। আমরা বলতে পারি যে এরকম চিন্তা করবে তার ব্লগার জীবনে গুড়েবালি ছাড়া আর কিছুই জুটবে না। আসুন আলোচনা করি কিভাবে প্রভেশনাল ব্লগার হওয়া যেতে পারে। হয়তো কিছুক্ষনের মধ্যেই বুঝতে পারবেন আপনি কতটুকু তৈরী একজন প্রফেশনাল ব্লগার হিসাবে।

১. শিক্ষা গ্রহনের মানুসিকতা: বর্তমান দ্রুত চলমান বিশ্বে প্রতিটি বিষয়ের শিক্ষার মান যেখানে সদা পরিবর্তশীল সময়ের সাথে সাথে, সেখানে একজন প্রফেশনাল ব্লগারকেও তার ব্লগিং এর বিষয়কেও দ্রূত পরিবর্তন করার ক্ষমতা রাখতে হবে। আর এর জন্য তাকে প্রতিনিয়তই শেখার মাঝে থাকতে হবে। হতে পারে আপনি কোন নির্দিষ্ট বিষয় ছাড়া লিখতেই পারেন না। তাহলে আজই নতুন করে শিখতে বসে পড়ুন। যুগের সাথে তাল মিলিয়ে প্রায় প্রতিটি বিষয়েই জানতে চেষ্টা করুন। ব্লগিং এ একটি বিষয় খেয়াল রাখবেন, আপনি টেকনোলজিক্যাল প্লাটফর্ম এ কাজ করছেন এখানে গত বছর যে সাইটি প্রথম ছিল তা এই বছর হয়তো নাই। আর এর বিপরীত টাও হতে পারে। ঠিক এটা একজন ব্যক্তি ব্লগারের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।

আমার এই ছোট ব্লগিং ক্যারিয়ারে দেশের এবং দেশের বাহিরের কিছু গ্রেট ব্লগাদের সাথে কথা বলে জানতে পেরেছি যে তারা কতটা সময় শেখার পিছনে ব্যয় করেন। তারা বিভিন্ন ব্লগারদের সাথে অনলাইন কনফরেন্স করেন, ব্লগিং ই-বুক পড়েন, এবং ই-কোর্স করেন। এবং এর থেকেই তারা তাদের উন্নতিকে দুই দিক থেকেই দেখতে পারেন নিজেদের মধ্যেই, ১. ভাল লিখতে পারছেন কিনা; ২. সুনিপূন ভাবে শিখতে পাচ্ছেন কিনা।

২. একাগ্রতা: প্রতিনিয়ত মানের লিখা পড়তে কে না ভালবাসে, আমি নিজেও ভালবাসি। তবে মনে করুন, আপনি একজন ভাল মানের ব্লগার, অনলাইন এবং অফলাইনে অনেক ভক্ত আছে আপনার। এখন সমস্যা হচ্ছে কোন না কোন কারনে আপনি বেশ কিছুদিন ধরে লিখালিখি করছেন না। এবার বুঝুন ভক্ত সৃষ্টি হলে কি হয়? একের পর এক মেইল। তাই প্রফেশনাল ব্লগারদের কে অবশ্যই নিয়মিত সপ্তাহে অন্ত্যত ৪/৫ টি পোষ্ট করাটা শোভনীয়। নিয়মিত পোষ্ট করলে আপনি নিজেও নিজের প্রতি সন্তুষ্ট হতে পারবেন এবং এবং তাতে আপনার ব্লগিং এর প্রতি সিরিয়াসনেস বৃদ্ধি পাবে। এত ভিজিটর এবং আপনার ভক্তরা প্রত্যেহ আপনার ব্লগে আসবে, নতুন লিখা পড়বে।

এর জন্য যা করনীয় :

প্রফেশনলান ব্লগিং এ লেখালেখি জন্য একটি সময় নির্ধারন করুন। কারন আপনি হয়তো আজ ফ্রি আছেন কাল বা পরশু না্-ও থাকতে পারেন। তাই আপনার ব্যস্ত সময়ের আগেই কিছু পোষ্ট লিখে ড্রাফট করে রাখুন। এটি ব্লগিং এর ভাষায় বলতে গেলে “পোষ্ট ব্যাংক” হিসাবে কাজ করবে। আপনার ব্যস্ত সময়ে শুধু ড্যাসবোর্ডে লগইন করবেন আর পাবলিশ করবেন। এতে আপনার সময়ের অপচয় হবে না।

৩. আত্ন-নিয়মানুবর্তীতা: প্রথমেই একটি উদাহরন দেয়া যাক। আপনি আপনার ব্লগের জন্য কন্টেন্ট তৈরী করছেন, এমন সময় মনে হলো আপনার পছন্দের একটি টিভি শো শুরু হতে আর কিছুক্ষন বাকী। যেটি না দেখলেও আপনার এমন কোন ক্ষতি হবে না। এখন আপনার করণীয় কি ভাবুন তো? ব্লগ লিখে যাবেন নাকি আপনার পছন্দের দিকে ধাবমান হবেন? এটা খুব সহজ যে আপনি আপনার কম্পিউটার টেবিল এবং ব্লগকে ছেড়ে টিভি শো এর দিকে ধাবমান হতে পারবনে। যদিও আপনি ব্লগ রিখতে ভালবাসেন, তারপরেও শো শুরু হবার মুহুর্তে আপনি নিজেকে আর সামলিয়ে রাখতে পারলেন না। যা কিনা একজন প্রফেশনাল ব্লগারের অভ্যাসের মধ্যে পরে না। কারন প্রফেশনাল ব্লগিং অনেক চ্যালেন্জিং !!! 

এই কারনে আত্ন-নিয়মানুবর্তীতা প্রফেশনাল ব্লগারের জন্য অনেক জরুরী। আপনি জনপ্রিয় ব্লগার হয়ে গেছেন, আপনার প্রতি মুহুর্তের টুইটারে আপডেট এর জন্য আপনার ভক্তরা অপেক্ষমান। কিন্তু ভুলে যাবেন না আপনি প্রফেশনাল ব্লগার, ব্লগ লিখাই আপনার প্রধান দ্বায়িত্ব। যদি প্রফেশনালিজমতে কাজে না লাগাতে পারেন তবে, দু’দিন পরে সব ভক্তরা আপনাকে বিদায় জানাবে। এখন বলতে পারেন, কেন? একবার ভাবুন তো কি জন্য আপনি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন? অবশ্যই আপনার লিখার দ্বারা তাই নয় কি?  সুতরাং ব্লগ লিখার সময় সব চিন্তা বাদ দিন, এক মনে লিখুন। ব্লগিং এমন একটি বিষয় যেখানে আপনি নিজের চিন্তা শক্তিকে কাজে লাগিয়ে থাকেন, আর তাই যখন ব্লগ লিখবেন আশেপাশের পরিবেশকে নিরব রেখে তারপর লিখতে বসুন। প্রয়োজন হলে ফেসবুক, মেসেন্জার থেকেও দুরে থাকুন। এবং সময়ের ক্ষেত্রেও সচেতন থাকুন।

৪. সততা: “সততা” প্রফেশনাল ব্লগারদের জন্য সবচেয়ে অমূল্য সম্পদ। এবং এটিকে অর্জন করা অভিন্ন আপনি প্রফেশনাল হতে পারবে না। তাই নিজের মাঝে সততার অনুপ্রবেশ ঘটান। আমাদের মত দেশে যেখানে এখনো অনেকেই ইন্টারনেটের ব্যবহার জানেন না সেখানে প্রফেশনাল ব্লগার খুঁজে পাওয়া অনেক কষ্টসাধ্য কিন্তু যারা প্রফেশনালী কাজ করেন তাদের মাঝেও কতটুকু সততা কাজ করে বলতে পারেন? আপনি ব্লগিং করছেন, অন্যরাও করছে। এখন আপনি বলা নেই হুট করে অন্যের লিখা হবহু বা আংশিক পরিবর্তন করে আপনার ব্লগে পাবলিশ করলেন আর ভাবলেন অনেক ভাল কাজ করে ফেললেন, এবার অনেক কাড়ি কাড়ি ভিজিটর পাবেন তাই না? যদি প্রফেশনালিজম এ এই চিন্তা ভুলেও মাথায় নিয়ে আসেন তা্হলে আপনি শুধু আপনার সময় অপচয় করছেন। এই অ্যভাস টা আমাদের অনেকের মধ্যেই দেখা যায়। কিন্তু কি লাভ পাচ্ছেন? উল্টো অন্যের নিকটে চোর সাজছেন। যদি পারেন তো কোন ইংরেজী লিখাকে পড়ে নিজর মত করে লিখুন, দেখবেন অনেক কিছুই শিখবেন সেখানে থেকে। এত করে ভিজিটরও পাবেন।

৫. শিষ্টাচার: ব্যক্তিগত ও পেশাগত দুই ধরনের জীবনেই শিষ্টাচার এর মূল্য অনেক। লক্ষ্য করে থাকবেন, আমাদের বাংলা ব্লগিং জগতে যদি কোন এক ব্লগার অন্য ব্লগার এর সাথে কমেন্ট যুদ্ধে লেগে গেছেন নিজের ব্লগেই। এর থেকে এমন কিছু অপ্রত্যাশিত কথাবার্তা চলে আসবে যেটা আপনার ব্লগের অন্যান্য ভিজিটরদের জন্য বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়াবে। তাই উপযুক্ত জায়গাতে কথা বলুন। অযথা অপ্রাসংগিক কথাবার্তা আপনার প্রফেশনালিজমকে বিলীন করবে এমন কোন কাজ করবেন না।

সুতরাং শিষ্টাচার হচ্ছে প্রফেশনাল ব্লগারের একটি বড় গুণ। এর মানে এই দাঁড়ায় যে, যদিও আপনাকে ভিজটর এমন কমেন্ট করছে যা কিনা আপনাকে রাগান্বিত করে ফেলছে কিন্তু আপনার কাজ হচ্ছে তাকে ভদ্র এবং শিষ্টাচারের সহিত প্রতি উত্তর দেয়া। যদিও মনে করেন যে কোন মন্তব্যের কারণে আপনার রাগকে কমাতে পারছেন না, তবে ইন্টারনেট থেকে দুরে চলে যান কিছুক্ষনের জন্য তারপর আবার আসুন এবং প্রতিটি মন্তব্যের উত্তর দিতে চেষ্টা করবেন। এবং অবশ্যই ব্লগে শিষ্টাচারমূলক মন্তব্য করতে নীতিমালা চালু রাখুন ভিজিটরদের জন্য।

৬. ক্রমোন্নতি: প্রফেশনাল ব্লগাররা কখনই এক জায়গায় পরে থাকনে না, যদি কেউ এমনটা করে তবে তিনি প্রফেশনালি বেশি দূরে অগ্রসর হতে পারবেন না। তাদেরকে প্রতিনিয়তই চলমান সময়ের সাথে সাথে প্রতিটি বিষয়ের উন্নতি কল্পে কাজ করে যেতে হবে। সবসময় নতুনত্বকে জানতে হবে, নিজের জ্ঞানকে বাড়াতে হবে, নতুন বিষয় পড়তে হবে এবং সর্বোপরি নিত্য নতুন বিষয় নিয়ে লিখতে হবে। যদিও ক্রমোন্নতি সহজ ব্যাপার। ব্লগিং জগতে সময়ের অনেক প্রাচুর্যতা আছে যেখানে আপনি অনেক বিষয়ের প্রতি দুর্বল হতে পারেন। এও ভাবতে পারেন যে আপনি আগে কখনও প্রফেশনালী লিখেন নাই তাই কি লিখবেন তাও বুঝে উঠতে পারছেন না।

কিন্তু প্রতিটি প্রফেশনাল ব্লগারকে তার মেধার পরিচয় দিতে শুরুতে সপ্তাহে ১৪-১৫ টি করেও পোষ্ট লিখতে হয়েছে। এবং একথা নিদ্বিধায় বলা যায় যে, তারাও নিশ্চয় আপনার মতই দূর্বল ছিল। কিন্তু এই দূর্বলতাকে কাটাতেই হবে যদি আপনি প্রফেশনালি লিখতে বদ্ধপরিকর হয়ে থাকেন।আপনার সামনে যা চ্যালেঞ্জ সেটি নিয়েই কাজ করুন। সম্ভব হলে যে বুঝেশুনে আপনার পোষ্ট মেইল করুন বন্ধুকে অথবা নিজেই পোষ্ট করুন সোস্যাল মিডিয়ায়। হয়তো আপনি ভাবতেও পারবেন না যে, আপনার এই পোষ্টটি আপনার প্রফেশনালিজম এর দরজা-কে উম্মোচন করে দিবে। আর এসব করতে পারলেই আপনার ক্রমোন্নতি।

বারবার একটি কথাই আসে. প্রতিনিয়ত নতুনত্বকে খুজুন। এটা হতে পারে একা একা অথবা দলীয়ভাবে। ব্লগিং এ ভাল করতে হলে বিভিন্ন কোর্স করুন, ই-বুক পড়ুন অথবা অন্য যা কিছু দরকার করুন। তাহলেই আপনি অতি দ্রুত প্রফেশনাল হয়ে উঠতে পারবেন।

সুতরাং, এবার দেখুন কোন অভ্যাসের প্রতি আপনার দুর্বলতা আছে। যদি খুজে পেয়ে থাকেন তবে আজই সেই অভ্যাসকে পরিবর্তন করতে শুরু করুন। বিদেশে ব্লগিং করে অর্থ উপার্জন করার ব্যাপারটি খুবই স্বাভাবিক। কিন্তু বাংলাদেশে আমরা কেন জানি সে জায়গায় পৌঁছুতেই পারছি না। বাংলাদেশে এমন কোন ব্লগার আছেন যারা নতুন চিন্তাধারা লিখে অর্থ উপার্জন করছেন? অথবা এত এত বাংলা ব্লগের মধ্যে কোন ব্লগ সেইসব প্রফেশনাল ব্লগারদের অর্থ দিতে ইচ্ছুক? এরপরেও আমরা আশা করতেই পারি। হয়ত নিকট ভবিষ্যতে আমরা এমন কাউকে পাব যিনি "ব্লগার" জিনিসটাকেই পেশা হিসেবে নিবেন। প্রফেশনাল ব্লগার হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করে ব্লগ থেকে অর্থ উপার্জনও করবেন। আশা করতে তো ক্ষতি নেই? কি বলেন? 

১ Likes ৪ Comments ০ Share ৪৭৪ Views

Comments (4)

  • - এই মেঘ এই রোদ্দুর

    সুন্দর হইছে

    • - সোহেল আহমেদ পরান

      আন্তরিক ধন্যবাদ আপা

    - বাপ্পী আহমেদ

    সবার হাতের ফুল দেখে তার, কেউ তো মন না! মন না- এই অংশটা কি মিলেছে?

    • - সোহেল আহমেদ পরান

      প্রথম লাইনের শেষ শব্দ "কন্যা" এর সাথে "মন না" এর মিল করার প্রয়াস ছিল আমার।

      বিচার আপনাদের হাতে।

      ধন্যবাদ...

    - সুলতানা সাদিয়া

    ভাল লাগলো।

    • - সোহেল আহমেদ পরান

      আন্তরিক ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা রলো...emoticons