প্রত্যাশার আলোতে একদিন
।এ।বি।এম।সো।হে।ল।র।শি।দ।
২১ জানুয়ারি শুরু হয়েছে মোস্তাফিজুর রহমান মানিকের ইটিশ পিটিস প্রেম। এই সুবাদে উত্তরার মন্দিরা শুটিং হাউসে গিয়ে হাজির হলাম। মহরতের আমন্ত্রণ জানায়নি তাই সেদিন না গিয়ে পরের দিন গেলাম। অনাকাঙ্ক্ষিত হয়ে কি লাভ। আপনারই বলুন।
ইউনিট পৌঁছার আগেই পৌঁছলাম।তখন সকাল দশটা। সিঁড়িতে দেখা হল স্থির চিত্রগ্রাহক লিংকনের সাথে। সে অবশ্য অন্য একটি নাটকের শুটিঙে এসেছে। দুজন লাইট ম্যান বসে আছে।গত দিনের রেখে যাওয়া সরঞ্জাম পাহারা দিচ্ছে।
যা হোক পুরো ইউনিট আসলো। প্রথম দেখাতেই মানিকের সেই ভুবন ভুলানো হাসি। সব ভুলে গেলাম। তার একটা কারণও আছে ।তার ক্যারিয়ারের শুরুতেই আমার সাথে তার পরিচয় ঘটেছিল। প্রথম দেখাতেই ভালোলাগা। ওর চলচ্চিত্র প্রেম। অল্পদিনে সব কৌশল আয়ত্ত করা আমাকে শুধু অভিভূত নয় বিস্মিতও করেছে।
নেশা ও পেশাদারিত্ব থাকলে একজন মানুষ যে কোন সৃষ্টিশীল কাজ যে খুব দ্রুত আয়ত্তে আনতে পারে তার একটি জলজ্যান্ত উদাহরণ হচ্ছে মোস্তাফিজুর রহমান মানিক।
চর্বিতচর্বণ পাঠকের ভাল না লাগারই কথা। মূল প্রসঙ্গে আসি। শুটিং দেখা ও কাজ করা অর্থাৎ রথও দেখলাম কলাও বেচলাম এই আর কি। শিল্পীরা আসতে শুরু করেছে। কিন্তু দেরীতে আসার ভাইরাস যে সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে তার একটা নমুনা এখানেও পেলাম। নতুনদের নিয়ে কাজ। তাদের কাজের প্রতি মমত্ববোধ, আন্তরিকতার বহিঃপ্রকাশ দ্রুত ঘটবে বলে আশা করছি। তাই কারও নাম বললাম না ।আশা করি অচিরে উঠতি শিল্পীরা এই সব ত্রুটি কাটিয়ে উঠবে। নতুনদের ভাবতে হবে যশ ও সুনাম কুড়ানোর পিচ্ছিল পথে এগুতে হলে নিষ্ঠার কোন বিকল্প নেই।
আগেই বলেছি ছাবির নাম ইটিশ পিটিস প্রেম। হাস্যরসাত্মক ছবি। প্রেমই মূল উপজীব্য। পরিচালকও অত্যন্ত অবকাশ অনুভবে কাজ করছেন। পরিবেশ যেন ভারী না হয়ে উঠে কৌশলে সেই চেষ্টাই করছেন।
স্বপ্নে নায়িকার সাথে নায়কের অন্তরঙ্গ মুহূর্তের দৃশ্য চিত্রগ্রহণের কাজ চলছে। কাজ করছেন প্রবীণ চিত্রগ্রাহক কাদের ভাই।
'ভিট চ্যানেল আই টপ মডেল ২০১২'র প্রতিযোগিতায় চতুর্থ স্থান অর্জন করা নায়িকার নাম প্রিয়াঙ্কা পরী থেকে এখন প্রিয়ন্তী। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যখন এই নামটি রাখার ব্যাপারে মানিক সবার মতামত চেয়ে ছিল তখন আমিও যুক্তি দেখিয়ে এই নামকেই সমর্থন দিয়েছিলাম।ও যদি তা জানত তা হলে আমার বিশ্বাস আগ বাড়িয়ে কথা বলত। না আজকে কোন কথাই তার সাথে হয় নি।
দেখতে মন্দ না। ছিমছাম গড়নের সুশ্রী হলেও শরীরের কাঠামোর দিকে যত্নবান হলে ভাল করবে বলে আশা করা যায়। ছবিতে এক নায়িকার বিপরীতে অভিনয় করেছেন চার নায়ক। সায়মন, রিপন, শুভ এবং শিমুল খান। শুভ ও রিপনের এটাই প্রথম ছবি। আরও আছেন আলিরাজ ও রেহেনা। এছাড়া আরও তিন চারজন সহ-অভিনেতা। ছবিটি প্রযোজনা করেছেন রায়হান রনি। সঙ্গীত পরিচালনা করছেন জেকে ও আরেফিন রুমী। ছবির গান লিখেছেন তরুণ মেধাবী গীতিকার সুদীপ কুমার দীপস স্থির চিত্রে অঙ্কুর ও রূপ সজ্জায় সেলিম।
দিনব্যাপী শুটিং হল। কোন রকম ঝক্কি ঝামেলা নেই ।হাউকাউ নেই। তাড়াহুড়ো নেই। সাথে আরেকটা জিনিষও নেই। তা হচ্ছে কাজের সাথে আপোষ। প্রতিটি টেক অত্যন্ত যত্ন সহকারে নেয়া হচ্ছে ।বার বার কাট হচ্ছে। কিন্তু কারও মুখে কোন বিরক্তি বা ক্লান্তির ছাপ নেই। এখানেই মানিকের মুনশিয়ানা।
সব সময় প্রতিষ্ঠিত শিল্পীদের সাথে নিয়ে কাজ করা পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান মানিক কথা প্রসঙ্গে জানালেন, নতুনদের জন্য এখনই উপযুক্ত সময়। শুধু দরকার কাজের প্রতি আন্তরিকতা, গল্প শুনে, চরিত্র বুঝে, পরিচালকের পরিকল্পনা জেনে কাজ করা।তারুণ্যই পারবে আঁধারের তিমিরে কেটে আলো ছড়াতে।
শুটিং দেখতে দেখতে মনে হল তারুণ্য এগিয়ে যাক। এই সব তরুণদের হাত ধরেই চলচ্চিত্র এগিয়ে যাক।জয়তু তারুণ্য জয়তু নতুন প্রজন্মের সাহসী তরুণতরুণীদের দল।
যখন শুটিং হাউস থেকে বের হলাম তখন ঘড়ির কাটা রাত আটটা ছুঁই ছুঁই।