বহুদিন কিছু লিখিনা। না গল্প না কবিতা। কিছু লিখিনি তবে কিছু বাক্য, কিছু প্লট ঠিকই মুখে মুখে বলেছি। কিন্তু লেখাটা আর হয়ে উঠছে না। দুই তিন জায়গায় কথা দিয়ে রেখেছি যে গল্প দিব, কবিতা দিব কিন্তু শেষ পর্যন্ত লেখা পাঠানো আর হয়ে উঠছে না। নিজের খারাপ লাগছে তো বটেই আর কারো কাছে লেখা চেয়ে না পাওয়াটাও তাদের জন্য অত্যন্ত বিরক্তকর। সবই বুঝি তবু কেন জানি হয়ে উঠছে না।
ছয় সাত বছর আগের কথা বললে বলতে হয় প্রতিদিন তিন চারটা কবিতা না লিখলে পেটে কিছুই হজম হত না। আর এখন প্রতিদিন লেখা হয়ে উঠে না। মাঝে মাঝে এটা কয়েক মাস হয়ে যায়। তবে হঠাত হঠাত কিছু অখাদ্য জাতীয় লেখা লিখি ফেলি কিন্তু প্রকাশ করি না। ওই যে বললাম অখাদ্য জাতীয় লেখা সেইজন্য!
রাইটার্স গিল্ডের রানা ভাই তো এক রকম জোর করেই আমার নিশিযাত্রা উপন্যাসটা প্রকাশ করতে যাচ্ছে। সেটারও প্রুফ দেখা হয়ে উঠছে না। অফিসে থাকলে অফিসের কাজ, বাসায় থাকলে বাসার কাজ; মন দিয়ে সব করলে আর সময় পাচ্ছি না। তবু আশা রাখি ডিসেম্বরের আগেই কোন একটা মিরাকল জাতীয় কিছু হবে। বইটি প্রকাশ পাবে।
সত্যি কথা বলতে কি, জোর করে এই লেখাটা লিখছি। ওই যে বলে না অমনোযোগী ছাত্রকে বেত দিয়ে হলেও টেবিলে বসায় রাখ। সেইরকম কিছু একটা নিজেকে করতে হচ্ছে। লিখতেও বেশ কষ্ট হচ্ছে। লেখার শব্দ পাই না, শব্দ পেলে বাক্য কেমন এলেমেলো ঠেকে। বিশ্রী অবস্থা। তবে ভরসা এই নিজের প্রতি আত্নবিশ্বাসটা মরে যায় নি, আশা করি কখনো যাবে না।
লেখালিখির উদ্দ্যেশ্যে অনেকের সাথেই পরিচয় হয়েছে। সবার সাথে সবসময় কথা বলাও মুশকিল হয়ে পড়েছে। অনেকে এই নিয়েও কষ্ট পেয়ে থাকতে পারেন। সেইজন্যে ক্ষমা প্রার্থনা ছাড়া আমার আর কিছু করার নাই বা বলার নাই। তবে রাস্তায় দেখা হলে অবশ্যই সবাইকে একবার হলেও বুকে টেনে নেওয়ার ইচ্ছা পোষণ করি। কিংবা গান গেয়ে উঠতেই পারি; বন্ধু, তুমি তোমার পথের সাথিকে চিনে নিও।
আমার ব্যক্তিগত লেখালিখির প্রসংগ আসলেই অনেক পরিচিত মুখ সামনে এসে পড়ে। কাজীদা, নীলদা, সাকিব ভাই, মেহেরুন আপু, মৃদুল ভাই, সুমন ভাই, সৌম্য, রুবিনা আপু; সবার কথা মনে পড়ে। কি একটা সময় ছিল! ফেসবুক ওয়ালে আড্ডা, কবিতা নিয়ে ছেলেমানুষী কিংবা প্রথম লিটিল ম্যাগাজিন প্রকাশের উত্তেজনা। এই উত্তেজনার স্বাদ মানুষ জীবনে হয়ত একবারই পায়। আমি সেই স্বাদ নিয়ে নিজেকে স্বর্গ সুখ দিতে পেরেছিলাম। এসব নিয়ে লিখে আসলে শেষ করা যাবে না। এরকমই কিছু সময় ছিল সেসময়।
গত বইমেলায় মামুন ভাইয়ের সাথে সায়েন্স ফিকশন সংকলন দেখে অনেকেই অবাক হয়েছিল। কারণ প্রায় জায়গাতেই আমাকে চিনে কবিতা দিয়ে। হ্যাঁ মূলত কবিতা এবং কবিতা দিয়েই আমার সবকিছু তবু গল্প না লিখলে পরিতৃপ্তি আসে না। আর উপন্যাস লিখে সেই স্বাসকে ষোল কলা পূর্ণ করাই উদ্দেশ্য ছিল আমার।
যাইহোক এলেমেলো অনেক কথা লিখলাম। নিজেকে কষ্ট দিলাম। সবাই ভাল থাকবেন।