Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.

নারী, পর্দা ও আমরা ...

তুমিতো মিয়া নাস্তিক। ফেসবুকে দেখলাম মাইয়াগো পর্দা ঠিক করতে না কইয়া পুরুষগো চোখ ঠিক করতে কও। মাইয়াগো হিজাব পছন্দ করো না। ধুর মিয়া। পুরাই নাস্তিক।

কথাটা আমাকে উদ্দেশ্য করে বলা। বলেছেন আমারই এক পরিচিত ব্যক্তি। পরিচিত ব্যক্তির কথা শোনার পর আমি পরিচিত ভঙ্গিতেই উদাস হয়ে বলেছি, আমি যে নাস্তিক এটা এতোদিন পরে বুঝলেন? আপনিতো সুশীল সমাজের লোক!

এইতো সেদিন এক সেলিব্রিটির আইডি কিভাবে যেন হোমে চলে আসলো। সেলিব্রিটির নাম সরাসরি উল্লেখ করা ঠিক হবে না। ধরে নেই তার নাম ডিজে অমুক। ডিজে অমুকের একটা ছবি দেখলাম। ছবিতে তার মা একটা চেয়ারে বসে আছেন। ভদ্রমহিলা খুব সুন্দর করে শাড়ি পরেছেন। মাথায় হিজাব। পাশে ডিজে কন্যা দাঁড়ানো। পরনের জামাটা যতটুকু ছোট হওয়া যায় ততটুকুই ছোট। ঊরু থেকে শুরু করে পুরো পা খালি। কাঁধ থেকে শুরু করে পুরো হাত খালি। ওড়না নেই বলা বাহুল্য। ছবিটা দেখে দীর্ঘশ্বাস ফেললাম। মা কত চমৎকার শাড়ি পরেছেন সম্পূর্ণ শালীনতা বজায় রেখে। মাথায় হিজাব। আর তার কন্যা? এমন হিজাবের কোন প্রয়োজন আছে বলে আমার মনে হয় না। জাস্ট শো অফ!

সেই মা তার মেয়েকে গড়ে তুলতে পারেনি। ভালো কথা পারেনি। তার সেই ব্যর্থতার দায় কি আমার আর আপনার চোখের ওপর বর্তাবে? সেই মেয়ে শরীরের ভাঁজ দেখিয়ে বেড়াচ্ছে বলে আমার হা করে তার শরীর গিলতে হবে? কোরআন হাদিসের উক্তি এখন আর দিচ্ছি না। তবে একটু খোঁজ নিলেই জানবেন, ইসলামে সর্বপ্রথম পুরুষের দৃষ্টিই সংযত করতে বলা হয়েছে।

আবার দেখলাম একজন ফেসবুক সেলিব্রিটি তার স্ট্যাটাসে লিখলেন, রাস্তার পুরুষেরা নাকি মেয়েদের কাপড় চোপড় চোখ দিয়েই খুলে নেয়। এমন ভাবে নাকি আপনার আমার বোনেরা রাস্তায় প্রতিনিয়ত চোখ দ্বারা ধর্ষিত হচ্ছে। খাবার খোলা রাখলে নাকি মাছি বসবেই। তাই তিনি মেয়েদের পর্দা করে চলতে উপদেশ দিয়েছেন।

রাস্তায় যে পুরুষের চোখ মেয়েদের স্বল্প জামা খুলতে পারে সেই চোখ ক্যানো বোরকা খুলতে পারবে না? আর মেয়ে মানুষ কি সত্যিই খাবার নাকি! বাহ্‌বা। মেয়েদের দেখা হচ্ছে পণ্য হিশেবে। পণ্যকে ঢেকে রাখার মত করেই মেয়েদের ওপর চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে পর্দা। পর্দা না করলেই মেয়েরা বেশ্যা। এমন সুশীল সম্প্রদায়কে সাপোর্ট না করলে আবার আমি হয়ে যাই নাস্তিক। কি সর্বনাশ!

আল্লাহ্‌ নারীদের ওপর পর্দা ফরজ করেছেন একজন নারীকে পরিপূর্ণ সম্মান দেবার জন্যেই। 'নারীরা খাবার তাই ঢেকে রাখতে হবে' এই নীতিতে আল্লাহ্‌ পর্দা ফরজ করেননি। আর পর্দা হিশেবে বোরকাকেই আল্লাহ্‌ নির্ধারন করে দেননি। পর্দার সম্পর্কে সুস্পষ্ট ভাবে বলা আছে যাতে শরীরের কোন অংশ বা ভাঁজ উন্মুক্ত হয়ে না পরে। তো শালীন ভাবে সালোয়ার কামিজ পরে বা শাড়ি পরেও পর্দা রক্ষা করা যায়। বোরকা লাগে না।

মাঝে মাঝে টিভিতে যৌনপল্লীর ডকুমেন্টারি টাইপের রিপোর্ট দেখানো হয়। পত্রিকাতেও আসে। পতিতাদের অধিকাংশই বোরকা পরে চলাচল করে। এই কূটতর্ক করে আমি বোরকার বিপক্ষে যাচ্ছি না। শুধুমাত্র বোরকাই হবে একজন নারীর পর্দা করার একমাত্র পোশাক এই ধারণার বিপক্ষে থেকে একটা উদাহরণ টেনেছি মাত্র। এখন বোরকা পরা একজন পতিতাকেও যদি পর্দানশীন নারীর উদাহরণ হিশেবে মেনে নেন তাহলে বলতেই হবে আপনি সুশীল সমাজের লোক যাদের একমাত্র কাজ টক শোতে গিয়ে অন্যের সমালোচনা করা।

সবচেয়ে বড় কথা নারীরা পর্দা করবে আল্লাহ্‌কে ভয় করে। নিজেদের পণ্য মনে করে না। আর একান্তই যদি কোন নারী শরীর দেখিয়ে চলতেই চায় সেটা তার ব্যক্তিগত ব্যাপার। এর শাস্তি সে একাই ভোগ করবে। আর আমরা পুরুষেরা যদি চোখ দিয়ে ধর্ষণ করি, আমাদের শাস্তিও আল্লাহ্‌ তৈরি করে রেখেছেন। আমরা মাছি, খোলা খাবারে বসবোই এই অজুহাত দেখিয়ে কেউ শাস্তি থেকে বাঁচতে পারলে ভালো। না পারলে তো বুঝতেই পারছেন। আর কাউকে নাস্তিক বলার শাস্তি তো বোনাস আছেই।
১ Likes ৬ Comments ০ Share ৮৭২ Views

Comments (6)

  • - কামাল উদ্দিন

    ভোজনের ব্যবস্থা হইতাছে  

    • - কে,এইচ, মাহা বুব

      এই ভোজন সেই ভোজন নয় , মন্তব্য করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ । ভালো থাকবেন ।

    - চারু মান্নান

    বাহ দারুন লাগল কবি,

    পথের ব্যবচ্ছেদই পথের মুক্তি! শুধু বেঁচে থাকে পথ।

    • - কে,এইচ, মাহা বুব

       আপনাদের ভালো লাগাটাতেই আমার সার্থকতা । ভালো থাআকবেন ভাই ।