(দ্বিতীয় পর্ব)/পূর্ব প্রকাশিতের পর
মোর বিনা উঠে কোন সুরে বাজে
অভিনব চঞ্চল ছন্দে ছন্দে ।
গানের সুমধুর সুরে ত্রিনিদাদ এর ঘুম ভেঙ্গে গেল ।
আহা গো কে গায় গো?
এত সুন্দর করে ।
আশেপাশে তাকিয়ে শিল্পী কে খুঁজে পেলনা ত্রিনিদাদ ।
ওহ গ্রামাফোনে বাজছে শিল্পীর নামটা দেখি সে অবশ্যই তার প্রথম আবিস্কার এই শিল্পীর নাম উৎসর্গ করবে ।
গ্রামাফোন এর কাছে রেকর্ড খুজতে গিয়ে দেখতে গিয়ে বন্ধ গ্রামাফোন ।
তবে কে গাচ্ছে ?
নীরা ? আশ্চর্য্য !!
গানের শব্দ অনুসরণ করতে করতে ত্রিনিদাদ পৌছল ল্যাব এর পিছনে র খোলা প্যাসেজ এ ।
যা দেখল তাতে ত্রিনিদাদ এর নিশ্বাস বন্ধ হওয়ার জোগাড় হলো ।
ঠিক যেন কোনো সিনেমার দৃশ্য ।
নীরা পরে আছে অপূর্ব এক নীল্ রঙের একটা রোব জাতীয় ড্রেস।
দোলনাতে দোল খেতে খেতে অপুরূপ মহিমায় সে গান গাচ্ছে
মোর বিনা উঠে কোন সুরে বাজে
অভিনব চঞ্চল ছন্দে ছন্দে ।
সে ডিসিশন এ আসল আজকে সারাদিন এই অপুরূপার এর সাথে সময় কাটাবে ল্যাব এ ঢুকবেনা । কি দরকার ল্যাব এ কঠিন বিজ্ঞান সাধনায় নিজেকে নিয়োজিত করার ?
কি সহজে মেয়েরা পুরুষ কে তার দায়িত্ব থেকে বিচ্যুত করে ফেলে তার মোহনীয় রমনীয় সৌন্দর্য্যে অবাক হয়ে ভাবে ত্রিনিদাদ ।
ত্রিনিদাদ কাছে এসে অন্তরঙ্গ ভাবে দোলনায় নীরার পাশে বসে পড়ল এবং তা করলো জীবনে প্রথম বার এর মত। গভীর আবেগ এ কোনো মেয়ের মস্তিস্ক তার বুকে স্থাপন করলো । এরপর জিজ্ঞাসা করলো
নীরা আমার বুকে মাথা রেখে তোমার কি মনে হচ্ছে ?
আপনি অনেক আবেগতাড়িত কিন্তু কেন ? বললে ও নীরার চোখে আবার সেই সোনালী আলোর ঝিলিক দেখতে পেল ।
ত্রিনিদাদ জীবনে প্রথম বার এর মত কোনো মেয়েকে তার কাপড় এর আবরণ সরিয়ে দেখতে চাইল এবং দেখল এবং তীব্র আবেগ বোধ করলো সম্পূর্ণ রূপে মানবীয় এই শরীর এবং এই যন্ত্র মানবী টির প্রতি।
সেটা সে সম্ভবত না করলে ই ভালো করত তাহলে অন্তত সে আরো কিছু দিন যেমন বেশি বাচত তেমনি পৃথিবীর মানুষকে দিতে পারত উপহার এক যুগান্তকারী আবিষ্কার।
কিন্তু তা আর হলনা প্রচন্ড শব্দে বিস্ফোরিত হলো ত্রিনিদাদ এর ল্যাব ।
সারা ল্যাব এ আগুন ধরে গেল খুব বড় একটা আগুনের গোল্লা এসে আঘাত করলো ত্রিনিদাদ এর বুকে যে বুকে কিছু ক্ষন আগে নীরা মাথা রেখে শুয়ে ছিল। সঙ্গে সঙ্গে ত্রিনিদাদ এর সারাশরীরে আগুন ধরে গেল।
কযেক সেকেন্ড এর সে একশ পার্সেন্ট বার্ন হয়ে গেল ।
শেষবারের মত তার প্রিযমানবী র দিকে তাকাতে তাকাতে প্রবল যন্ত্রনায় মৃত্যু বরণ করলো।
বিজ্ঞান এর অবদান যেমন বলে শেষ করা যায়না তেমনি বিধ্বংসী ভূমিকা কিছু কম নহে তা আমরা উপলব্ধি করতে পারি হিরোশিমা নাগাসাকি র দিকে তাকালে ।
আমার এ পর্ব টা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ এ জাপান এর হিরোশিমা নাগাসাকি তে পারমানবিক বোমার বিস্ফোরণে যাদের মৃত্যু হয়েছিল তাদের উদ্দেশ্যে।
(চলবে)
Comments (15)
স্যার ফ্রান্সিস বেকনের ৩৮৮তম মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি