Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.

মুন জারিন আলম

১০ বছর আগে

দুইজন অমরাবতীর গল্প (বিজ্ঞান কল্পকাহিনী )

ভূমিকা

আমার প্রথম বিজ্ঞান কাহিনী" দুইজন অমরাবতীর গল্প ".এই প্রসঙ্গে এক টা কথা বলতে হয়  বিজ্ঞান কল্পকাহিনী  লিখতে গেলে পদার্থ বিদ্যা আলোকবর্ষ থার্মদিনামিক্স ইলেকট্রনিক্স  সব কিছু সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান থাকা  জরুরি l আমার সেই জ্ঞান সীমিত পদার্থ বিদ্যা আমার কাছে অতীব  কঠিন একটা বিষয় lযদিও আমার পড়াশোনা রসায়ন এ স্নাতকোত্তর  স্নাতক এ পড়াকালীন সময়ে সবসিদিয়ারী ছিল  গণিত শ্রাস্র আর পদার্থ বিদ্যা আমার প্রিয় কাহিনী বিজ্ঞান কাহিনী  তার পর ও  এই কাহিনীতে সব সময়ে পরিস্কার নিখুত বর্ণনা দেওয়া সম্ভব হবেনা আমার জ্ঞানের অপ্রতুলতা আর সীমাবদ্বতার কারণে। আমি আশা করব পাঠকরা তা অবশ্য ই ক্ষমা  সুন্দর  দৃষ্টিতে  দেখবেন l 

প্রথমে আমার শ্রদ্বা জানাচ্ছি প্রয়াত হুমায়ুন আহমেদ কে তার অসাধারণ রচনা” নি” এবং” তারা তিন জন” এই বিজ্ঞান কল্পকাহিনী র জন্য এরপরে অবধারিত ভাবে যার নাম এসে যাবে দ্র মুহাম্মদ জাফর ইকবাল যার”কম্প্রোটনিক  সুখ  দুখ ” 

==================================================================================== 

তো চলে যাচ্ছি মূল গল্পে

ইরা হচ্ছে সপ্তম গ্যালাক্সির চতুর্দশ কক্ষের এনারয়েড রোবট l আজকে তার জন্ম ঘড়িতে সময় এখন ২৪:৫০:৫৬ l দশ মিনিট আগে এই গ্যালাক্সির অত্যাধুনিক বিজ্ঞানাগার এ জন্ম হয়েছে তার আরেক সহোদরা নীরা একই প্রযুক্তি ব্যবহার এর মাধম্যে l

তাদের দুইজনের বিশেষত্ব হচ্ছে তাদের যান্ত্রিক মস্তিস্কের কোষ এর সাথে এই প্রথম মানব এর ব্রেন এবং কৃত্তিম হার্ট সংযোজন করা হয়েছে।

গ্যালাক্সির পরিচালক ও সম্রাজ্ঞী এথেনা আর তার মেয়ে রিথিনার ইচ্ছেতে l

সবাই বিরক্ত বোধ করতে সুরু করেছে সব যান্ত্রিক রোবট এর যান্ত্রিক কথায়

সবার মনের  দাবি প্রানের দাবি মানবিক আবেগ সম্পন্ন রোবট চাইl

ইরা  রোবট  টি  ভারী  চমত্কার  ভারী  মানবিক  .এই  কয়দিনে  এথেনা  তাকে  ভালোবেসে  ফেলেছে

কাজ  করতে  করতে  সে  অবসাদগ্রস্থ  .সে  ঠিক  ই  বুজে নিবে  এথেনা   ক্লান্ত . করবে  ঠিক  তাই  যা  এথেনার  ক্লান্তি  নিমিষে  দূর  করে  দিবে l

ম্যাডাম  আপনাকে  কিঞ্চিত  ক্লান্ত  মনে  হচ্ছে  l আমি  কি  করতে  পারি  আপনার  ক্লান্তি  নিরসনে ?

বলবে  তার  অপূর্ব  সুরেলা  মেয়েলি  কন্ঠে  . এটা  তাদের  সাম্প্রতিক  সংযোজিত  টেকনোলজি l

এথেনার  আবেগ  চলে  আসে  তার  নিজের  শিল্পকর্মে . বলতে  গেলে  তার  নিজের  হাতে   গড়া  এই   দুইটি  রোবট  ইরা  নীরা   দুই  সহোদর l

বলে  এথেনা  কি  করতে  চাও  কর

আমি  কি  আপনার    মাথায়  তেল  দিয়ে  ম্যাসাজ  করে  দিতে  পারি ? .আমার  বিশ্বাস  আপনি  ভালো  বোধ  করবেন  l 

তুমি  পারবে ? দেখি  করত

আমি  বড়  ক্লান্ত  এবং  হতাশাগ্রস্ত  ইরা  তোমার  সাজেশন  টা  কি  কিভাবে  এই  হতাশা  দূর  করা  যায়  ?

দূর  হয়ে যাবে  ম্যাম  কাজ  করতে  করতে   .তবে  আপনার  ভালো  পিচফুল  ঘুম  দরকার  .আপনি  সম্ভবত   ঘুমান   না  রাতের  পর  রাত l

এথেনা  মাথা  নাড়ে  .

গ্রামাফোনে  গান  ছেড়ে  দিল  ইরা

একবিংশ  শতাব্দীর  সেই  বিখ্যাত  ইন্ডিয়ান  শিল্পী  লতা  মঙ্গেশ  গান  তার  অপূর্ব  সুরেলা    গলায় গাইছে

প্রেম  একবার  এসেছিল  নিরবে

আমার  ও  দুয়ার ও  প্রান্তে

এত    হায়

মৃদু  পায়

এসেছিল  পারিনি  কি  জানতে

প্রেম  একবার  এসেছিল  নিরবে

এসেছিল  বাতাস  তো   বলেনি

গান  শুনতে  শুনতে  হারিয়ে  যায়  তার  কলেজ  এর   সেই  মধুর  জীবনে

আহ  সেই   সময়  গুলি  এখন  কত  দুরে

গালাক্সী এর এই  অপলে  মারকারি   প্রতিষ্ঠান  এর  রোবট  এর  ব্যবসা  সূচক  ক্রমাগত  নিচের   দিকে  নেমে  আসছে l

এই  অবস্থা য়  কি  করা যায়  সে  জন্য   মিটিং এ  ডাকলো  তার   বাল্য   বন্দু হলম  তেলানকার কে l

এথেনার বর্তমান হতাশার  কারণ এটা l

2 মানুষ  যেন  আর  এই   রোবট গুলি  কে  সহ্য  করতে  পারছেনা . বিশেষত  নিরাপত্তা  কর্মী  রোবট  গুলো  হয়েছে  মানুষের  দুই  চোখের  বিশ l .নিরাপত্তা  কর্মী  রোবট  গুলি  মানুষের  জীবন  কে  একেবারে  অস্বাভাবিকতায়  নিয়ে  গিয়েছে l নিরাপত্তার  বদলে  মানুষের  এখন  ত্রাহি  ত্রাহি  অবস্থা  মানুষরা  বলছে  এই  গর্দভ  রোবট  এর  হাত  থেকে  পরিত্রান  চায়  তারা l এমনকি  মানুষ  এখন    তার  নিরাপত্তা  নিয়ে মাথা  ঘামাছেনা  l

হয়তবা  প্রেমিক  প্রমিকা  বসে  আছে  পার্ক  এ  প্রেমিক  প্রেমিকার  চুলে  গুজে  দিছে  ফুল  , কথা  থেকে  নিরাপত্তা  কর্মী  রোবট  এসে  একটানে  প্রিয়ার  চুল  সহ  ছিড়ে   ফুল  নিয়ে  ফেলে  দিবে  আর  ধাতব  যান্ত্রিক  স্বরে  বলতে  থাকবে

ডেঞ্জার  ডেঞ্জার  সিস্টেম  এলার্ট  ক্লিয়ার  ক্লিয়ার

তাকে  বুজানো   সম্ভব  না  যে  ফুল  প্রাকৃতিক  সুন্দর  জিনিস  এটাতে  কোনো  বিপদজনক  জিনিস   নাই  l

যান্ত্রিক  স্বরে  ঘ্যান  ঘ্যান করে  বলতে  থাকবে

মহাশয়   আপনি  যা  করিতেছেন  তাহা  ঠিক  না   .আপনার  নিরাপত্তার  জন্য  হুমকিস্বরূপ l এই  বেকুব  রোবট  গুলি এর জন্য   মানুষ  এর  অবস্থা  হয়ে  পড়েছে   শোচনীয়  l

স্বামী  স্ত্রী   বিছানায়  শুয়ে  আছে  পরস্পরকে  আদর  করতে  যবে  মূর্তিমান  রস্ভঙ্গের   মত  দরজা  ভেঙ্গে  ঢুকে  পড়বে  এই  রোবট  এসে  দাড়িয়ে  পড়বে   দুইজনের  মাঝখানে   ঝন  ঝন  ধাতব  গলায়  বলবে

মহাশয়  এই  শারীরিক  ক্রিয়া  আপনার  জন্য  হানিকারক l

কোনো  স্বামী  ছুড়ে  মারে  ফুলদানি  কেউ  বা   তার   সাথে  মল্লযুদ্দে অবতীর্ণ  হয় l .

গোসল   করা   ওয়াশরুম  সর্বক্ষণ  তারা  অনুসরণ  করতে  থাকে  মানুষকে   l

এদের  কে  ফিরত  দিলে ও  তারা  বাসা  খুঁজে  ঠিক  চলে  আসে  .দরজা   তালা   লাগানো  থাকলে  লাথি  মেরে  ভেঙ্গে  ঢুকে  পড়ে  ঘরে l.

মানুষের  অবস্থা  পাগল  এর  মত হয়ে গিয়েছে l গালাচ্টিক   সমাজে  খুব   বিশৃঙ্খলা  দেখা  দিয়েছে  l মানুষের  মনে  আনন্দ  নাই  প্রেম  ভালো  বাসা  স্বাধীনতা  নাই  প্রাইভেসী  নাই   l

সার্ভে  তে  এসব  তথ্য  দেখে  যারপর  নাই  এথেনা  খুব  হতাশ  এই  রোবট  গুলি  ধংশ  করা  ছাড়া  উপায়  নাই  সামাজিক  শৃখলা  ফিরিয়ে  আনতে  l

এই  অবস্থা  থেকে  পরিত্রান  এর  জন্য  সে  ত্রিনিদাদ এর সাহায্য চাইল  l

3 নীরার  জব   হয়েছে এই  গালাক্সী  সহকারী  পরিচালক  ত্রিনিদাদ  এর  সহকারী   হিসাবে সে    দেখছে  এই  পাগল বৈজ্ঞানিক  সারাদিন  ল্যাব  এ  ফাইল  কেমিকাল  এর  স্তুপ  এর মধ্যে  বসে  থাকে . তার  কোনো  খাওয়া নাই  বিশ্রাম নাই l

নীরার  খুব  মায়া  হতে  থাকে  ইচ্ছে  হয়  অপুরূপ  সুদর্শন  পাগল  বৈজ্ঞানিক  কে  গিয়ে হাতে  তুলে  খাইয়ে   দেয় .

সে  কাছে  এসে  জিজ্ঞাসা  করে

জনাব  খাদ্য  কি  উপাদেয়  হয়নি ?

আপনি  কেন  এখন  ও  ভক্ষণ  করিতেছেননা   ?

ত্রিনি  দাদ   ডুবে  ছিল  এটম  হিলিয়াম এর  ক্ষুদ্রাতি  কনা  র  মূল্যবান  প্রয়োগে  কি  করা  যায়   সেই  চিন্তায় কিভাবে  হিলিয়াম বা  হিলিয়াম   এর  কতটুকু  ব্যবহার  পর ও পৃথিবীকে  মানবিক  কোনো  আবিষ্কার  এর কাছা  কাছি  নেওয়া যায়  ধ্বংস না  করে l .যেসব  লাইফ  ঠ্রিয়াতেনিং ডিসিস  ব্লাড   ক্যান্সার  এইডস  এর  জার্ম  এই  ধংসাত্মক  শক্তিশালী জার্ম  গুলিকে  সঙ্গে  মাইক্রো  মিলিয়ন  ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র  হিলিয়াম এর  কোনায়  যদি  ধ্বংশ  করে  দেওয়া  যায়  তবে  অদূর  ভবিষতে  মানুষের  ক্যান্সার  সারানো র  জন্য  কেমোথেরাপি   লাগবেনা , তারা  খুব    সহজে  ছোট   অপারেশন  এর  মাধ্যমে  নিজে  কে কিউর  করতে  পারবে l চিকিত্সা  বিজ্ঞানে  এক  নুতুন  দিগন্তের  সূচনা  হবে l সে  গবেষণায়  দিনরাত  নাওয়া  খাওয়া  ভুলে  পড়ে   আছে   এমনকি ক্ষিধা   তেষ্টা    সে  কিছু  বোধ  করছেনা

প্রথমে   কিছুক্ষণ  অভিভূতের  মত   তাকিয়ে  থাকলো  এই  মানবিক   নারী  রোবট  টির    দিকে    সে  কিছুক্ষণ তাকিয়ে  থাকলো  l

আরে  আজব  তো  এ   দেখি  ব্লাশিং করছে  রহস্য  কি  সে  কৌতুক  এর  চোখে   তাকিয়ে  থাকলো

তারপর  হেসে ফেলল  হায়   রোবট ও ট্রাই  করছে  মানুষ   হতে আমরা  মানুষ  কোথায় যাব ? আমাদেরকে  তাহলে  ঈশ্বর  এর  অবস্থায়  যেতে   হবে l

ত্রিনিদাদ এর হাসিতে  নীরা   অপ্রস্তুত  হয়ে  গেল

বিব্রত  হয়ে  বলল  আমি  কি  কিছু  ভুল  বলেছি

নীরার  চোখে  আবার  সেই  সোনালী  নীল্   আলো  দেখা  গেল  যা  একজন  পুরুষ  তার  প্রেমিকার  চোখে  সবসময়  দেখে l

স্ট্রেঞ্জ   তো  ত্রিনিদাদ  মনে  মনে  হাসে . কোনো  সহপাঠি  আমার  প্রেমে  পড়ে   নাই  কখনো  এই  রোবট  তো  মনে  হচ্ছে  প্রেমিকা  নারীর  মত l

সে  তাড়াতাড়ি   প্লেট  হাতে  নিয়ে  একচামচ  খেল   এবং  বলল  হেসে

ইহা  অতি  উপাদেয়  খাদ্য   হইয়াছে  বলে  সে  নিজে  হেসে  ফেলল  জোরে

নীরা  কিছু  বুঝতে  পারলনা  ত্রিনিদাদ  এর  হাসিতে সে  মন  খারাপ  করে  বারান্দায়  এসে  দাড়ালো  l

সত্যি  খাওয়ার  গুলি  আসলে  উপাদেয়  যদি  রোবট  এত  মজার  খাওয়ার  রান্না  করে  আমার  আর  বউ  এর  দরকার  কি  হাসতে  হাসতে  ভাবলো   না  রোবট  এর  কি  মেয়েলি  মানবিক  বডি  থাকবে ? .দেখতে  হবে  এই  মেয়েটির  বডি  কিরকম  সত্যি  কি  আমাদের  মেয়েদের  মত  না  অন্যরকম  ? এই  ধারণা  আসা   মাত্র  সে  লজ্জা  পেল l

কি  সব  ভাবছে  পাগল   এর  মতো  .পরপর  কয়েক  রাত  না  ঘুম  হওয়াতে  তার  মনে  হয়  পিচি  ক্রাশ  করছে  সে  রোবটকে   নিয়ে  প্রেমের  স্বপ্ন  দেখছে  .l

দাড়াতে   গিয়ে  সামনে    আয়নায়  চোখ  পড়ে   গেল  . না  দেখতে  শুনতে  সেত  ভালো  ই  বিভিন্ন এঙ্গেল  এ  দেখতে  লাগলো  নিজেকে  তারপর  হেসে  ফেললো

গ্রামাফোনে  জোরে  গান  ছেড়ে  দিল

মোর    ভাবনারে   কে  হওয়ায়   মাতাল

দুলে   মন  দুলে   অকারণ   হর্ষে

সে  ও  হেড়ে  গলায়  গাওয়ার  চেষ্টা  করলো   তার  নয়েস  হোক  নিরা  ছুট এ  এলো   বারান্দা    থেকে l

কি  হইয়াছে  আপনার  আপনি  ঠিক  আছেন  তো  ?

হা  আমি  এত  ঠিক  কোনদিন  ছিলামনা

মোর  ভাবনারে  কি  হওয়ায়  মাতাল

কাছে  এসে  বলে  এই  তোমার  নাম  কি  আমার  মাথায়  একটা  টোকা  দাও  তো  দেখো  আমার  পিচি  ঠিক  আছে  নাকি  ?মনে  হচ্ছে  ছোটো   খাটো   ক্রাশ  হইছে  .

নীরা   কিছু  বুজতে  পারলনা  এই  মানুষটির  হটাত  এই  অহেতুক  ইমোশন   এর  কারণ  কি ? মাঝে  মাঝে  তার  জানতে ইচ্ছে হয়  মানুষ  এত  অকারণে  হাসে  অকারণে  কাদে  l

সে  বিহবলের  মত  তাকিয়ে  রইলো  চমত্কার  সুদর্শন  পুরুষটির  দিকে  . তার  ও  নিজেকে  একসময়ে  মানবী  মনে  হতে   লাগলো  l

 

(পরবর্তিতে)

০ Likes ২ Comments ০ Share ৬৬২ Views

Comments (2)

  • - মাইদুল আলম সিদ্দিকী

    অসম্ভব সুন্দর লাগলো, হলুদ পাঞ্জাবী পেয়ে যাবেন এই লেখাটার গুণেই।

    - মোঃসরোয়ার জাহান

    ভালো লাগলো !,কেমন আছেন ?মহান স্বাধীনতা দিবস লেখা প্রতিযোগিতা২০১৪ ক্যাটাগরি ১ এ আমার কবিতা “প্রিয় স্বদেশআছে,প্রতিযোগিতার জন্য।আপনাকে কবিতাটি পড়তে আমন্ত্রণ রইল।যদি ভালো লাগে তবে আপনার মূল্যবান একটি ভোট চাই।ভালো থাকবেন শুভ কামনা রইল।