Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.

"দিলরুবা"

বাহীরে বৃষ্টির কারনে ভিজেই ট্রেন থেকে নামতে হল ষ্টেশনে তেমন কিছুই নেই, শুধু একটা চায়ের দোকান। সামনে বিশাল মাঠ, দৃষ্টি বহু দুর পর্যন্ত ছরিয়ে দেয়া যাচ্ছে।

বৃষ্টির ভিতরে দাঁড়ানোর কোন স্থান খুঁজে পাচ্ছিনা। কাঁদে ব্যাগটা নিয়ে চায়ের দোকানের সামনে গিয়ে গিয়ে দারালাম।

-একটা বেনসন সিগেরেট দেন...

এটা শুনে লোকটা আমার দিকে অবাক চোখে তাকিয়ে রইল। যেন আমি কোন অপরাধ করে ফেলেছি।

-বেনসন নেই, নেভি আছে তাতে হবে?

বাধ্য হয়ে এক প্যাকেট নেভি নিয়ে নিলাম। আর একটা ধরালাম। এক টান দিতেই...

-তোমার নাম কি ভুলু? (পিছন ফিরে দেখি, পলিথিন মাথায় কুজু এক বিদ্ধ লোক)

-হুম, আপনি হায়াত আংকেল?

লোকটা কিছু বলল না, মাথা নেরে হ্যাঁ সূচক সংকেত দিয়ে বৃষ্টির ভীতরেই হাটা শুরু করেছে। আমিও তার পিছু পিছু হাটা দিলাম। আমি এটা বুঝে গেলাম যে লোক কথা কম বলে, এবং ভেরি ইন্টারেস্টিং। নামের সাথে মিল আছে। বয়স ১০০-১১০ হবে, কিন্তু সেটা তার হাবভাবে এবং কাজে বোঝা উপায় নেই।

 

বিমর্ষ হয়ে দারিয়ে আছি। সফিক যেমনটা বলেছিল, আসলে তার কিছুই নয়। তবে যেই বাড়িটা  সামনে দাড়িয়ে আছি, সেটা একটু আদালা। অনেক আগের পুরানো দোতালা বাড়ি। বারিটা দিকে মুখ করে তাকালে বাম দিকে একটা নদী, ডান দিকে কিছুটা ফাঁকা জায়গা, পরেই বিশাল বাগান। সামনে শুরু পথ যেখানে এখন আমি দাড়িয়ে। আর পিছনটা আপাতত দেখতে পাচ্ছিনা।

 

দোতালায় একটা ঘরে থাকার বেবস্তা হল। হায়াত আংকেল নিজেই আমাকে এই ঘরে পৌঁছে দিয়েছে। আর বলেছেঃ

-তোমরা শহরের ছেলে, এখানকার আওভাও কিছু বোঝনা। তাই আমাকে কিছু না বলে ঘর থেকে এক পাও বের হবেনা।

বাধ্য ছেলের মত আমিও মাথা নেরে হ্যাঁ সূচক সংকেত দিলাম।

পুরো বাড়িটা ঘুরে বুঝতে পারলাম যে বাড়িতে ১৯টা দরজা, ৩২টা জানালা এবং ১২টা ঘর। তবে এখানে এই বুড়ো আর তার ১৯,২০ বছরের মেয়ে ছাড়া আর কেহ থাকেনা। খুবেই ইন্টারেস্টিং...

 

রাতের খাবার নিজ ঘরেই শেষ করলামহায়াত আংকেল নিজে খাবার দিয়ে গেছেন। এখনো তার মেয়েকে দেখার সৌভাগ্য আমার হয়ে ওঠেনি। সফিকের কাছে শুনেছি খুবেই সুন্দরীএবং আরো বলেছে এই বাড়িতে নাকি ভূত, পেত কীসব আছে। আর এই মেয়ের সাথে নাকি সেই সব ভূত, পেতের কথাবার্তা হয়আরো কীসব করে বেড়ায়। তাই আমি কৌতূহল বসত, তা নিজ চোখে দেখতে এসেছি। দেখি কি হয়...

 

আমি বসে আছি বারান্দায় রেলিংএর পাশেবৃষ্টি থেকে আকাশে অনেক তারা উঁকি মেরেছে, তা দেখে চাঁদও নিজেকে লিকিয়ে রাখতে পারেনি জস্না ছড়িয়ে দিয়েছে প্রকিতির মাঝে। জস্না খুবেই পরিষ্কার হয়াতে নদী স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। কানায় কানায় ভরে আছে নদী। আর সেই নদীর উপর দিয়ে হাজারো জোনাকি পোকা উরে বেড়াচ্ছে। মনে হচ্ছে দল বেধে কোথায় যেন যাচ্ছে। তবে খুবেই নীরব এই যায়গাটা। কিছু ঝিঁঝিঁ পোকার আওয়াজ আর মাঝে মধ্যা কিছু খ্যাঁক শিয়ালের আওয়াজ ছাড়া কোন শব্দ নেই।

রেলিং দিয়ে খুবেই ঠাণ্ডা বাতাস বইছে। সারা দিন বৃষ্টি হওয়াতে বাতাসও খুবেই ঠাণ্ডা।

কালো চাদরটা বের করে ভালো করে শরীরের জড়িয়ে নিয়ে আগের যায়গাতেই এসে বসলাম সেই প্রকিতি দেখতে। জেগে থাকার প্রবল ইচ্ছা থাকাতেই হয়তো চোখে ঘুমের রাজ্য এসে পড়েছে। কখন যে বারান্দায় রেলিংএর পাশে চেয়ারের উপড়েই গুমিয়ে পরেছি বুঝতেই পারিনি

গভীর রাতে ঘুম ভাংল নূপুরের শব্দে। চোখ না খুলেই অনুভব পারলাম কেহ একজন আমার সামনে দাড়িয়ে আছে। আর আমাকে একপলকে দেখছে। বুঝতে পাড়ছিলাম চোখ খুলবো কিনা! হঠাৎ, চোখ খুলে দেখি কেউ নেই।

তবে নূপুর পায়ে কেহ একজন পিছন থেকে পালাচ্ছে। নূপুরের সেই শব্দ আমার কানে ভেশে আসছে। আমিও দৌড়ে গেলাম তার পিছু পিছু। ধরা দিচ্ছেনা আমার কাছে। দেয়ালের আড়ালে আড়ালেই থাকছে সে, তাই অল্প কিছু অংশই চোখে পড়ছে। লম্বা ঘন কালো চুল, খালি পায়ে নূপুর, সাদা শারি। মুখটা দেখার খুব আগ্রহ নিয়ে দৌড়োছি। তবে দেখা পাচ্ছিনা।

আমাকে অবাক করে দিয়ে মেয়েটা ঘর থেকে বের হয়ে নদীর দিকে দৌড়াচ্ছে। আমি একটু থমকে দাঁড়ালাম। কিন্তু না, আবার আবার তার পিছু নেয়া শুরু করি।

মেয়েটি নদীর দিক মুখ করে দাড়িয়ে, আমি তার পিছনে।

-কে তুমি? আমার ঘরের সামনে কেন গিয়েছিলে?

ওদিক থেকে কোন সারা আসলো না। আমি আস্তে আস্তে মেয়েটার দিকে আগাচ্ছি। আর একটা কথাই জিজ্ঞেস করছিঃ কে তুমি?

এক সময় আমি মেয়েটির একেবারে সামনে চলে যাই। আস্তে করে তার কাঁদে হাত দি। আর তখন আস্তে আস্তে আমার দিকে তাকচ্ছে...

মেয়েটিকে দেখার খুব আগ্রহ নিয়ে আছি, কিন্তু মুহূর্তেই হ্রিদস্পন্দন থেমে গেলো। কি কুৎসিত ভয়ঙ্কর বিবর্ষ রকমের মুখ তার। আমি অনেকটা ভয় পেয়ে পিছিয়ে গেলাম। আমার কাছে মনে হচ্ছে মেয়েটার মুখ আগুনে ঝলসে গেছে। আর সেটা ঘণ্টা খানেক আগেই পুড়েছে।

-কে তুমি? আর কেনোই বা আমার ঘরে গিয়েছিলে?

-দিলরুবা নাম আমার। (খুব সুন্দর একটা কণ্ঠে কথা গুল ভেশে আসছিলো)

-কোথায় থাকো? আর আমার ঘরে কেনো গিয়েছিলে?

-তুমি আমাদের একালার মেহমান, আর আমি তোমায় দেখবো না এটা কি হয়? তাই তোমায় দেখতে গিয়েছি।

-তাহলে পালালে কেনো?

-তোমাকে এই নদীর পারে আনার জন্য। আজকে হবে তোমার শেষ দিন।

-মানে?

-মানে, তোমারও আমার মত মরতে হবে।

-তার মানে মানে তুমি মরে গেছো?

-হ্যাঁ, আর এখন তোমাকেও মরতে হবে।

-না, আমাকে ছেড়ে দাও। আমি হাত জোর করছি। তোমার পায়ে পরছি। প্লীজ। আমি তোমার কোন ক্ষতি করিনি।

অনেক কাকতি মিনতি করারা পড়ে...

-আচ্ছা আমি তোমাকে ছেড়ে দিবো। তবে এক শর্তে।

-বলো কি শর্ত?

-কালকেই এই এলাকা ছারতে হবে তোমার।

-অবশ্যই, আমি কালকেই চলে যাবো।

-যাও, এখন পালিয়ে যাও...হাহাহাহা।

আমি ও দৌড় দিলাম, কিন্তু না, পিছনে না। মেয়েটার দিকে, আর দৌড়ে গিয়ে মেয়েটাকে জড়িয়ে দরলাম। আর বললামঃ

-আমার জীবনে অনেক আশা ছিলো যে ভূতের সাথে আমি এক রাত কাটাবো। এবং পরীক্ষা করবো যে ভূতের গর্বে মানুষের বাচ্ছা হয় কিনা। প্লীজ প্লীজ আমাকে এস সুযোগটা দাও...

এভাবে আমি জোর করতে থাকি। একসময়...

-না, আমি ভূত পেত কিছু নই। আমি মানুষ।

(এটা বলে নিজ হাত দিয়ে মুখের মুখোশটা খুলে ছুরে ফেলে দেয়। আর তখনি বুঝতে পারি মেয়েটি দুধে আলতা।মায়া কারা চেহেরা, নিষ্পাপ মুখ খানা তার। সাদা শারি পড়ে নিষ্পাপ মুখটা কতই না সুন্দর লাগছেগাল গুলি কিছুটা তেল তেল ভাব আছে হয়তো ঘ্যামে গেছে এর জন্যেই।দেখেলেই প্রেমে পরতে ইচ্ছে করে)

-এই আসছো লাইনে। আমিও জানি যে তুমি ভূত হতে পারোনা।

-কিভাবে বুঝলে? আজো পর্যন্ত অনেক মানুষকে আমি এভাবে ভয় দেখিয়ে দেখিয়ে এই যায়গা থেকে তাড়িয়েছি। শুধু তোমাকেই পারলাম না।

-আগে বল যে কেনো মানুষ কে ভয় দেখাও।

-এই পৃথিবীতে আমি আমার সব। একা নদীর পারে ঐ বাড়িটায় থাকি আমি। আর সেখানে অনেক পুরুষ গিয়ে আমাকে ডিস্টার্ব করতো। আমার একটা বোন ছিল আর সেই বোনটাকে কিছু ছেলে মিলে মেরেও ফেলে। আমি কোথাও জেতেও পাড়ছিলাম না। কারন, আমার কেহ নেই। তাই আমি এই পদ্ধতি বের করি। এবং সেটা ভালোই কাজে আসে। শুধু তোমার বেলা কাজ করল না।

-আরে বোকা, জস্নার আলোতে তোমার ছায়া পড়েছে। আর তা দেখে আমি বুঝে গেছি যে তুমি আসলেই একটা মেয়ে। তাছাড়া, এভাবে আর কতদিন থাকবে? সংসার করেব না?

-সংসার সবার জীবনে থেকেনা। তাছাড়া আজকে খুব ভয় করছে, কারন তুমি তখন বুঝে গেছো। সামনে আরো মানুষ বুঝে যাবে তাহলে তো আর থাকা যাবেনা। আরও আমার বোনের মতই অবস্তা হবে। মেয়েটা কান্না শুরু করে...

খুব ঠাণ্ডা বাতাস বইসে, সাদা শারি দুলছে বাতাসে, সাথে চুলও উড়ছে। আমি বুঝতে পেড়েছি ঠাণ্ডায় মেয়েটি যোমে যাচ্ছে। আমি কাছে গিয়ে আমার কালো চাদরটা দিয়ে দুধে আলতা দেহটার উপরে একটা পর্দা ফেলে দেই...

-এই আমি তোমার দেহের উপর যে পর্দা দিয়ে দিলাম সেটা আমি সারা জীবনের জন্যে রাখতে চাই। কি অনিমুতি কি পাওয়া যাবে, মিস-দিলরুবা??

হূহূ করে কেদে ওঠে মেয়েটি। তবে সেই কান্নার মাঝে ভেশে আসে এক অপরূপ সুন্দর্যের হাসি। যেটা ছিলো আকাশের ঐ চাঁদের চেয়েও সুন্দর। কারন, চাদেও গাদ আছে, কিন্তু দিলরুবার হাসিতে কোন দাগ নেই...

৩ Likes ৮ Comments ০ Share ১৩২৯ Views

Comments (8)

  • - টোকাই

    ভালো একটা পোষ্ট ।

    • - এই মেঘ এই রোদ্দুর

      ধন্যবাদ আপনাকে