নক্ষত্র ব্লগের দ্বিতীয় পর্বে ভোটিং চলছিল বেশ কয়েক দিন ধরে । নিজের লেখাটির দিকে ভোটিং পর্বে দৃষ্টি নিবব্ধ হচ্ছিল বার বার । মনে হচ্ছিল একটি স্থান অবশ্যই থাকবে। শেষ পর্যন্ত প্রথম ক্যাটাগরিতে দ্বিতীয় স্থান লাভ করলাম । প্রথম স্থানের সাথে মাত্র এক ভোটের ব্যবধানে। যাহোক ইচ্ছে ছিলো যাবো । কিন্তু বিধিবাম , হঠাৎ করে চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ড থেকে চিঠি এলো এসএস সি পরীক্ষার বিশেষ ভিজিলেন্স টিমের সদস্য হিসাবে বিভিন্ন কেন্দ্রে যেতে হবে । কি আর করা । যাওয়ার প্রোগ্রামটা বাদ দিতেই হলো। এবার দায়িত্ব পালনের সাথে ভ্রমন কাহিনী হিসাবে প্রথম দিন কিভাবে গেলো তা দেখা যাক । ১৩ ফেবুয়ারি সকাল ৬ টায় আমরা পাঁচ জন কলেজ শিক্ষক যথাসময়ে বোর্ডে হাজির। সাথে শিক্ষা বোর্ডের দ,জন উর্ধ্বতন কর্মকতা। উদ্দেশ্য দ্বীপ উপজেলা মহেশখালী যাওয়া এবং সেখানকার কেন্দ্রগুলো পরিদর্শন করা। সকাল সাড়ে ছয় টায় দিকে আমরা রওনা দিলাম মহেশখালীর উদ্দেশ্যে। দুরন্ত গতিতে শুধুই সামনের দিকে পথ চলা। দক্ষিণ চট্টগ্রামে অনেক দিন পর যাওয়া হচ্ছে। এর আগেও অনেকবার পরীক্ষার দায়িত্ব পালনের জন্য যাওয়া হয়েছে । এবার যাচ্ছি বেশ কিছুদিন পর। মাঝে মধ্যে গল্পগুজবে সময় কেটে যাচ্ছিল ভালোই । সকাল নয়টার দিকে আমিরাবাদ নামক স্থানে যাত্রা বিরতি। হাত মুখ ধুয়ে ফ্রেশ হওয়া। চা নাস্তা খেয়ে আবার মহেশখালীর দিকে যাত্রা শুরু। সকালে গাড়ীর ভিড় রাস্তায় কম ছিলো বলে তেমন কোন যানজটে পড়তে হয় নি। বেশ কিছুক্ষণ পর আমরা চকরিয়া পৌঁছলাম । এই চকরিয়া থেকেই সোজা পশ্চিম দিকে যাত্রা ।কক্সবাজার সড়ক থেকে বাই পাস হয়ে। আবার পথ চলা। সামনে সমুদ্রের হাতছানি।এক সময় মহেশখালীতে যেতে হতো সমুদ্র পাড়ি দিয়ে স্পীড বোটে। এখন এই পথে ছোট্ট সমুদ্র সংযোগে ব্রীজ নির্মান হওয়ায় সরাসরি গাড়ীতে করে মহেশ খালী যাওয়া যায়।
এ সেতু দিয়ে মহেশখালীর সাথে চকরিয়ার সংযোগ দেয়া হয়েছে।
গত বছর কক্সবাজার সপরিবারে বেড়াতে গিয়ে মহেশ খালীর আদিনাথ মন্দির পরিদর্শন করেছিলাম। গিয়ে ছিলাম কক্সবাজার থেকে স্পীড বোটে। এবার গেলাম সড়ক পথে।চারিদিকে জমিতে লবন তৈরীর দৃশ্য দেখে পুলকিত হলাম । চকরিয়া থেকে পৌনে একঘন্টায় সমুদ্র পাড়ের বদরখালীতে পৌছলাম। এ স্থান থেকে সমুদ্রের সাথে সেতু তৈরী করে মহেশখালীর সাথে সংযোগ করা হয়েছে। এ সেতু পার হয়েই মহেশখালীতে ঢুকলাম॥ চারিদিকে শুধুই লবন তৈরীর দৃশ্য।
জমিতে লবন তৈরী হচ্ছে।
সারি সারি সুপারি গাছঅর নারিকেল আছ। দেখতে বেশ মনোমুগ্ধকর । অনেকটা পথ পেরিয়ে আমার সকাল সাড়ে দশটার দিকে প্রথম কেন্দ্রে পৌছঁলাম। রাস্তা ঘাটের অবস্থা বেশ খারাপ। তেমন উন্নয়ন চোখে পড়ে নি। কিছুক্ষণ এ কেদ্রে অবস্থান করে পরের কেন্দ্রের উদ্দেশ্যে রওনা হলাম । কেন্দ্র সচিব আপ্যায়ন করলেন । যাবার সময় পান দিয়ে বললেন ’পান খেয়ে যান , মহেশখালীর পান ।’ আসলে মহেশখালীর পান খুবই বিখ্যাত । মনে পড়ে গেলো চট্টগ্রামের শেফালী ঘোষের সেই বিখ্যাত গান ’যদি সুন্দর একখান সুন্দর মুখ পাইতাম মইশখালীর পানর খিলিতারে
বানাই খাবাইতাম।’ এ কেন্দ্র থেকে আবার যাত্রা শুরু । পৌঁছলাম হেড কোয়াটার কেন্দ্রে। গাড়ী থেকে সাগরের হাতছানি মনো মুগ্ধকর। খুব ছিমছাম পরিবেশ , একবারেই গ্রামের নির্মল সাধারণ পরিবেশ। কেদ্রে ইউ এন ও সাথে আলাপ হলো। সবাই মিলে খাওয়া দাওয়া শেষে আবার চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা হলাম। আসার সময় আদিনাথ সড়ক হয়ে আবার সরাসরি সাগর পাড়ের বদরখালী এলাম ।বিকেল তিনটায় রওনা হয়ে রাত্রি দশটায় চট্টগ্রাম শহরে পৌছলাম। শরীরের উপর দিয়ে বেশ ধকল গেলো। পরের দিন ১৪ তারিখ ঢাকায় নক্ষত্র ব্লগের অনুষ্টানে যাওয়া আর হলোনা।