আজ সকালেই ড্রাইভারের কাছে খবর শুনলাম, ঢাকায় হাটা বাবা নামে যে লোকটা হেঁটে বেড়াতো আজ দুদিন হয় মারা গেছে। আমিও বেশ কয়েকবার দেখেছি। ব্যস্ত রাস্তায় একদল লোক নিয়ে বয়স্ক এক লোক হেঁটে চলেছেন। ধুলি ধুসর গা, ময়লা, অনেকটা নোংরাই বলা চলে।
অনেক ধরনের মানুষ তার পেছনে পেছনে হাঁটত। ছেলে, বুড়ো, মহিলা, যুবক...অনেক মানুষ। তাদের মধ্যে প্রায় সবাই বিশ্বাস করত এই "হাটা বাবা"র কিছু আলাদা ক্ষমতা ছিল। তিনি নাকি অনেক কম কথা বলতেন, এবং হুট করেই একদিন কাউকে ডেকে বলতেন তোর মনের ইচ্ছা পুরন হবে। লোকজন তাতেই খুশি। তারা ভাবত উনি বললেই হবে।
এই হাটা বাবা নিয়ে লোকজনের বিরক্তি ও কম ছিল না। নোংরা গন্ধে কাছেই নাকি যাওয়া যেত না। তবুও তিনি হাটা বাবা। অনেকে পরম শ্রদ্ধায় তাকে স্মরণ ও করবেন।
প্রকৃতি অনেক রহস্য ধারন করে, সেটাই তার ধর্ম। মানুষ তার প্রাত্যহিক ঝামেলা থেকে মুক্ত হতে চায়, যখন হতাশা তাকে পেয়ে বসে, তখন সে বিশ্বাস করতে শুরু করে কোন এক অলৌকিক রহস্যময় কিছু তার সমাধান করে দেবে। এই প্রত্যাশায় সে যা পায় তাই খড় কুটোর মত আকরে ধরে।
হাটা বাবা হয়ত তেমন ই এক আকাঙ্ক্ষার নাম। এমন একটা ময়লা লোকের পেছনে এতো গুলো মানুষ কেন হাটে, আমার খুব জানতে ইচ্ছে হত। আসলেই কি কোন ক্ষমতা স্রস্টা তাকে দিয়েছেন?
জুলফিকার আলি হায়দার একসময় স্বাভাবিক মানুষ ছিলেন তাতে সন্দেহ নেই। তার তিনপুত্রের কথা ও শুনা যায়। একসময় তিনি পীর হিসেবে পরিচিতি পেতে থাকেন। গোসল ,নামায, স্বাভাবিক জীবন সব বাদ দিয়ে কেবল হেঁটে চলা... কেন হাঁটতেন? মানসিক বিকার নিয়ে কোন লোভী মানুষের বেবসার কারনে তার এই পীর খেতাব কিনা, তাই বা কে জানে! এতগুলা মানুষ, তাদের বুদ্ধি কোন পর্যায়ে? কেন তার অনুসারী? কোন ধর্ম তিনি মানতেন? কিভাবে মুক্তি? ইহ লৌকিক নাকি পর লৌকিক? কোন মুক্তি তিনি তার ভক্তদের দেবার আশ্বাস দিতেন?
ঢাকার রাস্তায় "হাটা বাবা"। ছবিঃ সংগৃহীত।
খুব খোঁজ খবর করার সুযোগ ও পাইনি। তার মৃত্যুতে কিছু লোকের খুব বেবসা হবে বুঝা যাচ্ছে। কিন্তু সে কেন ভোগ করেনি এই সম্পদ?
মানুষ কেন খুজে এই আধ্যাত্মবাদ?
কিভাবে পায় এর দেখা?
এই প্রশ্ন গুলো নতুন করে আবার উঁকি দিয়েছে আমার মনে।
Comments (3)
বেশ লাগল কবি,,,,,,,,,,,
ধন্যবাদ কবি।ভাল থাকবেন।
সুন্দর
ধন্যবাদ প্রিয়।ভাল থাকবেন।