আকাশে নাকি মস্তবড় একটা চাঁদ উঠেছে। বাক্যটায় সন্দেহ আছে। কারণ অর্ক এখনো আকাশের দিকে তাকায়নি। পূর্ণিমার রাতে সে ইচ্ছে করেই আকাশের দিকে তাকায় না। ওতে নাকি জোছনার মূল মজাটা পাওয়া যায় না। পূর্ণিমার রাতে আকাশে তাকাতে হবে হঠাৎ করে। অনেক্ষন অপেক্ষা করে থাকার পর। তখন এক্সাইটমেন্ট তৈরি হবে বেশি। এটা অর্কের নিজের আবিস্কার। সে গুরুত্বহীন বিষয়গুলো খুব গুরুত্বসহকারে আবিস্কার করে।
পূর্ণিমার রাতে পথে পথে হাঁটতে হয়। সরু কোন ঘুপচি পথে না। একেবারে রাজপথে। প্রশস্ত রাজপথে যখন জোছনা উপচে পরে তখন রাস্তায় ঢেউ খেলে। জোছনা জলের ঢেউ। অর্ক পূর্ণিমার রাতের এই রাজপথের নাম পাল্টে রেখেছে। নাম দিয়েছে, রাজনদী। এই নদীতে হাঁটা যায়। কেউ ডুবে যায় না। অর্ক এখন তার রাজনদীতে হাঁটছে। কিন্ত আশ্চর্যের ব্যাপার, তার পায়ের পাতা অবধি সেই রাজনদীতে ডুবে যাচ্ছে। অদ্ভুত অনুভূতি। অবশ্য অর্ক এই রহস্য ভেদ করে ফেলেছে। আজ উত্থালপাত্থাল জোছনা। রাজনদীতে জোয়ার চলছে। পায়ের পাতা তো ডুববেই।
-অর্ক!
-কি?
-আমার দিকে তাকাবে না?
-নাহ!
-কেন?
-জানিনা। জোছনা তো দেখতে পাচ্ছিই। তোমার দিকে তাকানো লাগবে কেন?
-আজ আমি তোমার সবচেয়ে কাছে আছি। তবুও তাকাবে না?
-নাহ।
-তোমায় কিছু ফুল দেবো। তুমি সেগুলো চৈতিকে দেবে।
-কি ফুল?
-আমার ফুল।
-তোমার ফুল, কি ফুল?
-জোছনার ফুল।
-দাও
-দিচ্ছি...
অর্ক আশেপাশে প্রচুর জোছনার ফুল পরে থাকতে দেখে। সে কুড়াতে যায়। একটা ফুলও সে কুড়াতে পারে না। ধরতে গেলেই নাই হয়ে যায়। সে চাঁদকে জিজ্ঞেস করে...
-কই? একটাও তো কুড়াতে পারছি না !
এবার চাঁদটা শব্দ করে হেসে ওঠে। তার হাসির কারণেই জোছনা বেড়ে যায় শতগুন। আশেপাশে ঝরে পরে আরও অসংখ্য জোছনার ফুল। অর্ক খুব শখ করে কুড়াতে যায়। পারে না।
অর্ক বসে আছে রবীন্দ্রসরোবরে। অর্কের খুব প্রিয় একটা জায়গা। সামনের গোল মঞ্চটা জোছনায় ঝলমল করছে। তার ফাঁক দিয়েই দেখা যায় শীতল জল ভর্তি লেক। সেই লেকের দিকে চোখ পরতেই অর্ক চাঁদ দেখল। থৈ থৈ জোছনায় মাখা একটা চাঁদ।
অর্কর আকাশের দিকে তাকাতে ইচ্ছে করছে না। তবু সে জোর করে, আকাশের দিকে তাকালো। আকাশে মস্তবড় একটা চাঁদ। আর অর্কের হাতে অনেকগুলো জোছনার ফুল। চৈতির জন্যে।
Comments (11)
কোন পেপারে যেন পড়লাম ......
প্রাত্যহিক নিউজ
লিস্ট আরো বড় হত।
সামনে আসবে।
হেগো ইসকেন্ডাল দিয়া আমরা করুম। তাই তাইতে ক্যন্ডেল হইলে ভালা হইতো। লোডশেডিং এ জালাইতে পারতাম।
খবর